নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
হোয়াট আ বিউটিফুল ডেড বডি
এই যে অসহায় বন্দুক? তাকান আমাদের দিকে।
আমরা আপনাকে চুমু খেতে এসেছি। বাবার বুক চুইয়ে
রক্ত না ঝরলে কিসের মধুমাস। আমরা টাটকা লাশের
উত্তরাধিকার। আপনি না থাকলে কোনদিনই বুঝতাম
না; জীবন থেকে মরণ উত্তম। মানুষ বেঁচে থাকে গণনায়
মরে থাকে নিরন্তর...
আমাদের বাড়িতে প্রতিদিন দুইটা ভোর। চার চারটা
দুপুর। অন্ধকারকে আমরা কাজল বলে ডাকি। বাবার
বুক আমাদের প্রিয় জলাশয়। আমরা সারাদিন
সেখানেই সাঁতার কাটি। আমাদের চিনতে পারছেন?
একবার তাকান অসহায় বন্দুক। আমরা আপনার
ট্রিগারে চুমু খেতে এসেছি।
কান্না সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। কিভাবে জানব
বলুন, মায়ার মলাটে বাঁধাই করা বাবার বুক। আমাদের
রোজকার পাঠ্যসূচি। সে বইয়ের পৃষ্টায় পৃষ্টায়
জোনাকির মতো অক্ষরগুলো উড়ে আর আমরা
লুঠোপুটি খাই। শোক সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না,
কিভাবে জানব বলুন, আমরা দুই বোন একরামুল
ফুলের গন্ধ...
অসহায় বন্দুক, আপনি একবার আমাদের বন্ধু হবেন?
আমরা বরফের দেশে চাঁদ দেখতে যাব। বাবার
বুলেটছিদ্র বুকে ছেড়ে আসব আফিমের মাছ...
২৯ মে ২০১৮ (পৃষ্ঠা ১৪)
কবি জুয়েল মোস্তাফিজের সর্বশেষ কবিতার বই 'হোয়াট আ বিউটিফুল ডেড বডি'র নাম কবিতা এটি। পেন্ডুলাম পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী আবিদ এ আজাদ। শিল্পী আশরাফুল হাসানের 'অ্যাগনি-২' পেইন্টিংস অবলম্বনে বইটির প্রচ্ছদ করা হয়েছে। ৮ ফর্মার (১২৮ পৃষ্ঠা) কাব্যগ্রন্থটির মূল্য রাখা হয়েছে ২২৫ টাকা।
বইটিতে মোট তিন পর্যায়ের কবিতা সংকলিত হয়েছে। প্রথম পর্বে ছোট কবর বড় কবর (পৃষ্ঠা ৯-৪৪), দ্বিতীয় পর্বে অস্ত্র একটা টুথব্রাশ (পৃষ্ঠা ৪৫-৮৬) ও তৃতীয় পর্বে রাষ্ট্র মরে ক্ষমতায় (পৃষ্ঠা ৮৭-১২৭) কবিতাগুলো বিন্যাস করা হয়েছে। মূলত ২০১৮ সালের ১৭ মে থেকে ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে জুয়েলের লেখা কবিতাগুলো 'হোয়াট আ বিউটিফুল ডেড বডি' বইটিতে স্থান পেয়েছে।
সমকালীন আধুনিক কবিতায় কবি জুয়েল মোস্তাফিজ একটি স্বতন্ত্র স্বর। জুয়েলের কবিতা পড়ে আমি অ্যানার্জি হান্ট করি। রাষ্ট্রের প্রচলিত অচলের বিরুদ্ধে জুয়েলের কবিতা আমাকে এই স্বদেশ সম্পর্কে নতুনভাবে চিন্তা করতে উসকানি দেয়। '''আমি' আর 'আমি' দুই হতে না পারা জোড়া খুন...'তুমি' আর 'তুমি' চার হতে না পারা বাউন্ডারি... 'তুই' আর 'তুই' গুইসাপের দাঁতের ফাঁকে চুইংগাম...''
জুয়েলের কবিতায় একটি মৌলিক শক্তি আছে। সেই মৌলকে আমি এড়াতে পারি না। অলস বিকেলে সেই উল্কাপিন্ডগুলো কুড়িয়ে কুড়িয়ে আমি কেবল নিজের কোচর ভরি। আর কোচর ভরতি হয়ে গেলে দু'হাতের তালুতে তাকিয়ে দেখি সেখানে কেবল তাজা রক্তের জমাট বাধা কালসিটে দাগ! ''দেশে লাগলে পোকা, মানুষ খায় ধোকা... তার শিশুর নাম হয় কবর...''
একদিন এই বাংলার আনাচে কানাচে শিউলি ফুলের আভায় ভরে উঠবে। তখন যদি তুমি হাত বাড়িয়ে কাছে ডাকো, তোমার চোখে চোখ রেখে বলব- ভালোবাসি। ''দুনিয়াটা মুনিয়া পাখির কাছে হেরে যাওয়া ফুটবল... তোমার ভূখণ্ডে আমরা জীবন; ব্লেডের ধারে রক্তের বসতি...''
হয়তো এসব আমাদের নিয়তি নতুবা চলমান বাস্তবতার ঘোর সংকট! পাখি উড়ে গেলে আমরা সবাই এক একটা বেওয়ারিশ লাশ! ''কার নদী কার বুকে বয়ে যায় রোজ? তোমার বুক আমার হাসপাতালের জরুরি বিভাগ... তোমার মুখ আমার সবুজ পেয়ারা... আমরা বুকের সমিতি, চুরি করি চোর, শান্তি রাখি বুকে...''
------------
রেজা ঘটক
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: সুন্দর হয়েছ
৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৯
এস সুলতানা বলেছেন: খুব সুন্দর কবিতা অন্য রকম ভালোলাগা
৪| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৮
অধীতি বলেছেন: আহ! কি বিষন্ন-সুন্দর কবিতা।
৫| ১৬ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৫:৫৭
সানাউল্লাহ সাগর বলেছেন: সুন্দর কবিতার বই। পড়েছি। সংগ্রহে আছে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:১১
রাজীব নুর বলেছেন: অন্য রকম সুন্দর কবিতা।