নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ হলো করোনা থেকে মুক্ত থাকার জন্য সহজ উপায় হলো ঘরে থাকা। আপনি যতক্ষণ ঘরে থাকবেন, ততক্ষণ আপনি করোনা ঝুঁকি মুক্ত। অন্য কারো সংস্পর্শে গেলেই আপনি করোনা ঝুঁকিতে পরবেন। এজন্য যাদের এখনো করোনা সংক্রমণ হয়নি, তাদের জন্য কোয়ারেন্টাইন। মানে তুমি বাপু ঘরে থাকো। পরিবারের অন্য সবাইকেও ঘরে রাখো।
আর যাদের মধ্যে ইতোমধ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তারা সবাই আইসোলেশনে যাও। এই আইসোলেশনের জন্য শুরুতেই হাসপাতালে যাবার দরকার নাই। নিজের বাসায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া। আলাদা একটা রুমে পুরোপুরি নিজেকে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা। যদি শরীর খুব খারাপ করে, তখন হেল্পলাইনে ফোন করে জরুরি চিকিৎসা সেবা নেওয়া। ডাক্তার যদি মনে করেন, আপনাকে হাসপাতালে নেওয়া জরুরি, তাহলে আপনাকে হাসপাতালে চলে যেতে হবে।
অথচ আমরা এই অসচেতন বাঙালিরা এখনো দলবেধে বাইরে ঘুরছি। পুলিশ বা সেনাবাহিনীর গাড়ি দেখলে গা ঢাকা দিচ্ছি। গাড়ি চলে গেলেই আবার মাছের ঝাকের মত জড়ো হচ্ছি। এই জড়ো হওয়া থেকেই করোনা সামাজিকভাবে ছড়াবে। যেটাকে সারা বিশ্বে বলা হচ্ছে কম্যুনিটি স্প্রেড। আমরা নিজেদের বিপদের পাশাপাশি নিজের পরিবার ও প্রতিবেশীর জন্য বিপদকে নিম্নন্ত্রণ জানাচ্ছি। এই আমাদের অসচেতনতার কারণেই বাংলাদেশে আরেকটা মৃত্যুপরী অপেক্ষা করছে।
তাহলে উপায় কী? আমরা কী বাঁচতে চাই? যদি আমরা বাঁচতে চাই, তাহলে আজ থেকে আমাদের কিছু শর্ত অনুসরণ করতে হবে। আর এই শর্ত বাংলাদেশ ভূ-খণ্ডের সকল মানুষের জন্য প্রযোজ্য হবে। দেশে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে হবে। এই ঘোষণা সবার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত। দেশের একজন নাগরিকেরও এই নির্দেশনা অমান্য করার কোনো সুযোগ নাই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সারা বিশ্বের জন্য স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেও, বাংলাদেশে এই ঘোষণা এখনো সরকারি ভাষ্যের কোথাও আসেনি। দেশের জনগণকে এই স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা কী, তা ভালো করে বোঝাতে হবে। বোঝাতে হবে কেন তাদের এটা মানা উচিত। দেশে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে হবে। আর এই স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে জনগণকে বাধ্য করতে হবে। এই স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা সারাদেশে শতভাগ বাস্তবায়ন করতে পারলেই কেবল বেঁচে যাবে বাংলাদেশ।
এর বাইরে আমাদের আর কী কী করা জরুরি?
১. দেশের স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা যেটা সারা বছরের চিত্র, সেটি যে কোনো মূল্যে সক্রিয় রাখতে হবে। আশার কথা হলো বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন ঘোষণা করেছে যে, আজ থেকে ৬৯টি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। সেখানে করোনাসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা দেওয়া হবে। শুধুমাত্র করোনা চিকিৎসা যে হাসপাতালগুলো হবে, সেগুলোর তালিকা দেশবাসীকে জরুরি বুলেটিনের মাধ্যমে জানানো। এজন্য বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে ঘণ্টায় ঘণ্টায় প্রচার করা উচিত।
২. করোনা যুদ্ধে আমাদের যারা সামনের সারির তুর্কি সেনা, সেই ডাক্তার-নার্স ও জনস্বাস্থ্য কর্মীদের জরুরি ভিত্তিতে পিপিই প্রদান করা। তাদের জন্য বেশি পরিমাণ টেস্ট কিটের ব্যবস্থা করা। সারা দেশে টেস্ট করানোর আওতা বাড়ানোর পাশাপাশি টেস্ট সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া।
প্রতিটি উপজেলা পরিষদ ডাক বাংলোতে অন্তত একটি টেস্ট কেন্দ্র গড়ে তোলা। ৪৯২টি উপজেলায় একটি করে টেস্ট কেন্দ্র স্থাপন করা। এটা জরুরি ভিত্তিতেই দ্রুততম সময়ের মধ্যেই করতে হবে। গোটা বাংলাদেশকে জালের মত ছক করে ছেকে ফেলতে হবে। টেস্ট টেস্ট টেস্ট। যত বেশি টেস্ট করা যাবে তত দ্রুত আমরা করোনা মুক্ত হবো। বাংলাদেশের ২০ কোটি জনগণকেই বাধ্যতামূলক এই টেস্টের আওতায় আনতে হবে। এটা ধাপে ধাপে করতে হবে।
৩. প্রতিটি জেলার সার্কিট হাউজগুলোকে অস্থায়ী করোনা হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলা। সেখানে টেস্ট করার সুযোগ সৃষ্টি করা। জেলার অন্যান্য হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীকে না টেনে জেলা সার্কিট হাউজে তাদের আইসোলেশন করা। এতে কম্যুনিটি সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যাবে। যা সাধারণ হাসপাতালে করা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
জেলা সার্কিট হাউজের ব্যাকআপ হিসেবে জেলার কিছু বড় বড় আবাসিক হোটেলকে অস্থায়ী করোনা হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলা। যাতে করোনা সংক্রমণের বিস্তার ঘটলে সামাল নেবার মত হাসপাতাল তৈরি থাকে। সরকারকে এরকম উদ্যোগ অবশ্যই নিতে হবে। নতুবা এই সরকারকে পরবর্তীতে জবাবদিহি করতে হবে- কেন মানুষকে বাঁচানোর জন্য আপনারা ব্যবস্থা গড়ে তোলেননি? প্রয়োজনে সরকারকে এরকম উদ্যোগ নিতে বাধ্য করতে জনতার চাপ প্রয়োগ করা হবে। মানুষের বাঁচার অধিকার দিতে না পারলে কীসের আবার সরকার?
