![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রিয় বন্ধু .. প্রিয় সত্ত্বা .. সবচেয়ে আপন - গল্পের বই .. সাদা কাগজ আর কলম .. নিজেকে যখন মূল্যহীন মনে হয় তখন শুধু কলম চালিয়ে যাওয়ার জন্যই বাঁচতে ইচ্ছে করে ..
সাবধানে কিন্তু খুব দ্রুত। স্নেহা পথ চলতে থাকে। তার লক্ষ্য আঁধার ঘনিয়ে আসার আগেই বাসায় পৌঁছা। এক বছর আগেও চিরপরিচিত এ গলিটাকে অনেক নিরাপদ মনে হতো তার। কিন্তু এখন এই গলি ঘিরেই যতো ভয়। সাদা এপ্রোন আর সাইড ব্যাগটাকে চেপে ধরে স্নেহা। নিরাপত্তা যেখানে নিম্ন সেখানে সতর্কতাই একমাত্র উপায়।
এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ছাত্রী স্নেহা পরিচিত মহলের সবার কাছে একটা প্রিয় মুখ। তার অসাধারণ লিখনী শক্তি আর স্পষ্টবাদীতা সবার কাছেই প্রশংসনীয়। তবুও স্নেহার ভয় ক্ষমতার আসনে অধিষ্ঠিত একটি কালো হাতকে।
মিসবাহ আজাদ – কেউ বলে সে এতোবার হজ করেছে যে তার নসীবে দোজখ দর্শনও নাই। আবার কেউ বলে হজের নামে সোনা চোরাচালান আর এই ব্যবসাই তার কাজ। এলাকায় তার প্রতিপত্তি প্রভাব দুটোই অসীম।তার ভিতরের খবর কেউ জানে না – কেমন যেন ধোঁয়াশার মতো সবকিছু্।
কলেজে থাকাকালীন যৌতুক বিরোধী এক সামাজিক সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে স্নেহা আর তার বান্ধবীরা কিছু প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছিল। স্নেহা জানতো লোকগুলো মিসবাহ আজাদের ডানহাত। তবু সে চুপ করেছিল ব্যাপারটা বুঝে উঠার জন্য। পরের মাসে এই মিসবাহ আজাদ ই যৌতুকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। খুব তামাশা করে স্নেহা সবার সামনে তাকে বলেছিল "এ মাসে বুঝি আপনার মেয়ের বিয়ে?" নিতান্ত কৌতুকটাই যে বাস্তবতার সাথে মিলে যাবে আর স্নেহার সরল পথের কাঁটা হবে – এটা জানলে হয়তো সে মিসবাহ আজাদের ভুরু কুঁচকে দিতো না সেদিন।
"কিরে পড়ায় মন নাই তোর? খালি এঘর ওঘর ঘুরছিস!"
"পড়ছিই তো আম্মু"
কিন্তু স্নেহা পড়ছে না। তার মনে বার বার একটাই চিন্তা -আয়েশা গেল কোথায়!!
এরকম অনেক আয়েশাকে সমাজে দেখা যায় যারা সহায় সম্বলহীনা। গ্রাম ছেড়ে শহরে আসে কিছু একটা করে বাঁচার জন্য। হয়তো বাঁচে অথবা বেঁচেও মৃত থাকে। কিন্তু স্নেহার কাছে আয়েশাকে মনে হয়েছিল দৃঢ় প্রত্যয়ী। প্রথম কয়েকদিন সে মেয়েটাকে দেখতো তাদের বাসার আশেপাশে ঘুরতে,কাজের সন্ধানে। খুব মায়া লাগে স্নেহার। সে কাজের ব্যবস্থা করে দিতে পারে না,কিন্তু একটা উপায় তো দেখাতে পারে। আজই আয়েশার দেখা করার কথা ছিল-কিন্তু সে নেই।
আলোছায়া - ছোটবেলা থেকে স্নেহা বড় হয়েছে এই দোতলা বাড়িতে। আর সবসময় শুনেছে তাদের পাড়ার আশে পাশে একটা বড় বস্তি আছে। কিন্তু গুগল ম্যাপে যতোবার সে এই শহরটাকে দেখেছে; সবজায়গায় শুধু উন্নত অবকাঠামো।"বড় বস্তি" থাকতে পারে এমনটা তার মনে হয় না। আগে মনে হতো খেটে খাওয়া মানুষগুলো বোধহয় ওই এলাকা থেকে আসে। কিন্তু না,তাদের গন্তব্য ভিন্ন।
আলোছায়ার বারান্দায় দাঁড়িয়ে স্নেহা ভাবতে থাকে এই স্থবির আবাসনটার কথা। কতোবার কতোদিন সে কতোমুখ দেখেছে। কিন্তু কয়েকদিনের মাঝে তারা অদৃশ্য হয়ে যায়। আয়েশা যেভাবে হলো… হয়তো আরো আয়েশা আসবে তাদের পাড়ায়। এ গলি ও গলি ঘুরবে আর বলবে "আপা কাজের লোক রাখবেন?"
