নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

১৫ আগস্ট ২০২১!

১৬ ই আগস্ট, ২০২১ ভোর ৪:৪৫

পৃথিবীর ইতিহাসে একটি ঘটনা বহুল দিন। ৪৬ বছর আগে এই দিনে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর আবার পেছনে হাঁটা শুরু করেছিল। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বংশধরেরা ছদ্মবেশে আওয়ামী লীগের সাথে এমনভাবে মিশে গেছে যে এখন আর চেনার উপায় নাই কার মনে কী!

সরকারী কর্মচারীদের এখন আর চেনার উপায় নাই এরা আওয়ামী কর্মী নাকি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী! অফিসের কাজ হোক বা না হোক নিজেকে খাঁটি আওয়ামী বান্দা শো-অফ করতে করতে এদের দশা অনেকটা হাফ-মাওলানার মতো! না ঘরকা না ঘাটকা! আজ তালেবানদের কাছে কাবুলের পতনে বাংলাদেশের বিশাল সংখ্যক মানুষ এত বেশি খুশি হয়েছে যে, করোনা মহামারী না থাকলে, আর কাকতালীয়ভাবে আজ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হওয়ার কারণে, প্রকাশ্যে সেই আনন্দ মিছিল করতে পারেনি!

তবে দিনটি যদি কোনো কারণে শুক্রবার হতো, তাহলে তালেবানদের বিজয়ে বাদ জুমা বায়তুল মুকাররমে যে জোস দেখা যেত, তা রবিবার হওয়ার কারণেই বরং ঘটে নাই। কিন্তু গোটা স্যোশাল মিডিয়ায় বাংলাদেশ থেকে যে আনন্দ শিৎকার উচ্চারিত হয়েছে, তা বরং এই দিনের শোককে আরো নতুন শংকায় উদ্বেগ জাগিয়েছে।

দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশের মাটিতে যারা 'বাংলা হবে আফগান' শ্লোগান দিয়েছে, তাদের আস্ফালন ফিবছর বেড়েছে। তালেবানরা নারীদের বোরখা পরতে বাধ্য করে, সেই বাধ্যবাধকতা এখানে বিপ্লব ছাড়াই ৭০ ভাগ কার্যকর হয়েছে। এখন দেশের শিক্ষিত মেয়েরাও বোরখা পরে। বিশেষ করে বিগত ২০ বছরে এটা সংক্রামকের মত বেড়েছে!

আফগানিস্তানের দখলকৃত কয়েকটি প্রদেশে ইতোমধ্যে তালেবান যোদ্ধারা ব্যাংকের আফগান নারীদের বাড়িতে থেকে আত্মীয়দের অফিস করতে নির্দেশ দিয়েছে। বাংলাদেশে 'পরীমণি' ইস্যুতে আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, গণমাধ্যম এবং পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা 'পরীমণি'র উপর যে মিডিয়া ট্রায়াল করছে, তা তালেবান থেকেও বরং জঘন্য ও ভয়ংকর!

বিভিন্ন সংখ্যালঘু ইস্যুতে 'বাংলা-আফগানি'দের তেজ দেখলে বোঝার উপায় নাই এই দেশটি মাত্র ৫০ বছর আগে এক রক্তস্নানের মাধ্যমে ধর্ম নিরপেক্ষতার স্বভাবে স্বাধীন হয়েছিল! সর্বশেষ প্রমাণ খুলনার রূপসার ঘটনা। এ ধরনের ঘটনায় সরকার প্রত্যেকটি ইস্যু দায়সারাভাবে ধামাচাপা দিয়েছে। কোনো ঘটনার আজ পর্যন্ত বিচার হয়নি।

রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহারের সুযোগের কারণে দেশের এযাবত সরকারগুলো কোনো ঘটনা নিয়ে বিচার করার সামর্থ্য দেখায়নি। একাত্তরের পাকিভূতের সাথে বরং তালেবানি দোসর যুক্ত হয়ে এই গ্রুপ ইতোমধ্যে অনেক শক্তি কায়েম করেছে। কাবুলের পতন তাই ভবিষ্যতে ঢাকা পতনকে যে ত্বরান্বিত করবে না, সেই আশংকা এখন আর মোটেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না!

