![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আবারো ফিরে তোমাতে - ভালবাসার ছবি একেছে - জীবনের মাঝপথে আজ আমি বসে, জীবন এর আলো আজ অনেকটা বদলে গেছে - হারিয়ে নিজেকে।
সময়টা ৮-১০ দিন আগে। ইউনাইটেড আরব আমিরাত, ক্যাপিটেল আবুধাবির কোন একটা জায়গা।
২০,০০০ এর অধিক ম্যানপাওয়ার সম্মলিত কন্সট্রাকশন সাইটের টেইনিং সেন্টার হিসেবে প্রতিদিনি হাজারো মানুষের আনাগোনা এখানে।
সকাল প্রায় সোয়া ১০ টা। আউটসাইড স্মোকিং সেল্টার থেকে কেবলি সিগারেট পান করে অফিসের দিকে ফিরছি। একটু আগাতেই ৬-৭ জনের জটলা দেখতে পেলাম। দেখে মনে হলো সবাই বাংলাদেশী। এখানে আরও কয়টা জটলা থাকলেও এই গ্রুপের দিকে আমার চোখ যাওয়ার কারন হলো তাদের মোবাইল থেকে বাংলা ভাষায় আওয়াজ আসা। মনে হলো তারা কোন ভিডিও দেখছে ইউটিউবে।
উৎসুক হয়ে দেখতে চেলাম ব্যাপারটা কি।
ব্যাপার আর কি? ব্যাপার হলো পদ্মা সেতুকে নাকি মাথা লাগবে। সেই জন্য তারা এই ভিডিও দেখছে। কয় একজন তো রিতিমত সিউর যে মাথা সত্যি সত্যি লাগবে। লাল লাল চোখে বলেতিছে যে তাদের এলাকায় নাকি একটা ব্রীজ হয়েছিলো। শেষ পর্যন্ত তাদের সেই গ্রামের নাকে অনেকের শিশু বাচ্চা হারিয়ে যায়। আর পরে সেই সব বাচ্চাদের লাশ নাকি মাথা কাটা অবস্থ্যায় ব্রীজের নিচে পাওয়া যায়। এমন ভাবে লোকটি বর্ননা করতে ছিলো যে তার চোখের দিকে আমি তাকালাম আর দেখলাম তার রক্ত চক্ষু নিয়ে সে যেভাবে কথা বলতিছে তাতে মনে হয় উনি বোধহয় নিজেই ঐসব বাচ্চার গলা কেটে রক্ত দিবার সময় উপস্থিত ছিলেন। আর বাকিরা উৎসুক হয়ে শুনতেছিলো। কয় এক জন তো আবার আগের লোকের কথার সাথে খই ফুটিয়ে তার সত্যতা প্রমান করতে বার বার ব্যাস্ত হয়ে যাচ্ছিলো। আমি তাদের এই ব্যাস্ততা দেখে মাঝে ফরন কাটলাম।
আমি: ভাই, আপনি কি সিউর যে মাথা লাগছে।
ঐপোলা: আরে আর কি? আপনি দেখেন না। এইযে দেখুন খবরে বলছে। (আমারে মোবাইল ঘুড়ায়ে ইউটিউব দেখাচ্ছে)
আমি: হুম। ঐটা তো খবরে বলছে। কিন্তু তার সত্যতা কতটুকু আপনি তা যাচাই করেছেন।
এই কথা বলতেই মনে হলো আমি যেন কোন বড় অন্যায় করে ফেল্লাম। সবাই আমাকে কথা দিয়ে আক্রমন করতে শুরু করলো।
সেসব কথা বলতে গেলে পোষ্ট অনেক লম্বা হবে।
আরে ভাই আপনি কি বলেন? যা রটে তাতো কিছুটা বটেই। তো। হলেও তো হতে পারে। বলে উঠলো একজন।
আমি বল্লাম হুম ভাই এই আপনি এখন আসল কথা বল্লেন হলে তো হতেই পারে। তার মানে হয়ত কথাটা সত্য অথবা মিথ্যা।
কিন্তু ঐ ভাই যেভাবে বলছে তাতে তো মনে হচ্ছে তিনি নিজেই কল্লা কাটতে দেখেছেন। কিন্তু তাকে জিগেস করেন তো উনি কবে লাস্ট বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। উত্তর এলো ৩ বছর আগে। তাহলে ঐ গ্রামের ছোট ব্রীজটি কবে হইছে বলেন তো?