বিকেল থেকেই শফিকুল ইসলাম এর গুমোট বসে থাকা দেখে স্নেহা কাছে যাবার সাহস পায় না। বাবাকে সে ভয় পায় না,হয়তো কাউকেই না,কিন্তু রক্ষণশীল পরিবারে বাবার এক একটা শাসন আর নিয়মকে সে ভয় পায়। হয়তো বাবা এমন কিছু বলবে – স্নেহা না পারবে মানতে ; না পারবে অবাধ্য হতে।
কলেজে থাকতে যে যখন ব্লগে লেখা শুরু করেছিল; সবাই অনেক উৎসাহ দিয়েছিল। বাধা হয়ে দাড়িয়েছিল তার বাবা।
"তুমি একটা মেয়ে; এই সমাজে কি দরকার ব্লগার হওয়ার? তুমি রাজীব কে দেখো নি? অভিজিৎকে দেখো নি? ওয়াশিকুর - নিলয় - দীপন এদের ইতিহাস কি তোমার অজানা? আর যেনো কখনো না শুনি তোমার এসব।"
বাবার এমন কথায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে স্নেহা। গুগল ট্রানস্লেটে ব্লগার শব্দের অর্থ দেখায় "মাইরালা"! কি আজব! স্নেহা কয়েকবার যোগাযোগ করতে চেষ্টা করে এটা সংশোধনের জন্য। হ্যাঁ সে ব্লগার। তবে সে সমাজের কুসংস্কার আর প্রতিবন্ধকতাকে মেরে ফেলবে। কি করে বাবাকে বুঝাবে সে- তার ব্লগ মানুষের জীবন আর মনঃস্তাত্বিক বিষয় নিয়ে। সে মানুষের সুখ-দুঃখ; বাস্তব আর অলীকের মাঝে সেতু তৈরি করে। সে সত্যিকার জীবনের রূপকার; সাহিত্যের উপাসক। ধর্ম নিয়ে বিতর্ক সে করে না; সমাজের বিতর্কিত বিষয় নিয়ে সে লেখে না। হয়তো লেখে কিন্তু সেটা সমাজের বিরুদ্ধে না, মিসবাহ আজাদের মতো লোকের কালো শিকড়ের বিরুদ্ধে। স্নেহার তাই মনে হয় – কারণ যতোবারই সে সমাজ সচেতনতা আর নিরাপত্তামূলক ব্লগ লিখেছে ; মানুষের কাছে সেগুলোর গ্রহণযোগ্যতা আর তার সাথে মিসবাহ আজাদের চোখ রাঙানির সম্পর্ক সমানুপাতিক।
আনমনে হাসে স্নেহা। হয়তো মিসবাহ আজাদের লোক আজ তার বাবাকে বলেছে ব্লগ বিষয়ক কোনো কথা।উফফ…সামান্য একটা ব্যাপার শুধু জট পাকিয়ে যাচ্ছে। ঠিক যেমন সম্পৃক্ত দ্রবণের উপাদানগুলো অতি তাপে একসময় কেলাস হয়ে যায়। কিভাবে কি হচ্ছে স্নেহা নিজেও বুঝে না। সে শুধু জানে তাকে কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর পেতে হবে। এই এলাকার ব্যাপ্তি আর ভাসমান কিছু মানুষের জীবন সম্পর্কে।
ফেসবুকে ঢুকেই গ্রুপচ্যাটে মেসেজের বন্যা। সবাই প্লান করেছ স্টাডি ট্যুরে কি করবে। স্টাডি ট্যুর নিয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ ছিলো স্নেহার। মেডিকেলের ক্লাস শুরু হওয়ার প্রথম থেকেই। এ যেন তার স্বপ্ন। অনেক দীর্ঘ একটা স্বপ্ন যেটা তিন দিন ধরে চলবে। সে ইচ্ছেমতো হাসবে,ঘুরবে.. বান্ধবীদের সাথে অনেক মজা করবে। মা চোখে চোখে রাখবে না,বাবা বারণ করবে না। তার ঊনিশ বছরের এ কয়েকটা দিন হবে স্বাধীন। প্লানিং এর এক পর্যায়ে স্নেহার মনে হলো আয়েশার কথা।
চার দিন হলো অথচ মেয়েটা একবার ও এলো না। একাকী সময়ে মানুষ বিনোদনের জন্য অনেক কিছু করে। আয়েশাদের জীবনে বিনোদন শব্দটা নেই,তারা শুধু পারে একটানা স্বপ্নের দিকে চেয়ে থাকতে। স্নেহার চোখে পড়েছিল আয়েশার হাতে থাকা একটি কার্ড। হয়তো সে অন্যকিছু ভাবতো কিন্তু জানতে পারলো এটাই আয়েশার জীবনে মৃত স্বামীর একমাত্র স্মৃতি।
রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় মৃত স্বামীর আর সব স্মৃতিই আছে; কিন্তু আয়েশার কাছে না; যমুনা নদীতে। নদীভাঙ্গনে সবকিছু হারিয়ে আনমনে সে কার্ডটা দেখে আর বলে "আমারে একলা উজানে ভাসাইয়া তুমি কই গেলা? কেন সাথে নিলা না আমারে? তুমি না কইছিলা সারাজীবন আমার লগে থাকবা? কেন ছাইড়া গেলা আমারে?"
