নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা-ই লিখি, কাঠবিড়ালীর মত এখানে জমিয়ে রাখি। https://rimsabrina.blogspot.com/
আগের পর্ব
৩.
পথটা নেহাৎ কম না। একঘেয়েমি লাগছে না যদিও। পথের ধারে বাহারি বাড়িগুলো দেখার মত। এগুলো ছোট ছোট গেস্টহাউস। কাঠের দেয়ালগুলোতে হোটেল হোটেল কমার্শিয়াল গন্ধ নেই। তার বদলে আছে বারান্দা উপচে পড়া ফুলের সুবাস। ফুলের থোকাগুলো যেন বাড়ির মালিকের রুচির সার্টিফিকেট হয়ে ঝুলে আছে ব্যালকনির ফোঁকর গলে। কোথাও বারান্দার এধার থেকে ওধার জুড়ে শুধুই রক্ত লাল গোলাপ। কোনো বা বাড়ির ফুল হালকা গোলাপি থেকে গাঢ় হতে হতে বেগুনি বনে গিয়ে একেবারে লতিয়ে সদর দরজায়ে নেমে এসেছে। এমন জায়গায় দিন দুই কাটালে জব্বর হতো।
উঁচু নিচু পাহাড়ি রাস্তায় এখন রীতিমত হাঁপ ধরে যাচ্ছে। আরেকটু এগোলেই নাকি পৌঁছে যাব। মৌরি আপুর মন ভুলানো কথাও হতে পারে। তাও সরল মনে পা চালিয়ে যাচ্ছি। খানিক বাদেই বামের অদ্ভূত পথটা দেখে থামতে হলো। ঢালু হয়ে কই যে নেমে গেছে, বোঝার উপায় নেই। দু’পাশে নেই বাড়িঘর, নেই গাড়িঘোড়া। শুধু গাছগাছালি। সবুজ ডিঙ্গিয়ে চোখ চলে যায় দূরের পাহাড়চূড়ার মরীচিকায়। যেন হাত বাড়ালেই নাগাল মিলবে। কোত্থেকে হঠাৎ এক বুনো বাদামী খরগোশ লাফিয়ে উঠে মিলিয়ে গেল। কৌতূহলে এগিয়ে গেলাম এক পা। যাবো নাকি এই পথে? হারিয়ে যাবার হাতছানিটা মায়াবী সুরে ডাকছে ‘আয় আয়’। ওদিকে বাকিরাও ডাকছে খুব। নাহ্, হাতছানিটা ফিরিয়ে দিতে হল। খরগোশের পিছু ছোটা আর হল না।
কাঠের সাঁকো এঁকেবেঁকে চলে গেছে লেকের পাড় ঘেঁষে। ক্যাঁচকোঁচ শব্দ তুলে চলছি। স্বচ্ছ জলে এক আধটা মাছ উঁকি দিয়ে যাচ্ছে। মনের ভেতরের বড়শিটা টোপ লাগিয়ে তৈরি হতে চাইছে। ভাজা মাছের মচমচে ঘ্রান কল্পনা করে নিতে একটুও বেগ পেতে হল না। পানির বাতাস খিদে চাগিয়ে দিতে ওস্তাদ।
চারিদিকে শুধু পাহাড় আর পর্বত। তারই ঠিক মাঝখানে কাক চক্ষু জল টেগের্নসী। আকাশের আঙ্গিনায় ঘাসফুল মেঘ এখানে ওখানে ছন্নছাড়া ভবঘুরের মত ভেসে বেড়াচ্ছে। ছোট্ট ফেরি যাত্রী নিয়ে খুব ধীরে এগোচ্ছে। কারোই কোনো তাড়া নেই। তবে আজকে বাতাসের খুব তাড়া। জলে ঢেউ ভাঙ্গিয়ে ছাড়ছে সাগরের আদলে। উইন্ডসার্ফিং করতে আসা লোকজনের পোয়াবারো। বাতাস ফুড়ে উজ্জ্বল লাল-নীল পাল উড়িয়ে ছুটছে তারা। টেগের্নসী জায়গাটা আসলেই সুন্দর।
৪.