সরকারকেই এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদেরও দায়িত্ব রয়েছে সরকারের এই উদ্যোগকে সহায়তা করা। জনগণকে এই দায়িত্ব পালনে বাধ্য করতে প্রয়োজনে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারবে। সবাইকে বাঁচাতে হলে সরকারকে কঠোর হতেই হবে। কিন্তু গরীব মানুষ যেন না খেয়ে মারা না যায়, তা শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে জরুরি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার আওতায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে লোঙ্গরখানা খুলে গরীব মানুষকে সরকারি উদ্যোগে খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
৪. বর্তমানে যত ডাক্তার-নার্স সক্রিয়, তাদের তিনটি ভাগে ভাগ করে জরুরি ব্যাকআপ টিম রাখা। এর বাইরে সারা দেশে দ্বিতীয় স্তরের চিকিৎসা সেবার ব্যাকআপ নিশ্চিৎ করতে হবে। কীভাবে তা নিশ্চিত করা সম্ভব? সারাদেশে এখন যারা মেডিকেলে কলেজে ইনটার্নি করছেন, সেসব মেডিকেল স্টুডেন্টস ডাক্তার এবং যেসকল সিনিয়র ডাক্তারগণ রিটায়ার্ড করেছেন এদের সমন্বয়ে আরেকটি শক্ত ব্যাকআপ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা। কেবলমাত্র জরুরি প্রয়োজনে এই ব্যাকআপ মেডিকেল টিম কাজ করবে।
কারণ করোনা সংক্রমণ কম্যুনিটি পর্যায়ে ছড়ালে ডাক্তার-নার্সদের অনেকেই কোয়ারেন্টাইনে যেতে বাধ্য হবে। তখন এরা ব্যাকআপ সাপোর্ট দেবে। কেবলমাত্র চিন্থিত করোনা পজিটিভ রোগী এদের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকবে। পাশাপাশি আইসোলেশনে থাকা রোগীদের জরুরি প্রয়োজনে আইসিইউসহ আইসোলেশন ফেসিলিটিসের সকল পরিসেবা বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে বিদেশ থেকে জরুরি ভিত্তিতে আইসিইউসহ আইসোলেশন সার্ভিস আমদানি করতে হবে। এসব আইসোলেশন সুবিধা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। বতর্মানের ১১২টি আইসিইউকে মিনিমাম এক হাজার সংখ্যায় উন্নীত করতে হবে।
৫. দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য জরুরি স্বাস্থ্য প্রণোদনা ঘোষণা করতে হবে। দেশের স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা পালনের জন্য দেশের সকল নাগরিক নানাভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ। তাই প্রত্যেক নাগরিক রাষ্ট্র থেকে এই জরুরি স্বাস্থ্য প্রণোদনা পাবে। এটা নাগরিকদের মৌলিক অধিকার। সরকারকেই দ্রুত এই জরুরি স্বাস্থ্য প্রণোদনা ঘোষণা করতে হবে।
হিসাবটাও বলে দেই। সরকার যদি ২০ কোটি নাগরিকের প্রত্যেকের জন্য একহাজার টাকার জরুরি স্বাস্থ্য প্রণোদনা বরাদ্দ করে, তাহলে লাগবে ২০ হাজার কোটি টাকা। যদি দুই হাজার টাকার জরুরি স্বাস্থ্য প্রণোদনা বরাদ্দ করে, তাহলে লাগবে ৪০ হাজার কোটি টাকা। যদি পাঁচ হাজার টাকার বরাদ্ধ রাথে তাহলে একশো হাজার কোটি টাকা। জনগণেকে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা মানতে বাধ্য করতে সরকারকে কিছু উপহার ছাড়তে হবে। আর সেটা হলো জরুরি স্বাস্থ্য প্রণোদনা। দেশের জনগণকে বাঁচাতে সরকারকে এটুকু করতেই হবে।
এই পঞ্চ পরিকল্পনা যথাযথভাবে পালন করতে পারলে বাংলাদেশ করোনা যুদ্ধে নিশ্চিত বিজয়ী হবে। আর যদি এটা সম্ভব না হয়, আগের মত ঢিলেঢালা ভাবে যাচ্ছে তাই জগাখিচুরি চলতে থাকে, আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ঘুরপাক খায়, কেউ করবে তো কেউ করবে না টাইপ একটা দশা থাকে, তাহলে আমাদের মৃত্যুপরীতে ঠাই নেওয়া ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নাই।
২| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:০৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: পাড়া, মহল্লা পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবক ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে। আমাদের দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংখ্যার সীমাবদ্ধতার জন্য দেশের প্রতিটি আনাচে কানাচে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।
৩| ১০ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৫৪
নেওয়াজ আলি বলেছেন: বাসায় চাল ডাল তেল লবন হব পুরিয়ে আসছে
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: যার ঘরে খাবার নেই তাকে খাবার আনতে বাইরে যেতে হয়।