নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি প্রযুক্তি প্রিয় মানুষ; ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তি ভালোবাসি। এছাড়াও ভালোবাসি বই আর লেখালেখি পড়তে। মাঝে মাঝে লিখতেও ইচ্ছা করে। এখানে যোগ দিয়েছি হঠাৎ কোন কিছু লিখে ফেললে সেটা সবার মাঝে বিলিয়ে দেওয়ার জন্য।

রিহানুর ইসলাম প্রতীক

রিহানুর ইসলাম প্রতীক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সতীত্ব কিংবা ভার্জিনিটি এবং পুরুষত্ব

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:০৫


সতীত্ব বা ভার্জিনিটি বলতে আমরা আসলে কী বুঝি? সতীচ্ছদ পর্দার অক্ষত থাকাকে?
থাক, উত্তর দিতে হবে না। প্রশ্নটিকে বরং লেখাটি শুরুর আগে একটি উপমা হিসাবে রেখে একটি ছোট গল্প দিয়ে শুরু করি।

এক লোক বিয়ের আগে অনেক সুযোগ খুঁজতো মেয়েদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার। রাস্তায় কোনো মেয়েকে দেখলেই কামনায় মেতে উঠতো। কিন্তু তার সে ইচ্ছাটি বিয়ের আগে কখনো পূর্ণতা পেলো না। এদিকে বিয়ের রাতে বউয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে গিয়ে কোনো রক্তপাত না হওয়ায় তার ধারণা হয় বউ তার ভার্জিন ছিল না। অনেক আফসোস করতে থাকে বেচারা, নিজে ভার্জিন হয়েও ভার্জিন বউ পেল না!

উপরের এই ছোট্ট অংশটি অনেকটা গল্পের মতো হলেও এটি আসলে আমাদের অধিকাংশ মানুষ ও সমাজের রূপক হালচিত্র। আমাদের এই অধিকাংশ মানুষ ও সমাজের কাছে সতীত্ব নিয়ে ভাবনাটা কেবল সতীচ্ছদ পর্দা ও শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু আসলেই কি তাই?

মানুষের দেহ হচ্ছে নিরপেক্ষ। মন যেভাবে দেহকে পরিচালনা করে দেহ সেভাবেই পরিচালিত হয়। কোনো মেয়ের হয়তো এখনো কোনো পুরুষের সাথে ঘনিষ্ঠতা হয়নি, কিন্তু তার আগেই যদি মেয়েটির মন কোনো পুরুষের সাথে ঘনিষ্ঠ হবার জন্য টলে যায় তবে তাকে আমরা কী বলতে পারি? মেয়েটির দেহটা হয়তো এখনো কোনো সুযোগের অভাবে ঘনিষ্ঠ হতে পারছে না কিন্তু মনটাতো ইতোমধ্যে ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য টলে গিয়েছে!

আসলে সতীচ্ছদ পর্দাটা কোনো ব্যাপার না, ব্যাপার হচ্ছে মানুষের মন। আমার চিন্তাধারা অনুযায়ী কোনো মেয়ে যদি ইতোমধ্যেই কোনো পরপুরুষ, স্বপ্নপুরুষ কিংবা প্রেমিককে নিয়ে মানসিকভাবে কামনায় মেতে উঠে এবং ব্যাপারটা যদি এমন হয় যে সে কেবল সুযোগের অভাবেই শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হতে পারছে না তবে তার সতীচ্ছদ পর্দা (Hymen) অক্ষত থাকা অবস্থাতেও সে আর সতী থাকবে না। মানসিকভাবে কামনায় মেতে উঠা বলতে আমি কোনো কল্পনাকে বুঝাচ্ছি না। মানুষ অনেক কিছুই কল্পনা করতে পারে কিংবা স্বপ্ন দেখতে পারে, সেজন্যে কেউ অবশ্যই অসতী হয়ে যাবে না। মূলকথা, যেই মুহূর্ত থেকে কোনো মেয়ের, তার প্রেমিক, স্বপ্নপুরুষ কিংবা কোনো পরপুরুষের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে আপত্তি থাকবে না­­ সেই মুহূর্ত থেকে সে অসতী হয়ে যাবে।

I wouldn't say that raped girl non-virgin who never wished to have sex before marriage. Rather I would say that girl non-virgin who never had sex yet but wished to have sex without marriage.

