![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবনের এক চরম পর্যায় মানুষকে একটা উত্তরহীন প্রশ্নের সামনে দাঁড়াতে হয়।আমার কষ্ট গুলো ঐ প্রশ্নের মধ্যে জড়িয়ে আছে।মরণশীল পৃথিবীতে চলে যাওয়া মানুষগুলোকে বড় বেশি মনে পরে।যাকে ভোলা যায়না শত সুখে-দুঃখ।লিখালিখি করি নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য। জীবনের থেকে বেশি ভালবাসি বাবা-মাকে।
“নিলয়ের ভালোবাসা”
লিখেছেনঃ নিশিথের নিশাকর
নিলয় কয়েক দিন থেকে লক্ষ্য করছে শ্রেণীর সব থেকে সুন্দরী মেয়েটা তাকে চোখে চোখে রাখছে।মানে নিলয় কোথায় যায়,কোন স্যারের কাছে পড়ে।বুঝতে পেরে নিলয় একটু সাবধানে চলা শুরু করলো।কিন্তু বিপদ আরও কাছে এলো আজ গণিত প্রাইভেটে গিয়ে দেখে,শিলা সবার আগেই এসে বসে আছে।নিলয় আর শিলা একই স্কুল আর একই শ্রেণীতে পড়লেও কখনও কথা হয়নি।নিলয় একটু লাজুক আর মেয়েদের সাথে সম্পর্কটা একদম পছন্দ না।তাই প্রাইভেটে ওদের সাথে কোন মেয়ে ছিল না।শিলা স্যারের কাছে অনেক অনুরোধ করে রাজী করেছে শুধু নিলয়ের জন্য।কিন্তু নিলয় এটা মানতে না পারায় স্যারের কাছে গিয়ে বলল যে, কোন মেয়ে এই ব্যাচে পড়তে পারবে না।কিন্তু স্যার রাজী হল না নিলয়ের কথায়।কি আর করার বাধ্য হয়ে পড়তে হল।কিছুদিন পর শিলা প্রায় সবার সাথে ভালো সম্পর্ক করে ফেললো শুধু নিলয় বাদ পরে গেলো।এভাবে হটাৎ একদিন প্রাইভেট শেষে শিলা বলল সে সবাইকে খাওয়াবে তাই সবাইকে দোকানে যেতে বলল আর নিলয়কে একক ভাবে ডাকল কিন্তু সে রাজী হল না।পরে সব বন্ধু প্রায় টেনেই নিয়ে গেলো আর নিলয়কে দ্বিতীয় বার বাধ্য হতে হল।শিলা নিলয়ের সাথে কথা বলতে চাইলে জরুরি কাজের কথা বলে কেটে পরে।এটা শিলার সম্মানে একটু ছুঁয়ে গেলো অনেকটা মন খারাপ করে বাড়ী চলে গেল।
নিলয় ভাবছে না আজ সে শিলার সাথে কথা বলবে এই ব্যাচে হয় ও থাকবে নয়তো শিলা থাকবে।তাই একটু আগেই গেল।শিলাও হাজির.........
- কি নিলয় কেমন আছো?
- কই আর ভালো থাকতে দিলেন।আমার একটা কথা ছিলও
- (শিলা একটু আগ্রহের সাথে বলল)হ্যাঁ বল?
- কাল থেকে হয় আপনি আসবেন না হয় আমি।যে ব্যাচে মেয়ে থাকবে সে ব্যাচে আমি পড়বো না।
- তাই।তাহলে স্কুলে আসো কেন?ওখানে মেয়ে নেই?
- আছে কিন্তু এতো কাছে না।তাছাড়া আমি চাইলে স্কুলের নিয়ম বদলাবে না।কিন্তু এখানে তা সম্ভব।
- তুমি নিজেকে কি মনে কর?আমি তোমার কি ক্ষতি করেছি যে,আমি থাকলে পড়তে পারবে না?
