নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্য স্নোস অব কিলিমাঞ্জারো

১০ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৫

গতকাল দেখলাম হেনরি কিং নির্মিত 'দ্য স্নোস অব কিলিমাঞ্জারো' ছবিটি। 'দ্য স্নোস অব কিলিমাঞ্জারো' নামেই আর্নেস্ট হেমিংওয়ে গল্পটি লেখেন। গল্পটি প্রথম ১৯৩৬ সালের আগস্ট সংখ্যায় এস্কোয়ার ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়। পরে এই গল্পটি আর্নেস্ট হেমিংওয়ের 'দ্য ফিফথ কলাম অ্যান্ড দ্য ফার্স্ট ফোর্টি-নাইন স্টোরিজ' গল্প সংকলনে অন্তর্ভুক্ত হয়। যেটি প্রকাশিত হয় ১৯৩৮ সালে। এরপর ১৯৬১ সালে 'দ্য স্নোস অব কিলিমাঞ্জারো অ্যান্ড আদার স্টোরিজ' ছোটগল্প সংকলনে এটি পুনঃপ্রকাশিত হয়। আর ১৯৮৭ সালে গল্পটি আবার 'দ্য কমপ্লিট শর্ট স্টোরিজ অব আর্নেস্ট হেমিংওয়ে: দ্য ফিন্সা ভিগিয়া সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

'দ্য স্নোস অব কিলিমাঞ্জারো'-এর বাংলা হতে পারে 'কিলিমাঞ্জারোর তুষার'। আফ্রিকার সর্বোচ্চ পর্বত কিলিমাঞ্জারো। যার উচ্চতা ১৯ হাজার ৭১০ ফুট। এটির পশ্চিমপাশের সামিট পয়েন্টকে বলা হয় 'ঈশ্বরের ঘর' বা স্থানীয় ভাষায় 'এনজেজে এনজি'। এই শীর্ষ পয়েন্টে রয়েছে চিতাবাঘের শুকনো এবং হিমায়িত শব। কেন চিতাবাঘের গোরস্তান এত উঁচুতে, এটা অবশ্য বিশাল একটা রহস্য।

জনপ্রিয় ট্রাভেল রাইটার হ্যারি আর তার বান্ধবী হেলেন আফ্রিকার একটি সাফারি পার্কে আটকা পড়ে। কারণ হিপ্পি নদীতে ছবি তোলা ও শিকার করতে গিয়ে দলের এক নিগ্রো কুল নদীতে পড়ে গেলে, তাকে উদ্ধার করতে গিয়েই হ্যারি আহত হয়। এর আগে যুদ্ধের সময়ে হ্যারির গুলি খাওয়া আহত পায়ে নতুন করে আবার তখন সংক্রমণ ছড়ায়। এতে হ্যারির পায়ে গ্যাংগ্রিন হয়েছে। আর সে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে যাচ্ছে। খোলা আকাশের নিচে শুয়ে থাকা হ্যারি সারাক্ষণ তার জীবনে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা পরম্পরার স্মৃতি রোমান্থন করে। ফ্লাশব্যাকে আমরা তা দেখতে পাই। ওই সাফারি পার্কে বসেই হ্যারির চিকিৎসা চলতে থাকে। হেলেন তাকে সেবা দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করে।

ছবিতে হ্যারি চরিত্রে গ্রেগরি পেক, হেলেনের চরিত্রে সুসান হ্যাওয়ার্ড এবং সিন্থিয়া গ্রিন চরিত্রে আভা গার্ডনার অভিনয় করেন। খোলা আকাশের নীচে শুয়ে থেকে হ্যারি প্রায়শই উদাসীন অবস্থায় সিন্থিয়া গ্রিনের সাথে তার অতীতের সম্পর্কের কথা স্মরণ করেন। যার সাথে তিনি প্যারিসে 'হারানো জেনারেশন' এর সদস্য হিসাবে দেখা করেছিলেন। আর গাছে বসে থাকা শকুনগুলোকে দেখে, যে তারা হ্যারির মৃত্যুর জন্য কীভাবে অপেক্ষা করছে।

হ্যারির প্রথম উপন্যাসটি থেকে পাওয়া টাকায় সে একটি ভালো বাড়ি ভাড়া না নিয়ে বরং আফ্রিকার সাফারি পার্কে যেতে চান। সেখানে নানান জীবজন্তু দেখা ও শিকার করে আনন্দে কাটাতে চান। কিন্তু সিন্থিয়ার এসব খুব একটা ভালো লাগে না। সে চায় একটি বাচ্চার মা হতে। সিন্থিয়া যে গর্ভবতী এটি সে হ্যারিকে জানায় না। কিন্তু গর্ভের শিশুটি নষ্ট হয়ে গেলে হ্যারি তা জানতে পারে। কারণ তখন যুদ্ধে সাংবাদিকতা নিয়ে হ্যারি ভীষণ ব্যস্ত ছিল।

