নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রিফাআত - বৃষ্টিবিলাসী.. জ্যোৎস্নাপ্রেমী মেয়ে। স্পষ্টবাদী, নির্ভীক। বয়স - ধর্ম নির্বিশেষে যেকোন লোকের চোখে চোখ তুলে কথা বলার সাহস রাখে। হয়তো সব কিছু করার সামর্থ রাখে না, কিন্তু অন্যায় সহ্য করতে পারে না। দেশকে ভালোবাসে .. দেশের মাটি - মানুষ সবাইকে।

রিফাআত রিয়া

প্রিয় বন্ধু .. প্রিয় সত্ত্বা .. সবচেয়ে আপন - গল্পের বই .. সাদা কাগজ আর কলম .. নিজেকে যখন মূল্যহীন মনে হয় তখন শুধু কলম চালিয়ে যাওয়ার জন্যই বাঁচতে ইচ্ছে করে ..

রিফাআত রিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'\'উড়োচিঠি\'\' - ছোট গল্প

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:১১

১.
“ধূর!এভাবে কেউ কাউকে ইগনোর করে!”
একরকম বিরক্তি নিয়েই ফেসবুকে লগ আউট করলো রাসিফ।
কয়েকদিন পরই ভ্যাকেশন শেষ হবে।যেতে হবে সেই নন্দিত নরক “বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমী – বিএমএ”।কোর্সের শেষ ভ্যাকেশন।জয়েন করার ব্যাপারটা ভাবলেই কেমন রোমাঞ্চ লাগে।
“কিন্তু এই পুচকে মেয়েটার কাছে আমি যেন ভেজা বিড়াল আর সে বাঘিনী!! হাহ”
জিন্স আর টি শার্টটা গায়ে চেপে সে যায় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে।

#উড়োচিঠি ০১
''কারো উপর অভিমান করলে নিজে কষ্ট পাই, কিন্তু যার উপর করা হয় তার কেমন লাগে?''

ফেসবুকে স্টাটাস দিলো রিসা।
রাসিফকে ব্লক করতে গিয়েও করলো না সে। এই ব্লক – আনব্লক খেলা বহুবার খেলেছে তারা। রাগ করে, ঝগড়া করে,অভিমান করে। কিন্তু দুজনেই যেটা জানে – তাদের মাঝে কোনো সম্পর্ক নেই, ফেসবুকের বন্ধু শুধু।
তবুও রিসার কাছে কেমন যেন লাগে। অদ্ভূত একটা অনুভূতি। একটু মায়া। কিন্তু মায়াটাকে বাড়াতে চায় না সে। কিছুদিন আগেই রাসিফ একটা পোস্ট নিয়ে রিসাকে ইনসাল্ট করেছে। রাগ টা এখনো যায় নি তার।
“একটু পাত্তা দিলেই ছেলেরা মাথায় উঠে যায়! যত্তসব।”
বিএমএতে যাওয়ার আগের রাতে দুষ্টু বুদ্ধি চাপলো রাসিফের মাথায়। মেয়েটাকে আরেকটু জ্বালিয়ে যেতে পারলেই বোধহয় শান্তি পাবে। ফেসবুকে ফ্যামিলি মেমবার্সে অ্যাড করলো রিসাকে।
নোটিফিকেশনে আশ্চর্য হলো না রিসা।
“ভালোই তো! ছোটবোনের প্যারা কাকে বলে বুঝাবো।”
অভিমানী বন্ধুত্ব নতুন দিকে মোড় নেয়।
২.
বিএমএ’র শত রেস্ট্রিকশনের মাঝেও লুকিয়ে একটু ফেসবুকে আসে রাসিফ। কেন যেন ইচ্ছে হয় “পুচকে বোন” টার মেসেজ দেখতে।
“জানিস ভাইয়া, আজ আমাদের ওয়ার্ড ক্লাস ছিল। একটা লোক আমার দিকে এতো তাকিয়ে ছিলো! মনে হয় প্রেমে পড়েছে!!”
মেসেজ দেখেই রাগ উঠে রাসিফের।
“রোগীর সাথে পালায় যা। ডাক্তারের সুনাম বাড়বে।”
“আচ্ছা ভাইয়া, আর কিছুদিন পরেই সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হবি। আমাকে কি দিবি??”
“কি চাস তুই??”
“অনেকগুলা ক্যাডবেরি আর নীল শাড়ি!!”
“কিহ! আইছে! এসব দিবো তোর ভাবীকে। মিল্ক ক্যান্ডি দিলে চলবে??”
কেমন যেন লাগে রিসার। এমনিতেই রাগ একটু বেশি। ব্লক করে দিলো রাসিফকে।
রিপ্লাই এর অপেক্ষায় না থেকে রাসিফ ডাইনিং হল এ গেল। রাতে আবিষ্কার করল সে ব্লকড।
একটু অপমান অথচ অজানা একটা টান!! রিসা কে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। যদি ওর ফোন নাম্বার টা থাকতো!!
রুমমেটের সাথে কথা বলে তার আইডি থেকে খুঁজলো রিসাকে।

