নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিশিথের নিশাকর

নিশিথের নিশাকর

নিশিথের নিশাকর

জীবনের এক চরম পর্যায় মানুষকে একটা উত্তরহীন প্রশ্নের সামনে দাঁড়াতে হয়।আমার কষ্ট গুলো ঐ প্রশ্নের মধ্যে জড়িয়ে আছে।মরণশীল পৃথিবীতে চলে যাওয়া মানুষগুলোকে বড় বেশি মনে পরে।যাকে ভোলা যায়না শত সুখে-দুঃখ।লিখালিখি করি নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য। জীবনের থেকে বেশি ভালবাসি বাবা-মাকে।

নিশিথের নিশাকর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসা সেতো নশ্বর

১০ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:১২

ভালোবাসা সেতো নশ্বর....................

লিখেছেনঃ নিশিথের নিশাকর



# আকাশ একা বসে আছে,ট্রেন ছাড়ার সিগনাল দিল এমন সময় আকাশের কেবিনে একটা সুন্দর মেয়ে উঠলো।সিট নাম্বার চেক করে,বলল আমরাই তো দুজন সিট নাম্বার খুঁজছি কেন?

-হ্যালো ভাইয়া আমি রূপা,আপনি?

-(আকাশের মন খারপ তাই ভাবছে না এই মেয়ের সাথে কথা বলে সময় কাটাতে হবে।)আমি...আমার নাম আকাশ।কোথায় যাচ্ছেন?

-ভাইয়া ঢাকা যাব।কিছু মনে করবেন না,কথা বলতে আমার খুব ভালো লাগে।

-ও তাই।বলেন .........?

-না না।বলতে না শুনতে?

-কিন্তু আমার কিছুই বলার নেই যে?

-আপনার চোখে মুখে অনেক কথা ঘুরছে সেটাই বলেন।আপনাকে দেখলে যে কেউ বলে দেবে আপনার মন খারাপ সেটা ছোট কারনে নয়।বলেন না ভাইয়া?

-ওকে।আপনাকে বলাই যায় কারন আপনি আমাকে চেনেন না।আমিও আপনাকে জানি না।তাহলে শুনুন............

আমি রিয়া নামের একটা মেয়েকে ভালবাসি।ভুল বললাম,আমরা দুজন দুজনকে ভীষণ ভালবাসি।রিয়া ডিগ্রি পাশ করে একটা প্রাইমারী স্কুলে সহকারী শিক্ষিকা হিসাবে জয়েন করল।আমিও মাষ্টার্স কমপ্লিট করে একটা কলেজে শিক্ষক হিসেবে ঢুকলাম।আমার ভালবাসার কথা আমার বাড়ির সবাই জানতো তাই পারিবারিক ভাবেই আমাদের বিয়ে হল।আমাদের বিয়ের চার বছর হয়ে গেলো কিন্তু আমাদের ঘরে কোন সন্তান আসলো না।চেষ্টাও করেছি,ফল ভালো হয়নি।এদিকে বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান আমি,তাই বাবা মা একদিন বলেই ফেলল যে,তাঁদের নানা,নানি হওয়ার খুব আশা।তাছাড়া বংশ বৃদ্ধি করতে হবে না।সব বৃদ্ধদের আশা তাঁদের নাতি,নাতনির সাথে খেলবে।আরও কত কি?

তাই সিদ্ধান্ত নিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিলাম।ডাক্তার বলল দুজনকে টেস্ট করতে হবে তাহলে বোঝা যাবে সমস্যা কার।টেস্ট করার আগের দিন রিয়া আমাকে বলল,আকাশ টেস্টে যদি আমার সমস্যা হয় তাহলে তুমি কি আমায় তাড়িয়ে দিবে?

- ছি ছি।এসব বলছ কেন রিয়া?তুমি বলতে পারবে,আমি এমন কিছু করেছি যার জন্য তোমাকে এতটুকু কষ্ট পেতে হয়েছে?তুমি কষ্ট পাও এমন কাজ আমি কোনদিন করবো না।তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না।তুমি আমার বেঁছে থাকার অক্সিজেন।

- সত্যি,তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসো।আমিও তোমাকে ছাড়া কখনো অন্য কিছুই ভাবতে পারিনা।এবার শুধু রিপোর্টটা ভালো হলে হয়।

- অবশ্যই ভালো হবে।আল্লাহ্‌র কাছে তো আর খারাপ কিছুই চাইনি..................বল?

- আচ্ছা ঠিক আছে।আগে টেস্ট করি তারপর বাকী সব ভাবা যাবে।

- ওকে।

তার পরের দিন গেলাম ডাক্তারের কাছে।দুজনের কথা শুনে ডাক্তার খুশি হলেন।পরে আমি ডাক্তারের রুমে গেলাম।ডাক্তার আসবো..................

-জি আসেন?বসেন,কিছু বলবেন?

-আমি যা বলতে এসেছি তা শুনে হয়তো হাসবেন কিন্তু এটাই সত্যি।আপনি কথা দেন এই কথা আপনি ছাড়া কেঊ জানবে না?

-আচ্ছা কথা দিলাম।এখন বলেন কি বলবেন?