চরম হতাশায় ভুগতে থাকা সিন্থিয়া একসময় হ্যারিকে ছেড়ে বারের নৃত্যশিল্পী ফ্লেম্যানকো'র সাথে চলে যান। কারণ সে বিশ্বাস করতো যে হ্যারি যুদ্ধের সংবাদদাতার চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছেন। এদিকে হ্যারি এক ধন্যাঢ্ব কাউন্টারেস এলিজাবেথের সাথে জড়িয়ে পড়েন। যাকে নিয়ে তিনি কোট ডি-আজুরের সাথে সাক্ষাত করেন। কিন্তু এসব ঘটনার মধ্যেও তিনি এখনও সিন্থিয়ার স্মৃতি কিছুতেই মন থেকে তাড়াতে পারেন না।

তাদের বিয়ের প্রাক্কালে সিন্থিয়ার একটি চিঠি দেখিয়ে হিংসুক এলিজাবেথ হ্যারির সামনে চিঠি ছিড়ে ফেলেন। মাদ্রিদ থেকে সিন্থিয়া ওই চিঠি লিখেছিলেন। পরে হ্যারি এলিজাবেথকে ছেড়ে মাদ্রিদের ঠিকানায় সিন্থিয়াকে খুঁজতে চলে যান। মাদ্রিদে গিয়ে হ্যারি স্পেন সিভিল ওয়ারে যোগ দেন। সেখানে সিন্থিয়া একটি অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার ছিলেন। মাইন বিস্ফোরণে তার গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে। যুদ্ধের মধ্যে আহতদের উদ্ধার করতে গিয়ে সিন্থিয়ার সাথে হ্যারির আবার দেখা হয়। কমান্ডারের নির্দেশ না মেনে সিন্থিয়াকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিতে গিয়ে হ্যারি আবার নিজের দলের কমান্ডারের ছোড়া গুলিতে আহত হন।

যুদ্ধের পর হ্যারি আবার প‌্যারিস ফিরে আসে। সেখানে সেতুর উপরে দাঁড়িয়ে হ্যারি নদী দেখছিলেন। তখন হেলেনের সাথে তার দেখা হয় এবং সিন্থিুয়ার কথা যিনি তাকে মনে করিয়ে দেন। হ্যারির চাচা বিলের মৃত্যুর পর তার কাছ থেকে দান হিসেবে তিনি একটা চিঠি পান, যেখানে তাকে চিতাবাঘের একটি ধাঁধা দেয়া হয়। হ্যারি'র বারটেন্ডার তাকে পরামর্শ দেয় যে, চিতাটি মিথ্যা ঘ্রাণে নেমে সেখানেই শেষ হয়ে গেল এবং হারিয়ে গেল।

চিতাবাঘের ওই ধাঁধার উত্তর বের করার জন্য হেলেনকে নিয়ে হ্যারি কেনিয়ার একটি সাফারি পার্কে যায়। সেখানেই নদীতে আহত হবার পর গ্যাংগ্রিনে হ্যারির মৃত্যু দশা তৈরি হয়। একজন জাদুকরী ডাক্তারের সাথে তখন হেলেন লড়াই করেন। এবং জরুরী প্রাথমিক চিকিৎসার ম্যানুয়ালটি অনুসরণ করে তিনি হ্যারির পায়ের সংক্রমণ স্থানটি মুক্ত করার জন্য ক্ষতটি খুলে ফেলেন এবং গরম ছুরি দিয়ে সেটি কেটে ফেলেন। ভোরের দিকে একটি মেডিকেল টিম বিমানে করে সেখানে উপস্থিত হয়।

খোলা আকাশের নিচে একটি গাছে যে শকুনগুলো এতদিন ধরে হ্যারির মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করেছিল, ততক্ষণে তারা আর সেই গাছে নাই। এতদিন সেবা দিয়ে হেলেন যে হ্যারিকে সুস্থ করে তুলেছে শেষপর্যন্ত তা হ্যারি বুঝতে পারে।

ছবিতে দুর্দান্ত সব শট। আফ্রিকার জীবজন্তু ও সাফারি পার্ক এক মোহনীয় কাব্য রচনা করে। হ্যারীর জীবনের ঘটনাগুলো ফ্লাশব্যাকে অত্যন্ত মুন্সিয়ানার সাথে ছবিতে তুলে আনেন নির্মাতা হেনরি কিং। ২৫তম অষ্কারে ছবিটি দুইটি বিষয়ে নমিনেশন পায়। বেস্ট সিনেমাটোগ্রাফি কালার এবং সেট ডিরেকশন। মনে রাখার মত একটা ছবি 'দ্য স্নোস অব কিলিমাঞ্জারো'।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনার নিজের ফিল্মের কি অবস্হা?

১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৫৫

রেজা ঘটক বলেছেন: সেন্সর বোর্ডে ঝুলে আছে। ওদের এফডিসির ছাড়পত্র লাগবে। আর আমি ওটা দিব না বলে দিছি। এফডিসির ছাড়পত্রের লগে ৩ লাখ টাকার চাঁদাবাজি আছে। ওইটা আমি দেব না।

২| ১০ ই মে, ২০২০ রাত ৮:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: দাদা আমিও আজকাল প্রচুর মুভি দেখছি।

৩| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:২৯

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: সিনেমাটা দেখার চেষ্টা করব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.