- দেখুন আমি শুধু আপনার কথা বলিনি।যে কোন মেয়ের সাথেই পড়বো না।আর আমি খুব সাধারণ ঘরের ছেলে,তাই নিজেকে কিছুই ভাবি না।
- আমি আসবো তোমার সমস্যা থাকলে তুমি আসবে না।
নিলয় আর কোন কথা না বলে চলে গেল বাড়ীতে।ঠিক করলো রাজু স্যারের কাছে আর পড়বে না।
কয়েক দিন হয় নিলয়কে আর স্কুলে প্রাইভেটে কোথাও দেখা গেল না।শিলা খোজ করে জানতে পারলো, নিলয় অসুস্থ।
কয়েক দিন পর স্কুলে আসলো নিলয়।ক্লাশে নোটিশ দেয়া হল পিকনিকের নিলয় একা কখনও বাইরে কোথাও যায়নি তাই প্রথম নামটা লিখে দিলো।শিলা এই খবর শুনে একটু ভাবলও ভেবে নাম দিলো না কিন্তু অফিসে বলে রাখলো যাওয়ার কথা।
পিকনিকে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে স্কুলে এসে জানতে পারলো শিলাও যাবে।কি আর করার এতো বড় সুযোগ পেয়ে হারাবে একটা মেয়ের জন্য, তাই গেল।গাড়ী যখন ভিন্ন জগতের ভিতরে গিয়ে থামল তখন সবাই নেমে গেলো, নিলয় সবার পরে নামলো।নেমেই শিলাকে দেখল বুঝতে কষ্ট হল না তার অপেক্ষায় ছিল।তবুও না বোঝার ভাব নিয়ে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময়।শিলা এসে হাত ধরে ফেলল।নিলয় একটু ভয় পেয়ে বলল .........
- আরে করেন কি।আপনি তো ভালও না।
- শোনো নিলয় তোমার সাথে আমার কথা আছে।প্রথম হল এখন থেকে আমাকে তুমি করে বলবে।আমি এখানে এসেছি পিকনিক করতে নয়,তোমার সাথে কথা বলতে।তাই তুমি যেখানে আমি সেখানে।
- (নিলয় একটু নরম হয়ে গেলো তাছাড়া শিলার মতো মেয়ের সাথে সবাই বন্ধুত্ব করতে চাইবে তাহলে তার সমস্যা কোথায়) এখানে কথা বলা ঠিক হবে না, বাসের ভিতর বসে বলি............
- আচ্ছা চলো...............।
- হ্যাঁ বল কি বলার জন্য আজ এখানে এসেছ?
- নিলয় আমি শুধু আজ নয়।অনেক দিন থেকেই তোমার পিছনে ঘুরছি।
- হ্যাঁ আমিও তো সেটাই জানতে চাচ্ছি, কেন?
- নিলয় আমার তোমাকে খুব ভালো লাগে।
- দেখো শিলা তুমি খুব সুন্দর একটা মেয়ে, তোমাকে যে কেউ ভালবাসতে বাধ্য।তোমার মতো একটা মেয়ে আমাকে পছন্দ করা ঠিক না।তাছাড়া যে কেউ বলে দেবে আমি তোমাকে ঠকিয়েছি।আর আমি চাই না তোমার কোন ক্ষতি হোক।তুমি কোথায় আর আমি কোথায়।আর যার সাথে এতো পার্থক্য বিদ্যমান তার সাথে তুমি প্রেম করতে পার কিন্তু আমি পারি না।পারতো আমাকে ক্ষমা কর।
- আমি ক্ষমা করতে পারবো না।আর কোন যুক্তি আমি মানি না।এতো প্যাচে আমি নেই।তুমি যদি আমাকে ভালো না বাস তাহলে এটাই আমাদের শেষ দেখা।বিশ্বাস করো আমি তোমাকে সত্যি অনেক ভালবাসি।
- আসলে শিলা ভালোবাসা আমি ঠিক বুঝি না।তাছাড়া তুমি কেন বুঝতে পাচ্ছ না।এটা সম্ভব না।এ বলে শিলাকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে চলে যায় নিলয়।
কিন্তু শিলা হল বড় লোকের মেয়ে তাই জিদটাও একটু বেশি।একটু কষ্ট পাওয়ার ভাব নিয়ে নিলয়ের কাছে গেলো।