-জানি না রিপোর্টে কার সমস্যা ধরা পরবে,জারি হোক আপনি বলবেন সমস্যা আমার।

-না না।তা কেন বলবো।আর এটা বললে তো ক্ষতি আপনারেই হবে।

-না ডাক্তার আমার কোন ক্ষতি হবে না।বরং আমার স্ত্রীর কথা বললে সমস্যা হবে।জানেন তো গ্রামের মানুষের মুখ থামানো যায় না।তার থেকে এটাই ভালো হবে।প্লিজ ডাক্তার?

-ওকে ওকে।এতো করে যখন বলছেন তখন তাই হবে।

-ধন্যবাদ ডাক্তার।আমি আসি.........

পরে টেস্টে রিয়ার সমস্যা ধরা পড়লো কিন্তু সবাই জানলো আমার কথা।কারন আমি চাইনি রিয়া এই সংবাদ শুনে মনে কষ্ট পাক।মা হতে না পারার কথা কোন মেয়েই মানতে পারে না,আর যদি শোনে সমস্যা নিজের তাহলে প্রতিনিয়ত কষ্ট পাবে।আমি এই কষ্টটা রিয়াকে দিতে চাই না।রিয়া আমার নিঃশ্বাস,আর নিঃশ্বাস ছাড়া আমি বাঁচতে পারবো না।যাই হোক-বাড়িতে আসলাম রিয়ার মন খারাপ দেখে বললাম যে দেখো,আল্লাহ্‌ যদি না চায় তাহলে আমরা তা কি করে করবো?কত জনের তো ছেলে মেয়ে নেই।তারা ভালো আছে না।রিয়া একটু শুকনো হাসি দিয়ে বলল ঠিক আছে।এদিকে বাবা মা এই খবরে খুবি কষ্ট পেলেন।কি ভাগ্য আমার,আমার কষ্টের জন্য আমাকেই সান্ত্বনা দিতে হচ্ছে।জীবন মানুষকে এমন একটা জায়গায় দার করায় যেখানে শেষ একটা প্রশ্ন থাকে কিন্তু তার উত্তর কেউ জানে না।আমার তেমন অবস্থা হয়েছে।

তারপর সব স্বাভাবিক ভাবেই চলছে।এভাবে চলে গেলো আরও দুবছর।আমার রোজ কলেজ থেকে আসতে একটু দেরি হয়।সেদিনও দেরিতে বাড়ি এসেছি।ঘরে ঢুকে রিয়াকে ডাকলাম,মা বলল অনেকক্ষণ থেকেই রিয়া বাড়িতে নেই।রিয়া মাঝে মাঝে অন্যান্য শিক্ষিকার বাড়িতে গিয়ে গল্প করে তাই তেমন টেনশন হল না।অবাক হলাম টেবিলে রাখা একটা কাগজ দেখে।খুলে দেখি রিয়ার চিঠি।ও লিখেছে............

আকাশ,

আমি চললাম অজানা এক সুখের আশায়।তুমি মানবে না জেনেই এভাবে চলে যাওয়া।আমি আর পারছিলাম না,মা হওয়ার আকাঙ্ক্ষা থামাতে।তাই মাতৃত্যের মোহ আমাকে আজ তোমার ঘর থেকে টেনে রাস্তায় দার করিয়েছে।আকাশ আমি মা হতে চাই?পারলে ক্ষমা কর।আর আমাকে খোঁজো না।আমি আর ফিরবো না।

ইতি

রিয়া

চিঠিটা পকেটে রেখে রিয়াকে কল দিলাম কিন্তু ওর সুইচ অফ।তাই এস এম এস দিলাম।এভাবে............জানিনা কোন ভুলের সাজা আমায় দিলে।যদি সুখি হও তাহলে যাও।যদি কখনো দেখো তোমার ভালবাসার অবমাননা হচ্ছে তাহলে চলে এসো।আমার দরজা তোমার জন্য সব সময় খোলা থাকবে।তোমার অপেক্ষায় “আকাশ”।

জানেন রূপা আমিও আর থাকতে পারলাম না তাই সব ছেড়ে চলে এলাম।কেননা রিয়াকে নিয়ে যে বাগান আমি গড়েছি তাতে ফুল হবে আর রিয়া পাশে থাকবে না।তা তো হয় না।

-(রিয়া নির্বাক হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।রুপার এমন কোন ভাষা জানা নেই যা দিয়ে আকাশকে সান্ত্বনা দিবে।তবুও বলল) ভাইয়া রিয়া আপু যদি ফিরে আসে?আপনাকে না পেলে কষ্ট পাবে না?

-না রিয়া ওরকম মেয়ে নয়।বরং আমার বলা উচিৎ.........

কেমনে ধরিব হিয়া?

আমার বঁধুয়া আন বাড়ি যায়।

আমার আঙ্গিনা দিয়া।



(বিঃদ্রঃ যেভাবে ভেবেছি সেভাবে লিখতে পারিনি।আমি চেষ্টা করবো আগামিতে ভালো কিছু দেয়ার।আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করেছি তা তো ফিরায় দিতে পারবো না। তাই ভুল হলে ক্ষমা করবেন।আপনাদের মতামত প্লিজ কমেন্টে দিবেন)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.