নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিরোনামহীন

রনী মুরাদ

একজন লঘু কবি

রনী মুরাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিদ্যুৎহীনতার ইতিবৃত্ত

০২ রা নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৫

সারাদিন যারা নানা ষড়যন্ত্রতত্ত্ব খুঁজে বেড়ান তাদের জন্য-

জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিভ্রাট সারাদেশব্যাপী যে বিপর্যয়ের সূচনা করেছে বাংলাদেশ তা বেশ ভালোভাবেই কাটিয়ে ওঠার পথে; এই মুহূর্তে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাচ্ছি।

ইতিহাসের ১৩টি বৃহৎ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কথা স্বল্পস্মৃতির বাঙালিদের মনে করিয়ে দেয়া যাকঃ

১. উত্তরপূর্ব যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কানাডা- ৯ নভেম্বর ১৯৬৫। শুধুমাত্র নিউইয়র্ক সাবওয়েতেই ৮০০০০০ মানুষ আটকা পড়ে! পুনরায় সচল হতে ১৩ ঘন্টা সময় লেগেছিল। হামলা, লুট, ছিনতাই মোকাবিলা করার জন্য ১০,০০০ ন্যাশনাল গার্ড ও ৫০০০ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

২. নিউইয়র্ক= ১৩ জুলাই ১৯৭৭। শহর জুড়ে ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হতে সময় লেগেছিল ১২ ঘণ্টা

৩. থাইল্যান্ড- ১৮ মার্চ, ১৯৭৮। সমগ্র দেশ আক্রান্ত হয় এবং ৪০ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হতে সময় লেগেছিল প্রায় ৫ ঘণ্টা
৪. কানডার ভূ- চুম্বকীয় ঝড়- ১৩ মার্চ ১৯৮৯। সমগ্র কুইবেক ও কানাডার কিছু অংশে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা যায়। এমনকি, মন্ট্রিল মেট্রো ও ডরভিল এয়ারপোর্টেও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হতে সময় লেগেছিল ১২ ঘণ্টা

৫. ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চল- ১১ মার্চ ১৯৯৯। ৯৭ মিলিয়ন ব্রাজিলিয়ান ৫ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অন্ধকারে থাকতে বাধ্য হয়। বেশ কয়েকটি খুন ও লুটের ঘটনা রিপোর্ট করা হয়

৬. ভারত -২ জানুয়ারী ২০০১। উত্তর প্রদেশে জাতীয় গ্রিড লাইনে ত্রুটি দেখা দিলে প্রায় ২২৬মিলিয়ন মানুষক অন্ধকারে থাকতে হয় এবং আর্থিক ক্ষতির পরিমান ১০৭ মিলিয়ন রুপি, পুনরায় সচল হতে ১৩ ঘন্টা সময় লেগেছিল

৭. উত্তরপূর্ব যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কানাডা- ১৪- ১৫ আগস্ট২০০৩। ব্যাপক হারে লুটপাট ও ১১ টি খুন এবং ৬ বিলিয়ন আর্থিক ক্ষতি হয়। কিছু অংশে ৭ ঘণ্টা পরে বিদ্যুৎ দেয়া গেলেও পুরপুরি সচল হতে দুই দিন সময় লাগে।

৮. ইটালি- ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৩। সারাদেশ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হতে সময় লেগেছিল ৩-১২ ঘণ্টা

৯. জাভা এবং বালি, ইন্দোনেশিয়া- ১৮ আগস্ট ২০০৫, প্রায় ১১ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকে ১০০ মিলিয়ন মানুষ

১০. জার্মানি, ফ্রান্স, ইটালি, এবং স্পেন- ০৪ নভেম্বর ২০০৬। ১৫ মিলিয়ন ইউরোপিয়ান বিদ্যুৎহীন থাকে; লিফটে, ট্রেনে আটকে পরে আরও কয়েকটি দেশের মানুষ

১১. চীন- ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০০৮। শীতকালীন ঝড়ে বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঠিক হতে সময় লেগেছিল প্রায় দুই সপ্তাহ! ৪.৬ মিলিয়ন মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

১২. ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে- ১০-১১ নভেম্বর ২০০৯। রাজধানী সহ সারা দেশ প্রায় দুই ঘন্টা বিদ্যুৎহীন থাকে। প্যারাগুয়ে ২০ মিনিটের জন্য বিদ্যুৎহীন থাকে। কয়েক হাজার মানুষ পথে আটকা পরে

১৩. ভারত- ৩০-৩১ জুলাই ২০১২। ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ব্ল্যাকআউট (এখন পর্যন্ত) ৬৭০ মিলিয়ন মানুষ যা সারা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ৯%। সরবরাহ বন্ধ থাকে এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হতে সময় লেগেছিল ২৪-৪৮ ঘণ্টা! কয়েকশত ট্রেন সময়সূচি বাতিল করতে বাধ্য হয়।

এবার বাংলাদেশের দিকে লক্ষ্য করা যাক-
জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়ে প্রায় আট ঘণ্টা গোটা বাংলাদেশ বিদ্যুৎহীন থাকার পরদিন রোববার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে বলে জানা গেছে।আগেরদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর ত্রুটি সারাতে দেরি হওয়ায় সন্ধ্যার পর পুরো দেশ ডুবে গিয়েছিল অন্ধকারে।
সন্ধ্যা নামার কয়েক ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ আসতে শুরু করে, মধ্য রাতের দিকে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এলে জনদুর্ভোগের অবসান ঘটে।এখন সারাদেশে ৪৯০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ৪৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে! তার বিপরীতে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, লুটপাট, খুন বেড়েছে এমনটিও শোনা যায়নি। শুধুমাত্র ১০ টাকার মোমবাতি ১০০ টাকায় বিক্রির অসাধু প্রয়াস ছাড়া!!
তবু যারা সবকিছুতেই ষড়যন্ত্রের গন্ধ পান তারা পাবেনই! ভারতের দালালী, মীর কাশিমের রায়ের ফল পাল্টানো আরও কত ষড়যন্ত্র যে আমাদের পেটে আছে!!
রাত শেষে কিন্তু সব পরিস্কার- বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক, মীর কাশেমেরও ফাঁসি হয়েছে। এবার একটু সহজ চিন্তা করুন না, তাতে আপনিই দীর্ঘ জীবন লাভ করবেন।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৬

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: পোষ্টের সুন্দর পরিসমাপ্তি। তবে এমন দূর্জোগে যে কোন কিছু মনে আসাটা স্বাভাবিক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.