আলো ছায়া লুকোচুরি খেলছে, এমন জায়গা খুঁজে চাদর বিছিয়ে বসে পড়লাম। সাথে সাথে শক্তিশালী আলসেমিটা ছেঁকে ধরলো। মনে হল, বনবন্ না ঘুরে আজকের দিন শুয়ে বসে এখানেই গড়িয়ে দেই না। মাথার ওপর চড়া সূর্যটাও যেন সায় দিয়ে বললো, ‘চিল ম্যান, চিল। এই রোদ্দুরে ঘুরে কাজ নেই।‘ মাঝ দুপুরের রোদকে ‘কুল ডুড’ মেনে তার উপদেশ আমরা মাথা পেতে নিলাম।
জায়গাটা নিরিবিলি। যদিও লোকজন একেবারে কম না। পাশেই এক বিকিনি সুন্দরী ফিতাবিহীন পিঠ মেলে রোদ পোহাচ্ছে। তার হাতে মেলে ধরা কোনো পেপারব্যাক। এমন ভঙ্গিমায় পড়লে ছাইপাশ র্যান্ডম বইও পাঠক টানতে বাধ্য। ঘটছেও তাই। কতগুলো বছর আঠারো-বিশের ছেলে-ছোকরা কাছেই তাস পেটাচ্ছে আর অস্থির চোখ তুলে বইয়ের নাম পড়তে চাইছে। কি আর করা, বয়সটাই যে জ্ঞান আহরনের।
বাচ্চারা সাথে করে খেলার সরঞ্জাম নিয়ে এসেছে। থলে উল্টাতেই ছোট বড় নানা কিসিমের ডাইনোসর বেড়িয়ে এল। সেগুলোকে ইচ্ছেমত চরতে দিয়ে তারা খড়কুটো জোগাড় করছে। উদ্দেশ্য, আগুন ধরিয়ে বন ফায়ারের আয়োজন। ফায়ারটা কোত্থেকে আসবে সেটা একটা ব্যাপার অবশ্য। দেখা গেল, আগুনের জন্যে পাশের ছোকরাগুলোর কাছে দেয়াশলাই চাইতে গিয়েছে। ওরা দিলো না, আর তাইতেই পাথর ছুড়ে মাথা ফাটিয়ে দিল। তখন তল্পিতল্পা তুলে ঝেড়ে দৌড় না দিয়ে উপায় থাকবে না আমাদের। (চলবে)
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৩:৩০
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: ভাই শঙ্খচিল, ধন্যবাদ অনেক। আপনি ভাল আছেন তো? বহুদিন পর।
২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৩৪
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: পাহাড় আর পর্বতের সাথে কাকচক্ষু জলের একটা সম্পর্ক আমার মনে হয় সারা দুনিয়ায় বিদ্যমান।আর যেখানে জল সেখানে মাছের আনাগোনা।আর সেত আমাদের জনবহুল এবং সর্কোখোর বাংলাদেশ নয় যে সব মাছ ধরে খেয়ে ফেলবে।তবে মাছে-ভাতের বাংগালী হিসাবে মাছ দেখলেই মচমচে ভাজা মাছের চিন্তাই মাথায় আসে সৌন্দর্য নয়। তার সাথে ইউরোপিয়ান নির্মল হাওয়া আর সুন্দর প্রকৃতির মাঝে যদি খিদেটা মাথা ছাড়া দিয়ে উঠে, তাহলেও তার মানে এই না জে আমরা বাংগালীরা পেটুক। তবে আমরা খেতে বালাবাই এ হাচা কতা।
আহা বেশ।এমন খোলামেলা প্রকৃতির মাঝে যদি এমন ছু ন্দ রী দেখতে পাওয়া যায় যিনি কিনা প্রকৃতির মতই উদার হয়ে নিজের
সৌন্দর্য মেলে ধরে আর সাথে বোনাস হিসাবে পেপারব্যাক তাহলে ১৮ বছরের ছোকরা তা ছোকরা ৭২ বছরের দাদু এবং সাথে সাথে মুনি-ঋযীদেরও জ্ঞেন আহরনের ইচছা মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে আমার কথা বাদই দিলাম।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৩:৩৪
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: ইশ্, মন্তব্য থেকে মহাকাব্য হয়ে গেল যে। এমন করে বলতে পারাও দেখছি দারুন কেরামতির খেল। এই খেলায় আপনাকে একশোতে একশো দিয়ে গেলাম।
৩| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৫৩
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: মাশাআল্লাহ কী সুন্দর পোস্ট
বাড়ীগুলো কী সুন্দর
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৩:৩৬
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: চৌকস ফটোগ্রাফারকে পেয়ে দারুন লাগছে। আপনাকে নিয়ে কোথাও ভ্রমনে গেলে না জানি কি দুর্দান্ত সব ছবি তুলে দিতেন।
৪| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পোষ্ট মানেই লাইফ ইজ বিউটিফুল।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৩:৩৭
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: রাজীব ভাই, ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা!
