নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রমিত

রমিত রহমান

রমিত রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সেদিন

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১২

জায়গাটা পাহাড় ঘেরা। চারিদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। রাহাত আর নীলা বিয়ের পর দুজনে আজ প্রথমবার ঘুরতে এসেছে। সবুজঘেরা এই জায়গাটা অসম্ভব ভালো লেগেছে নীলা। বিশেষ করে তাদের হোটেলের বারান্দায় বসে পাশের নদীর বয়ে যাওয়ার দৃশ্যটা সত্যিই চমৎকার।
এখন একটু অফ সিজন হওয়াতে হোটেলে লোক সমাগমও একটু কম। ওরা দুজন ইচ্ছা করেই এমন একটা সময় বেছে নিয়েছে যাতে নিরিবিলিতে দুজনে দুজনের সাথে সময় কাটাতে পারে।
সারাদিন দুজনে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ালো । পাহাড়ে উঠলো , বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর ছবি তুললো। দুপুরে লাঞ্চ সেরে হোটেলে ফিরে দেখলো লবিতে হোটেলের সকল গেস্টকে একত্রিত করা হয়েছে নৌকা ভ্রমনের উদ্দেশ্যে। সব ব্যবস্থা হোটেলের তরফ থেকেই করা হয়েছে। পাশের নদীর পাড়ে হোটেলের নৌকা রাখা আছে। সেখানেই সবাইকে নিয়ে যাওয়া হলো। হৈ হৈ করতে করতে সবাইনৌকায় উঠলো। সবার প্রাথমিক পরিচয় পর্ব ইতিমধ্যে সারা হয়ে গেছে। লোক বেশি না হওয়ায় একবারেই সবার নৌকায় জায়গা করে নিতে পারলো। গেস্টদের মধ্যে কাব্য নামের একটা ছেলের সাথে সবার খুব ভাব হয়ে গেলো। মিশুক ছেলে। মুখ যেন অনর্গল চলছেই। সবাইকে মাতিয়ে রাখার ক্ষমতাটা ওর খুব ভালো করেই আছে। বয়সে সবার ছোট হওয়ায় একটা ছটফটে ভাব আছে।
এই ভাবেই নীলা আর রাহাতের পরিচয় হলো সাজ্জাদ, শাহেদ, শাহেদের স্ত্রী ঈশীতা, অর্ক - এমন আরো অনেকের সাথে। সারাদিন খুব মজায় কাটলো সবার।
হোটেলে ফেরার পর সবাইকে জানানো হল যে হোটেলের মালিক , জনাব মাকসুদ কবির পরের দিন সবাইকে লাঞ্চে ইনভাইট করেছেন।
তার বাসা হোটেলের ঠিক পেছনেই।
পরের দিন হোটেলের লবিতে একসাথে হয়ে সবাই গেলো মাকসুদ সাহেবের বাসায়। মাকসুদ সাহেব সবাইকে সাদরে আপ্যায়ন করলেন। মাকসুদ সাহেবের বাসায় হাল্কা আপ্যায়নের পর সবাইকে খাবার টেবিলে ডাকলেন তিনি। খাবার টেবিলেও খাওয়ার সাথে সাথে সবার গল্পও চলতে থাকলো। কিছুক্ষনের মধ্যেই মাকসুদ সাহেব সবার মাকসুদ ভাই হয়ে গেলেন।
