নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিশিথের নিশাকর

নিশিথের নিশাকর

নিশিথের নিশাকর

জীবনের এক চরম পর্যায় মানুষকে একটা উত্তরহীন প্রশ্নের সামনে দাঁড়াতে হয়।আমার কষ্ট গুলো ঐ প্রশ্নের মধ্যে জড়িয়ে আছে।মরণশীল পৃথিবীতে চলে যাওয়া মানুষগুলোকে বড় বেশি মনে পরে।যাকে ভোলা যায়না শত সুখে-দুঃখ।লিখালিখি করি নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য। জীবনের থেকে বেশি ভালবাসি বাবা-মাকে।

নিশিথের নিশাকর › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুঝলে অনেক দেরিতে________

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৩

ডিগ্রী দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার পর জীবন আজ কলেজে আসছে।কোন ক্লাস করতে নয়, ইন্টার ফাস্ট ইয়ারের প্রথম ক্লাস আজ।সে জন্যই বাবু সাজুগুজু করে বাইক নিয়ে আসছে।এসেই কয়েকটা বন্ধুদের নিয়ে ক্যান্টিনে বসে আড্ডা দিচ্ছে।অনেকদিন পর কলেজে আসার জন্য সব বন্ধু খাওয়া চাচ্ছে।জীবন সবার জন্য খাবার এনে টেবিলে রাখছে।

হটাত একটা মেয়ে এসে জীবনকে উদ্দেশ্য করে বলছে,

—ভাইয়া একটু শুনবেন?

—কি আমাকে বলছেন?

—হ্যা,

—জ্বি বলুন?

—একটা বার্গার দিন।

(বার্গার?পিছনে বন্ধুদের দিকে তাকাতেই সবাই এক সাথে হাসা শুরু করলো।ভাবছে কে এই মেয়ে?আগে তো দেখি নাই।দেখতে মাশাল্লাহ ভালই কিন্তু নেহাত পাগল না হলে আমাকে ওয়েটার ভাবতো না।হুম আচ্ছা, আমাকে দেখতে কি ওয়েটারের মত লাগছে!হাতের তর্জনী ঠোঁটের মাঝখানে রেখে বন্ধুদের হাসি থামিয়ে, জীবন বসে থাকা অচেনা মেয়েটিকে কইলো।)

—আপু শুধু বার্গার?ঠাণ্ডা কিছু দেই?

—না, আপনি বার্গার নিয়ে আসেন তো।

—আপু এই নিন বার্গার।

—ধন্যবাদ

—ওয়েলকাম।



মেয়েটা অদ্ভুত ভাবে জীবনের দিকে চেয়ে দেখলো।হয়তো “ওয়েলকাম” বলার জন্য।

জীবন মেয়েটির সামনে বসা এক দল স্টুডেন্টের সাথে বসে খাওয়া শুরু করলো।মেয়েটি এই অবস্থা দেখে খুব তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করে বিল কাউন্টারে দিয়ে চলে গেলো।



এরপর জীবনকে তার বন্ধুরা ওয়েটার বলে ক্ষ্যাপাতো কিন্তু জীবন মনে সেই মেয়েটিকে খুজতো।কয়েকদিন পর মেয়েটির সাথে আবার ক্যান্টিনে দেখা, তবে আজ আর ভুল করেনি।সোজা কাউন্টার থেকে খাবার নিয়ে বসে খাচ্ছে।জীবন মেয়েটির সামনে দাড়িয়ে বলছে।

—আপু ভালো আছেন?

—জ্বি ভাইয়া ভাল।আমি খুবি দুঃখিত সেদিন না বুঝে বেয়াদবি করেছি।

—উহু ইটস ওকে।আপনি ছাড়াও অনেকেই আমাকে ওয়েটার মনে করে।অবশ্য আপনি বলার পর থেকে।

—কি বলবো বুঝতে পাচ্ছি না।

—আপনার নাম কি?কোন ইয়ার?

—আমি নিপা, ইন্টার ফাস্ট ইয়ার।

—এই জন্য আমার ভিতর কেমন জানি করে।

—সরি?কেমন করে?আপনি কোন ইয়ার?

—মানে আমি জীবন, ডিগ্রী থার্ড ইয়ার।আপনার নামটা উল্টো করলে হয় পানি আর পানির অপর নাম আমি।আই লাভ ইউ হানি?

—হোয়াট?

