নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

#বাংলাদেশের_স্বাধীনতার_সুবর্ণ_জয়ন্তী_ও_কিছু_এলোমেলো_ভাবনা!

২২ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:৫৫

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে দেশে নানান কিসিমের অনুষ্ঠান হয়েছে এবং হচ্ছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে ইতিহাসের নির্মোহ নিরপেক্ষ পুনঃপাঠ করার জন্য এবং নতুন প্রজন্মকে তা গ্রন্থ আকারে জানানোর জন্য কী সত্যি সত্যি কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে? এত হাজার হাজার অনুষ্ঠান, এসব তো কারো মনে থাকবে না! কারণ এসব অনুষ্ঠান প্রায় সবগুলোই জনবিচ্ছিন্ন অনুষ্ঠান। ৫০ বছরে নতুন প্রজন্মের হাতে আমরা আদতে কী দিলাম?

আমাদের একটি বাংলা একাডেমি রয়েছে, আমাদের একটি শিল্পকলা একাডেমি রয়েছে, আমাদের একটি জাতীয় জাদুঘর রয়েছে, আমাদের একটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় রয়েছে, অথচ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস এবং পরবর্তীকালের ৫০ বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, সাহিত্য, দর্শন, সামাজিক-রাজনৈতিক-ধর্মীয় ইতিহাস নিয়ে কী রাষ্ট্রীয়ভাবে অন্তত একটি মানসম্মত গ্রন্থ করার জন্য কেউ কোনো প্রয়োজন অনুভব করলো না? এটা কেমন সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন?

নতুন প্রজন্মের কাছে আমরা কী রেখে যাচ্ছি? আমি মনে করি- স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে অন্তত বিভিন্ন বিষয়-ভিত্তিক ৫০টি মানসম্পন্ন গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় গ্রন্থ প্রণয়ন করা উচিত ছিল। দেশে এত হাজার হাজার বুদ্ধিজীবী, এত হাজার হাজার উপদেষ্টা, কমিটি-উপকমিটি, এত হাজার হাজার ভুইফোঁড় সংগঠন, এত হাজার হাজার প্রকাশনা সংস্থা, এত কোটি কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় শ্রাদ্ধ, কোথাও নতুন প্রজন্মের জন্য ৫০টি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় বই প্রণয়ন করার উদ্যোগ চোখে পরলো না কেন?

শুধু বই কেন, বাংলাদেশের ৫০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে কেন ৫০টি চলচ্চিত্র বানানো হবে না? ৫০ বছরের অর্জনকে নিয়ে কেন ৫০টি পেইন্টিংকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে তালিকাভুক্ত করা হবে না? রাষ্ট্রীয়ভাবে কেন ৫০টি গানকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সংগীতের মর্যাদা দেওয়া হবে না? বিভিন্ন বিষয়ে কেন ৫০ জন বিশিষ্ট নাগরিককে নতুন প্রজন্মের কাছে আলাদাভাবে পরিচিত করানো হবে না?

৫০ জন কবি'র গুরুত্বপূর্ণ ৫০টি কবিতার কেন একটি সংকলন হবে না? ৫০ জন কথাসাহিত্যিকের গুরুত্বপূর্ণ ৫০টি উপন্যাসের কেন একটি সংকলন হবে না? ৫০ জন গল্পকারের গুরুত্বপূর্ণ ৫০টি গল্প নিয়ে কেন একটি সংকলন হবে না? ৫০ জন শিশুসাহিত্যিকের গুরুত্বপূর্ণ ৫০টি লেখা নিয়ে কেন একটি সংকলন হবে না? ৫০ জন গবেষকের গুরুত্বপূর্ণ ৫০টি গবেষণা নিয়ে কেন একটি সংকলন হবে না?

