নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
সম্ভবত সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার। ২০০৭ সালের ১৭ নভেম্বর। সেদিন সঞ্জীবদার সাথে আমার শেষ দেখা। ধানমন্ডি বত্রিশ নাম্বারে আমরা তখন নিয়মিত আড্ডা দেই। রাপা প্লাজায় কিছু একটা দেখতে গিয়ে আমরা মিরপুর রোড ধরে হেঁটে হেঁটে বত্রিশ নাম্বারের দিকে আসছিলাম। সোবহানবাগ মসজিদের সামনে থেকে আসার সময় উল্টোপাশে ডেন্টাল কলেজের গেটে সঞ্জীবদা আমাদের আসতে দেখে দাঁড়িয়ে গেলেন! আমরা রাস্তা ক্রোস করে এপার এসে সঞ্জীবদার সাথে যোগ দিলাম। তারপর হেঁটে হেঁটে নিউ মডেল কলেজের সামনে এসে আমরা চা খেলাম। সঞ্জীব দা রিক্সা নিয়ে চলে গেলেন পান্থপথ ধরে। আর আমরা রাস্তা ক্রোস করে বত্রিশ নাম্বারে গিয়ে ধানমন্ডি নদীর পারে রেগুলার আড্ডায় যোগ দিলাম।
দুইদিন পর ১৯ নভেম্বর ২০০৭, সন্ধ্যায় আমাদের আড্ডায় শামীম ভাইয়ের (ভোরের কাগজের শামীম আহমেদ) মোবাইলে একটা ফোন আসলো। শামীম ভাই ফোন রেখেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন। জানলাম সঞ্জীবদা আর নেই! জলজ্যান্ত তাগড়া মানুষটা মাত্র দুইদিনের মাথায় নাই হয়ে গেল! আমরা তখনো কেউ বিশ্বাস করতে পারছিলাম না সঞ্জীবদা নাই! রাত বাড়ার সাথে সাথে ঘটনা সব জানা গেল!
সঞ্জীবদার সাথে আমার ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত প্রায় এগারো বছরের সম্পর্ক। সঞ্জীবদার মাধ্যমেই আমি প্রথম ভো্রের কাগজে লিখতে শুরু করি। পরে সঞ্জীবদা যখন দৈনিক যায় যায় দিনে যোগ দেন তখন তেজগাঁও যাযাদি অফিসে যেতাম ভালো ভালো সিনেমা দেখতে।
মাঝে মাঝে সঞ্জীবদা ফোন করে ডাকতেন। দুপুর বারোটার আগে গেলে একটা সিনেমা বেশি দেখা যেত। তখন সঞ্জীবদা যাযাদি অফিসে আমাকে লাঞ্চ করাতেন। বিকালে আরেক দফা সিনেমা দেখতাম। সঞ্জীবদা সবসময় ভেতরের ইচ্ছা শক্তিটাকে জাগিয়ে দিতেন। সবসময় বলতেন চেষ্টা কর, পারবি। প্রাণশক্তি বাড়িয়ে দেবার মত এমন বড় ভাই-বন্ধু আমি জীবনে খুব কম পেয়েছি।
সঞ্জীবদা ছিলেন বিরল গোত্রের ক্রিয়েটিভ মানুষ। সবসময় আমাদের মত কমবয়সীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে পছন্দ করতেন। বয়সে সঞ্জীবদা আমার চেয়ে পাঁচ বছরের বড় ছিলেন। আমাকে ডাকতেন তুই বলে আর আমি ডাকতাম তুমি। সেদিন রাসেল স্কয়ার থেকে রিক্সায় উঠতে উঠতে বলেছিলেন, টোকনাইরে কইস, ওর সিনেমাটা দেখতে চাই। টোকন ঠাকুরের নির্দেশনায় আমরা তখন ব্ল্যাকআউট নির্মাণযজ্ঞ মাত্র শেষ করেছি।
সঞ্জীবদার সাথে দেখা হলে কখন যে এক-দুই ঘণ্টা চলে যেত একদম টের পেতাম না। সঞ্জীবদার সাথে আড্ডায় আমি অনেক কিছু শিখতাম। সঞ্জীবদা প্রায়ই নতুন নতুন পরিকল্পনার কথা বলতেন। নতুন নতুন আইডিয়া দিতেন। আমরা হাভাতের মত সেসব গিলতাম। প্রতিবছর ১৯ নভেম্বর আসলে তোমাকে খুব মনে পড়ে দাদা। লাভ ইউ দাদা।
২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৩
অধীতি বলেছেন: ওনার গানগুলো অমৃতর মত।
৩| ২০ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:০১
স্থিতধী বলেছেন: সত্যিকারের বহুমুখী প্রতিভা বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে দুর্লভ। তিনি সেরকমই একজন ছিলেন।
৪| ২০ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৫৪
রাজীব নুর বলেছেন: দাদা পোষ্ট টি পড়ে ভালো লাগলো।
৫| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৪৬
কবিতা ক্থ্য বলেছেন: সেলুট সন্জীব দা।
৬| ০২ রা জুন, ২০২১ ভোর ৬:২৩
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: সঞ্জীব দা'র "আমি তোমাকেই বলে দেবো" গানটা অমৃতসম মনে হয়। দাদা তার গানে, তার কর্মে বেঁচে থাকবেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। ওপারে ভালো থাকুক।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:২৫
লর্ড ভ্যারিস বলেছেন: উনার "এই নষ্ট শহরে" "চল বুবাইজান" গান প্রতিদিন বেশ কয়েকবার শুনি। আর "আমি তোমাকেই বলে দেবো" ছাড়া তো কোনদিন পেটের ভাত হজম হবেনা। আগে তো জানতাম না উনি মারা গেছেন, শুধু গান শুনে যাইতাম। যখন জানতে পারছি উনি মারা গেছেন, কি যে খারাপ লাগছিলো।