সতীচ্ছদ পর্দা অক্ষত থাকলেই যেমন সতী হয় না, তেমনি সতীচ্ছদ পর্দা ছিঁড়ে গেলেও অসতী হয়ে যায় না। বিভিন্নভাবেই সতীচ্ছদ পর্দা ছিঁড়তে পারে। খেলাধুলা, দৌড়-ঝাপ, সাতার, সাইকেল চালানো ইত্যাদি বিভিন্ন সময়েই সতীচ্ছদ পর্দা ছিঁড়ে যায়। তাই সতীচ্ছদ পর্দা কখনোই সতীত্ব নির্ণয়ের মাধ্যম হতে পারে না। সতীচ্ছদ পর্দাই যদি সতীত্ব নির্ণয়ের মাধ্যম হয় তবে স্বয়ং সানি লিওনও নিজেকে ভার্জিন দাবী করতে পারবে। কিভাবে জানেন? কারণ এখন আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তি দ্বারা সতীচ্ছদ পর্দাকেও পুনঃস্থাপন করা যায়। একে বলে হাইমেন রিপেয়ার সার্জারি (Hymen Repair Surgery)।

এতক্ষণ শুধু মেয়েদের ভার্জিনিটি, নন-ভার্জিনিটি নিয়েই কথা হলো। আসলে এতক্ষণ এটা প্রমাণ করতে চাইলাম যে ভার্জিনিটিটা শরীরকেন্দ্রিক নয় বরং মনের ব্যাপার। ঠিক একইভাবে ব্যাপারটা ছেলেদের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ যেই মুহূর্ত থেকে কোনো ছেলের তার প্রেমিকা, স্বপ্নবালিকা কিংবা পরনারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে আপত্তি থাকবে না সেই মুহূর্ত থেকে সেও আর ভার্জিন থাকবে না। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, এ চিন্তাধারা অনুযায়ী বর্তমানে কোনো ভার্জিন ছেলেই বলতে গেলে নাই। এমনকি আমি নিজে যে এই লেখাটি লিখছি সেও তার মাত্র বিশ বছর বয়সে কম করে হলেও হাজার মেয়েকে নিয়ে কল্পনায় কামনাতে মেতেছে, মিলিত হতে ইচ্ছুক হয়েছে! আর যারাও ভার্জিন আছে তারা ব্যতিক্রম; ব্যতিক্রম অবশ্যই উদাহরণ নয়।

মানুষ হিসাবে ছেলেমেয়ে দুজনেরই যৌন অনুভূতি থাকলেও সেটা তৈরি হওয়ার ব্যাপারটা আলাদা। ছেলেদের যৌন অনুভূতিটা হয় শরীর কেন্দ্রিক। এজন্যেই কোনো সুশ্রী মেয়েকে দেখলে আমাদের সে ধরনের ইচ্ছা মনে মনে তৈরি হয়ে যায়। অপরদিকে মেয়েদের যৌন অনুভূতিটা হয় ব্যক্তি কেন্দ্রিক। তাই তারা প্রস্তাব পাওয়া সত্ত্বেও যার তার সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে না। তারা সাধারণত তাদের ভালোবাসার এবং পছন্দের মানুষের সাথেই এটা করতে ইচ্ছুক থাকে। আর মূলত এজন্যেই আবাসিক হোটেল এবং পতিতালয়ে ছেলেরাই যায়। অবশ্য মেয়েদের জন্যেও বিভিন্ন দেশে পতিতালয় এবং মেইল প্রস্টিটিউশন সিস্টেম চালু আছে। তবে সেটা ব্যতিক্রম। আর আগেই বলেছি ব্যতিক্রম উদাহরণ নয়।