আর কেউ কিছু বলতে পারে না।
আমি বল্লাম আপনার গ্রামের ব্রীজের নাম কি?
সেটাও বলতে পারে না।
কিছুক্ষন পর উনি বল্লেন আমরা তখন ছোট ছিলাম। আমি শুনেছিলাম আমার মায়ের কাছে। তাই সাক্ষী দিচ্ছিলাম।
তবে আপনার কিন্তু মানতে হবে ব্রীজে রক্ত লাগে। দিতে হয়। জীন ভুত বলে তো কিছু আছে তাই না।
আমি বল্লাম যেহেতু আমি মুসলিম জীন ভুত আমি অস্বিকার করি না। তবে ব্রীজে যে রক্ত দিতেই হবে তা আমার বিশ্বাস যোগ্য না।
যে কথা থাক। তো আপনি আপনার মায়ের কাছে শুনেছিলেন। তো কি শুনেছিলেন?
ঐযে আম্মা বলতো যে কোন বাড়ির বাচ্চার মাথা নিয়ে গেছে। তাই বল্লাম। তার মানে আপনি নিজে দেখেন নাই।
উনি বল্লো না ভাই দেখি নাই।
আচ্ছা আপনি কি কখনো খোজ করেছেন যে আসলেই গ্রামের কোন বাড়ির বাচ্চা ছিলো ঐটা।
না ভাই দেখি নাই।
ঐ আপনার গ্রামের মধ্যে কখনো কি শুনেছেন আপনার পরিচিত কারও বড় ভাই বা ছোট ভাই বা বন্ধু ছোট বেলায় গলা কাটা পাওয়া গেছিলো ?
না ভাই।
তাহলে আপনার মায়ের কথা আপনি বিশ্বাস করলেন কি ভিত্তিতে?
আমি তো বলি নাই আমি বিশ্বাস করছি। আমি বলছি আমি শুনেছি।
কিন্তু এই মাত্র আপনি যেভাবে বলছিলেন তাতে তো তাই মনে হচ্ছিলো আপনি চাক্ষুস সাক্ষী।
চাক্ষুস সাক্ষাী না কিন্তু আমি সিউর যে মাথা লাগে।
কেমনে সিউর?
ভাইরে। মায়ে কইছিলো। তাই বলছি। আপনি আপনার কাজে যান ভাই।
আপনার মা কি আপনাকে বাইরে যেতে দিতো।
হুম দিতো, কিন্তু সন্ধার পর বাইরে যেতে বাধা দিতো।
তাহলে এমন তো হতে পারে ঐ এলাকায় কোন লোকের শত্রুতার খাতিরে কোন বাচ্চা খুন হইছে যার মাথা আলাদা করা হইছিলো।
আর ঐ এলাকায় সেই সময় কোন একটি রাস্তার ব্রীজ কনস্ট্রাকশনের অধীনে থাকায় লোক জনের আনা গোনা কম থাকবে সেটাই সাভাবিক যা লাশ ফেলার জন্য উত্তম জায়গা। রাতে সেই লাশ ঐ জায়গায় ফেলে আসে কেউ। আর তার থেকে শুরু হয়ে যায় ব্রীজে মাথা লাগে। আর আপনার মা সেই ভয় আপনাকে দেখায়। আপনি সেই ভয় নিয়ে স্কুলে গিয়ে আপনার বন্ধুদের সন্ধার মর বার হতে নিষেধ করেন। সেই বন্ধু বড় হয়ে তার ছোট ভাইকে শাশণ করতে গিয়ে একি কথা রিপিট করে। সেই ছোট ভাই বড় হয়ে বিয়ে করে তার বাচ্চাদের ও একি ভয় দেখায়। সেই বাচ্চা রাও সেটাকে ভয় ধরে নিয়ে বড় হতে থাকে। আমাদের কাছে এই খবর এসে যায়। এদিকে সময় গড়িয়ে যায়। গল্প তীল থেকে তাল হয়। কেউ দেখেনি তবে শুনেছে। তার থেকে বড় কিছু আর কিছু কি হতে পারে।
এই ভাবে কথা বলার পর থেকে দেখলাম পাশের লোক গুলো হাসাহাসি করছে আমার কথা শুনে।
দুর দেখে দেখলাম আলী ভাই দাড়িয়ে হাসছে। উনিও এগিয়ে এলেন।
আলী ভাই প্রশ্ন করলেন - আচ্ছা আপনি যেই ভিডিও দেখাচ্ছেন তার সোর্স কি কোন নির্ভরযোগ্য সংবাদ মাধ্যম। মানে ইত্তেফাক বা প্রথম আলোর চ্যালেনে দেখাই ছে।
এবার ঘটলো সবচেয়ে মজার ঘটনা।
আমি ভাই যাকে জিগেস করছেন উনি সোর্স মানেই জানেনা। বার বার জিগেস করছে নিউজ সোর্স মানে কি?
