![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিলো স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্রদের প্রতিরোধ আন্দোলন ও মজিদ খানের কুখ্যাত শিক্ষানীতি প্রত্যাহার, বন্দী মুক্তি ও জনগণের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবিতে জমায়েত। সেটাই পরিণত হল বুট ও বুলেটের দমনে পিষ্ট জনতার এক বিরাট প্রতিরোধে। কে জানত বসন্তের আগুনরাঙা রঙের সঙ্গে মিশে যাবে ছাত্রদের রক্ত!
স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্রদের প্রতিরোধ আন্দোলনে প্রথম শহীদের নাম জয়নাল,দিপালী সাহা ,কাঞ্চন ।
সেদিন জয়নালকে গুলিবিদ্ধ করেই ক্ষান্ত হয়নি, তাঁর শরীর বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে পুলিশ। বেয়নেট ফলা আর জয়নালের শরীর থেকে চুইয়েপড়া রক্ত বাংলার পথ-প্রান্তর ভাসিয়ে দেয়। শুধু জয়নাল নয়, ছাত্রদের ওপর পুলিশি তাণ্ডবের সময় শিশু একাডেমীতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা দিপালী সাহা নামের এক শিশু গুলিবিদ্ধ হয়। তবে দিপালীর লাশ পুলিশ গুম করে ফেলে।
পুলিশ সেদিন শুধু হত্যা করেই স্থির থাকেনি, বিকেলে ক্যাম্পাসে একটি যুদ্ধ-পরিস্থিতি তৈরি করে সেনাবাহিনী। তার সঙ্গে যোগ দেয় বিডিআর-পুলিশ। শাহবাগ, টিএসসি চত্বর, কলাভবনের সামনে, নীলক্ষেত, কাঁটাবনের রাস্তা ধরে পুরো অঞ্চল ঘেরাও করে ফেলে তারা। অপরাজেয় বাংলার সমাবেশে পুলিশ অতর্কিত লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় বহু ছাত্রনেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। উপাচার্যের কার্যালয়ে ঢুকে পুলিশ ছাত্রছাত্রীদের মেরে হাত-পা ভেঙে ট্রাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে তৎকালীন উপাচার্য পদত্যাগ করেন। কলাভবনের ভেতরে ঢুকে পুলিশ ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক যাঁকে পেয়েছে তাঁকেই নির্যাতন করেছে। গ্রেপ্তার করে দুই সহস্রাধিক ছাত্র-জনতাকে। সরকারি হিসাব মতে এক হাজার ৩৩১ জন। সবাইকে গ্রেপ্তার করে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় শাহবাগের পুলিশ কন্ট্রোল রুমে। এরপর তাঁদের তুলে দেওয়া হয় আর্মির হাতে। বন্দি ছাত্র-জনতার ওপর চলে প্রথমে পুলিশ ও পরে আর্মির নিষ্ঠুর নির্যাতন। মেয়েদেরও গ্রেপ্তার করে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রবল চাপের কারণে তাঁদের ১৫-১৬ তারিখের মধ্যে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
১৯৮৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে কাঞ্চন চট্টগ্রাম শহরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
১৯৮৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি শহীদ হন রাউফুন বসুনিয়া।
এরপর থেকেই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন জোরদার হয়ে ওঠে। পশ্চিম থেকে আগত ভ্যালেন্টাইনের জোয়ারে ভেসে গেছে রক্তের অক্ষরে লেখা শহীদের নাম, এ প্রজন্ম ভুলে যাচ্ছে সেই সব শহীদের কথা।
১৪ ফেব্রুয়ারির এই ছাত্র আন্দোলনের গৌরবময় এ ইতিহাসকে ঢেকে দেওয়ার জন্য একটি মহল অনেক কায়দা-কৌশল করে পশ্চিমা সংস্কৃতির ভ্যালেন্টাইনস ডেকে ১৪ ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। নতুন প্রজন্মকে রাজনৈতিক চেতনাহীন করাই এর মূল অভিপ্রায়।
আমরা ব্যর্থ হয়েছি স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্রদের প্রতিরোধ আন্দোলনের এই দিনটি এ প্রজন্মকে স্মরণ করাতে। ইতিহাসে অনেক ঘটনা আছে, তার পরবর্তী প্রজন্ম ভুলে গেলেও তার পরবর্তী প্রজন্ম আবার খুঁজে বের করে নিয়ে এসেছে। হয়তো বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশ বা মানুষ অনেক সময় চেতনা হারিয়ে ফেলে, তখন তার ইতিহাস-ঐতিহ্যকে স্মরণ করে না। কিন্তু ইতিহাস হারিয়ে যায় না, তা প্রজ্বলিত অগি্নশিখার মতো মানুষের সামনে উপস্থিত হয়। দেখায় এগিয়ে চলার গতিপথ।
২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৬
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আসলেই এই প্রজন্ম কে সব উৎসব বিলাসিতা ভোগের উপকরন দিয়ে মোহাবিস্ট করে রাখা হয়েছ এদের নজরে পদ্মার চর, টিপাইমুখ, পুলিশি নির্যাতন কিছুই প্রভাব ফেলে না
আমরা ব্যর্থ হয়েছি স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্রদের প্রতিরোধ আন্দোলনের এই দিনটি এ প্রজন্মকে স্মরণ করাতে। ইতিহাসে অনেক ঘটনা আছে, তার পরবর্তী প্রজন্ম ভুলে গেলেও তার পরবর্তী প্রজন্ম আবার খুঁজে বের করে নিয়ে এসেছে। হয়তো বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশ বা মানুষ অনেক সময় চেতনা হারিয়ে ফেলে, তখন তার ইতিহাস-ঐতিহ্যকে স্মরণ করে না। কিন্তু ইতিহাস হারিয়ে যায় না, তা প্রজ্বলিত অগি্নশিখার মতো মানুষের সামনে উপস্থিত হয়। দেখায় এগিয়ে চলার গতিপথ।
সহমত।
৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২৪
বিজন রয় বলেছেন: বেশ তো!
৪| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৩৫
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।
এভাবে ভাবলে সারাদেশই একটি বধ্যভূমি, তাহলে তো কোন উৎসবই করা যাবে না!
যারা এই আন্দোলন করেছেন, তাদের বিন্দুমাত্র অশ্রদ্ধা না করে বলছি, তারা স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করেছে কি এই দিনটা তাদের স্মরণ করার জন্য? করেনি। তারা একটি সুস্থ পরিবেশ চেয়েছিল, সুস্থ শাসনব্যবস্থা চেয়েছিল আর চেয়েছিল মুক্তি। তাদের সব চাওয়া পূরণ না হলেও, অনেকতাই পূরণ হয়েছে।
আপনি বলতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য শোক র্যালি করে মানুষ বসন্তের প্রথমদিনটাকে ভুলে যাক?
এটা বরং তাদের চাওয়ারই বিপক্ষে চলে যাবে।
অবশ্যই ইতিহাস ভুলে যাওয়াটা একটা অপরাধ
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:১৯
অগ্নি কল্লোল বলেছেন: ফাগুন নিয়ে কো দ্বিমত থাকার কথা না।কারণ ফাগুণ বাঙালি সংস্কৃতি,ইতিহাস এর উৎস।।তবে ভ্যালেন্টাইনস ডে নামে বিদেশী সংস্কৃতির বিরুদ্ধে একমত।