ইতোমধ্যে পাঠ্যপুস্তকে তারা নিজেদের পছন্দকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তালেবানদের হাতে কাবুলের পতন গোটা দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রদায়িকতাকে গভীর সংকটে ফেলবে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। ১৯৭৫ সালের ৩০ এপ্রিল ভিয়েতনামের সায়গন থেকে মার্কিন দূতাবাস কর্মীরা যেভাবে মার্কিন নৌবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে পালিয়েছিল, ৪৬ বছর পর ১৫ আগস্ট ২০২১ সালে কাবুলের মার্কিন দূতাবাসের কর্মীরা একইভাবে হেলিকপ্টারে করে পালিয়েছে।

মার্কিনীদের এই দুটি দৃশ্য দেখতে অবিকল একইরকম হলেও প্রথমটি ছিল ভিয়েতনামের বিপ্লবী কমিউনিস্টদের বিপক্ষে আর দ্বিতীয়টি খোদ মার্কিনীদের একসময়ের মিত্র, যাদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে তালেবান বানানো হয়েছিল আফগান মাটি থেকে রুশ সেনাদের হঠাতে, যাদের সাথে চুক্তি অনুযায়ী অনেকটা রক্তপাতহীনভাবে তারা কাবুল ছেড়েছে। ফলে মার্কিনীদের সাথে তালেবানদের এবারের চুক্তিতে দক্ষিণ এশিয়ায় তালেবানদের উত্থান হওয়ার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দৃশ্যমান।

১৫ আগস্ট ভারত পালন করেছে ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস। একই দিনে কাবুলের পতনের পেছনে মার্কিন গোয়েন্দাদের ব্যর্থতা অনুমান করাটা হবে বোকামি! ১৫ আগস্টের সাথে ভারত ও বাংলাদেশের ইতিহাসের যে বিজয় ও বিয়োগান্তক সম্পর্ক, সেখানে একই দিনে আফগানিস্তানে বিজয় উৎসবের পেছনে একটি গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে পেন্টাগনের। আর সেই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব অনুযায়ী, এবার মধ্যপ্রাচ্যের পরিবর্তে পেন্টাগনের দৃষ্টি দক্ষিণ এশিয়ার দিকেই।

আমেরিকার 'শত্রু-মিত্র খেলা' পেন্টাগনের বহু পুরনো থিউরি। আইএস, তালেবান, লাদেন, নাইন-ইলেভেন সবই আমেরিকার তৈরি। পশ্চিমা মিডিয়ার একযোগে প্রচারে গোটা বিশ্ববাসী একসময় সেই প্রচার বিশ্বাস করে। ইরাকে খেলা শেষ, সিরিয়ায় খেলা শেষ, আফগানিস্তানে খেলা শেষ, এবার দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন কোনো পিক-পয়েন্টের রোডম্যাপ পেন্টাগনের হাতে।

রোহিঙ্গা ইস্যুকে যতই ঠুনকো মনে করা হোক না কেন, আগামীতে এই রোহিঙ্গারা হতে পারে এদেশের সবচেয়ে ভয়ংকর তালেবান। বিশ্বাস না হলে দশ-বিশ বছর পর মিলিয়ে দেখবেন! কাবুলে ন্যাক্কারজনক পরাজয়ের পর জো বাইডেন প্রশাসন রিপাবলিকানদের কাছ থেকে বড় কোনো সমালোচনা বা তাচ্ছিল্যের মুখোমুখি হয়নি। বরং ক্ষমতায় আসার দেড় বছরের মধ্যে ২০ বছরের যুদ্ধের শেষপ্রান্তে বাইডেন প্রশাসন নিজেদের গায়ে যে সায়গনের মত গ্লানিকর ছিলছাপ্পর লাগালো, সেখানেই লুকায়িত ১৫ আগস্টকে ঘিরে আগামীতে এ অঞ্চলে ষড়যন্ত্রের নতুন আখ্যান!
-------------------
১৬ আগস্ট ২০২১

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই আগস্ট, ২০২১ ভোর ৫:০০

চাঁদগাজী বলেছেন:



লেখার শুরু থেকে শেষ অবধি আসতে আসতে জ্ঞানটা ফুরায়ে গেছে।

২| ১৬ ই আগস্ট, ২০২১ সকাল ৭:৫১

বিজন রয় বলেছেন: সত্যি হলেও হতে পারে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.