নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পর্ব-৫
চেরনোবিলে দুর্ঘটনা তো ঘটে গেলো। মানুষজন সরিয়ে নেয়া হলো। এখন? রেডিয়েশন তো কমছেনা। বাড়ছে তো বাড়ছেই। আগুন এমনভাবে জ্বলছে যে মনে হচ্ছে কাছাকাছি আরেকটা রিয়েক্টরে গিয়ে লাগবে। রিয়েক্টর ৩ এ যদি গিয়ে লাগে তবে সারা ইউরোপকে কেউ বাঁচাতে পারবেনা। ইতিমধ্যে বাতাসের গতির সাথে বিষাক্ত মেঘ গিয়ে বৃষ্টি হয়েছে ফ্রান্সে তার আরও দুরে বৃটেনে।
পুরো বলতে গেলে অনেক বড় হয়ে যাবে। সারাংশ হলো - সোভিয়েত সরকার পাঁচলক্ষ শ্রমিক নিয়োগ করেছে আগুন নেভানোর জন্য, তেজস্ক্রিয়তা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন কৌশলে। রিয়েক্টর ৪ এর পরিশিষ্ট ছাদে গ্রাফাইট জ্বলছে, এই গ্রাফাইট পরিস্কার বা আগুনমুক্ত ঠান্ডা করতে না পারলে রেডিয়েশন স্থবির করা যাবেনা, বাড়তেই থাকবে।
এরমধ্যে টানেল খুঁড়ে পানির ব্যবস্থা করা, সাথে যেসব গ্রাফাইট অলরেডি জ্বলে গেছে বা এখনও জ্বলছে সেসব থেকে নির্গত রেডিয়েশন যেন নদীতে পৌছতে না পারে সে ব্যবস্থা করা। নদীতে যদি তেজস্ক্রিয়তা পৌঁছে তবে শেষ হয়ে যাবে অনেকগুলো দেশ কারণ নদী গিয়ে মিলিত হয়েছে ব্ল্যাক সী বা কৃষ্ণ সাগরে। কৃষ্ণ সাগর দুষিত হওয়া মানে পূর্ব ইউরোপ শেষ হয়ে যাওয়া।
প্রথমে রোবট দিয়ে কাজ করানোর চেষ্টা চালানো হয়েছিল কিন্তু লাভ হয়নি। প্রত্যেকটা রোবট অকেজো হয়ে গেছে তেজস্ক্রিয়তায়। শেষ পর্যন্ত মানুষ নামানো ছাড়া উপায় ছিলনা। রোবটগুলি দেখেছি দাড়িয়ে থেকে অনেকক্ষণ। রোবটগুলোকে আমার কাছে যন্ত্র মনে হয়নি মনে হয়েছে মানুষের ভুলের খেসারত দিতে গিয়ে মরে যাওয়া কোন প্রাণী। (প্রথম ছবি)।
যাইহোক, পাঁচ লাখের মধ্যে পঞ্চাশ হাজার শ্রমিক জানতো সাক্ষাৎ মৃত্যু ওদের জন্য অপেক্ষা করছে। তবুও ওরা গিয়েছে সরকারের নির্দেশে, মানবতার জন্য। মানবতার জন্য আত্মবলিদান। আবার অনেকে গিয়েছে টাকার জন্য। নিজে মরে গেলেও অন্তত পরিবার অনেকগুলো টাকা পাবে।
সরকার ওদের পরিবারকে কম্পেনসেশন দিয়েছে।
চেরনোবিলে যত মানুষ পশুপাখি আর গাছ মারা গেছে তেজস্ক্রিয়তায় তাদের মাটি চাপা দিয়ে উপরে সিমেন্টের ঢালাই দেয়া হয়েছে রেডিয়েশন নিয়ন্ত্রণের জন্য। প্রত্যেকটা মৃত মানুষ বা প্রানী বা গাছ ছিল বিষাক্ত। কঠিন রোগে মানুষ মারা গেলে লাশ মাটি চাপা দিলেই শেষ কিন্তু রেডিয়েশনে মানুষ বা পশু মারা গেলে তা মাটি চাপা দিলেও শেষ নয়, তেজস্ক্রিয়তা রয়ে যায় শতাব্দীর পর শতাব্দী।
রিয়েক্টর ৪ এর রেডিয়েশন কন্ট্রোল করার জন্য ৩৬টি দেশ থেকে ফান্ড সংগ্রহ করা হয়। আর্চ শেইপের একটা সিলিন্ডারের মত ঢাকনা দিয়ে রিয়েকটর ৪ কে ঢেকে রাখা হয়েছে গ্রাফাইট পরিস্কার করার পর। রেডিয়েশন নিয়ন্ত্রণ হয়েছে, এখনও আছে। (ছবিতে আমার পিছনে)।
সেই যে এলাকা থেকে সবাই সরে গেলো, সব গাছ মরে গেলো, সব প্রাণী মরে গেলো তারপর কি হলো? বলা হয়েছিল আগামী ১০০ বছর লাগবে এই এলাকা তেজস্ক্রিয়তা মুক্ত হতে, নতুন করে প্রানের সঞ্চার হতে।
তারপর ত্রিশ বছর ওখানে কেউ যায়নি। এই ত্রিশ বছরে ওখানে গড়ে উঠেছে অরণ্য, পশু আর পাখিদের স্বর্গ। এ এক বিস্ময়..
২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:১০
ময়ূরী বলেছেন: দারুণ।।
৩| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:২৪
খাঁজা বাবা বলেছেন: ছবি নেই তো
৪| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৩৬
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ছবি কৈ
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: বিস্ময় না। আল্লাহর রহমত।