নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রমিত

রমিত রহমান

রমিত রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

Don’t judge a book by its cover

০২ রা মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৫

আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আমরা যদি কারো জন্যে একবার খারাপ ধারনা বানিয়ে নেই তার হাজার ভালো কাজও আমাদের চোখে পড়বে না, আবার কারো জন্যে একবার ভালো ধারনা বানিয়ে নিলে সেও যে খারাপ কাজ করতে পারে সেটাও মাথায় আসে না।
ছোট্ট একটা উদাহরন দেই।
রামায়নের কথা তো আমরা অনেকেই শুনেছি। রামায়ন, মানে রামের অয়ন বা রামের যাত্রা। তো যার নামেই এই উপাখ্যান সেই যে এখানে নায়ক সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ব্যাক্তিগত ভাবে আমি রামের চেয়ে রাবনকে বেশি পচ্ছন্দ করি।
কারন টা বলছি।
দশ হাজার বছর কঠোর তপস্যা করে ব্রহ্মার কাছ থেকে বর লাভ করা একাধারে জ্ঞানী ও সাধক ছিলো রাবন। রাবনের বোন সুর্পনখা লক্ষনকে পছন্দ করে মানব রুপে তাকে প্রলুব্ধ করতে যান। কিন্তু “রাজপুত্র” লক্ষন এহেন আচরনে বিরক্ত হয়ে তার নাক কেটে দেন। সুর্পনখার সাথে এই আচরনে ক্ষিপ্ত হয় ভাই রাবন। হওয়ারই কথা, কেউ আপনার বোনের সাথে এমন করলে আপনিও নিশ্চই বসে থাকবেন না। তো এমন আচরনের প্রতিশোধ নিতে আগে পিছে কোন কিছু চিন্তা না করে সীতাকে হরন করে রাবন। কিন্তু সীতাকে হরন করলেও তার সাথে কখনো কোন ধরনের দূর্ব্যাবহার করে নি ভিলেন রাবন।
অপর দিকে হিরো রাম। ১৪ বছরের বনবাসের সাজা হলো রামের। উল্লেখ্য সাজা কিন্তু শুধুই রামেরই হয়েছিলো। কিন্তু রামের প্রতি ভালবাসা থেকে রাজকুমারী সীতাও তার সাথে বনবাসের কষ্টকে বরন করে নেওয়াকে নিজের কর্তব্য মনে করলেন। বিনিময়ে রাবনের কাছ থেকে উদ্ধারের পর সীতার চরিত্রের পবিত্রতা প্রমাণের জন্য রাম অগ্নিপরীক্ষার আয়োজন করেন। অগ্নিপরীক্ষার অংশ হিসাবে সীতাকে অগ্নিকুণ্ডে প্রবেশ করতে হয়। অগ্নি পরীক্ষার মাধ্যমে সীতার চরিত্রের পবিত্রতা প্রমাণ হলে রামচন্দ্র সীতাকে ঘরে ফিরিয়ে নেন। কিন্তু পরবর্তীতে আবারও সীতার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তখন রাম সীতাকে আবারও বনবাসে পাঠান। রামের দুই পুত্র সন্তান বড় হওবার পরে রাম একবার শিকার করতে বনে গেলে রামের সাথে পুত্রদের পুনর্মিলন হয়। কিন্তু সীতার চরিত্র নিয়ে আবারও প্রজাদের নিন্দা শুরু হলে লজ্জা ও ক্ষোভে সীতা পাতালে প্রবেশ করেন। শুধু চিন্তা করে দেখুন , একজন শুধুমাত্র পবিত্রতা পরীক্ষা করতে তার স্ত্রীকে আগুনে পোড়ানোর জন্য তৈরী, আবার সেই কিনা আদর্শ রাজা বা পরম পুজনীয়।
এই হলো হিরো রাম।
খুব জানতে ইচ্ছা করে এই কাহিনিতে আসলে হিরো কে? সকল কষ্টের সাথী,নিজের স্ত্রীকে অবিশ্বাস ও অসম্মান করা রাম অথবা শত্রু পত্নির প্রতিও সম্মান প্রদর্শনকারী রাবন ?
রামায়নের যুদ্ধে যদি রাবন জিততো, তাহলে নিঃসন্দেহে এই হিরোর খেতাবটা তারই পাওনা ছিলো।
কিন্তু ব্যাপারতো সেটাই যে আমরা সেট করে নিয়েছি যে রাবন মানে খারাপ আর রাম মানে দুনিয়ার সব ভালো।
তো কথা হলো Don’t judge a book by its cover. খারাপের মাঝেও ভালো, আবার ভালোর মাঝেও অনেক খারাপ থাকতে পারে। কারো প্রতি শুধু একচোখা ধারনা টিকিয়ে রাখলে অন্য অনেক কিছুই আপনার নজর এড়িয়ে যাবে। একচোখা যুক্তি কোনভাবেই কাম্য নয়। সকল দিক পর্যালোচনা করে স্বীদ্ধান্ত নিতে শিখুন।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৫

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: গুড অবজারবেশন।

২| ০২ রা মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৭

সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: হাতুড়ে লেখক বলেছেন: গুড অবজারবেশন।

৩| ০২ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:১৭

নয়ন বিন বাহার বলেছেন: আমি আপনার সাথে সহমত। আসলে আমরাতো কিতাব পড়ায় বিশ্বাসী নই। শোনায় বিশ্বাসী। পড়লে তো বুঝতে পারতাম কি ঘটনা। এখন শোনে তো ঘটনা বিচার করা যায় না। দাদারা যাই বলে তাই। তারা হিরো বললে হিরো, ভিলেন বললে ভিলেন।
আপনার এই অবজারভেশনের জন্য ধন্যবাদ। খুবই ক্রিয়েটিভ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.