নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
৮ মার্চ ২০২০ বাংলাদেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত ধরা পড়েছিল। আজ ৮ এপ্রিল সেই সংখ্যাটি এখন ২১৮ জন। আর ইতোমধ্যে মারা গেছে ২০ জন। খেয়াল করুন, ৮ মার্চ করোনা আক্রান্তের খবরের পরেও সরকার কিন্তু ২৫ মার্চ পর্যন্ত বিষয়টি মোটেও গুরুত্ব দেয়নি। প্রায় তিন মাস প্রস্তুতির সময় হাতে পেলেও সরকার সেই সুযোগ মোটেও কাজে লাগায়নি। ফলে করোনা ভাইরাস ধীরে ধীরে বাংলাদেশে কম্যুনিউটি পর্যায়ে ছড়িয়েছে।
দ্বিতীয় যে জিনিসটি ভয়াবহ দুঃখের, সেটি হলো, দেশের জনস্বাস্থ্য কাঠামো যে কতোটা ভয়াবহ মাত্রার দুর্বল, সেই চিত্রটি এই এক মাসে প্রমাণিত হয়েছে। অথচ সরকার বাহাদুর বিভিন্ন সময়ে হাজার হাজার কম্যুনিটি হাসপাতাল গঠনের খবর, মানুষের ঘরের দরজায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিয়েছেন বলে এতদিন ফাঁকা চিৎকার করেছেন।
তৃতীয় বিষয়টি হলো- করোনা দুর্যোগের সময়েও সরকার দলীয় লোকদের দুর্নীতি বন্ধ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। গরীব মানুষকে ১০ টাকা কেজি চাল প্রদানের কথা মুখে বললেও, ১০ টাকা কেজিতে চাল কিনে নিয়েছে নেতারা। আর তাদের এজেন্টরা ২০ টাকা কেজিতে সেই চাল বিক্রি করছে এখন। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাল চোর ধরা পড়েছে কয়েকশো।
চতুর্থ বিষয় হলো- করোনা মোকাবেলায় ডাক্তার-নার্স-হাসপাতাল কর্মী যারা প্রধম সারির সৈনিক, তাদের জন্য প্রয়োজনীয় টেস্ট কিট এবং পিপিই ব্যবস্থা না করে সরকারি আমলাদের মধ্যে পিপিই বিতরণের খবরে খোদ প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত ক্ষুদ্ধ হয়েছেন। অথচ এসব বিষয়ে দেশের মন্ত্রীরা গত তিন মাস করোনা মোকাবেলায় বিশাল প্রস্তুতির মিথ্যা গুজব ছড়িয়েছে।
পঞ্চম বিষয় হলো- ধর্মীয় বিধিবিধান পালনে সরকার এখন পর্যন্ত কাঠমোল্লাদের নির্দেশিত ফরমান চালু রেখেছেন। যেখানে গোটা বিশ্ব কম্যুনিটি পর্যায়ে সামাজিক দূরত্বকে কঠোরভাবে পালন করার কথা বলছে। সেখানে সরকারিভাবে এখনো মসজিদে অন্যান্য দিনে ৫ জন এবং জু'মার দিনে ১০ জনকে এলাউ করা হচ্ছে। যা খুবই হাস্যকর যুক্তি।
ঘষ্ঠ বিষয় হলো- করোনা মোকাবেলায় সরকার গার্মেন্টস গুলো নিয়ে যে ভয়ংকর খেলাটি খেললো, এটি বাংলাদেশে করোনা সামাজিক পর্যায়ে ছড়ানোর জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি বাড়িয়েছে।
সপ্তম বিষয়টি হলো- এখন পর্যন্ত সরকার বাহাদুর করোনা বিষয়ে জনগণের চাপে সকল সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। কোনো পরিকল্পনা সরকার নিজ উদ্যোগে গ্রহণ করে নাই। তার মানে হলো, সরকার এখনো করোনা প্রস্তুতিতে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। সকল মন্ত্রণালয়গুলো, পেশাজীবীদের নিয়ে, প্রাইভেট সার্ভিসগুলোকে নিয়ে যে ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স গঠন করার কথা, সেটি এখনো পুরো মাত্রায় সক্রিয় হয়নি। এখন পর্যন্ত এক মন্ত্রণালয়ের খবর অন্য মন্ত্রণালয় খুব একটা জানে না। ফলে গাফিলতি এখনো সুস্পষ্ট।
উপরের কথাগুলো মোটেও সরকারের বিরোধিতা করার জন্য বলা হয়নি, এগুলোই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বাস্তবতা। করোনা মোকাবেলায় সরকারকে আরো কঠোর ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিতে হবে। নইলে বাংলাদেশ একটি মৃত্যুপুরীতে পরিনত হবে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন।
করোনা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্সকে আরো সক্রিয় করতে হবে। প্রাইভেট হাসপাতাল গুলোতে জরুরি করোনা আইসোলেশন ইউনিট চালু করতে হবে। দেশের খেলার মাঠ ও স্টেডিয়ামগুলোকে জরুরি মোবাইল হাসপাতাল গঠনের উদ্যোগ নিতে হবে। লকডাউন মানার জন্য জনসচেতনতা আরো বাড়াতে হবে। গরীব ও দুঃস্থ মানুষদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিয়মিত খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার-নার্সদের কয়েকভাগে ভাগ করে ব্যাকআপ টিম রাখতে হবে। এসব সাধারণ নিয়ম কানুন গুলো কঠোরভাবে পালন করতে হবে।
সরকারের উদাসীনতা কিছুটা কাটলেও সরকারি দলের লোকজনের ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি করোনা দুর্যোগে নতুন মহামারীতে রূপ নিচ্ছে। পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই ব্যক্তি পর্যায়ে টেস্ট কিট ও পিপিই আমদানি বন্ধ করতে হবে। নতুবা এসব টেস্ট কিট ও পিপিই নতুন ঝুঁকি তৈরি করবে। জাতীয় দুর্যোগে রাজনীতি বন্ধ করে সবাইকে নিয়ে একসাথে করোনা যুদ্ধ মোকাবেলা করতে হবে।
সবচেয়ে বড় কথা এখনো যদি আমাদের হুস না আসে তাহলে করোনা থেকে কেউ রেহাই পাবে না। এজন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগকেই সবচেয়ে সঠিক ও নির্ভুল হতে হবে। আজ থেকে এসব বিষয়ে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিতে পারলে করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশ হয়তো মরতে মরতে বেঁচে যাবে। কিন্তু আজকের পর আর যদি ন্যূনতম গাফিলতি করা হয়, তাহলে আর কারো বাঁচার উপায় দেখি না।
২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:০৭
বংগল কক বলেছেন: আরও একমাস পরে বুঝবেয়ানে, সরকারের পদক্ষেপ কতটুক কি ছিল।
৩| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:২৪
সোনালি কাবিন বলেছেন:
৪| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:০৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: '
তাও মন্দের ভালো।
আরো দেরী করলে
কি করার ছিলো।
তাছাড়া আমরাকি এখনো সচেতন ?
বাজারে গেলে মনে হয় পিকনিক করার
বাজার করছে সবাই। উপচেপড়া ভীর!!
৫| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৩৫
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বিশৃঙ্খল সমাজে থাকার এই হলও সমস্যা। দেখেও কিছু করতে পারবেন না। জঙ্গলে এই সমস্যা নাই।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: দরিদ্র দেশ হিসেবে সরকার অনেক ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে। হয়তো কিছুটা দেরী হয়েছে।