পিঊর ভেজিটেরিয়ান হওয়ায় মাকসুদ ভাই শুধু ভেজিটেবিল আইটেমগুলা নিলেন, বাকিরা খাবারের সবগুলো আইটেমগুলা মজা করে খেলো। খাবার প্রতিটি আইটেম মাকসুদ ভাই নিজে এবং তার কাজের লোক আকবর মিলে রান্না করেছেন , তাই খাওয়ার টেবিলে সবাই মাকসুদ ভাইয়ের রান্নার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠলো। নিজে ভেজিটেরিয়ান হয়েও কেঊ এতো সুন্দর মাংসের তরকারী রান্না করতে পারে হয়ত মাওকসুদ ভাইকে না দেখলে বিশ্বাস করা কষ্ট হতো। খাওয়া শেষে মাকসুদ ভাইয়ের ড্রয়িংরুমে বসে সবাই গল্প , আড্ডায় মেতে ঊঠলো। সবার হাসি ঠাট্টায় পুরো ঘর যেন ভরে আছে।
হঠাৎ কাব্য বলল, " চলেন , একটা গেম খেলি?"
"কি গেম?" সাজ্জাদ জিজ্ঞেস করলো।
" গেমটার নাম 'How perfect am I?' এই গেমে সবাই একজন অপরাধীর মতো চিন্তা করবে, গল্প বানাবে বা অভিনয় করবে, অর্থাৎ প্রত্যেকে নিজের বানানো একটা পারফেক্ট ক্রাইমের ঘটনা বলবে, আর বাকিরা সবাই সেই গল্প শুনে তাকে মার্কিং করবে যে তার অপরাধটি আসলেই পারফেক্ট কিনা।
'তার মানে কিছুক্ষন আমরা নিজেদের মতো করে এক একটা গল্প তৈরী করবো যেখানে নিজেরাই অপরাধীর ভুমিকায় অবতীর্ন হবো, তাও একে অন্যের কাছে ধরা পড়া থেকে নিজেকে বাচিয়ে? সাউন্ডস ইন্ট্রেস্টিং"- সাজ্জাদ বললো।
"ওকে তাহলে শুরুটা আমিই করছি"-কাব্য বললো।
"আমার এই গল্পে আমি একজন চোর। আমি এক ব্যাঙ্ক ডাকাতি করবো।
ব্যাঙ্ক বিভিন্ন সময় তাদের গাড়িতে টাকা ট্রান্সফার করে তাদের বিভিন্ন ব্রাঞ্চ ও এটিএম এ নিয়ে যায়। তেমন একটা ট্রাকই আমার টার্গেট। নির্দিষ্ট দিনে ওই ট্রাকের সিকিউরিটিকে ফাঁকি দিয়ে সেটার নিচে একটা স্মোক বোম লাগিয়ে দিবো। তারপর ওটা যখন তার কাজ শুরু করবে তখন পুলিশ সেজে তাদের গাড়ি থামিয়ে বলবো বলে যে আমরা খবর পেয়েছি যে এই ট্রাকের নিচে বোমা লাগানো হয়েছে। ট্রাক থেকে নেমে সবাই দেখবে যে ট্রাকের নিচ থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। সবাই ভয় পেয়ে দুরে সরে গিয়ে আড়ালে দাড়ালেই বোম পরীক্ষা করার বাহানায় ট্রাকে উঠে পরে সবার সামনে দিয়ে টাকা ভর্তি ট্রাকটি নিয়ে দিবো ছুট। একদম বাতাসে মিলিয়ে যাবো।