—এই কয়েক দিন অনেক ভেবেছি, তারপর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।কিচ্ছু করার নাই, তেইশ বছরে কখনো এমন মনে হয় নাই।আপনি ভেবে উত্তর দিয়েন, যদি আপনার মন সম্মতি দেয় জানাবেন।



নিপা কিছু না বলে খুব বিরক্তি নিয়ে চলে গেলো।জীবন অপলক দৃষ্টিতে তার চলে যাওয়া দেখছে।বুঝতে পাচ্ছে না কি হল তার।এত তাড়াতাড়ি মেয়েটাকে এত ভালো লেগে যাবে, বুঝতে পারে নাই।



অতঃপর

প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেলো নিপা কলেজ আসে না।জীবন গত কয়েক বছরে যা করেনি তাই এখন নিয়মিত হচ্ছে।প্রতিদিন কলেজে আসে ক্লাসও করে কিন্তু যার অপেক্ষা তার দেখা মেলে না।প্রতিক্ষায় সেই সুহাসিনীর জন্য।অনুক্ত কথা গুলো আজ বড্ড মাতলামি করছে অস্থির করে দিচ্ছে জীবনকে।অজস্র প্রশ্ন মনে জীবনের।সে কি ভালবাসতে পারবে না, না কি?



কয়েকদিন পর নিপা কলেজ আসলো।জীবন তার উত্তর জানার গভির আগ্রহের সমাপ্তি টেনে উত্তর জানতে চায়।নিপা বলল, ভাইয়া ভেবে দেখলাম আমি কখনোই নাম উল্টাবো না।আশা করি বুঝিয়ে বলতে হবে না।



কিন্তু জীবন?

সে তো সত্যি নিপাকে ভালবেসে ফেলেছে।অনেক চেষ্টা করেও নিজেকে ফেরাতে পারে না জীবন।

জীবন এভাবে এক বছর নিপাকে বুঝিয়েছে হাজার বার ভালবাসি বলেছে কিন্তু তার একটাই উত্তর “আমি ভালবাসা কি বুঝি না, আমার মন নেই, কোন অনুভূতি নেই”।



এক বছর পর হটাত করে জীবনের ভালবাসায় জরিয়ে যায় আলপনা।জীবনও বুঝতে পারে, আসলে তাকেই ভালবাসা উচিৎ যে তাকে ভালবাসে।পরে নিপার উপর জীবনের ছায়া এক সময় মিশে যায় দিনের আলোয় আর তিমির রাতের নিস্তব্ধতায়।জীবন আর আলপনার সম্পর্ক দুই মাস হল দুজনে বেশ খুশিতে দিন পার করছে।



এদিকে নিপা ভেবে পাচ্ছে না তার অশান্তির কারন।কয়েক মাস থেকে জীবন যাচিয়া ভালবাসতে আসে না।কিন্তু জীবন হয়তো এটা জানে না গত এক বছরে নিপার মনের সুপ্ত ভালবাসা তার জন্য জেগে উঠেছে।মনের বাগানে তার জন্য গুটি কয়েক পুষ্প ফুটিয়াছে।মালা গাথিবার তরে নিপার অভিপ্রায়।



কিন্তু জীবনের এড়িয়ে চলা নিপার মনে দাগ কেটে দেয়।বাধ্য হয়ে নিপা জীবনকে তার ভালবাসার কথা জানায়।সেদিন জীবন বলল,

___ভালবাসার জন্য কি না করেছি কিন্তু তুমি বুঝনি, বুঝলে বড্ড দেরিতে।তোমার প্রতিদিনের অবহেলায় জর্জরিত আমার সব কথাই, অকথ্য মনে করতে।তোমার কাছে নিরাশ্রয় আমি, তার পরেও নির্লজ্জের মত বার বার গিয়েছি তোমার সামনে।ভেবেছি আজ হয়তো অফুরন্ত ভালবাসাকে উপেক্ষা করতে পারবে না কিন্তু নির্দয়ের মত যথারীতি তুমি তাচ্ছিল্য করেছো আমার প্রেমকে।নির্বোধের মত ভালাবেসেছি কিন্তু অবশেষে পীড়িত মনে তোমার প্রতি অনীহা এসে যায়।বেচে থাকা মুশকিল হয়ে যায় আর সেই সময় অন্ধের যষ্টি হয়ে আলপনা এলো।তাই আলপনাকে ছেড়ে আবার তোমার ঐ মরণ ফাঁদে পা বাড়াতে চাই না।তুমি ভালো থাকো, সুখে থাক।বাই________



লিখেছেনঃ নিশীথের নিশাকর

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.