নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুক্ত আকাশ

এমএইচ রনি১৯৭১

আমি মার্কসীয় সমাজতান্ত্রিক আর্দশে বিশ্বাসী একজন মানুষ ।

এমএইচ রনি১৯৭১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডেভারপাড়েরর গল্প

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৭



গত শতকে সতুরের দশকের মধ্যভাগ । আমার বয়স তখন সাত কি আট হবে । থাকি চট্্রগ্রাম , আগ্রাবাদ ডেভার পাড় । আমার দাদার বাসায় অসংখ্য লোকজন । দাদা,দাদী, বাপ চাচারা ৪ভাই, ৪ ফুপি, মা ও মেঝ চাচী , বাড়ির হেশেল সামলানোর জন্য ২ জন পুরুষ বার্বুচী, ২জন কাজের মহিলা ছাড়াও আমার বাবার বেশ ক'জন চাচাতো ভাই নিয়ে বিরাট একান্নবর্তী পরিবার ।তার উপর আমরা ৩ ভাই বোন ও আমার মেঝ চাচার বড় ছেলে পলাশ । জ্ঞান হবার পর থেকেই দেখেছি সকাল থেকেই এই বাড়িতে আমার বাবা-চাচা,ফুপিদের বন্ধু-বান্ধবীদের আনাগোনা লেগেই থাকতো রাত অবধি । কে কখন যে আসছে যাচ্ছে , খাওয়া দাওয়া করছে তার কোন হিসেব ছিলো না । সারাদিনই চুলায় বড় বড় সিলভারের কেটলিতে চা'র পানি টগবগ করে ফুটতো । এখনো মনে পড়ে এবং শুনেছি যারা এই বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন তাদের মুখে । কেউ কোনদিন না খেয়ে এসেছেন এমন হয়নি । সময়টা সকাল-দুপুর-বিকেল-সন্ধ্যা কিংবা রাত যাইহোক না কেন ।
আমার বাবা-চাচারা ছিলেন খুবই সংস্কৃতি সজ্জন মানুষ । পড়াশুনোর পাশাপাশি সবাই কমবেশী নাটক, খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন।
পাড়ার সালহউদ্দীন ইনস্টিটিউটে বিকেল থেকেই নাটকের রির্হাসেল চাচাদের ব্যস্ত দেখতাম । সেখানেই প্রথম মঞ্চ নাটক দেখার
অভিজ্ঞতা হয়েছিল । নাটকের নাম এখন আর মনে পড়ছে না ।তবে নাটকের একটি গান মনে আছে । আমার ছোট চাচা খুব করুন
মুখে গেয়েছিলেন' আমার সকল দু:খের প্রদীপ জ্বেলে..' । সেই চাচা খুব ভালো অভিনয় করতেন ।অামার ছোট ফুপা ,ছড়াকার অাহসান মালেক তিনিও ভাল অভিনয় করতেন । পরে অবশ্য আর কখনো তাদের অভিনয় করতে দেখিনি ।শুনেছি আমার বাবাও অভিনয় করতেন। চিটাগং কলেজে তার সহপাঠি ছিলেন আজকের খ্যাতনামা অভিনেতা আবুল হায়াত । মঞ্চে তাদের সাথে অভিনয় করতেন পাথরকাটার মেয়ে , সেই সময়ের মীনা দত্ত ,যিনি আজকের বিখ্যাত অভিনেত্রী কবরী । তবে অভিনয়ের চেয়ে আমার বাবা ও সেঝ চাচা ভালো ক্রিকেট খেলতেন ।মনে পড়ে বাবা চাচাদের সাথে আগ্রাবাদ জাম্বুরী ফিল্ডে প্রচুর খেলা দেখতে গিয়েছি । এই খেলার জন্য যে সাদা পোষাক প্রয়োজন তখনই জেনেছি । ক্রিকেট খেলার নিয়ম-কানুন না বুঝলেও দেখতে যেতাম টফি খাবার লোভে ।বড় হয়ে সেই টফি বহু খুজেছি । অনেক দামী টফি খাওয়া হলেও সেই টফির স্বাদ কোথাও পাইনি !

২.
পানি ভীতি আমার কখনোই ছিলো না ।আমাদের বাসার ১০০গজের মধ্যেই ছিলো বিশাল দীঘি । যা চট্লার ভাষায় ডেভা নামে সমাধিক পরিচিত ।এতো বড় দীঘিতে গোসল করে, লাফিয়ে -ঝাপিয়ে আমার শৈশব কেটেছে । কিন্তু ভালোভাবে সাতার শেখা হয়নি কখনো । ডেভায় নামা নিয়ে আগ্রাবাদ সিজিএস কলোনীর আমার বয়েসী ছেলেদের সাথে কত যে মারামরি করেছি ! প্রতিবারই সেসব মারামারিতে আমার ত্রানকর্তা হয়ে উদ্ধার করতে আসতেন চাচার বন্ধুরাই । এখন মনে হলে অনেক হাসি চলে আসে ।
এখন আফসোস হয় এতোবড় দীঘি বাসার পাশে থাকার পরও কেন যে ভালো সাঁতার শেখা হলো না !

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.