আয়েশার এ কান্না শোনার মতো কেউই নেই। শুধু স্নেহা দেখতো তার চোখের পানি। মেয়ে হয়ে আরেক মেয়ের পাশে দাঁড়ানো তার কর্তব্য- এ বোধ থেকেই সে আয়েশার জন্য কিছু করার সিদ্ধান্ত নেয়।
"নাহ…এটাই সময় আর সুযোগ। বেঁচে থাকলে স্বাধীনতা পাবোই কিন্তু এমন সুযোগ নাও হতে পারে।"
এমনটা ভেবে স্টাডি ট্যুরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করে স্নেহা। কিন্তু খুবই গোপনে। তার খুব কাছের কিছু বান্ধবীকেই শুধু ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলে।
সোনালি হলুদ চাঁদের আলো। মানুষ জোছনাকে রূপালি কেন যে বলে! এই চাঁদ আর জোছনা স্নেহার খুব প্রিয়। বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে স্নেহা প্রায়ই নিজের একাকী সময়ের অনেকটা কাটায় চাঁদের সাথে।
"আমার আলো হতে ইচ্ছে করে। তীব্র অন্ধকারের মাঝে যে আলো সবাইকে আলোকিত করে।"
ওই দূর নীলিমার দিকে তাকিয়ে প্রায়ই সে এই কথা বলে। চাঁদের আলো তার নিজের না, কিন্তু স্নেহাকে আলোকিত হতে হবে নিজের শক্তিতে।
আগামীদিনের কথা ভেবে অস্থির হয়ে যায় মেয়েটা। কি করবে সে! বাবা মায়ের কথা মানবে নাকি নিজের ইচ্ছেগুলোকে প্রাধান্য দিবে! শেষের খুব কাছে এসেও কি ছেড়ে দিবে এ সুযোগটা!! না,হার সে মানবে না। এ জীবনে সে নিজেকে প্রস্তুত করেছে বাঁধ ভাঙ্গার জন্য। স্নেহাদ্রি শফিক – এক একটা প্রতিবন্ধকতার অদ্রিকে পেড়িয়ে যাওয়াই তার কাজ। খুব সুক্ষভাবে সে ভাবতে থাকে। মিলাতে থাকে সমীকরণ। স্নেহার খুব ইচ্ছে করে সাকিফকে ফোন দিয়ে একবার কথা বলতে। কিন্তু সে তো মিলিটারী একাডেমীতে। আগামীকালটা যদি তার জীবনে অমঙ্গল ডেকে আনে,তবে কি সে আর কখনো সাকিফের পাশে দাঁড়াতে পারবে না!! ভাবনা গুলো অশ্রু হয়ে ঝরে পড়ে স্নেহার চোখ থেকে। নিজের ওপর খুব অভিমান হয় তার।কেন সে আলাদা সবার থেকে? কেন সে আর দশটা মেয়ের মতো নিজস্ব জগতে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না?
"হ্যালো,তুহিন ভাইয়া?"
"কিরে,এতো রাতে?"
"একটু দরকার ছিলো…হেল্প করতে পারবি?"
"সে তো অবশ্যই। বল কি বলবি?"
"আমি একটা কাজ করবো খুব গোপনে,কিন্তু একা। প্রথম দুই রাতের পর তৃতীয় দিন যদি তোর সাথে আমি যোগাযোগ করতে না পারি,তাহলে পুলিশ ফোর্স নিয়ে আসতে পারবি?"
"মানে কি? কি বলিস তুই এসব? মাথা কি খারাপ?"
"ভাইয়া,প্লিজ…আমার কাছে ফোন থাকবে, জিপিএস অন থাকবে। তুই দেখবি,যদি সন্দেহ হয় তাহলে বড় বস্তিতে ফোর্স নিয়ে যাবি। তোর তো পরিচিত লোক আছে।"
"আচ্ছা,কিন্তু একটা তো ইস্যু থাকতে হবে। কি হয়েছে সেটা তো বলবি?"
