নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নওয়াব ফয়জুন্নেসা
ত্রিপুরার হোমনাবাদ (বর্তমানে লাকসাম) পরগণার জমিদার আহম্মদ আলী চৌধুরার ঘরে ১৮৩৪ সালে, ফয়জুন্নেসার জন্ম। তিনি তার বাবার প্রথম কন্যা সন্তান।
শিক্ষানুরাগী ফয়জুন্নেসার নিজের অদম্য ইচ্ছা দেখে পিতা তাজউদ্দীন নামে গৃহ শিক্ষক নিয়োগ করে দেন। তিঁনি অারবী, ফার্সি, বাংলা ও সংস্কৃত ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন। তাঁহার লেখনীতে মিলে তার প্রমান।
১৮৬০ সালে, জমিদার সৈয়দ মোহাম্মদ গাজীর সাথে ফয়জুন্নেসা পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। তাঁহার দাম্পত্য জীবন তেমন সুখকর হয়নি এবং এক পর্যায়ে বিচ্ছেদ ঘটে। বিয়ের ১৭ বৎসর পর জানতে পারেন, স্বামীর অন্য একজন স্ত্রী আছে। বিবাহ বিচ্ছেদের পর তিনি আর্থ সামাজিক, লেখালেখি, বিভিন্ন জনহিতকর কর্মকান্ডে আত্মনিয়োগ করেন।
একই সাথে জমিদারী পরিচালনা করার প্রশিক্ষণ নেন।
জমিদারী
১৮৭৩ সালে পিতার মৃত্যুর পর, হোমনাবাদ পরগণার জমিদারী লাভ করেন, এবং ১৮৮৫ সালে মাতা আশ্রাফুন্নেসা চৌধুরানীর মৃত্যু হলে, মাতুলালয়ের সম্পতির উত্তরাধিকারী হন। অত্যান্ত দক্ষতার সাথে ফয়জুন্নেসা জমিদারী পরিচালনা করেন। তার দক্ষতাসম্পন্ন পরিচালনা ব্রিটিশ ভারতে প্রশংসনীয় বিধায়, ১৮৮৯ সালে মহারাণী ভিক্টোরিয়া নওয়াব উপাধিতে ভূষিত করেন।
নওয়াব ফয়জুন্নেসা ব্রিটিশ ভারতে প্রথম মহিলা নওয়াব।
রূপজালাল
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে নওয়াব ফয়জুন্নেসা প্রথম মুসলমান লেখক।
১৮৮৬ সালে ঢাকার 'গিরিশ চন্দ্র মুদ্রন যন্ত্র' থেকে 'শ্রীমতী নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানীর', 'রূপজালাল' প্রকাশিত হয়।
রবীন্দ্রযুগে যে কয়জন খ্যাতিমান লেখক ছিলেন তার মধ্যো ফয়জুন্নেসা অন্যতম।
তিনি বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সমসাময়িক লেখক। শুধু তাই নয় প্রথম মুসলমান গদ্য ও পদ্য লেখিকা।
'সঙ্গীত লহরী' ও 'সঙ্গীত সার' নামে দুটি বই প্রকাশিত হয়েছিলো।
নওয়াব ফয়জুন্নেসার সাহিত্য সাধনা ও শিক্ষা বিস্তারের অবদানই মহীয়সী বেগম রোকেয়ার শিক্ষা বিস্তারের অনুপ্রেরণা।
নিভৃতে
ব্রিটিশ শাসন আমলে কুমিল্লার লাকসাম পশ্চিমগাঁয়ে একজন অবরোধ বাসিনী শাসনব্যবস্থা, সাহিত্য, শিক্ষা বিস্তার, সমাজের কুসংস্কার দূর করার নিমিত্তে নিরলস কাজ করে চলেছেন।
তিনি বিভিন্ন সময়ে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারকে, জনহিতকর কর্মের জন্য সর্বদা সহযোগিতা করেছেন।
এক সময় ব্রিটিশ সরকারের প্রয়োজনে, এক লক্ষ টাকা ধার দিয়েছিলেন, এবং সেই টাকা তিনি ফেরৎ নেননি।
শিক্ষা
১৮৭৩ সালে কুমিল্লায় মেয়েদের জন্য প্রথম ইংরাজি স্কুল ,'নওয়াব ফয়জুন্নেসা গার্লস হাই স্কুল'। বেসরকারি ভাবে প্রতিষ্ঠিত ব্রিটিশ ভারতে মেয়েদের অন্যতম স্কুল।
পশ্চিমগাঁয়ে একটি অবৈতনিক মাদ্রাসা স্থাপন করেন ১৯৪৩ সালে, তাঁর পরিবারবর্গ এটাকে উচ্চ মাধ্যমিক ইসলামী কলেজে রূপান্তর করেন। এছাড়া নিজ এলকায়, তিনি ও তার মেয়ে প্রতিষ্ঠা করেন, 'নওয়ার ফয়জুন্নেসা বদরুন নেসা উচ্চ বিদ্যালয়।
এ ছাড়াও ১৪ টি প্রথমিক বিদ্যালয়, স্থাপন করেন।
স্বাস্থ্য
শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবায় নওয়াব ফাজুন্নেসার অবদান উজ্জ্বল। ১৮৯৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন, 'কুমিল্লা জানানা হাসপাতাল' কুমিল্লা সদর হাসপতালের গাইনি ওয়ার্ড, তাঁহার প্রতিষ্ঠিত অসংখ্য চ্যারিটেবল ডিসপেনসরি, সরাই খানা, এতিম খানা সবই করেছেন মানবতার সেবায়।
যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে করেছেন অনেক রাস্তাঘাট। ১৮৯৪ সালে পবিত্র হজব্রত পালন করেন, তখন মক্কায়, মুসাফিরদের জন্য নির্মাণ করেন সরাই খানা।
তিনি তাহার সমস্ত সম্পতি, তাহার ওয়ারিস দের বুঝিয়ে দিয়ে নিজের অংশভাগ ওয়াকফা করে দিয়ে যান।
১৯০৩ সালে আমাদের অহংকার, এই মহীয়সী ৬৫ বৎসরে, ইহলোক ত্যগ করেন, এই স্বল্প সময়ের ব্যাপকতা, আমাদের করেছে সমৃদ্ধ।
আমরা তাঁদের উত্তরসূরি।
১৮ ই মে, ২০১৯ সকাল ৯:০৩
তানজীর আহমেদ সিয়াম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মুল্যবান সময় বের করে পড়ার জন্য
২| ১৭ ই মে, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৯
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: জেনে ভাল লাগলো
১৮ ই মে, ২০১৯ সকাল ৯:০৩
তানজীর আহমেদ সিয়াম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মুল্যবান সময় বের করে পড়ার জন্য
৩| ১৮ ই মে, ২০১৯ ভোর ৪:০৬
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: চমৎকার লিখা।একজন মহীয়সীর জীবনী সম্পর্কে অনেক ধারনা পেলাম।
ধন্যবাদ আপনাকে ।
১৮ ই মে, ২০১৯ সকাল ৯:০৩
তানজীর আহমেদ সিয়াম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মুল্যবান সময় বের করে পড়ার জন্য
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই মে, ২০১৯ সকাল ১১:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: অজানা বিষয়।