![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশ থেকে আনা এক কার্টুন বেনসন এন্ড হেজেস আজই শেষ হলো। দেশীয় বেনসনলাইটস ছাড়া সিগারেট পান করে কোন তপ্তি পাই না। আগামীদিনগুলি মালবোরো লাইটসের উপর ভর করে চলতে হবে। লন্ডন হলে দেশী বেনসন বাংগালী পাড়ায় খুজে পাওয়া যেত। প্যারিসে তা সম্ভব নয়। তাছাড়া এখানে সিগারেটের দাম অত্যাধিক বেশী। এক প্যাকেট বেনসন বা মালবোরো ৯ ইউরো। বাংলাদেশী টাকায় প্রায় সাড়ে অাটশত টাকা। কি আর করা!
২.
সিগারেট শেষ। ছুটিরদিনের সাত সকালে লা পমিয়ের একটাও তাবাকের দোকান খোলা নাই।
মেজাজ চরম বিলা!
আহা সিগারেট।!
প্রায় সাতশ ফুট ঢালু রাস্তা বেয়ে উপরেরদিকে উঠে দেখি তাবাকের দোকান বন্ধ। এদিক ওদিক তাবাকের দোকান একটাও খোলা নেই। দুই কিলোমিটার হেটে হেটে পোর্তো দো লীলায় এরাবিক মহল্লায় একটা তাবাকের দোকান খোলা পেলাম। বেনসন নাই, শুধুই মালবোরো। তাই সই, সিগারেট বলে কথা।
নয় ইউরো করে ১৮ ইউরো দিয়ে ২ প্যাকেট মালবোরো লাইটস কিনে বাসায় আসতে আসতে ৩টা সিগারেট শেষ। এর মধ্যে আমি ২টা। ১টা সিগারেট চেয়ে নিলো মধ্যবয়স্ক এক আলজেরিয়ান সুন্দরী । ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অনেকবারই আমার কাছে সিগারেট চেয়েছে নারী -পুরুষ অনেকেই। কিন্তু দেশের বাইরে আমি কাউকেই সিগারেট দেই না। কারন আমার সিগারেট দেশ থেকে নিয়ে আসা, বেনসন লাইটস। আজ এই আরব নারী যখন সিগারেট চাইলো তখন না করতে পারিনি। মনে পড়ে গেল কিছুদিন আগে দেশে ফেরার পথে কুয়েত এয়ারপোর্টে আমার সিগারেট শেষ হয়ে গেলে আমি ডিউটি ফ্রি শপ খোঁজ করছিলাম। এসময় কাতার প্রবাসি এক বাংলাদেশী যুবক নিজ থেকেই এগিয়ে এসে তার বেনসন প্যাকেট এগিয়ে দেয়। সেই মুহুর্তে অই প্যাকেটের ১টি সিগারেট আমার কাছে হাতে চাঁদ পাওয়ার মতন ছিলো। একথাটি মনে পড়ে যাওয়ায় এই আরব নারীকে ১টা সিগারেট দিতে কোনো কুন্ঠা বা জড়তা কাজ করেনি।
সিগারেট ধরিয়ে এক গাল ধোয়া ছেড়ে আরব নারী ধন্যবাদ দিয়ে গেলো, মেকছি।
৩.
মার্চ মাসে অামি প্যারিস থেকে দেশে ফিরছি ইত্তেহাদ এয়ারলাইনে ।অামার ট্রানজিট অাবুধাবি এয়ারপোর্টে ৬ঘন্টা । স্হানীয় সময় ভোর ৬টায় প্লেন ল্যান্ড করে। প্রায় ৯ঘন্টার জার্নি । ইমিগ্রেশন ও কানেক্টিং ফ্লাইট শিডিউল চেক করে স্টারবাকসে কফি খেয়ে স্মোকিংজোন খুঁজতে গিয়ে চমকে উঠলাম । বিশাল এই এয়ারপোর্টে মাত্র ৩টা স্মোকিংজোন । ৩টাতেই বিশাল লম্বা লাইন ।কোন কোন লাইনে ৮০ থেকে ৯০ জন দাঁড়িয়েছে । সবাই স্মোকিংজোনে ঢুকে ধুমপান করবে। ধুমপানের জন্য বিশাল লাইন অামার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা !
হ্যান্ড ল্যাগেজ নিয়ে প্রায় ঘন্টাখানেক লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা দুটোর ব্যাথায় কাতর হয়ে পড়েছিলাম। ১ঘন্টা পর যখন স্মোকিংজোনে ঢুকলাম তখন অামার অবস্থা কাহিল। জোনের ভিতর মাত্র ৬জন একসাথে দাঁড়িয়ে ধুমপান করতে পারে। অনেককেই দেখলাম একটা সিগারেট শেষ করে অারেকটা জ্বালাতে। পরপর দুটো সিগারেট শেষ করে বের হচ্ছে । এর কারন বুঝলাম ,দীর্ঘ লাইন পার হয়ে এসে একটা সিগারেট টেনে পোষাচ্ছে না । এদের দেখােদখি অামিও দুটো সিগারেট টেনে বের হই ।
অাবুধাবি এয়ারপোর্টে লাইন দিয়ে সিগারেটপান করার চরম অভিজ্ঞতা অামার সারাজীবন মনে থাকবে ।
সিগারেট নিয়ে ভ্রমনের সময় অসংখ্য গল্প অাছে।সব একদিনে বলে শেষ করা যাবে না।গত কিছুদিন অাগে দেশর একটি ঘটনা দয়ে লেখাটি শেষ করছি।
৪.