নিলয় ভাবছে শিলা হয়তো সত্যি ওকে ভালবাসে।কিন্তু শিলার ভালোবাসা মেনেও নিতে পাচ্ছে না।মেয়ে মানুষ একটু বেশি জেদি হয়,যদি আবেগে জড়িয়ে শিলা কিছু করে ফেলে, তাহলে নিলয় কখনো নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে না।এ সব ভাবতে ভাবতে একটু নির্জন জায়গা দেখে বসলো নিলয়।বসেই দেখে শিলা সামনে দাঁড়ে।এখন নিলয় যদি কথা না বলে তা হলে তাকে অপমান করা হয় ভেবে নিলয় বলল।
- দাঁড়ে কেন।বসলেই তো পারো।
- না আমি বসবো না।তুমি ভেবে বল ওটাই কি তোমার শেষ কথা(একটু কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে)।
নিলয় আর রিস্ক নিতে পারলো না।শিলার কথায় কেমন জেনো একটা অনুভব করলো।অনেকটা বাচ্চা ছেলের মতো আর মনে হল এই মেয়েকে প্রত্যাখ্যান করা যাবে না।সাথে সাথে বুকের ভিতর কেমন ধিক ধিক করতে লাগলো।কাপা কাপা কণ্ঠে নিলয় বলল আমাকে ভুল বুঝে দুরে যাবে না তো?
শিলা বুঝতে পারলো সে জয় লাভ করেছে।সে নিলয়ের মতো একটা একাকীত্ব মনের ছেলেকে তার প্রেমের বেড়াজালে আটকাতে পেরেছে।তাই নিলয়ের হাত ধরে বলছে, আজ নিজেকে বড় সুখী জয়ী বলে মনে হচ্ছে।
নিলয় বলছে, আমি তোমাকে নিয়ে অনেক কিছু ভেবেছি কিন্তু এটা ভাবিনি যে তোমাকে এতো আপন করে পাবো।আজ নিজেকে বড় ভাগ্যবান বলে মনে হচ্ছে।আজ প্রতিজ্ঞা করলাম মরণ ছাড়া কোন কিছুতে ভাঙ্গবে না এই সম্পর্ক।কথা দাও আমায় ছেড়ে কোথাও যাবে না?
শিলাও নিলয়ের সাথে মিলিয়ে বলল যাবো না তোমায় ছেড়ে কোন দিনও।
তারপর শিলা আর নিলয় সারাদিন এক সাথে ঘুরলো খাইলো।অনেক আবেগ ভরা কথা হল।যা সব প্রেমের মধ্যে হয়ে থাকে।তখন মোবাইল ছিল না, চিঠি যোগাযোগের একমাত্র উপায় আর বেসরকারি ডাকপিয়নের তো অভাব নেই।
পিকনিকের পর স্কুলে গিয়ে শিলা আর নিলয় প্রায় পাশাপাশি সিটে বসে ক্লাশ করা শুরু করলো।এক সাথে টিফিন খায়, ঘুরতে যায়।আর শিলার এতো সব আবদার নিলয়ের কাছে জমা হয়ে যায় যে, নিলয়কে সব সময় দৌড়ের উপর থাকতে হয়।প্রথম প্রেম তো তাই খুব তাড়াতাড়ি খুব দুর্বল হয়ে পরে নিলয়।অন্ধের মতো বিশ্বাস করে শিলাকে।যখন যা চেয়েছে তখন তাই পেয়েছে।যতো কষ্টই হোক না কেন তবু নিলয় আনন্দ অনুভব করতো।
এভাবে শিলাও সত্যিকারের প্রেমিকার মতো নিলয়ের সাথে চলতে লাগলো।
শিলা নিলয়ের কথা ভাবে আর হাসে।ভাবে প্রেমে পড়লে কাছের হাবাগোবা ছেলেও কতো চঞ্চল হয়ে উঠে।কি পাগলামিই না করে, না বলে কোন শব্দ তাদের ভিতর থাকে না।
নিলয় আজ শিলাকে নিয়ে ঘুরতে জাবে নদীর পারে।তাই তাড়া দুজনেই স্কুলে না গিয়ে রিক্সায় করে গেল নদীর পার।নিলয়ের নির্জন জায়গা খুবি প্রিয় জীবনের অনেক সময় কাটিয়েছে নদীর পারে।
দুজনে একটা ভালো জায়গা দেখে বসলো।কারো মুখে কথা নেই দুজনেই ভাবছে,এই ভাবনার সমাপ্তি করতে আর দুজনের নীরবতা ভাঙ্গতে নিলয় বলল, আগে কখনো নদীর পারে এসেছ?