"আমাকে জোর করো না ভাইয়া…বলার সময় হলে ঠিকই বলবো…রাখি,কেমন? আল্লাহ হাফেজ ।"
একটা দীর্ঘশ্বাসের সাথে কেঁপে ওঠে স্নেহা। বিচলিত হয়,কিন্তু মনোবল ভাঙ্গে না। কিছু ভাবনা চিন্তা খেলে যায় মাথায়। সে শুধু দেখতে চায় এর যথার্থতা কতোটুকু।
হেমন্তের সকাল বেলা। স্নেহা যায় ভার্সিটি পড়ুয়া বান্ধবী লাবণ্যের বাসায়। তাদের কাজের বুয়ার পুরনো একটা বোরখা নিয়ে সে যায় থিয়েটারের হাদী ভাইয়ার কাছে। সেখানে একটু হালকা মেকআপ,নিজের সুন্দর চেহারাকে মলিন করে তোলে সে,ঠিক যেমন জরাগ্রস্ত মানুষের অবয়ব প্রকাশ করে তার জীর্ণতা। কাউকে সারপ্রাইজ দেবার অজুহাত দেখিয়ে আসল ব্যাপারটা গোপন রাখে স্নেহা। তারপর বেরিয়ে পড়ে,বাসায় না… অনিশ্চয়তার অতল গহ্বরে।
কাক ডাকা দুপুর বেলা। স্নেহা শুকনো মুখে ছেঁড়া একটা কাপড়ের ব্যাগ নিয়ে বসে থাকে তাদের পাড়া থেকে কিছুটা দূরে বাজারের আশেপাশে। সরু চোখে পর্যবেক্ষণ করে সবাইকে। একটু ভয় হয় যদি কেউ চিনতে পারে! তার সম্ভাবনা খুব কম। সাদা চামড়া কালো হয়ে আছে মেকআপ এর আস্তরনে। ব্যাগের কাপড়ের ভাঁজে আছে আত্মরক্ষার জন্য ছোট্ট ছুরি আর সাইলেন্ট করা অ্যান্ড্রয়েড স্মার্ট ফোন। অ্যাপস লক ব্যবহার করেছে সে সবখানে। অতিরিক্ত সতর্কতা। কানা কড়িও যেন কেউ বুঝতে না পারে।
বিকেল গড়িয়ে গেলে স্নেহা টের পায় একটা লোককে বারবার সে একই পথে দেখছে। উহুম…আর কিছু নয়,দালালের খপ্পরে পড়তে তার বাকি নেই। তবুও স্নেহা নিজেকে শান্ত রাখে কারণ এটাই হওয়ার ছিলো।
নিচু গলায় কথা বলা লোকটার প্রশ্নের জবাব দিতে থাকে স্নেহা। আঞ্চলিকতাটা সে রপ্ত করতে পারে নি কখনো,তবু নিজের সাধ্যমতো চেষ্টা করে কথাবার্তায় সহায় সম্বলহীনা নারীর চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে। কাজের প্রলোভনে খুশি হওয়ার অভিনয় করে স্নেহা চলতে থাকে লোকটার পিছু পিছু। চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। কি করছে সে এটাঁ! নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎকে কেউ কি এভাবে নষ্ট করতে চায়? আসলেই কি নষ্ট করছে সে?
"না,এভাবে না।সবকিছু পজিটিভলি ভাবতে হবে।" আপনমনে বলে স্নেহা। ঠোঁট কামড়ে ধরে সে অচেনা পথে হাঁটতে থাকে। গলির পর গলি। স্নেহা তবুও পথ চিনে রাখার চেষ্টা করে। আধঘণ্টা ধরে এলোমেলো হাঁটার পর সে আসে টিনশেড বাড়ির কাছে। একটার সাথে আরেকটা লাগানো। বস্তির সাথে পার্থক্য শুধু প্লাস্টিক খড়ের চালাঘরের জায়গায় টিনশেড বাড়ি। এ জায়গায় ঢোকা যতোটা সোজা,বেরোনো ততোটাই কঠিন। গলির মোড়ে মোড়ে সে খেয়াল করেছে দালালদের পাহারা। একটা নিষিদ্ধ আস্তানায় ঢুকেছে ,এটা বুঝতে পেরে ভয়ে কেঁপে উঠে সে।
স্নেহার রাতে থাকার জায়গা হয় ভিতরে আরো কয়েকটা মহিলার সাথে। কয়েকঘণ্টা ধরে সে তাদের কথা শুনে,চিন্তা করে,এক একটা ঘটনার মাঝে সম্পর্ক তৈরি করে। রাতের খাবার দিতে আসা মহিলাটাকে দেখতে ভারী নিষ্ঠুর লাগে। মেয়েদের জীবন নিয়ে খেলাই মনে হয় তার কাজ। ক্ষুধা না থাকলেও অনেকদিন পরে খেতে পারার আনন্দে অভিভূত হওয়ার অভিনয় করে স্নেহা।
রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে স্নেহা একটু বাইরে বেরোলো। এখন ক্যামেরাতে কিছু আসবে না ভেবে মোবাইলটা আর বের করলো না সে। ব্যাগটাকে নিজের কাছে যত্নে রাখলো। এতো রাতেও ঘরে ঘরে আলো আর সাজুগুজু করা মেয়েদের চলাচল দেখে স্নেহা বুঝতে পারে আয়েশার মতো মেয়েরা কোথায় অদৃশ্য হয়ে যায়।
এই পাড়াতেও বাচ্চার কান্না শোনা যায়। একটা না অনেক। স্নেহার হিসেবে গোলমাল হয়,তবু সে দেখতে থাকে ,বুঝতে থাকে। একের পর একের জট আর প্রশ্নের মাঝে জড়িয়ে যায় সে।
ব্যাগটাকে শক্ত করে আগলে রেখে ঘুমিয়ে পড়ে স্নেহা।অনিশ্চয়তার মাঝে কেটে যায় প্রথম রাত।
খুব ভোরবেলায় বোরখা আর ছেঁড়া ওড়নার মাঝে ফোনটাকে লুকিয়ে রেখে সে ভিডিও করতে থাকে সবকিছু। লাগোয়া বাড়িগুলো থেকে কিছুটা দূরে যেখানে কয়েকটা খড়ের ঘর আছে শুধু। নতুন এসে এভাবে ঘুরে বেড়ানোয় যদি কেউ সন্দেহ করে; সে জন্য স্নেহা নিজেকে একটু আড়ালে রাখে। কারো সাথে দেখা হলে এমন ভঙ্গি করে যেন এটাই তার আমৃত্যু আবাসন। আশেপাশে কেউ নেই, সুযোগের সদ্ব্যবহার করে স্নেহা। কিছু দূরে কয়েকটা মাটির বড় পাতিল। এগুলো ফোকাস করতে করতেই এগিয়ে যায় সে। হালকা নিঃশ্বাসের আওয়াজ শুনতে পায়। তারপর যা দেখে তাতে স্নেহার হাত পা জমে যায়। তবুও সে তার নিজ বৈশিষ্ট্যের কারণেই একটুও উদ্বেগ প্রকাশ করে না। খুব সতকর্তার সাথে সে নবজাতক শিশুটির ভিডিও করে।
এরাই ফুটপাথে ভিক্ষাবৃত্তির মূল জোগানদাতা, যাদের বেঁকে যাওয়া হাত,পা,মুখ দেখে সাধারণ মানুষের দয়া হয়। যে মহিলা তখন মা সাজে, সে ঘরে ফিরে এই শিশুগুলোকে পুষ্টিহীনতা আর পঙ্গুত্বের দিকে ঠেলে দেয়।
তাড়াতাড়ি সরে যায় স্নেহা। কোনো ধরণের ঝুঁকি সে নিবে না। এ এলাকার খুঁটিনাটি জেনে বেরিয়ে পড়াই তার উদ্দেশ্য। মুহূর্তের জন্য থেমে যায় তার চলার গতি। আয়েশাকে দেখতে পেয়েছে সে, কিন্তু নিজের পরিচয় লুকিয়ে রাখতে চাওয়ায় স্নেহা দূরে চলে যায়।
একটুকরো রুটি মুখে দিয়ে আবারো ঘরের পিছনে,গাছের আড়ালে থেকে থেকে সে রেকর্ড করতে থাকে সবকিছু। নবজাতক শিশু থেকে বিকলাঙ্গ কিশোর,বৃদ্ধ,আর সুন্দরী যুবতী – এখানে বাধ্য নির্দেশমতো কাজ করতে। কিন্তু এ নির্দেশদাতার পরিচয় বের করাই স্নেহার দ্বিতীয় কাজ। বাচ্চা ছেলেমেয়েদের ওপর অত্যাচারের কিছু ফুটেজ নেয় স্নেহা । হঠাৎ খেয়াল হয় ইটের স্তুপের আড়াল থেকে একজন লোক ক্যামেরার দিকেই তাকিয়ে আছে। মুখ ফিরিয়ে উল্টোদিকে হাঁটা শুরু করে স্নেহা। কান্না পায় তার। এতো সব চেষ্টা…সবই বুঝি এবার বিফলে গেল দালালের চোখে পড়ে।
দুপুর গড়িয়ে অপরাহ্ন। স্নেহা বসে আছে খাবার দিতে আসা সেই গডমাদার মহিলার সামনে।
"তাইলে তুমি কইতাছো তোমার কাছে ফোন নাই,খালি এই খাপটা আছে!!"
