নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা কোন সভ্যতার দিকে যাচ্ছি!

১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ৩:৫৬

১৬ অক্টোবর ছিল লালন সাঁইজির ১৩১তম তিরোধান দিবস। সরকার বাহাদুর এবার লালন উৎসব করতে দেয়নি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এদেশে লালন উৎসব করা গেল না। শারদীয়া দুর্গাপূজায় এবার বিগত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধরনের হামলা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। তাহলে বঙ্গবন্ধু'র জন্মশত বর্ষে বাংলাদেশ কতদূর অগ্রগতি লাভ করলো?

মন্দিরে নামাজের সময়সূচি টানিয়ে দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি দেখানো কোন ধরনের সম্প্রীতির মধ্যে পড়ে? দেশের কোনো মসজিদে কী কেউ পূজার আরতীর সময়সূচি টানিয়ে সম্প্রীতি দেখাতে গিয়েছে? তাহলে মন্দিরে নামাজের সময়সূচি টানাতে হবে কেন? দেশে ছাগল লালন-পালন করতে করতে এখন সেসব উগ্রবাদী ধর্মান্ধ বলদের দল নানান কিসিমের ষড়যন্ত্র করছে!

এ কোন বাংলাদেশে আমরা বসবাস করছি? বাংলাদেশের সংবিধান, সামাজিক বাস্তবতা এবং মানুষের আচরণ গোটা দেশকে সংখ্যালঘু এবং সংখ্যাগুরুতে ভাগ করেছে। একটি সভ্য দেশে এধরনের সংখ্যালঘু শব্দটি কেন স্থান পাবে? রাষ্ট্র তাহলে দেশের সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করার সকল পথ থেকে কী ধীরে ধীরে পেছনের দিকে হাঁটছে? সকল নাগরিকের সমান মর্যাদা কেন থাকবে না?

আমরা রামু'র ঘটনা থেকে কোনো শিক্ষা নেই নাই। আমরা নাসিরনগরের ঘটনা থেকেও কোনো শিক্ষা নেই নাই। আমরা লামা'র ঘটনা থেকেও কোনো শিক্ষা নেই নাই। আজ পর্যন্ত দেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার একটি ঘটনারও কোনো সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হয় নাই। সংখ্যালঘুদের উপর হামলা করলে এদেশে কোনো বিচার হয় না। এই সত্য ধর্মান্ধরা জেনে গেছে বলেই কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ঢাকায় বারবার সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হচ্ছে।

সরকার বাহাদুর মুখস্ত বুলি দিয়ে সকল দায় জামায়াত-শিবিরের উপর চাপাতে চায়। অথচ এই ধরনের হামলার ঘটনাগুলোতে বাংলাদেশের সরকারি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতের ও বাইরে প্রচ্ছন্ন ও প্রকাশ্যে হামলাকারীদের লালন-পালন করার ইতিহাস বিদ্যমান। নাসিরনগরের হামলার আসামীকে সরকারি দল থেকে নির্বাচনে প্রার্থীও করা হয়েছিল। তার মানে হামলাকারীরা শাস্তির বদলে পুরস্কার পেয়ে অভ্যস্থ!

আদতে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ করার জন্য সরকারের কোনো জিরো টলারেন্স নীতি নেই। উল্টো হামলাকারীরা মাঝে মাঝে লোকদেখানো গ্রেফতার হলেও জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার এলাকায় গিয়ে সংখ্যালঘুদের হুমকি দেয়। এ এক লাগাতার নির্যাতন-নিপীড়নের ক্রনিক্যাল ইতিহাস। যার শুরু ১৯৪৬ সালের ১৬ জুন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ' 'ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে'-তে আর এখনো তা এদেশে ৭৫ বছর ধরে বিদ্যমান। রাষ্ট্র এখানে পুরোপুরি দর্শকের ভূমিকায়।

নোয়াখালীতে সনাতন ধর্মের লোকজন যখন প্রতিবাদ মিছিল বের করেছে, সেখানে তখন ১৪৪ ধারা জারী করা হয়েছে। অথচ প্রতিটি হামলার ঘটনার সময়ে পুলিশ দর্শকের ভূমিকায় নিস্ত্রীয় থেকেছে। কুমিল্লার ঘটনার পর ২২ জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হলেও সংখ্যালঘুদের উপর হামলা বন্ধ হয়নি কেন?