#উড়োচিঠি ০২
''যখন তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করে, আমি ওই চাঁদ টা দেখি। কারণ ওই দূরে থেকেও তুমি সেটা দেখতে পাও। আচ্ছা আমাকে তোমার দেখতে ইচ্ছে করে না??''
রিসার এমন স্টাটাসে অবাক হয়ে যায় রাসিফ। তাদের মাঝে কবে একটু ভালোভাবে চ্যাট হয়েছিল? মনে পড়ে না! শুধু তো ঝগড়াই করে। তাও আবার ভাই বোনের ঝগড়া! অথচ তাদের ফ্রেন্ডশিপের প্রায় চার বছর হলো। রিসা আগে অনেক ভালোভাবে কথা বলতো! পরে কেমন যেন বদলে গেল! কেন বদলালো! রাত গভীর হয়। রাসিফ ভাবতে থাকে।
৩.
বাসায় এসেই অনাকাঙ্ক্ষিত বিয়ের প্রস্তাবে রেগে যায় রিসা। মাত্র সে সেকেন্ড প্রফ দিলো। এতেই কিসের বিয়ে। তিন মাস হলো রাসিফের সাথে কথা হয়না। ওকে একটু জানালেই মনে হয় ভালো হবে!
“আমার বিয়ের কথা চলছে। ছোট্ট বোনকে মিল্ক ক্যান্ডি দিবি না?পরশু আসাদ গেটে যাবো। অবিবাহিত জীবনে ফ্রেন্ডদের সাথে এটাই মনে হয় শেষ আড্ডা।”
ফেইক আইডি থেকে রিসার প্রোফাইল প্রতিদিনই দেখতো রাসিফ। এতদিন পর আনব্লক্ড হয়ে মেসেজ দেখল, রিপ্লাই দিলো না।
রাসিফের সব পোস্ট দেখে রিসা। নিজের ভিতরে কেমন যেন একটা রিক্ততা! আর্মির পোশাকে রাসিফকে অদ্ভূত সুন্দর লাগছে।
‘আচ্ছা, আমরা কেন এরকম করি! ও কেন এরকম করে!”
আনমনে বলতে থাকে সে।
৪.
সংসদ ভবনের কাছে বকুল তলা -বিকেল বেলা। বন্ধু বান্ধবের সাথে রিসা। ফেসবুকে চেকইন ও দিলো।
হঠাৎই চোখ যায় দূরে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটার দিকে। হাতে গোলাপ আর গিফট প্যাক । চেনা চেনা লাগে তবুও বিস্ময়ের ঘোর কাটে না। ছেলেটা এগিয়ে আসে।
“রিসা কেমন আছো?”
কান্না পায় রিসার। হঠাৎই রাসিফকে জড়িয়ে ধরতে চেয়েও নিজেকে আটকায় সে।
ভালোবাসার হাত টা রাসিফই বাড়িয়ে দেয়। এক রাশ গোলাপ নিয়ে -
“আর সহ্য হচ্ছে না। তোমার উড়োচিঠি তো অনেক আগেই তার ঠিকানায় পৌঁছেছে। তুমি তাকে আবারো ইগনোর করবা?”
এরই মাঝে কাছাকাছি। ফিসফিসিয়ে বলা হয় – “ভালোবাসি।”
শুকনো বকুলের ঘ্রাণ আচ্ছন্ন করে দেয় তাদেরকে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:২৯

বিজন রয় বলেছেন: উড়োচিঠি ভাল পড়লাম।
++

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৪৯

রিফাআত রিয়া বলেছেন: বিজন রয় .. একটা উড়োচিঠি'তে এতো সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ.. ;)

২| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৬

Bujh Balok বলেছেন: ভাল লাগল খুব...:)...
চিঠি টা পোঁছে যাক তার সঠিক গন্তব্যে ...
সত্য হোক স্বপ্নগুলো ...

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪২

রিফাআত রিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ ..

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.