"আমি সত্য কথা কইতাছি আম্মা,বিশ্বাস করেন।আমার স্বামীর বহুত সাধের ফোন আছিল এটি। সবই ভাইঙ্গা গেছে,রাখনের মতো খালি এটিই পাছি।যহন আর মনে মানে না,বাইর কইরা তার মতন ফোন তাক কইরা রাখি।"
"আইচ্ছা যা …ওই ঘরের বেটিলগের সাথে থাক। পরে তোরে কাম বুঝাইয়া দিমু্।"
হাফ ছেড়ে বাঁচে স্নেহা। ভাগ্যিস সে তাড়াতাড়ি ফ্রেম খুলে ফোন লুকিয়ে রেখেছিল নিজের মাঝে। আয়েশার স্বামীর কার্ডের কথা মনে পড়ায় এভাবে বাঁচা গেল ।
ঘরে ঢুকে স্নেহা আবারো আয়েশাকে দেখতে পেল । কিছু না বলেই স্নেহা বাইরে বেরিয়ে যায়। পিছুপিছু আয়েশাও।
"আপা দাঁড়ান।"
"আয়েশা,প্লিজ তুমি চুপ করো,প্লিজ।"
"আমারে বিশ্বাস করেন আপা,আপনার পরিচয় কেউ জানবো না,কিন্তু আপনি এহেনে ক্যান আপা? এইটা তো মরণ ফাঁদ,আপনি ক্যামনে আইলেন এহেনে?"
"আমি তোমার জন্যই এসেছি আয়েশা। ঠিক তোমার জন্য না,কিন্তু তোমার মতোই স্বপ্নদ্রষ্টা কিছু মেয়েদের বাঁচাতে এসেছি।"
"আপনি একলা ক্যামনে পারবেন আপা? এই মহল্লায় চোর,ডাকাত,খুনী থেইকা শুরু কইরা সব্বাই আছে। কার লগে পারবেন আপনি?"
"এখান থেকে বের হবো কিভাবে বলো তো?"
"মাঝে মাঝে কেউ কেউ বাজারে যায়,কিন্তু তারা আম্মার বিশ্বাসী মাইয়ারা। আমগো কোনো পথ নাই।"
"পথ তো আছে অবশ্যই,আয়েশা তুমি প্রস্তুত হয়ে নাও। আজ রাতেই আমি তোমাকে নিয়ে চলে যাবো।"
"খোদা সাথে থাকলে যাইতে পারাম আপা, আমি তাই চাই।"
"ঠিক আছে,রাত হোক। ব্যবস্থা একটা করবোই।"
এতোদিনে আয়েশার সাথে গডমাদার মহিলাটির একটু ভালো জানাশুনা হয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগায় তারা দুজন। রাতে আরেক পরিচিত মেয়ের সাথে থাকার কথা বলে আপাত বন্ধন থেকে মুক্ত হয় তারা। এখন অপেক্ষা সুযোগ বুঝে এই এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার।
বাথরুমে ঢুকে স্নেহা গুগল ম্যাপ এ যায়। এ স্থানটা একটু বুঝে নিতে চেষ্টা করে। তারপর জিপিএস এ পরিচিত কয়েকজনের নাম্বার দিয়ে লোকেশন দেখতে থাকে। দূরত্ব টা বুঝে উঠতে চেষ্টা করে। এই বস্তির দক্ষিণ দিকে একটা নদী থাকার কথা। কিন্তু কাউকে জিজ্ঞেস করার ইচ্ছা নেই স্নেহার। যা হবার হবে। তবু চেষ্টা করতে হবে।
রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে স্নেহা কাপড়ের ব্যাগ থেকে কালো ওড়না বের করে নিজেকে আবৃত করে নেয় অন্ধকারে মিশে যাওয়ার জন্য। আয়েশাও তাই করে। অন্ধকারেরও নিজস্ব আলো আছে। এই আলোতে তারা চলতে থাকে। ধীরে ধীরে,আড়ালে থেকে। কয়েকটা ঘরে তখনো আলো জ্বলে কিন্তু লোক চলাচল খুব সীমিত। তাদের গন্তব্য দক্ষিণ দিকে। ঘরের ফাঁক ফোকড় দিয়ে যেতে যেতে দিক ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবুও তারা এগোয় যেকোনো এক শেষ প্রান্তে যাওয়ার জন্য। রাতের দ্বিতীয় প্রহরে দুই অদ্বিতীয়া জলাশয়ের কাছে পৌঁছায়। নদী বললে হয়তো ভুল হবে,শাখা নদী,মরা নদী। পানির গভীরতার চেয়ে কাদার পরিমাণই বেশি। তবুও এটা পার হয়ে ওপাশের মিটিমিটি আলো জ্বলা জায়গাতে পৌঁছতে পারাই কঠিন। বিশাল এক গাছের আড়ালে তারা অপেক্ষা করতে থাকে একটা কোনো উপায় খুঁজে পেতে। দশ মিনিট-পনেরো মিনিট। দূর থেকে ক্রমশ কাছে আবছা আবছা পরিষ্কার হয়ে ওঠে একটা নৌকার অবয়ব। ঘাটে পৌঁছে যায় সে নিশি রাতের দল। নৌকায় তিনজন জোয়ান পুরুষ মানুষ। এদের একজনের গলা স্নেহার খুব চেনা চেনা লাগলো।মনে করতে চেষ্টা করে সে কোথায় শুনেছে এমন কণ্ঠ।