৫| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:০৩
মা.হাসান বলেছেন: বাড়ি গুলো আসলেই সুন্দর। অনেকেই যে এটা সেটা লিখে জার্মানিতে অ্যাসাইলাম কেনো নিয়েছে বোঝা যায়। আর সুযোগ আছে কি?
মায়েরা খতরনাক হলে বাচ্চারা ইট ছুড়ে মাথা ফাটাতেই পারে, এতে কি বাচ্চাদেরই দোষ?
বই সহ পেপারব্যাক পাঠিকার ছবি দিলে আমরাও একটু উকি দিয়ে জ্ঞান আরোহন করতে পারতাম।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৩:৩৮
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: পেপারব্যাক সুন্দরীর ব্যাকলেসকে সম্মান জানিয়ে আর ছবি তোলার দুঃসাহস করি নি।
৬| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০৮
শোভন শামস বলেছেন: চমৎকার !!!
লিখতে থাকুন ।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৩:৩৯
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: ধন্যবাদ, শামস ভাই। ভাল থাকবেন। শুভেচ্ছা রইল।
৭| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১১
শেরজা তপন বলেছেন: কেন আগুন চাইতে গেলে না দিয়ে মাথা ফাটাবে কেন ???
এক নিঃশ্বাসে পড়ে যাবার মত ভ্রমন কাহিনী- টুপ করে মাঝপথেই শেষ হয়ে গেল...
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৩:৪০
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: আপনাকে আফসোসে ফেলতে চাই না। শেষ পর্ব পোস্ট করে দিয়েছি এর মাঝেই। পড়ে কেমন লাগলো, জানাবেন। ধন্যবাদ।
৮| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সবাই গ্যান আহরনে ব্যাপক আগ্রহ দেখে আপাতত ধ্যানী বকীর মতো জলের ঝিলিকেই অপেক্ষা করি না হয়
হা হা হা
প্রকৃতি যেমন সুন্দর তার বর্ণনা করে তাকে আরো মধুময়!
আপনার লেখায় যে স্বাদ মেলে।
আমজনতার আটপৌড়ে দেখা নদী পাড় লেখকের বর্ণনায় হয়ৈ ওঠে দারুন উপভোগ্য স্পট!
চলুক সিরিজ
++++
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৩:৪৩
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: ধ্যানী বক ভৃগু ভাইকে অপেক্ষার জন্যে ধন্যবাদ। সিরিজের সাথে থাকার জন্যে অনেক কৃতজ্ঞতা!
৯| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:২৩
এমএলজি বলেছেন: চমৎকার !
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ২:২৩
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: ধন্যবাদ!
১০| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০৭
মুজিব রহমান বলেছেন: ছবিগুলো সুন্দর!
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ২:২৭
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: কৃতজ্ঞতা!
১১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৩
মনিরা সুলতানা বলেছেন: অনেকদিন পর ব্লগে ফিরে দারুণ এক গ্লাস বোরহানি পেলাম পুদিনা পাতার বাহারি সাজ সহ !
দুর্দান্ত বর্ণনা , হারিয়ে যাবার আকুল ডাক মনে মাঝে আকুলি বিকুলি করছে!! এমন সব বাড়ির ছবি আর বন কেমনে সব অন্য দেশেই থাকে
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ২:৩১
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: আপু, অনেকদিন পর আপনাকে পেয়ে ভাল লাগছে খুব। বাংলাদেশেও কিন্তু এক আধ জায়গায় আছে যার তুলনা সারা দুনিয়ায় নেই।
১২| ০১ লা অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৩
[email protected] বলেছেন: ১৯৭৮ সালে জিয়াঊর রহমান উত্তরা গণভবনে মন্ত্রী পরিষদ নিয়ে বৈঠক করেছিল।আমার বাবার চাকুরীর সুবাদে আমি তখন নাটোরে ছিলাম। সেই সময়ও রাজবাড়ীটির উন্নয়নে প্রচুর কাজ হয়েছিল।
সেই সময় হোটেলে চড়ুই পাখির মতো ছোট ছোট পাখির রান্নাকরা খাবার পাওয়া যেত,more
১৩| ০৮ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:১৩
স্বাধী০০০৭ বলেছেন: ছবি গুলো অনেক সুন্দর
আপনি যদি তামিল অ্যাকশন দেখতে পছন্দ করেন তাহলে ভিডিওটি এই মিস করবে না
যদি ভিডিও পছন্দ করেন তাহলে প্লিজ চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন
https://www.youtube.com/watch?v=teFncORcTsY&t=53s
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ ভোর ৪:১২
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: চমৎকার !!!
লিখতে থাকুন ।
.....................................................................................