তাইলে জাত বুজুন। এরা লেবার গ্রেড বা শ্রেনী, মানে নিন্ম বিত্ত পরিবারের লোক ।
এদের পড়াশুনা যোগ্যতা একে বারেই নাই বা খুবি অল্প শিক্ষিত।
ঐযে কথায় আছে না "অল্প বিদ্যা ভয়ংকরি কথায় কথায় ডিকশনারী"।
ঐ অবস্থ্যা।
এরা যা দেখে তাই পুজি করে না বুঝে আলোচনা করে, আর সাথে আছে অন্ধ বিশ্বাস। আর এই অন্ধ বিশ্বাস - এটাই ভয়ানক অবস্থ্যানে নিয়ে যায় গোটা সমাজকে। ছড়িয়ে যায় চারিদিক। এরাই গনপিটুনি দেয় এদের এই বিশ্বাসের উপর পুজি করে।
সবার আগে বুজতে হবে "শিক্ষা মানুষকে মনুষত্ত্বের অবস্থ্যানে রাখে"।
সত্য মিথ্যা আর গুজবের ফারাক বুজতে সাহায্য করে।
আর নিজ জাতী যদি হয় শিক্ষাহীন, তবে সত্য মিথ্যার পার্থক্য ভারসাম্যহীন হয়ে পরে।
আর এর সহযোগিতায় গুজব মাথাচাড়া দিয়ে জেগে উৎবে এটাই সাভাবিক।
বি:দ্র: আমার এই লেখা কোন শ্রেনীকে ছোট করার উদ্যেশ্য নয়।
বরং কিছু শিক্ষিত লোকের অশিক্ষীত আচরনে বিরক্তি প্রকাশ করতে উদ্যত।
যারা ইউটিউব সহ অন্য সকল সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা/ গুজব ছড়িয়ে সমাজে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে নিজেদের অশিক্ষিত - মুর্খ হিসেবে পরিচিত করাতে উদ্যত হয়।
কিছু প্রশ্ন:
০১) তাহলে নেত্রকোনায় যে কল্লা কাটা বাচ্চা সত্যি পাওয়া গেল?
দুই ভাবে এর উত্তর দেওয়া যায়।
উত্তর ক)
হ্যা। তা পাওয়া গেছে। সত্য। তার মানে এই নয় যে ওটা সেতুতে দিবে।
আমরা ইতিমধ্যে জানি বাচ্চাটাকে বলৎকার করা হয়ছে। হতে পারে বলৎকার করে বাচ্চাটিকে মেরে ফেলে ছেলেটি।
লাশ গুম করতে হলে চেহারা দেখলে সবাই বাচ্চাটিকে চিনে ফেলবে। তাই পরিচয় গোপন করতে বাচ্চাটির মাথা কেটে নেয় ছেলেটি।
মনে করেছিলো বস্তায় ভরে কোন ডোবায় প্রথমে মাথাটি ফেলবে। পরে দেহ অন্য কোন যায়গায় ফেলবে।
তাহলে কেউ বডি খুজে পেলেও মাথা খুজতে সময় লেগে যাবে। এর মধ্যে ছেলেটি নিরাপদ দুরত্বে পৌছে যাবে।
এসব চিন্তা করে ছেলেটি এমন কান্ড ঘটাতে পারে তা বলা যায় সামগ্রিক ঘটনা দেখে।
উত্তর খ)
ছেলেটি মাদকা সক্ত। মাদকের জন্য টাকা প্রয়োজন।
টাকা যোগার করতে ছেলেটি যে কোন কাজ করতে পারে।
ঐ এলাকার কোন রাজনৈতিক শক্তি যারা দেশে বিশৃংখলা তৈরী করতে চায় তাদের মধ্য থেকে কেউ বুদ্ধি করে ছেলেটিকে দিয়ে এই কাজ করিয়েছে আবার ধরিয়ে দিছে।
এমন হতে পারে রাজনৈতিক ঐ নেতা ছেলেটিকে মাদকাসক্ত হিসেবে চেনে ও তার টাকার প্রয়োজন এটাও জানে।
ব্যাস উনি বলে দিলো কোন বাচ্চা এনে তার মাথা কেটে যদি ঐ ডোবায় ফেলাতে পারিস বা আমাকে এনে দেখাতে পারি তোকে এত হাজার টাকা দিবো। টাকার লোভ আর মাদকের জোরে ছেলেটি ঐ বাচ্চার মাথা কেটে এনে ঐ এলাকায় ঘোড়াঘোড়ি করতে ছিলো যে কোথায় ফেলা যায়। অন্য দিকে ঐ রাজনৈতিক নেতা বা তারি লোকবল ঐ এলাকার লোকালদের সামনে তাকে ধরে কাটা মাথা বের করে কিলঘুষি দিতে থাকে। আস্তে আস্তে জনগন জানতে পেরে গন ধোলাই শুরু হয়। আর লোক মুখে রটে যায় এইতো সেই কাটা মাথা যার গুজব বলে ছড়িয়ে ছিলো আজ তা সত্য হলো। এখন প্রশ্ন হলো লাভটা হলো কার?