শুক্রবার একই দিনে প্রতীমা বিসর্জন আর জুমা ছিল। সনাতন ধর্মের লোকজন সংঘর্ষ এড়াতে জুমা'র সময়টিতে বিসর্জনের কাজে বিরত থেকেছে। কিন্তু জুমার পর আবার কেন মন্দিরে মন্দিরে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা ঘটলো? প্রশাসন তাহলে কী করেছে? আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা তাহলে কী ধরনের সংবাদ সংগ্রহ করে যে তারা এসব সুপরিকল্পিত হামলার বিষয় একদম টেরই পেল না?

আদতে সরকার চাইলে এসব হামলা বন্ধ করা একদম মামুলি ব্যাপার। কিন্তু এটা নিয়ে রাজনীতি করার খাসিলতের কারণেই এদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা-নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ হয় না। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও এখানে সংখ্যালঘুদের অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হচ্ছে। যা কোনো সভ্য দেশে হতে পারে না। বাংলাদেশ ২০২১ সালের অক্টোবরে একটি অসভ্য দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে নিজের পরিচয় নতুন করে আবারো তুলে ধরেছে। আর সরকার কার্যত প্রশাসন এবং রাজনৈতিক দু'ভাবেই এসব জঘন্য অসভ্যতা ঠেকাতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।

আর আমাদের গণমাধ্যম এই সংবাদ প্রচার না করে যে মিথ্যাচার ও নিরব দর্শকের আসন নিয়েছে, তা গোটা মিডিয়া দুনিয়ার জন্য একটি ঐতিহাসিক অসভ্যতা হিসেবে ইতিহাস হয়ে রইলো। যুদ্ধের খবরও প্রচারিত হয় কিন্তু এদেশে সংখ্যালঘুদের উপর সিরিজ হামলার ঘটনা গণমাধ্যমে প্রচার করা হয় না অথবা সরকারিভাবে তা সেন্সর করা হয়। দেশের সংবাদপত্রের যে স্বাধীনতা নাই তা আবারো শারদীয়া দুর্গাপুজার সময়কার এই ন্যাক্কারজনক অধ্যায়ে প্রমাণিত হয়েছে।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ ভোর ৪:১৪

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: তাহলে মন্দিরে নামাজের সময়সূচি টানাতে হবে কেন?
..................................................................................
আমরা বারবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলী হচ্ছি
এই ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে ।

২| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ ভোর ৫:৩৭

চাঁদগাজী বলেছেন:




পরগ্রেসিভ নাগরিকেরা কিছু করতে পারবে এই ব্যাপারে?

৩| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৮:৩৭

কামাল১৮ বলেছেন: মন্দিরে এইজন্য টানাতে হবে,দুই দিন পরে এটাই মসজিদ হবে।

৪| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৪৭

আমার চিরকুট বলেছেন: মন্দিরে নামাজের সময় সূচি টানানোর ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে?

কামাল১৮ বলেছেন: মন্দিরে এইজন্য টানাতে হবে,দুই দিন পরে এটাই মসজিদ হবে।
কেন এমন মনে হলো আপনার! এমন কোন ঘটনা কি ঘটেছে?

৫| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:৪৫

কামাল১৮ বলেছেন: আমিতো বলিনি ঘটেছে,পরে ঘটবে।মহা কালীর স্থান হয়ে গেছে মহা খালি।এমন হাজারো ঘটনা আছে,ইতিহাস খুঁজলে পাওয়া যাবে।

৬| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:১২

রাজীব নুর বলেছেন: মসজিদে নামাজের সময় সূচী টানানো হয়েছে কারন, তখন যেন ঢাক ঢোল বন্ধ রাখে। আযান এবং নামাজকে সম্মান জানানো হয়েছে।

৭| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:৩৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আজ এত দিন হলো কে কোরান মূর্তি উপর রাখলো তা বাহির করতে পারলো না। অথচ এক দল অন্য দলকে দোষ দিয়ে যাচ্ছে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.