নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রিয় মালতী মুগ্ধ করার মত এক ছবি!

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৫৭

আজ বসুন্ধরা সিনেপ্লেক্সে দেখলাম ফ্রেম পার সেকেন্ড ও ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি প্রযোজিত ও তরুণ নির্মাতা শঙ্খ দাশগুপ্ত পরিচালিত ছবি 'প্রিয় মালতী'। অনেকদিন পর, আরো সুস্পষ্ট করে বললে বলব, পান্‌থ প্রসাদের 'সাবিত্রী' ছবি দেখার পর, আরো একটা ভালো বাংলা ছবি আজ দেখলাম। আর এটা নিঃসন্দেহে তরুণ নির্মাতা শঙ্খ দাশগুপ্ত-এর 'প্রিয় মালতী'। এই ছবি দেখে আমি সত্যি সত্যি মেহজাবিনের অভিনয়ের প্রেমে পড়ে গেছি! এত সুন্দর সাবলিল অভিনয়। আহা!

শঙ্খ গল্পটা যেভাবে বুনট করেছেন, এককথায় অসাধারণ লেগেছে আমার। ছবিতে শঙ্খ সাম্প্রতিক নাগরিক জীবনের বিশেষ করে রাজধানী ঢাকার নাগরিক সমস্যাকে অত্যন্ত মুন্সিয়ানায় তুলে ধরেছেন, যা এককথায় দুর্দান্ত। গল্পটা সুন্দর আর কর্তৃপক্ষকে নানান বিষয়ে প্রশ্ন করার স্পর্ধা দেখিয়েছেন নির্মাতা। নির্মাণে দারুণ দারুণ সব এক্সপারিমেন্ট আছে, আর গল্পের বুনটে দারুণ দারুণ সব বাক আছে। গল্পের ব্লেন্ডিং আমার দারুণ পছন্দ হয়েছে। এসব নিয়ে আমি শঙ্খ'র সাথে দারুণ একটা আড্ডা দিতে চাই।

ক্যামেরার চলাফেরা চমৎকার। বরকত হোসেন পলাশের ক্যামেরার কাজ আমার পছন্দ হয়েছে। সজিব রঞ্জন বিশ্বাস ও রাজেস সাহার সাউন্ড ব্লেন্ডিংও দারুণ ছিল। লোকেশান সাউন্ডে নাহিদ মাসুদ দারুণ দক্ষতা দেখিয়েছেন। সালেহ সোবহানের সম্পাদনা চোখে পড়ার মত। রুসলান রেহমানের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বেশ মন কেড়ে নেবার মত। শঙ্খ দাশগুপ্ত-এর চিত্রনাট্য ও সংলাপ দারুণ ছিল। অভিনেতাদের গল্পের প্রয়োজনে চরিত্রের সাথে নিজেদেরকে মানিয়ে নেবার দক্ষতাও সুন্দর।

ছবিতে শঙ্খ এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত নারীর জীবনে ঘটে যাওয়া নাগরিক সেবার জটিলতাজনিত ঘটনায় সৃষ্ট বিড়ম্বনার ঘটনাবলী অত্যান্ত দক্ষতার সাথে চিত্রায়িত করেছেন। বরিশালের আঞ্চলিক ভাষা পলাশের বাবার চরিত্রে আজাদ আবুল কালাম দারুণ মুন্সিয়ানায় প্রকাশ করেছেন। এককথায় বলতে গেলে ছবির মালতী চরিত্রের অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী'র পর আমি সবচেয়ে বেশি নম্বর দেব অভিনেতা আজাদ আবুল কালামকে। রাজ্জাক চরিত্রে (পলাশের বন্ধু চরিত্রে) শাহজাহান সম্রাটকে একটু আলাদা করে নম্বর দিতে হবে। যদিও শুরুতে সম্রাটের মধ্যে কিছুটা জড়তা ছিল! কিন্ত দিনশেষে এককথায় চৌকশ অভিনয় করেছেন সম্রাট।

মেহজাবীন চৌধুরী'র শুধু একটা দৌড় ছাড়া বাকিটা একদম চরিত্রের সাথে হান্ড্রেড পারসেন্ট মিলে গেছে। মালতী চরিত্রে মেহজাবীন চৌধুরী সত্যি অসাধারণ অভিনয় করেছেন। সাধু সাধু।

এছাড়া নাদের চৌধুরী, শহীদুল আলম সাচ্চু, আনিসুল হক বরুণ, রিজভী রিজু, মোমেনা চৌধুরী, সমু চৌধুরী এরা সবাই চরিত্রের সাথে যথেষ্ঠ সাবলিল ছিলেন। এদের সবার অভিনয় আমাকে মুগ্ধ করেছে। ছবির দৃশ্যায়ন, কাহিনী এবং পাত্রপাত্রীদের অভিনয় আমাকে সত্যি মুগ্ধ করেছে। সিনেমা দেখার সময় বারবার আমার পুরান ঢাকার নীমতলীর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সেই দুঃসহ স্মৃতির কথা মনে পড়েছে। ছবিতে পলাশ ও মালতীর জীবনের ঘটনা পরম্পরা আমাকে সেই দুঃসহ যন্ত্রণায় বারংবার বিদ্ধ করেছে!

সাধারণত একটা সিনেমা একবার দেখেই কিছু লেখা ঠিক না। ১১৯ মিনিট দৈর্ঘের 'প্রিয় মালতী' দেখার পর এই লেখা আমার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া। ছবিটি আমি আরো কয়েকবার দেখতে চাই এবং নির্মাতা শঙ্খ'র সাথে এই ছবি নিয়ে আমি দীর্ঘ আড্ডা দেবার আকাঙ্খা পোষণ করি।

ডেব্যু সিনেমার জন্য প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ নির্মাতা শঙ্খ দাশগুপ্তকে আমার সুতীব্র উষ্ণ আলিঙ্গন ও প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। 'প্রিয় মালতী' টিমের জন্য শুভ কামনা। জয় হোক বাংলা সিনেমার। জয় হোক 'প্রিয় মালতী'র।

ছবি দেখার পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া
২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

রেজা ঘটক
কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.