ঐ একি কথা - লাভ তাদেরি যারা এসব গুজব ছড়িয়ে সমাজে বিশৃংখলা তৈরী করতে চায়। যাতে সরকার আর জন গনের মাঝে ফারাক তৈরী হয়। আর দেশটা এগিয়ে যায় একটা গৃহ যুদ্ধের দিকে।
০২) গনপিটুনি দিয়ে মহিলাকে মারা হলো কেন?
উত্তর ক) হতে পারে কারউ পুর্ব সত্রুতার স্বীকার তিনি।
যেমনটি গত কালের নিউজে আসছে যে স্বামী স্ত্রী একে অপরকে ছেলে ধরা বলে অভিযোগ করলে জনগন দুইজনকেই গনধোলাই দেয়।
উত্তর খ) ঐ যে এমন কোন রাজনৈতিক নেতা। যারা এটাকে নিউজ করে ব্যাপার গুলোকে এক করতে চায়।
তারাই লোক ঠিক করে রেখেছিলো ঐ যায় গায় এমন একটা কাজ করতে হবে। বাচ্চা হল সাত রাজার ধন। আর মোটা মোটি সভ্য শ্রেনীর সব বাচ্চাই কোন না কোন স্কুলে পড়ে। এই জায়গায় এমন কান্ড ঘটালে সভ্য শ্রেনী লোকদের ভিতরেও বিশৃংখলা তৈরী হবে। আর এটাই কাজ দেবে সরকার কে বেকায়দায় ফেলতে। মোট কথা একটা গৃহ যুদ্ধ বাধানো এদের লক্ষ্য।
লোকজন শান্তিতে থাকবে না।
সবখানে একটা রোষানল লেগে রাখাই এদের উদ্ধেশ্য।
বি:দ্র: আমার এই লেখা কোন শ্রেনীকে ছোট করার উদ্যেশ্য নয়।
বরং কিছু শিক্ষিত লোকের অশিক্ষীত আচরনে বিরক্তি প্রকাশ করতে উদ্যত।
যারা ইউটিউব সহ অন্য সকল সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা/ গুজব ছড়িয়ে সমাজে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে নিজেদের অশিক্ষিত - মুর্খ হিসেবে পরিচিত করাতে উদ্যত হয়।
২| ২৫ শে জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০২
নতুন বলেছেন: সাধারন মানুষ যৌক্তিক চিন্তা করেনা। তাই অনেকেই গুজবে বিশ্বাস করে।
৩| ২৬ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১২:২৯
আদ্রিজা বলেছেন: Thinking is difficult, that's why most people judge.-- Carl Jung.
৪| ২৬ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:০৯
পুলক ঢালী বলেছেন: ঐ মহিলাকে সব্জী বিক্রেতা প্রথম আক্রমন করে মহিলা শিক্ষিতা ছিলেন আক্রমনকারীরা মূর্খ ছিল। এছাড়াও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা মানুষকে শিক্ষিত করছে না, তাই অশিক্ষিত মূর্খদের দাপটের কাছে শিক্ষা পাওয়া মূর্খরা দাড়াতে পারেনা।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: বাংলাদেশের মানুষ আজ নির্বোধ আর অমানুষ রয়ে গেছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠিক কথাই বলেছেন/।