এরকম ৫০-এর গুণিতক অসংখ্য আইডিয়া নিয়ে আমরা প্রচুর গ্রন্থ সংকলন করার উদ্যোগ নিতে পারতাম। নতুন প্রজন্মের কাছে এই গ্রন্থগুলো অমূল্য সম্পদ হতে পারতো। বাংলাদেশ কীভাবে স্বাধীনতা অর্জন করলো, বীরবাঙালির কোথায় কোথায় কি কি অবদান, আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি এবং ৫০ বছরের অর্জনকে নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রন্থ আকারে তুলে ধরার দায়িত্ব ছিল স্বয়ং রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র ব্যর্থ হলে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এ ধরনের গ্রন্থ হতে পারতো।

৫০ বছরে আমাদের সাংবাদিকতার ইতিহাসের কেন একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকলন থাকবে না? আমরা নতুন প্রজন্মের পড়ার জন্য কী কিছুই করার পরিকল্পনা রাষ্ট্রীয়ভাবে করতে জানি না, নাকি করতে পারি না? নাকি আমাদের বইয়ের প্রতি কোনোই আগ্রহ নাই? নাকি নতুন প্রজন্ম ভীনদেশি গবেষকদের লেখা বই সংগ্রহ করে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভবিষ্যতে জানবে বলেই আমরা ধরে নিয়েছি?

আমরা কী বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে নতুন প্রজন্মকে অন্তত ৫০টি গুরুত্বপূর্ণ বইয়ের সংকলন উপহার দিতে পারি না? তাহলে এত হাজার হাজার অনুষ্ঠান, কোটি কোটি টাকার শ্রাদ্ধ সবতো দিনশেষে কারো মনে থাকবে না! বইয়ের প্রতি একটি জাতি যতক্ষণ মনোনিবেশ করতে না জানবে, ততদিন সেই জাতি পিছিয়ে থাকবে। মনে রাখবেন- বইয়ের ক্ষমতা যে কোনো শাসকের ক্ষমতার চেয়ে কয়েক হাজার গুণ বেশি।

২২ জুলাই ২০২১
ঢাকা

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:৪০

সাসুম বলেছেন: রেজা দা আপনার সাথে একমত নই এখানে।

বাংলাদেশের মানুষ যেহেতু সৎ নয়, সো এই দেশের সরকার বা রাজনৈতিক দল যখন গ্রন্থ বা সিনেমা বানাবে তাতে সত্যের চেয়ে মিথ্যের প্রলেপ থাকবে বেশি, তাতে গর্বের যায়গা গুলো তুলে না ধরে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কে হেয় করবে।

ধরেন, আমাদের তথ্যমন্ত্রীর কাছে সিনেমা ছাড়পত্র নিতে গেল- উনি বলে দিলেন সিনেমায় ঢুকিয়ে দিতে হবে যে করেই হোক- তারেক রহমান রাজাকার। এখন আমাকে বলেন এটা কিভাবে পসিবল??

এতে করে সরকারের টাকার শ্রাদ্ধ হওয়া ছাড়া আর কি হবে? এভাবে কি ইতিহাস ধরে রাখা যাবে? ইতিহাস তাকেই মনে রাখে যে সত্য বয়ান করে। যা সুন্দর তা হাজার বছর পরে হলেও বের হয়ে আসবে।

বাংলাদেশে এখন সরকারি ভাবে এমন কিছু করা মানে আরো ইতিহাস কে নস্ট করা আর হাজার হাজার কোটি টাকার শ্রাদ্ধ।

দেশে হাজার কোটি টাকা খরচ করে ওয়েব সাইট আর এপ্স করা হয়েছিল সরকারি ভাবে :) জাস্ট একটা উদাহরন দিলাম।

২| ২২ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:৫৭

রেজাউল করিম ফকির বলেছেন: ‌উক্ত উদ্যোগগুলোর জন্য গবেষণা প্রয়োজন। গবেষণা হয়ে থাকে মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ে। উক্ত একাডেমীগুলোতেই গবেষণা হতে পারে। জাতীয়ভাবে গবেষণা বিমুখতা ও গবেষণা কার্যক্রমকে পাশ কাঁটানোর নানান চাতুরী ও চাটুকারিতা বিস্তৃতি, তাকে সমর্থন করতে অপরাজনীতি ইত্যাদি মিলে উক্ত উদ্যোগগুলো দেখা যায় না।

৩| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৮:৫৯

কবিতা ক্থ্য বলেছেন: ভাই স্বাধীনতা কি জিনিষ?
খায় নাকি মাথায় দেয়?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.