- না।তবে ভালই লাগছে।
- আমার খুব প্রিয় এই নদীর তীর গুলো।
- নদী কি দেখো শুরু থেকে বয়ে চলছে, কোথাও থেমে নেই।
- নদীকে যদি ভাবো যে ক্ষতি করে তাহলে মনে হবে, এক জনের বুক খালি করে আর এক জনের ঘড় বেঁধে দেয়।এতে তার কোন লাভ বা ক্ষতি নেই।আবার যদি ভাবো যে নদী ভালবাসতে জানে তাহলে বলবো।নদীর লক্ষ্য হল সাগর।সাগরের বুকে তার সব সুখ তাই সে যুগ যুগ ধরে বয়ে চলেছে সাগরে মিলিত হবে বলে।তুমি আমার কাছে অনেকটা সাগরের মতো আর আমি নদীর মতো।
- শিলা মন দিয়ে কথা গুলো শুনছে।আর বলছে তুমি তো অনেক কথা জানো।
- জানবো না।মানুষ প্রেমে পড়লে কবি হয় আর আমিতো এতকিছু হতে পারবো না।আমার যা জানা আছে আমি তা দিয়েই আমার ভালোবাসা প্রকাশ করলাম।সময় কখনো থেমে থাকে না।নিজেকে সময়ের থেকেও বেশি বহমান মনে করতাম।কিন্তু এখন বুঝলাম, সময় না থামলেও জীবন থেমে যায় প্রেয়সীর জন্য।
- হয়েছে হয়েছে।এতো বলতে হবে না।এখন বল শুধু এই কথার জন্য এখানে এনেছ না আরও কথা আছে?
- (নিলয় তাতেই একটু মনে ব্যথা পেলো।প্রেমে পড়লে মনটা এতো নরম হয় যে, একটা কথা পছন্দ না হলে, মনে হয় কলিজা পুড়ে যায়।বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠে,যা শুধু অনুভব করা যায় দেখানো যায় না।)ধীরে বলল কেন, তোমার তাড়া আছে?
- কি মন খারাপ করলে না,কি?আমার কোন তাড়া নেই,তোমার সব কথাই শুনবো বলেই এখানে আশা।আমি যা বোঝাতে চেয়েছি তা ভুলে গেছি।PLEASE DON’T MIND.PLEASE
- (এই সময়টা মেয়েদের SORY,PLEASE এর কঠিন ক্ষমতা মনকে মোমের মতো গলিয়ে দেয়।তাই নিলয় খুশি হয়ে বলা শুরু করলো) আমার বয়স যখন আট বছর তখন আমার বাবা মারা যায়।রেখে যায় যতেস্ট সম্পদ।তাই টাকার অভাব কখনো বুঝিনি।পাইনি শুধু কারো ভালোবাসা, সবাই আমাকে ভীষণ ভালবাসে।কি ভাবছো সবাই ভালবাসলে এমন মনে হয় কেন?আরে সবাই আমার আড়ালে আমাকে ভালবাসে।আর আমিই সবার থেকে আলাদা থাকতাম।কারো সাথে তেমন মিশতাম না।কেন জানো?যদি কাউকে ভালোবেসে ফেলি আর সেও যদি বাবার মতো করে ফাকি দিয়ে যায়।