![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবনের এক চরম পর্যায় মানুষকে একটা উত্তরহীন প্রশ্নের সামনে দাঁড়াতে হয়।আমার কষ্ট গুলো ঐ প্রশ্নের মধ্যে জড়িয়ে আছে।মরণশীল পৃথিবীতে চলে যাওয়া মানুষগুলোকে বড় বেশি মনে পরে।যাকে ভোলা যায়না শত সুখে-দুঃখ।লিখালিখি করি নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য। জীবনের থেকে বেশি ভালবাসি বাবা-মাকে।
—হা, সুমা বল?
—তুমি ব্যস্ত?
—হুম, জরুরী কিছু থাকলে বল।
—আমি কল দিলেই তুমি বিজি হয়ে যাও, না কি?
—বল কি, এখন তিনটা বাজে এর মধ্যে দশবার কল দিয়েছো।কাজ করবো না?
—দশবারই তো দিয়েছি, হাজার বার তো দেইনি।
—আচ্ছা, কাল এক হাজার বার কল দিয়ো।এখন বল কেন কল দিয়েছো?
—রাতে কি রান্না করবো?ফ্রিজ তো খালি হয়ে আছে।
—উফফ, তোমার যা ভালো লাগে তাই রান্না কর।
—আচ্ছা, গরুর গোস্ত রাঁধি তোমার প্রিয় খাবার ।শোন আজ একটু আগেই এসো।
—আচ্ছা তাই কর।ঠিক আছে আমি চেষ্টা করবো।এখন রাখি, সমস্যা মনে হলে কল দিয়ো।
ফোন টেবিলে রেখে জুয়েল আবার কাজে মন দিলো, তার এক সহকর্মী এসে বলল—ভাই কে, ভাবি?
জুয়েল একটু হাসি দিয়ে বলল—হা, একদম পাগল মেয়ে।একটু পর পর কল করে।
—আমি তো দেখি ফ্রি হলে, আপনিও কল দেন।
জুয়েল লজ্জায় মাথা নিচু করে বলল—আসলে বাসায় সুমা একা তো, তাই একটু চিন্তা হয়।ওকে তো ঠিকমত সময় দিতে পারি না।
—ভাই, সত্যি ভাবি খুব ভাগ্যবতী।তাই আপনার মত একজন স্বামী পেয়েছে।
—হা হা হা হা তাই, ওকে জহির ভাই একটু কাজ করবো।
—ওকে ভাই কাজ করেন।
খুব চেষ্টা নিয়ে হাতের কাজ শেষ করে বসের কাছে গেলো ছুটি নিতে কিন্তু বস একটা ফাইল ধরিয়ে বলল—প্লীজ জুয়েল এই রিপোর্ট টা দিয়ে যাও, নইলে খুব সমস্যায় পরে যাবো।
বস জুয়েলকে খুব ভালোবাসে তাছাড়া বসের কথা অমান্য করাও জুয়েলের সাঁজে না।তবুও স্ত্রীর কথা ভেবে আবার দৌড় দিয়ে তার রুমে বসে খুব তাড়াতাড়ি রিপোর্ট করলো।কিন্ত ততক্ষণে অফিসের প্রায় সবাই চলে গেছে, মানে আজকেও জুয়েলের বাসা যেতে লেট।কাজের দিকে জুয়েল একটু অন্য রকম, ইনকমপ্লিট কাজ তার দারা হয় না।কিন্তু সুমাকে কি বলবে?সুমা তো তার কথাই শুনবে না।
খুব তাড়াতাড়ি অফিস থেকে নিচে নেমে অটো ধরে রওনা হল বাসার উদ্দেশ্যে।কিন্তু রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম, জুয়েল ভাবছে হায়রে জ্যাম তুই জালিয়ে মারছিস কিন্তু বউয়ে বিশ্বাস করে না।মন চাচ্ছে গাড়ি থেকে নেমে দৌড় দিয়ে বাসায় যেতে কিন্তু সেতো অনেক দূরের পথ।
অবশেষে জুয়েল বাসা পৌছালো রাত দশটায়।দরজায় দাড়িয়ে কলিং বেলের সুইচ দেখছে আর ঘড়ির দিকে দেখছে।নিশ্চিত মোবাইল বন্ধ দেখে বসে কাঁদছে মেয়েটা।এখন কি করবে, মোবাইল অন করে কল দিলো।সুমা কল না ধরে দরজা খুলে দিয়ে অন্য রুমে গেলো।
জুয়েল ব্যাগটা রেখে সুমার সামনে গিয়ে, কানে ধরে বলছে—সরি, সরি ভুল হয়ে গেছে।শেষ বারের মত ক্ষমা করে দাও।
সুমা জুয়েলকে কানে ধরে থাকতে দেখে হেসে বলছে—হয়েছে ফ্রেশ হয়ে এসো, আমি খাবার রেডি করতেছি।
জুয়েল চরম শান্তি পেল তার হাসিভরা মুখটা দেখে।তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে টেবিলে বসে দুজনে গল্প করতে করতে খাওয়া শেষ করল।
জুয়েল ও সুমাইয়া ছাঁদে দাড়িয়ে ঐ দূর আকাশের বুকে জেগে উঠা চাঁদটাকে দেখছে।
সুমাইয়া জুয়েলের হাত শক্ত করে ধরে বলছে—তোমার মনে আছে আজকের কথা?
—হুম মনে আছে।আজ থেকে চার বছর আগে তোমাদের বাসার ছাঁদে তোমাকে বলেছিলাম, আমি তোমাকে ভালবাসি সুমা।
—উহু, তোমার মনে নেই।তুমি বাসা এসে বুঝে গেছো।
—হা হা হা হা আচ্ছা আমি তোমার সাজুগুজু দেখে বুঝেছি।ঠিক আছে।
—শয়তান একটা কথাও মনে রাখতে পারো না।(হাত দিয়ে মারছে আর বলছে)
—পারলেও মনে রাখবো না।
—কেন?
—যদি সব মনে রাখি তাহলে তোমার মাইর মিস করবো যে।আই লাভ ইউ সুমা।
—আই লাভ ইউ ঠু মনি।
জুয়েল প্রায়ই অফিসের কাজে দেরি করে।এসেই দরজার এপাশে দাড়িয়ে ভাবে দরজা খোলে না কেন আর ওপাশে সুমাইয়া ভাবে জুয়েল এখনো আসছে না কেন।দুজন দুজনকে পাওয়ার চরম এক অনুভূতি ভুলিয়ে দেয় সারাদিনের ক্লান্তিগুলোকে।নিশীথের রাজ্যে রাজকীয় ভাবে কেটে যায় তাদের জীবন।
লিখাঃ নিশীথের নিশাকর
২| ১৪ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৯
নিশিথের নিশাকর বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৫৫
মদখোর বলেছেন: সুন্দর হয়েছে