নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যা মনে আসে তাই লিখি।

স্বর্ণবন্ধন

একজন শখের লেখক। তাই সাহিত্যগত কোন ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

স্বর্ণবন্ধন › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিশি দর্পণ

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১:৫০

মন ভালো তো তোমার?
নক্ষত্রেরা জানতে চাচ্ছে এই মধ্যরাত্রিরে, কেমন অস্পষ্ট রাস্তার বাতি,
নিভে যাবে নাকি ল্যাম্পপোস্ট! পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্ররা লেপ্টে আছে,
গোখরার লেজের মতো প্যাঁচানো রাস্তায়,
সাপটা নড়ে নাকি পায়ের আওয়াজে!
সূত্ররা মরে গেলে মৃতরা কি কথা বলে! কাঁপে পাতালের অন্দর!
জানা নাই! কারো জানা নাই!
বেজিগুলো ফিরেছে ঘরে; আলস্যে জড়ানো পায়ে মাখানো শিশির।
হিংস্রতা ভুলে এক রাতে কতো ব্ল্যাকহোল মরে যায়!
হিসাবের খাতা উইপোকা দিলো কেটে, বাল্মিকী থাকে নাকি রাস্তায়!
হয়তো থাকেনা! হয়েছে সিদ্ধিলাভ ধুলার মায়ায় মরে তার।
মন ভালো তো তোমার? সুললিত গলা হয়না ব্যাঙ্গমার।
লিখে রেখো জানালায় তোমার কুশল!
পাহাড়ের মতো উঁচু, দালানের ইলিউশন আর মাত্রার ভুল,
ক্রমবর্ধমান হৃদস্পন্দনের চেয়েও গতি তার বেশি,
তার চেয়েও উঁচু কি তোমার মন!

ঘুমায়নি জনতা কল্লোলিনী শহরের ঝড়ে, শীত পড়েছে,
নিভেছে পুরাতন কম্বলের ওম! তুমি জেগে আছো নাকি?
শোন জনতার কলরব; কেমন ক্রুদ্ধ ও জান্তব!
লোহার খাঁচার শিকে আঁচরের দাগ, তাদের পাশবিক রাগ,
বুনো চাপা স্বর।
অথবা জীবন এই মধ্যরাত্রিরে বাসি পচা ফুল হয়ে শহরের মোড়ে,
দেয় গড়াগড়ি; নেড়ি কুকুরেরা দৌড়ায় জোরে,
কিন্তু বুলেট ট্রেন আসেনি এখনো; হাসে তৃতীয় বিশ্বের পোস্টার,
শ্রমিকেরা তবু মেনে চলে সামন্তযুগের রোস্টার!
ম্যানহোলে আটকানো পা রেখে ভুলে বাড়ি যায় কতো পথচারী,
একটু গভীরে তার ফেলে দেওয়া মন জমে আছে কাঁড়ি কাঁড়ি!
চলো নামি অনেক গভীরে ওই অন্ধকূপের ভিতরে!
ভালো আছো তুমি? শহর তোমাকে মনে রাখেনা,
তবুও শহরলীনা তুমি!

কৃত্তিম ভূকম্পন পড়বেনা ধরা কোন রিখটার স্কেলে,
কখনো সখনো আমাদের কফির কাপটা কাঁপে,
শহর কাঁপছে মরা নদীটার জলে, চায়ের বুকেও প্রতিসরণ।
মূল্য কতো মাছেদের জীবন? ভোরের কাওরান বাজারে।
রাতের গভীরে লুকানো ভুমিকম্পেরা ঘোরে,
রঙ্গিন মার্বেল খেলে পথশিশুরা, ভাঙ্গা কাঁচ বুকের ভিতরে,
উত্তরের হাওয়া বেড়াতে এসেছে, লাগে ঝরঝর!
ঘড়িটার ঢং ঢং! বেজেছে বারোটা,
সময় পেচিয়ে গেলে পুরানো কাপড়ে, এসময়ে ভেংগে যায়-
রাস্তার মানুষ, চীনামাটি টেকসই নয়-
আর নয় ঝুরঝুরে বালির হৃদয়! সত্যি সবাই কাদামাটির মানুষ।
তুমি ভালো আছোতো এমন অসময়ে?
হৃদয় সামলে রেখো! ভূমিকম্পের জোর ধাক্কাটা দিলে,
যত্নে সামলে রেখো!

ঘুমন্ত পার্ক বস্তুত জেগে থাকে সারারাত,
ঘুমাবে কখন! আঁধার আলোয় মোটরযানের ব্যস্ততা,
হেডলাইটের ইশারা হলুদ আলোয় কাকে ডাকে!
পুতুলের হাতে সঁপে দিয়ে স্টিয়ারিং বসে আছে ছকে,
দাবার চৌকে ঘরে কয়েকটা মানুষ!
মিন্টো রোডের ভিড়ে কাঁদছে ফোয়ারা; তুমিও তো কাঁদো!
রাস্তায় হাঁটে জন মিল্টন! স্বর্গচ্যূতি তার হলো কি এখন!
আবছা ছায়ায় ঘুরে ফিরে গান গায় কারা,
গাছেরা কি তাদের চিনে? পার্কের আলো নিভাচ্ছে কারা!
ভয় লাগে মজ্জায়!
গাছের পাতাদের নড়াচ্ছে কেঊ; আছে নাকি বেহালাবাদক!
রাজার ভাস্কর্যের চুন খসা, চোখে ময়লার ঢেউ।
সবকিছু মরে যায় একদিন, পর্দায় অবসান মঞ্চের নাটক,
বাজায় একাকী এক বেহালাবাদক।
সবাই পকেটে রাখি ডলারের সাথে মন খারাপের নোট,
শরীরের কংকাল মুক্তির আশায় করে হাঁসফাঁস,
কলে পড়া ধেড়ে ইঁদুরের মতো!
চলো খরচ করে ফেলি ভালোবাসা সঞ্চয়ে রেখেছি যতো!
মন ভালো তো তোমার?
কষ্ট করে জানিয়ো আবার!

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২১

রাজীব নুর বলেছেন: অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর একটি কবিতা পাঠ করলাম।

২| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:২৩

ইমু সাহেব বলেছেন: পুরোটা পড়ে ফেল্লাম । অসাধারন লেখনী । এরকম আরো চাই ...

৩| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২৮

নার্গিস জামান বলেছেন: খুব সুন্দর :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.