গল্প শেষে এক গাল হাসি দিয়ে শাহেদ বললো, "চুরি বিদ্যা বড় বিদ্যা যদি না পড়ো ধরা। ভাই, টুকটাক খবর তো আমরাও রাখি। এটা ১৯৬৮ সালে জাপানের একটা ব্যাঙ্কের ঘটনা , তাই না?"

ধরা পড়া একটা হাসি দিয়ে কাব্য বললো, " ধরে ফেলেছেন? "

কাব্যর একস্প্রেশন দেখে সবাই হো হো করে হেসে ফেললো।

সবাই যে যার মতো করে বানিয়ে গল্প বললো। কিন্তু সবাই ই কোন না কোন জায়গাতেই ধরা পড়ে গেলো।

সবাই এবার মাকসুদ ভাইকে অংশগ্রহনের জন্য রিকোয়েস্ট করতে লাগলো। প্রথমে না না করলেও পরে মাকসুদ ভাইও রাজি হয়ে গেলেন।
কিছুক্ষন ভেবে মাকসুদ ভাই শুরু করলেন, " আমি তাহলে আর অন্য কোন অপরাধির চরিত্রে অভিনয় না করে আমার আশেপাশের চরিত্রগুলো নিয়েই একটা গল্প সাজাই।
আমি মাকসুদ কবির। স্ত্রী আর হোটেলের ব্যাবসা নিয়ে ভালোই কেটে যাচ্ছিলো। হোটেলের কাজে বেশির ভাগ সময়েই ব্যাস্ত থাকা লাগতো।ব্যাবসার কারণেই শহর জুড়ে আমার পরিচিত লোকের সংখ্যা অনেক। তো তেমনই এক পরিচিত লোকের মাধ্যমে জানতে পারলাম যে আমার স্ত্রী আরেকজনের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে।
প্রথমে বিশ্বাস হয় নি। পরে সেই লোককেই ভুল প্রমানের জন্য নিজেই খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করলাম।
প্রথমদিকে তেমন কিছু মনে হলো না। আমিও মনে মনে শান্তি পেলাম । কিন্তু এই শান্তি বোধহয় বেশিদিনের ছিলো না। আমার স্ত্রীর এই সম্পর্কের একটা ক্লু একদিন আমার হাতে এসে পড়লো। সেদিন আমি সিরিয়াসভাবেই আবার খোঁজ নেওয়া শুরু করলাম। সাহায্য নিলাম একজন প্রাইভেট ডিটেক্টিভের।
এবার যা জানলাম তাতে রীতিমতো শিউরে উঠলাম আমি। ও শুধু সম্পর্কেই জড়ায় নি, ওর প্রেমিকের সাথে মিলে আমাকে মেরে আমার সম্পত্তি হাতানোর প্ল্যনও করছে। শুধু তাই নয় , সেই প্ল্যান অনুযায়ী কাজও করছে তারা।
আমার প্রতিদিনের নাস্তায় আমার স্ত্রী এক ধরনের বিষ খুব স্বল্প মাত্রায় মিশিয়ে দিচ্ছে যা কাজ করছে স্লো পয়জন হিসেবে। যার কারনে হয়তো আমি সাথে সাথে মারা না যেয়ে আস্তে আস্তে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবো। আরো জানতে পারলাম যে এই বিষ গিয়ে জমা হয় চুলের গোড়ায় , তাই শরীরে বিষক্রিয়ার কোন প্রভাবই চোখে পড়বে না। খুব স্বাভাবিক হার্ট এ্যটাকে মৃত্যু মনে হবে যদি না খুব ভালো ভাবে পয়জন টেস্ট না করা হয়। আর আমার পরীক্ষা করবেই বা কে? আমাদের ফ্যামিলি ডাক্তারের সাথেই যে আমার স্ত্রীর সম্পর্ক। হার্ট এ্যটাকের মৃত্যুতে পোস্টমর্টেমই হওয়ার কথা না, তার আবার পয়জন টেস্ট!! খুব সুন্দর সাজানো গোছানো প্ল্যান।
আমার স্ত্রীর পরিকল্পনা শুনে প্রচন্ড কষ্ট পেলেও নিজেকে কোন মতে সামলে নিলাম।
নিজেকে নিজে বললাম, "নাহ কষ্ট পেলে চলবে না, যে জিনিস ওরা আমার সাথে করতে চেয়েছে, একই ফল ওদেরকেও ভোগ করতে হবে।"
দুদিন ধরে মাথা ঠান্ডা করে প্ল্যন করলাম।
আমাদের ফ্যমিলি ডাক্তার, মানে আমার স্ত্রীর প্রেমিককে সেদিন ডিনারে ইনভাইট করলাম।
আমি নিজে রান্না করলাম। বিষ আগের থেকেই আনিয়ে রেখেছিলাম।
