নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিশিথের নিশাকর

নিশিথের নিশাকর

নিশিথের নিশাকর

জীবনের এক চরম পর্যায় মানুষকে একটা উত্তরহীন প্রশ্নের সামনে দাঁড়াতে হয়।আমার কষ্ট গুলো ঐ প্রশ্নের মধ্যে জড়িয়ে আছে।মরণশীল পৃথিবীতে চলে যাওয়া মানুষগুলোকে বড় বেশি মনে পরে।যাকে ভোলা যায়না শত সুখে-দুঃখ।লিখালিখি করি নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য। জীবনের থেকে বেশি ভালবাসি বাবা-মাকে।

নিশিথের নিশাকর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছলনাময়ি

১০ ই জুন, ২০১৪ রাত ৮:৪৩

গোধূলির সময়টা অনিকের খুব অসহ্য লাগছে,

প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখার অভিলাষে বাড়ী থেকে নদীর পারে এলো।

তবে আজকের আবহাওয়াটা বেশ ভালো, নদীও শান্ত।



নদীর তীরটা কাশফুলে ভরা, হালকা হাওয়া এসে ফুলগুলোকে দোলা দিচ্ছে।

অনিক তার পাশেই বসে হেড ফোনে গান শুনছে।



“এখন তোমার নেই প্রয়োজন, আমাকে কাছে ডাকার।

তুমি পেয়েছো খুঁজে নতুন সাথী, চিরদিন পাশে থাকার।

ও প্রেম আমার, ও প্রেম আমার।

হৃদয়ে দিয়ে ব্যথা কেন, ফিরিয়ে নিলে তুমি-তোমার কথা।



ফাগুণ তোমার লেগেছে মনে, সুখের নতুন ঠিকানাতে।

আমাকে ভেঙ্গে চুরে করে দিলে শেষ, মিথ্যে তোমার ছলনাতে।

ও প্রেম আমার, ও প্রেম আমার।

হৃদয়ে দিয়ে ব্যথা কেন, ফিরিয়ে নিলে তুমি-তোমার কথা।



শ্রাবন আমার দুটি চোখে, মনের আকাশ মেঘে ঢাকা।

শূন্য হৃদয়ে পরে আছি, তুমি হীনা বড় একা।

ও প্রেম আমার, ও প্রেম আমার।

হৃদয়ে দিয়ে ব্যথা কেন, ফিরিয়ে নিলে তুমি-তোমার কথা”



গান শেষে অনিক চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারলো না,

অনিচ্ছা শর্তে অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে।আর ভাবছে, অনিমা তুমি এটা করতে পারলে।

আমি তো তোমাকেই চেয়েছি, একটুতেই সব শেষ করে দিলে।



অনিক আর অনিমার মোবাইলে পরিচয়, ভালোলাগা পরে ভালোবাসা।

তিন বছর প্রেম করার পর, আজ থেকে চার মাস আগে তাদের দেখা হয়।

অনিমাকে অনিকের খুব ভালো লাগে কিন্তু অনিমার হয় বিপরীত।

অনিক ছেলে হিসেবে ভালো হলেও দেখতে একটু কালো, ততোটা সুন্দর না।

অনিমা দেখতে অনেকটা পরীর মত, অনিকের কাছে পরীর থেকেও সুন্দর মনে হয়।

দেখা হওয়ার দিনটা স্বাভাবিক ভাবে কাটালেও,

এর প্রভাব বা অনিমার মনের ইচ্ছা বুঝতে পারে তার পরের দিন।



সেদিন অনিমা কল করে বলেছে,

—অনিক তুমি জানো, আমি ঘুড়িয়ে কথা বলি না।তাই সোজা বলছি,

আমাদের সম্পর্কটা আর রাখতে পাচ্ছি না।তুমি আমায় ভুলে যাও।



—এসব তুমি কি বলছো?আমার অপরাধ?এমন তো কথা ছিল না?



—অপরাধ তোমার না, আমার।উচিৎ ছিল আরও আগে আমাদের দেখা করা।

আমি তোমাকে কোন ভাবেই মেনে নিতে পাচ্ছি না।প্লীজ আমাকে ভুলে যাও।

—ও এই কথা।আমি তো আগেই বলেছি, আমি দেখতে ভালো না।

তুমিই তো বলেছ, ভালবাসার চোখে সবই ভালো লাগে।আজ তুমিই!

তাহলে তোমার মাঝে সে দিনের ভালবাসাটা, আজ আর নেই?