এবার আসি পুরুষত্ব প্রসঙ্গে। পুরুষত্ব বলতে আপনি কী বুঝেন? পুরুষত্ব বলতে কি পুরুষদের প্রচন্ড যৌনতা, যেখানে সেখানে সেই যৌনতার বহিঃপ্রকাশ কিংবা বিছানায় অনেকক্ষণ টিকে থাকাকে বুঝায়? যদি তাই বুঝে থাকেন তবে এতদিন ভুল বুঝে এসেছেন আপনি! প্রকৃত পুরুষত্ব হচ্ছে নিজের যৌনতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারা। আপনার কাছে যখন একজন নারী যথেষ্ট সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নিরাপদে থাকবে তখন আপনি একজন প্রকৃত পুরুষ। যৌনতা যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে এবং উত্তেজিত অবস্থায় এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যে কতটা কঠিন তা কেবল একজন শারীরিক সুস্থ-সবল পুরুষই ভালো বলতে পারবে। সুতরাং এই যৌনতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে যে সেই প্রকৃত পুরুষ, অন্যথায় সে কাপুরুষ। ভিড়ের মধ্যে চাপাচাপিতে কোনো মেয়ের দেহের সাথে নিজের দেহ লাগিয়ে মজা নিলেন, কিংবা বাসে ব্রেকের তাল সামলাতে না পারার ভান করে কোনো মেয়ের গায়ে ধাক্কা দিলেন বা শরীরে হাত লাগালেন, তবে আপনি কেবল একজন কাপুরুষই না, একজন মানসিক বিকারগ্রস্ত বিকৃত মস্তিষ্কের পারভার্টেড অসুস্থ ব্যক্তিও। মেয়ে পেলেই বিছানায় নিয়ে যাওয়ার মধ্যে কোনো পুরুষত্ব নেই, আছে কেবল কাপুরুষতা। মেয়েদের যথাযথ সম্মান করতে পারা এবং নিরাপদে রাখতে পারাই হচ্ছে প্রকৃত পুরুষত্ব।

রিহানুর ইসলাম প্রতীক
০৩/০৮/২০১৭

বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই লেখাটি আমার আগের "সতীত্ব কিংবা ভার্জিনিটি" শিরোনামের একটি লেখার সংশোধিত, পরিমার্জিত ও বর্ধিত সংস্করণ। আগের লেখাটি সর্বপ্রথম গত ২৬ মার্চ, ২০১৭ আমার ব্যক্তিগত ফেসবুকে আইডি থেকে প্রকাশিত হয় এবং পরের দিন ২৭ মার্চ এখানে প্রকাশিত হয়।
আমার ফেসবুক আইডি থেকে প্রকাশিত লেখাটির লিংক: Click This Link
এখানে প্রকাশিত লেখাটির লিংক: Click This Link

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৪৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: I wouldn't say that raped girl non-virgin who never wished to have sex before marriage. Rather I would say that girl non-virgin who never had sex yet but wished to have sex without marriage

একইভাবে ব্যাপারটা ছেলেদের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ যেই মুহূর্ত থেকে কোনো ছেলের তার প্রেমিকা, স্বপ্নবালিকা কিংবা পরনারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে আপত্তি থাকবে না সেই মুহূর্ত থেকে সেও আর ভার্জিন থাকবে না।

প্রকৃত পুরুষত্ব হচ্ছে নিজের যৌনতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারা। আপনার কাছে যখন একজন নারী যথেষ্ট সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নিরাপদে থাকবে তখন আপনি একজন প্রকৃত পুরুষ।

শতভাগ সহমত।


দারুন বিশ্লেষনে ভাললাগা
+++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.