খুব সুন্দর কাজ করে এটা। বিষ প্রথমে রক্তে মিশে, তারপর রক্তের সাথে যায় ফুসফুসে, তারপর আস্তে আস্তে শরীরের সব জায়গায়। শ্বাস গ্রহনের নালিকা গুলোকে সংকুচিত করে, ফলে নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হয়। এমন অবস্থা থাকে এক থেকে দেড় ঘন্টা, ভিকটিম নিঃশ্বাস নিতে না পেরে আস্তে আস্তে মারা যায়। পরে নালিকাগুলো আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে, বিষের কোন চিহ্নই থাকে না শরীরে।
মাংসের তরকারিতে মিশিয়ে দিলাম সেই বিষ।
তারপর সবাই মিলে খেতে বসে নিজ হাতে সার্ভ করলাম ওদের। যেহেতু আমি ভেজিটেরিয়ান , তাই আমি মাংসের তরকারি না খাওয়ায় ওরা কোন সন্দেহই করলো না। দশ মিনিটের মধ্যে বিষ নিজের কাজ দেখানো শুরু করলো। আমার চোখের সামনে দুজন কাতরাতে কাতরাতে মারা গেলো। শত্রু সংহারের মতো তৃপ্তি হলো আমার।
এখন সবার আগে লাশ দুটোকে সরিয়ে ফেলতে হবে, কিন্তু এমন ভাবে যাতে কেউ কখনো এগুলোকে খুঁজে বের করতে না পারে। কারন লাশ কেউ দেখতে পেলে সবার আগে সন্দেহ আমার উপরেই যাবে , আর তার উপর ওদের পেছনে যে গোয়েন্দা লাগিয়েছিলাম সে হয়ে যাবে আমার বিরুদ্ধে সব চেয়ে বড় সাক্ষী। এমন কিছু করতে হবে যাতে ও সাক্ষী তো থাকবে, কিন্তু আমার পক্ষে।
তো যেই ভাবা সেই কাজ। আমার বিশ্বস্ত কাজের লোক আকবরকে সাথে নিয়ে লাশদুটোকে টুকরো টুকরো করলাম। তারপর সেগুলো অনেক্ষন সিদ্ধ করে হাড় আর মাংস আলাদা করে ফেললাম। হাড়গুলো বড় গার্বেজ পলিথিনের ভেতর ঢুকালাম। তারপর হোটেলের গার্বেজ রুমে নিয়ে রেখে আসলাম। তারপর আলাদা করা মাংসগুলো ও তেমন ব্যাগেই ঢুকিয়ে রেখে দিলাম। এর ফলে হাড়্গুলো হোটেল থেকে লরিতে অন্য গার্বেজের সাথে বের করে নিয়ে যাওয়া সহজ হয়ে গেল আর মাংসগুলো আলাদা করায় তার থেকে অতিরিক্ত কোন পঁচা গন্ধও বের হলো না।
ব্যাগগুলো হোটেল থেকে বের করার পর খুব ভোরে আমরা গেলাম আমাদের হোটেলের পাশের নদীর পাড়ে। টুরিস্টদের ঘোরার জন্য আমাদের হোটেলের একটা মাঝারী বোট এখানে বাঁধা থাকে। সেটা নিয়ে আমরা বেরিয়ে পরলাম নদীতে । কয়েক কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে দিলাম ওই দুটি শরীরের বাকি চিহ্ন অর্থাৎ হাড়-গোড় গুলো। তারপর আরো কিছুক্ষন এদিক ওদিক ঘুরে তীরে ফিরে আসলাম আমরা।
বেলা একটু বাড়লে সেই প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটরকে নিয়ে থানায় গেলাম আমরা। আমার স্ত্রীর মিসিং কমপ্লেইন লেখাতে। আমার পারিবারিক ডাক্তারের সাথে পালিয়ে যাওয়ার কথাও যে সন্দেহ করছি সেটাও জানালাম। প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটরের সংগ্রহ করা প্রমানগুলোও তাদের দেখালাম। জানতাম আমার স্ত্রীর এমন হঠাৎ গায়েব হওয়াতে পুলিশ আমাকেও সন্দেহ করবে , কিন্তু যতক্ষন আমার স্ত্রীকে জীবিত বা মৃত তারা খুজে পাচ্ছে ততক্ষন তারা আমার বিরুদ্ধে কিছু করতে পারবে না। আর আমার স্ত্রীর ডেডবডির কোন অংশও খুঁজে পাওয়া এখন যে কারও জন্যেই এখন খুবই কঠিন।