সাধারনত আমি বাসায় লুকিয়েও সিগারেট খাই না। ফলে রাতে বাসায় ফেরার আগেই বাইরে সর্বশেষ সিগারেট খেয়ে আসি।কিন্তু আজ অনেক রাত জেগে একটা বইয়ের খসড়া করতে হবে। কাজ করতে করতে রাত ১২টার পরেই হঠাত মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো সিগারেটের জন্য। বাসার সবাই মোটামুটি ঘুমিয়ে পড়েছে। সন্তর্পনে পা টিপে টিপে বাসার বাইরে এসে বাহির থেকে লক করে সিগারেটের খোঁজে মহল্লার মোড়ে এসে দেখি সব দোকান বন্ধ। রাত সোয়া একটা বাজে। কি আর করা!
এক সিগারেটের জন্য আপডাউন ৩০ টাকা রিক্সা ভাড়ায় চাষাড়া থেকে ৫ সিগারেট কেনা হলো।
৫.
রাত এখন দুইটা।
চা ও সিগারেটের জন্য ধোপাপট্টি মোড়ের দোকানে। রাত জেগে কাজ করা শ্রমজীবি কিছু মানুষ ছাড়া এখানে কেউ নেই। পরিশ্রান্ত এ মানুষগুলি কি পরিতৃপ্তি সহকারে চা, বিড়ি খাচ্ছে, দেখে কেউ বলবে না এরা মাত্রই গার্মেন্টসের শিপমেন্টের কার্টুন কাভারভ্যান বোঝাই করে এসেছে।
এদের একপাশে বসে চা, সিগারেট খেতে খেতে শুনলাম বন্যা নিয়ে তাদের দু:শ্চিন্তার কথা।শিপমেন্ট হলেই ভোরে বাড়ি যাবে। জমানো টাকা আর সুদে নেয়া টাকা সম্বল করে বাড়ি যাবার প্রস্তুতি নিয়েছে। তাদের কথায় বারবার উঠে আসে সুদের টাকা কিভাবে যে শোধ হবে, ছেলে মেয়ে, সংসার নিয়ে কিভাবে আগামীদিনগুলি কাটবে সেই দু:শ্চিন্তা। তবে এই মুহুর্তে পানি নেমে গেলেই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িঘর মেরামত করাই তাদের বড় চ্যালেঞ্জ।
২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩২
হাবিব বলেছেন: আপনার লেখা পড়ে আমার কাহিনির কথা মনে পড়ে গেল।তাহলে পড়েন :
তখন ঠিক রোজার মাস,ত আমি সবসময় রাত জাগি।একদিন রাতে আমার সিগেরেট শেষ হয়ে গেল।তখন ঠিক ২ টা বাজে।পরে কি করি, চিন্তা করতেছি যে, আমার সিগেরেট এর স্ট্রে তে কোন সিগেরেট আছে কি না যে গলো একবার ধুমপান করেছি,খুজে আর পেলাম।পরে বাসার সামনে খুজতে শুরু করি লাইট দিয়ে, কিছুই পাইলাম না।এক বন্দুকে ফোন করি যে আমার সিগেরেট লাগবো, ও বলে আমার কাছে আছেই ১ টা। পরে আর কি করব।ত আমি জানি যে আমাদের এলাকায় একটা চা এর দোকান রাত ৪ টা পরজন্ত খোলা থাকে,তখন আমি বাসা থেকে বের হলাম।রাস্তাই দেখি পাহারাদার, ত পাহারাদার কে বললাম যে মামা কোন চা এর দোকান খোলা আছে, মামা বল্ল না,তবে রানী মহল যাও ঐ খানে খোলা আছে।আমি বললাম এত রাতে রানী মহল গেলে পুলিশ হালারা ত জালাইব।পরে আমি বললাম আপনার কাছে সিগেরেট আছে,থাকলে দেন।মামা বলে আছে পাইলট এই বিড়ি আপ্নে খাইবেন।আমি বলি আরে দেন মিয়া,এইটা ই চলবো। পরে আর কি ৪ টা দিল,।
৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৪৮
মো: হাসানূর রহমান রিজভী বলেছেন: আহ! সিগরেট।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:২৭
ঢাকাবাসী বলেছেন: খুব ভাল লিখেছেন। ভাল লেগেছে।