তবে আমি কারো ক্ষতি করি না।আমার জীবনটা একাকীত্বে কাটাতে চেয়েছি কিন্তু কোথা থেকে তুমি এলে আমার অন্ধকার ঘরে আলো জালাতে।আমারও খুব লোভ হয়ে গেলো সবার সাথে নিজেকে নিয়ে সুখে থাকার।তাই তোমাকে ফেরানো সম্ভব হল না।আমার কথা শুনে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নাই।আমি দুমাস আগেও নিজেকে বড় অসহায় মনে করতাম।ভাবতাম ভালোবাসা সবার জন্য নয়।হুমায়ূন আহমেদ বলেছে- পৃথিবীতে কিছু কিছু মানুষ সম্ভবত কষ্ট পাবার জন্যই জন্মায়।টাকা পয়সার কষ্ট নয়-মানসিক কষ্ট।কথাগুলো পড়ে মনে হতো হয়তো কবি আমার জন্য এটা লিখেছে।কিন্তু তোমাকে পাওয়ার পর কবি কেন নিজেরও কিছু জিনিসকে অবিশ্বাস করা শুরু করেছি।তুমি হয়তো মনে করো অল্প দিনের সম্পর্ক আমাদের।কিন্তু আমি মনে করি জন্মের আগে থেকে সম্পর্ক।আল্লাহ্ ঠিক করেই পাঠিয়েছে দুজনকে,শুধু খুঁজে পেতে যা সময় লাগলো।আরও অনেক বলার আছে কিন্তু আজ আর বলবো না।এতদিন যা শুধু নিজের সম্পদ ভেবে এসেছি,আজ তা তোমাকে একটু দেখালাম।যা আর কাউকে দেখাই নি।কারণ তুমিই আমার একমাত্র মানুষ যে আমায় সান্ত্বনা দিলে করুণা করবে না, মনেও হবে না।
- (শিলার চোখে পানি।হয়তো নিলয়ের কষ্টটা বুঝতে পেরেছে।যা বেশি বুঝেছে তা হল নিলয় বড়ই সহজ সরল মনের মানুষ।যার চোখে শিলা দেখছে অন্ধ বিশ্বাসের ছবি) চোখ মুছতে মুছতে বলল চলো এবার উঠি বিকাল হয়ে গেল বাড়ী যাইতে হবে।
- আচ্ছা চলো।তবে আমার সম্পর্কে সব জানাতে চাই জেনো আমার কোন ব্যবহারে কষ্ট না পাও।আমাকে ক্ষমা করতে পারো।এখন চলো...............
দুজনে এক সাথে নদীর পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছে, নিলয় বলল তুমি শাড়ী পর না?কেন পড়ি, কিন্তু খুব কম।তবে পহেলা বৈশাখে অবশ্যই।
নিলয় খুশি হয়ে বলল আমি তোমাকে একটা শাড়ী গিফট করবো, তুমি তা পড়ে আমাকে দেখাবে।শিলা কি জেনো ভেবে বলল আচ্ছা দেখাবো।
রিক্সায় শিলাকে উঠায় দিয়ে বার বার শিলাকে বলছে আর একটু থাকতে পাড়তে কিন্তু।শিলা হাসি মুখে বলল সময় আরও আছে আজ আসি।বাই বাই...............