"ওই মাইয়া,কয়টা বিয়া করবি জীবনে? এক জামাই রে দুইটা জিনিস উপহার দিতে এতো কিসের আপোশ।তারই তো খাবি,পড়বি।"
মনে পড়েছে। যৌতুক বিরোধী আন্দোলনে এ লোকটিই উত্তক্ত করেছিল তাদেরকে। মিসবাহ আজাদের লোক সে। স্নেহার দম আটকে যায়। তাড়াতাড়ি ফোন বের করে ওড়না দিয়ে ঢেকে নেয় সে। অল্প আলোতে সব পরিষ্কার না আসলেও টর্চের আলোতে তাদের চেহারা আর কথাবার্তার সবকিছুই রেকর্ড হতে থাকে। চুপ করে সে দেখে যায় তাদের কাজকর্ম। নৌকায় তিনটা ঘুমন্ত বাচ্চা শিশু আছে।তারা আসলেই ঘুমন্ত নাকি অজ্ঞান- স্নেহা বুঝে উঠতে পারছে না। আরো আছে দুটো বস্তা। এগুলো চোরাই মাল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
"ওস্তাদ,বস রে জানায় দেন আমরা চইলা আসছি।"
"নাম্বার তো খুঁইজা পাইতেছি না,নাম্বার টা দে দেহি।"
"লেখেন,জিরো ওয়ান নাইন……"
স্নেহা মনে মনে মুখস্ত করে নেয়।আয়েশাকেও মনে রাখতে বলে।
অনেকটা পথ চলাচল করায় লোকগুলো এখন বিশ্রাম নিতে চায়। নৌকাটাকে শিকলের সাথে রশি বেঁধে ঘাটে রাখে তারা। বাচ্চা আর বস্তাগুলোকে নিয়ে চলতে থাকে স্নেহাদের ফেলে আসা পথে।
"এই লোকগুলো এখন গডমাদারের কাছে যাচ্ছে। তার মানে এদের ফিরতেও দেরি হবে।" ফিসফিসিয়ে আয়েশাকে বলে স্নেহা। তারপর আশেপাশে দেখে নিয়ে গুটি গুটি হয়ে উঠে পড়ে নৌকায়। শব্দ হওয়ার ভয়ে শিকল না ধরে রশির বাঁধন খোলার চেষ্টা করে কিন্তু পারে না। এই মোটা রশির রূঢ়তার কাছে নারীর কোমল শক্তি হার মানে। ছেঁড়া কাপড়ের ভিতর থেকে স্নেহা নিজের সাথে আনা ছুরি দিয়ে রশি কাটতে থাকে। লগি বৈঠা নিয়ে দুজন নৌকা চালাতে চায় কিন্তু নৌকা চলতে চায় না। কোনো রকম ইতস্ততা ছাড়াই আয়েশা কাদায় নেমে নৌকা ঠেলে পানিতে নিয়ে যায়। তারপর কোনোভাবে চালাতে থাকে দুজন। নদীর ওপারে কি আছে তাদের জন্য কেউই জানে না। নিশ্চুপ চোখের চাহনিতে ফুটে ওঠে অনিশ্চয়তার ভয়। তবু তারা ভীত না।
চারদিক ফরসা হচ্ছে কিন্তু ভোরের আলো এখনো ফোটে নি। দোকানপাট সব বন্ধ। ঘাটে কয়েকটা বাধা নৌকা ছাড়া আর কিছুই নেই। স্নেহার মোবাইলের চার্জ ও শেষ। এ অবস্থায় তারা কি করবে কিছু বুঝে উঠে না । কোনোভাবে নৌকাটাকে ছেড়ে দিয়ে হাত মুখ ধুয়ে নেয় স্নেহা। ঘাটে উঠে দোকানের আড়ালে গিয়ে বোরখা খোলে। পরনে তার ভালো পোশাক,পরিচয় ভিন্ন। কিন্তু আয়েশাকে নিয়ে সমস্যা। দালালরা যদি তাদের পালানোর ব্যাপারটা বুঝতে পারে তবে খবর ছড়িয়ে যেতে সময় লাগবে না। যেকোনো সময় তারা ধরা পড়তে পারে । দুজন দ্রুত দৌড়াতে থাকে মাটির রাস্তা শেষ করে পিচ ঢালা রাস্তায় পৌঁছতে। অন্তত জায়গাটার একটা হদীস পাওয়া যাবে। দোকানের সাইনবোর্ডে স্নেহা নাম দেখে নেয়। নিজেদের শহর থেকে অন্তত ১২ কি.