মাকসুদ ভাই একটু বিরতি দিলেন। সবাই চুপচাপ তার গল্প শুনছে। তার মধ্যে কাব্য হঠাৎ বলে উঠলো, “সরি টু ইন্টেয়ারফেয়ার ভাই, কিন্তু ক্রাইমটা কিন্তু এখনো পারফেক্ট হয় নাই। আপনি আপনার হোটেলে রাখা গার্বেজ ব্যাগে ওদের বাকি বডির কথা কিন্তু ভুলে যাচ্ছেন। সেগুলা হোটেল থেকে বের করা কিন্তু এতোটা সহজ হবে না।“
মাকসুদ ভাই বললেন, “এত বড় বড় দুইটা ব্যাগ, যার থেকে আবার গন্ধও বের হচ্ছে, সেগুলা বের করার ঝামেলা কে করবে?’’
কাব্য মুচকি একটা হাসি দিয়ে বললো , “তাহলে কি করবেন ভাই? পুলিশ আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন?”
মাকসুদ ভাইও একটা হাসি দিয়ে বললেন, “নাহ , মানুষের মাংসে লবনের ভাগ বেশি থাকে এবং একটু শক্ত হয়, কিন্তু বেশ কিছুক্ষন যাবৎ সিদ্ধ করলে এই ভাবটা কেটে যায় , আর বেশি মশলা দিয়ে অনেকক্ষন ধরে কষালে তো কথাই নাই”।
কাব্য-“মানে?”
মাকসুদ ভাই বললেন, “না মানে ধরো এতো বড় এতো বড় দুইটা ব্যাগ বের করার চেয়ে মাংসগুলা ভালো মতো রান্না করে এই যে যেমন তোমাদের লাঞ্চে ইনভাইট করেছি তেমন কয়েকজনকে ইনভাইট করে সার্ভ করে দিলাম। তাহলে অবশিষ্ট প্রমান বলতে তো আর কিছুই থাকলো না, তাই না?”
কাব্যর মুখটা মুহুর্তে কালো হয়ে গেলো। কারন আজকের লাঞ্চে মাংসের তরকারীটা সেই সবার চেয়ে বেশি নিয়েছে। শুধু কাব্য না, বাকি সবারও একই অবস্থা।
সবার করুন অবস্থা দেখে মাকসুদ ভাই স্বশব্দে হেসে বললেন, “আরে তোমাদের সবার মুখ দেখে মনে হচ্ছে আমি সত্যি সত্যিই তোমাদের এমন কিছু খাইয়ে দিয়েছি। আরে তোমাদের শর্ত মেনেই তো গল্প বানালাম আমি। এখন বলো তো দেখি আমার ক্রাইম পারফেক্ট কিনা?”
মাকসুদ ভাইয়ের হাসি দেখে সবাই যেনো স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। কাব্য পরিবেশটা হালকা করতেই বোধহয় বলে উঠলো, “ আচ্ছা একটা জোকস মনে পড়লো আমার। একবার এক লোক বাজারে যাচ্ছিলো............”
জোকস শুনে সবাই হেসে উঠলো। কিন্তু নীলার ভেতর থেকে সেই গুমোট ভাবটা এখনো যাচ্ছে না। ওর মনে হলো চোখে মুখে একটু পানি দেওয়া দরকার। ওয়াশরুমটা কোন দিকে জিজ্ঞেস করাতে মাকসুদ ভাই তার কাজের লোককে ডাক দিলেন, “ আকবর, এই আকবর...”
আকবর আসলে উনি নীলাকে দেখিয়ে বললেন ,”ওনাকে একটু বাথরুমটা দেখিয়ে দাও তো”।
নীলা আকবরের সাথে বাথরুমের দিকে যাওয়ার ভিতরের দিকে এলো, ভেতরে প্যাসেজ দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ ভিতরের ঘরে কোণার দেওয়ালে একটা ছবির দিকে নীলার চোখ পড়লো।ছবিতে মাকসুদ ভাইয়ের সাথে একজন মহিলা দাঁড়ানো।
নীলা জিজ্ঞেস করলো , “আচ্ছা আকবর ভাই, ওই ছবিটা কার?”
আকবর বললো, “ এইটা আমাদের ম্যাডাম, মানে মাকসুদ স্যারের বউয়ের ছবি।“
নীলা বললোঃ “উনি কোথায়, ওনাকে দেখলাম না যে।“
আকবরঃ “উনি স্যাররে ছাইড়া আমাগো ডাক্তার স্যারের সাথে কই জানি চইলা গেছে। পুলিশে অনেক খুজছে , পায় নাই। যাউজ্ঞা, আসেন আপা , এইদিকে...... “

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.