তখন নিলয় শুধু চেয়ে আছে আর শিলার বাই বাই কথাটা কানে বার বার শোনা যাচ্ছে।দাড়িয়ে থেকেই ঠিক করলো বাড়ী গিয়ে লালমনি যাবে শিলার জন্য শাড়ী নিতে।
পরের দিন সকালে নিলয় শাড়ী কিনতে গেল।তাই আর সেদিন স্কুল যাওয়া হলও না।
নিলয়কে স্কুলে না পেয়ে আজ দশম শ্রেণীতে বসেছে নিলয়ের মরার খাওয়ার ধুম।মানে আজ শিলা তার বন্ধুদের ধরেছে,বলছে এই তোরা আমার টাকা দে।বাজীতে আমি জিতেছি তোরা সবাই হেরে গেছিস।এ কথা শুনে সবাই আগ্রহের সাথে শিলাকে পীড়া দেয়া শুরু করেছে।নিলয় তাকে কিভাবে তার প্রেমের কথা বলেছে, সে কি আসলে ভালবাসতে জানে?বেশি আগ্রহ শিলার সত্যিকারের প্রেমিক বিজয়ের।পরে শিলার মনে হল নিলয়ের ভূত মাথা থেকে নেমেছে।তাই হেসে বলতে লাগলো।
(এখানে একটা কথা না বললেই নয়-এই যে খুশিটা শিলার বন্ধুদের মুখে এটাকে হাসি বলে না, বলে হাজারও ছেলের মিত্যুর হাতিয়ার।কারণ যখন নিলয় স্কুলে আসবে আর সবাই তাকে দেখবে আর তারই বলা যা,তাকে অনেক কষ্ট দেয়।সেই কথা অন্য মানুষ বলবে আর হাসবে,না অট্ট হাসি দিবে।ভাবতে পাড়েন তখন একটা সহজ সরল ছেলের মন কি বলবে?) নিলয়ের আবেগের কথা বলছে।আর সবাই এতো মজা পেলো যা ভাষায় প্রকাশ করা বড়ই কঠিন।যাই হোক,এই মিটিং এ অনেক সদস্যের মধ্যে নিলয়ের পাশের বাড়ীর একটা বন্ধু ছিলও নাম জসীম, কিন্তু এটা শিলারা জানতো না।তাই জসীম স্কুল থেকে বাড়ীতে এসেই নিলয়ের বাড়ীতে গেছে খবরটা দিতে।গ্রামের বাড়ীর বন্ধুরা এমনি,বন্ধুর জন্য জীবনও দিতে পারে।নিলয়ের বাড়ীতে গিয়ে জানতে পারলো নিলয় লাল-মনি গেছে এখনও আসেনি।তাই জসীম নিজের বাড়ীতে আসে, বাজারের জন্য তাকে আবার ফুলবাড়ি যাইতে হল, ভাবলও রাতে গিয়ে বলবে পাশেই বাড়ী সমস্যা নেই।
এদিকে নিলয় বাড়ীতে এসে শোনে জসীম খুব জরুরি ভাবে দেখা করতে বলেছে।এই কথা শুনে খাওয়া বাদ সোজা জসীমের বাড়ী, কারণ নিলয় ভেবেছে হয়তো শিলা তাকে অনেক খুঁজেছে, মিস করেছে।নয়তো কোন চিঠি জসীমের দাঁড়া পাঠিয়েছে।নিলয় ও ভাবলও থাক রাতে শুনবো কি ঘটনা,সে জানে।
পরে সাইকেল করে শিলাদের বাড়ীর পাশের এক বন্ধুর বাড়ীতে গিয়ে শাড়ীটা পাঁঠিয়ে দিলো।পরে বাড়ী আসতে নিলয়ের প্রায় রাত ১০ টা বাজলো।বাড়ীতে ঢুকেই জসীমের কণ্ঠ শুনতে পারলো নিলয়।তারপর দুই বন্ধু খাওয়া শেষ করে রাস্তায় বের হল।একটা ফাঁকা মাঠের মধ্যে বসে খুব খুশি মনে বলছে,বল জসীম কি তোর জরুরি কথা যার জন্য এতো রাত আছিস?
- আগে কথা দে আমার উপর রাগ করবি না।আর মন খারাপও করবি না।ভাববি জীবনের ভুল...