তুমি বদলে গেছো, অন্য অনিমা হয়ে গেছো?



—আমি কিচ্ছু জানি না, তোমাকে বিয়ে করে বাকী জীবন কেঁদে কাটাতে পারবো না।

তুমি বলতে পারো, তোমাকে নিয়ে কারও সামনে দাড়াতে পারবো?এতো কিছু বলতে চাই না।



—হা হা হা।আমি তোমাকে বলেছি, তুমি আমাকে নিয়ে সব করতে পারবে।

শুধু একটাই বলতে পারবে না, সেটা হল তোমার বরটা খুব সুন্দর।সব ভুলে গেছো?

আমি কখনোই তোমাকে ঠকাতে চাইনি, আজও চাইবো না।তুমি যদি সুখি হও, তবে তাই হোক।



—অনিমা কিছু বলতে পাচ্ছে না।শুধু ভালো থেকো বলে কেটে দিলো।



অনিক স্তব্ধ হয়ে ফোনটা কানে রেখে দাড়িয়ে রইলো,

ওর মনেই নেই অনিমা লাইনটা কেটে দিয়েছে।

এতো দিনের সাজানো সব স্বপ্ন, কয়েক মিনিটে তা ভেঙ্গে তছনছ হয়ে গেলো।



তার দুই সপ্তাহ পর অনিমার বিয়ে হল, খুব ধুমধামে।

অনিক জানে বিয়ে হয়েছে কিন্তু কার সাথে তা আর জানা হয়নি।



আজ চার মাস পর এক বন্ধুর সাথে তার মামার বাড়ী ঘুরতে গিয়ে দেখে,

অনিমা সে বাড়ির নতুন বউ।খুব সুখেই সংসার করছে।ভালো আছে সে।

তাকে দেখেই অনিকের বুকের বাম পাশের ক্ষতটায় প্রচণ্ড ব্যথা হল।

চোখের দৃষ্টি কেমন ঝাপসা হয়ে আসছে, দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনিকের।

অনিক বন্ধুকে রেখে বাড়ী এসে, নদীর পারে বসে কাঁদছে।



সে তো কোন পাপ করেনি, মিথ্যে বলেনি।

তাহলে কেন,

আজ অনিমা সুখের ভেলায় ভাসছে আর অনিক স্রোতে ভাসা শ্যাওলা হয়ে বয়ে চলছে।

অযাচিত দুঃখ আর বাস্তবতার কষাঘাতে ক্ষত-বিক্ষত মন নিয়ে।

নিজেকে ছেড়া ঘুড়ির মত মনে হচ্ছে, যার নাটাই অনিমার হাতে।



অনিকের জীবনটা নদীর মত বহমান আর স্বপ্নগুলো ছেড়া ঘুড়ি।

যার কোনটাই অনিকের ইচ্ছে মত চলে না, বেঁচে থেকেও মৃত অনিক।



বিঃ দ্রঃ ভালোবাসা, সংসার,

সম্পর্কে যদি মনের থেকে শারীরিক সৌন্দর্যের প্রয়োজন বেশি মনে হয়।

তাহলে সম্পর্ক গভীর বা দীর্ঘদিন হওয়ার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন।

সব মেয়েরা যেমন মিথ্যা বলে না, তেমন সব ছেলেও মিথ্যা বলে না।

তাই আবেগের বসে সুন্দরকে উপেক্ষা করে মনের বিরুদ্ধে কিছু না করাই ভালো।

অবশ্যই অনিকের পরিনতি কারো প্রত্যাশা না।কিন্তু মানুষটা ভালো না হলে রুপ দিয়ে কি হবে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুন, ২০১৪ রাত ৮:৪৫

পংবাড়ী বলেছেন: ভালোবাসা নিয়ে এত মরছেন কেন?

২| ১০ ই জুন, ২০১৪ রাত ৮:৫৭

নিশিথের নিশাকর বলেছেন: মরার এর থেকে ভালো উপায় জানা নেই।আপনার জানা আছে?আমি মরতেই চাই।

৩| ১০ ই জুন, ২০১৪ রাত ৯:১৪

পংবাড়ী বলেছেন:

@নিশিথের নিশাকর ,

চাকুরী নিয়ে সৌদী চলে যান।

৪| ১৩ ই জুন, ২০১৪ রাত ৮:৫৮

নিশিথের নিশাকর বলেছেন: পংবাড়ী ভাইয়া সৌদি গেলে কি মরবো?তাহলে একবার চেষ্টা করে দেখতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.