মি দূরে আছে তারা। কাছেও না আবার খুব দূরেও না। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছানো কঠিন। কেবলমাত্র পূব আকাশে লাল আভা দেখা যাচ্ছে। স্নেহা আগে যাবে কোনো একটা পত্রিকার অফিসে। নিকটস্থ এসব সে খুব ভালো করেই চেনে কারণ তার এক একটা লেখা গল্প বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ করতে সে নিজেই যোগাযোগ করে। পারিবারিক বাধার সুফল এটাই – সে আত্মনির্ভরশীল।
একটু হেঁটে একটু দৌড়ে দুজন চলতে থাকে। নির্ঘুম রাত,কঠোর পরিশ্রম তবুও স্নেহা হেসে ওঠে তার প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়ার আনন্দে।
সামুচা আর ঝালমুড়ি। মুঠোয় মুঠোয় খেতে খেতে হাসি আর গল্পতে মেতে ওঠে দুটি প্রাণ। বাসায় ফেরার পাঁচ দিন হয়ে গেল তাদের। স্নেহার তোলা ভিডিও ফুটেজ ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইটে প্রকাশিত হয়েছে। এক একটা ফটো স্থান পেয়েছে পত্রিকায়। কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে স্নেহা আবিষ্কার করে সেই মোবাইল নাম্বার ব্যবহারকারীকে। ভিডিওর প্রমাণ সাপেক্ষে মিসবাহ আজাদ এখন পুলিশী তদন্তে। তার ক্ষমতার তুলনায় এসব কিছুই না। তবু স্নেহা চেষ্টা করছে এই লোককে বিচারের আওতায় আনতে। তুহিন ভাইয়ার পরিচিত পুলিশের ঊর্ধ্বতন অফিসারদের সাহায্য চায় সে।
বড় বস্তিতে তল্লাশী চলে। বাচ্চাদের একটা বড় অংশের আশ্রয় হয় বিভিন্ন এতিমখানায়।
সবচেয়ে মজার কথা – এতোকিছু যাদের জন্য সম্ভব হলো,তাদের কারো নাম আর কেউ জানতে পারলো না। শুধু জানলো দুই সাহসী যুবতীর কারণেই শত শত প্রাণ নিরাপত্তা পেল,পেল সুস্থভাবে বাঁচার অধিকার।
এখন আর মিসবাহ আজাদের কালো শক্তিকে ভয় পায় না স্নেহা। কারণ তার মুখোশ খুলে গিয়েছে। মিসবাহ আজাদ জানতেও পারবে না তার পতনের মূল একটি মেয়ে। কি স্বাভাবিক অথচ অসাধারণ কৌশলে দুটো ভুরু কুঁচকানো চোখের বিরুদ্ধে স্নিগ্ধ,স্বপ্নীল,মায়াবী নারী চোখের জয় হলো।
স্নেহা আনন্দে অভিভূত হয়ে যায়। তার ঊনিশ বছরের জীবনে এ দিনগুলোই শ্রেষ্ঠ। সে অনন্যা, অসম্ভবা,সে একজন ব্লগার,একজন সমাজ সচেতন লেখিকা,গণমানুষের লেখিকা।
দুই রাত,তিন দিনের প্রতিটা অনুভূতি সে জমা রাখে সাকিফের জন্য। সাকিফ ছুটিতে আসলে কতো যে গল্প করবে তারা! স্নেহার এতোসব কাহিনী শুনে সাকিফ বিস্ময়ে ফেটে পড়বে, গর্ব বোধ করবে। আলতো আদর করবে স্নেহার টোল পড়া গালে,মাথায় হাত বুলিয়ে দিবে।
ওই সোনালি হলুদ চাঁদের জোছনা মেখে স্নেহা অপেক্ষার প্রহর গুণে সাকিফের ছুটির জন্য।
এক সাফল্যময়ীর জীবনের চলমান পথ এমনই মিষ্টতায় ভরে ওঠে।
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:০৯
রিফাআত রিয়া বলেছেন: শুভেচ্ছা নিন ..
কষ্ট এবং দীর্ঘ সময় নিয়ে ছোটগল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ..
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৭
মাকড়সাঁ বলেছেন: Onak boro lakha tobe kosto korea porlam, valo lagce khub...