- নিলয় কিছুই বুঝতে না পেরে জসীমের কথায় রাজী হল।
- আমি জানি তুই শিলাকে অনেক ভালবাসিস,হয়তো কখনো ভুলবি না।ভুলতে পাড়বিও, তবুও আমাকে আজ চরম সত্যি কথাটা বলতে হবে।তুই আমকে সব সময় সান্ত্বনা দিয়ে আসছিস কিন্তু কপাল দেখ আজ তোকে সান্ত্বনা দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করছি।বন্ধু খুব দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে যার জন্য তুই সারাদিন দৌড়ে আসলি আজ সে বলেছে, ও তোকে ভালবাসে না।শিলা বিজয়কে ভালবাসে।তোর সাথে যা করেছে তা পুরাটাই মিথ্যে।একটা বাজি ছিলও এতে তোর ক্ষতি হলেও বাজিতে শিলায় জয় লাভ করেছে।আট দশ জনের সামনে তুলে ধরেছে তোর সাথে কাটানো সময় গুলোর কথা।
- এতক্ষণ নিলয় কিছুই বলে নাই তার কারণ সে তার আত্মাকে খুঁজে পাচ্ছে না দেহের ভিতর।স্থির হয়ে আছে হয়তো বুক ফেটে কান্না আসছে রাত বলে হয়তো চোখের পানি দেখা যাচ্ছে না।কিন্তু নিলয় চায় না এই কষ্টের ভাগ বন্ধুকে দিতে তাই মিথ্যে একটু হাসি দিয়ে বলল ভালই হয়েছে।চল বাড়ী যাই ঘুম পাচ্ছে।কাল স্কুলে দেখা হবে।বলেই নিলয় বাড়ী চলে গেল।
পরের দিন স্কুলে--- শিলা আজ ঠিক করেছে সত্যি টা নিলয়কে জানিয়ে দিবে তাই আসছে নিলয়ের কাছে।শ্রেণীর সব মেয়েকে নিলয় আগেও হাসতে দেখেছে কিন্তু আজকের হাসিটা জেনো নিলয়ের বুকটা ফুটা করে দিচ্ছে।শিলা সামনে দাড়িয়ে মাথা নিচু করে বলছে I AM REALY SORY NILOY.এতো দিন তোমার সাথে যা হয়েছে এগুলো শুধুই একটা বাজি ছিলও তাই সম্পর্কটা বেশি গভীরে যাওয়ার আগেই বলে দিলাম।আমাকে ক্ষমা করে দিবে না?
নিলয় মাথা নিচু করে শুধু দুইটা শব্দ উচ্চারণ করেছে – IT’S OK.
- সুখে থেকো তুমি,না ভুল বললাম তুমি বলার কোন অধিকার আমার নেই।আপনার জীবন টা সুন্দর হোক।তবে একটা কথা বলি কারো বাস্তব নিয়ে মজা করবে, আবেগ নিয়ে নয়।
এক মাস পর
শিলার সাথে বিজয়ের সম্পর্কটা টিকলো না কারণ একটাই বিজয়ের কাছে নিলয়কে খোঁজে শিলা।না পাওয়ায় সম্পর্ক ভেঙ্গে গেল।এদিকে এক মাস হল ঐ দিনের পর আর নিলয়ের দেখা পাওয়া যায়নি।অনেকদিন পর জসীমকে পেয়ে শিলা খুব আগ্রহের সাথে বললে ভুল হবে মহা-অপরাধীদের মতো করে জানতে চায়, নিলয় কোথায়, কেমন আছে?জসীম বলে দেখতে হলে আমার সাথে আসো।শিলা কমন রুমে গিয়ে নিলয়ের শাড়ীটা পড়ে গেল নিলয়ের বাড়ীতে।জসীম নিলয়দের বাড়ীর উঠানের পাশের একটা নতুন কবর দেখিয়ে শিলাকে বলল, তোমার ভালোবাসা পেয়ে ভেবেছিলো জীবন সার্থক তাই আমাদের সবাইকে ফাকি দিয়ে চলে গেছে অনেক দুরে।ভালই করেছে আর ঠকতে হবে না।জীবন তাকে কি দিয়েছে বলতে পারো শিলা?পিছনে ঘুরে দেখল শিলা জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে শুয়ে.............................................
(এতক্ষণ পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।জানি আমি গল্প লিখতে পারিনা।তবুও সাহস করে দিয়েই দিলাম আপনাদের সামনে।ভালো মন্দ যাই হোক কমেন্টে জানালে খুশি হতাম।হয়তো কিছু শিখতে পারবো।)
©somewhere in net ltd.