নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুক্ত আকাশ

এমএইচ রনি১৯৭১

আমি মার্কসীয় সমাজতান্ত্রিক আর্দশে বিশ্বাসী একজন মানুষ ।

এমএইচ রনি১৯৭১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষ হওয়া কি অপরাধ

১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ২:৪২

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী বলে অভিযুক্ত বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে ফেইসবুকে লেখার পর গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে।
প্রবীর সিকদার ২০০১ সালে দৈনিক জনকণ্ঠের ফরিদপুর প্রতিনিধি থাকার সময় সন্ত্রাসীর হামলায় গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গু জীবন যাপন করছেন। একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন লেখার কারণে মুসার ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা ওই হামলা চালিয়েছিলো।
প্রশ্ন হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে লেখালেখি এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষ হওয়াই কি প্রবীর সিকদারের অপরাধ ? তবে কেন চিহ্নিত রাজাকারকে গ্রেফতার না করে প্রবীর সিকদারকে ধরা হলো ?
প্রবীর সিকদার সব সময় ন্যায়ের পথেই ছিলেন । এটাই হয়েছে তার গলার কাটা।
একটু জেনে নেয়া যাক কেন তাকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেল ।
মুসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই ও আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের বেয়াই ।তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে একটি মামলা তদন্তাধীন রয়েছে ।
কিছুদিন পুর্বে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে প্রবীর সিকদার প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই স্থানীয় সরকারমমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে নিয়েও লিখেছিলেন। তিনি তার সেই লেখায় নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন ।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান প্রবীর সিকদার বর্তমানে উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ এবং দৈনিক বাংলা ৭১ নামের পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক। তিনি এর আগে সমকাল ও কালের কণ্ঠে কাজ করেছিলেন।
সম্প্রতি অনলাইন সংবাদপত্র বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত এক লেখায় মুসা বিন শমসেরকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তুলনা করার পর নিজের ফেইসবুক পাতায় সমালোচনামুখর হন প্রবীর। এরপর তিনি মুসাকে নিয়ে জনকণ্ঠে প্রকাশিত তার লেখা ফেইসবুকে প্রকাশ করতে থাকেন।
রোববার গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও মুসাকে নিয়ে ‘জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের'!’ লেখাটি নিজের ফেইসবুক পাতায় তোলেন প্রবীর, সেই সঙ্গে লেখেন- “যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়ছে! রেহাই নেই কারও!”
তার ছেলে সুপ্রিয় সিকদার গনমাধ্যমের কাছে জানান রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর ইন্দিরা রোডের কার্যালয় থেকেতার বাবাকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে যায় ।বাবাকে তুলে নেওয়ার পর মোটর সাইকেলে পিছু নিয়েছিলেন সুপ্রিয়।
রাতে প্রবীরের মোবাইল থেকে ফোন পেয়ে ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন তার ছোট ভাই, স্ত্রী ও দুই ছেলে।পুলিশের এক কর্মকর্তা তাদের জানিয়েছেন ,“তিনি (প্রবীর) তার জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছেন এবং পুলিশ তাকে সহায়তা করছে না এমন একটি ফেইসবুক স্ট্যাটাসের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ডেকে আনা হয়েছে। পুলিশ তার কাছে জানতে চাইছে, কী কারণে তার জীবন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।”
মুসাকে নিয়ে সাম্প্রতিক লেখালেখির পর হুমকি পাওয়ার অভিযোগ এনে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গিয়েছিলেন প্রবীর, তবে পুলিশ তা নেয়নি বলে ফেইসবুকে লিখেছেন তিনি।
গত ১০ অগাস্ট ‘আমার জীবন শংকা তথা মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী থাকবেন’ শিরোনামের একটি স্ট্যাটাস দেন প্রবীর। তাতে তিনি লিখেন- “আমি খুব স্পষ্ট করেই বলছি, নিচের ব্যক্তিবর্গ আমার জীবন শংকা তথা মৃত্যুর জন্য দায়ী থাকবেন : ১. এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপি, ২. রাজাকার নুলা মুসা ওরফে ড. মুসা বিন শমসের, ৩. ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী বাচ্চু রাজাকার ওরফে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এবং এই তিন জনের অনুসারী-সহযোগীরা।”
ফরিদপুরে এপিপি স্বপন পাল তথ্য প্রযুক্তি আইনে প্রবীরে বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন ।
দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত ‘সেই রাজাকার’ কলামে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুসা বিন শমসেরের বিতর্কিত ভূমিকার বিবরণ তুলে ধরেছিলেন সাংবাদিক প্রবীর সিকদার, যার পরিবারের ১৪ জন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন।
তখন হামলার পর মামলায় মুসাকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানিয়েছিলেন প্রবীর, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
এরপর ঢাকায় চলে আসেন প্রবীর সিকদার। গত বছর প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে চীনেও গিয়েছিলেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি এখন রাস্ট্র ক্ষমতায় । দেশে যুদ্ধাপরাধিদের বিচার হচ্ছে । কিন্তু অর্থশালী রাজাকার ব্যবসায়ী ও সরকারের আত্মীয় হলে রাজাকাররা জেলে থাকেন না । বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়ান মুক্ত বাতাসে ।অন্যদিকে জেলে পচতে হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষদেরই । কি অদ্ভুত বিচিত্র এ দেশ !

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.