নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যা মনে আসে তাই লিখি।

স্বর্ণবন্ধন

একজন শখের লেখক। তাই সাহিত্যগত কোন ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

স্বর্ণবন্ধন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অচন্দ্রস্পর্শী আলো

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:১৬

রাস্তাগুলো খুব চুপচাপ শান্ত বিড়ালের মতো,
শুয়ে আছে রাতের শীতলতা মেখে;
টোকা দিলে উঠবেই জেগে তুমি যদি সাথে থাকো!
কালো বিড়ালের শরীরে সজারূর কাঁটা,
কারা যেন লাগিয়েছে ভুলে; হাসে লুপ্ত দেবতা।
কালো পিচ গোঁ গোঁ করে কাঁদে সারারাত,
পিষে যায় তার হৃদয়ের চোখ নিষ্ঠুর চাকায়!

ঘুমিয়ে পড়বে আজ অন্ধ কুয়াশা খুব তাড়াতাড়ি!
চোখে তার নীল কতো জল!
তোমার চোখের জল সেইখানে মিশে আছে,
শুধু তুমি নেই আর আশেপাশে।
নিঃশ্বাস মিশে আছে তোমার শূন্যের অসীম স্তরে,
অনেক পুরাতন, আমাদেরএই পরিত্যক্ত শহরে!
বাতাসেরা করে ফিসফাস-
“কেউ নেই তোর সাথে আজ এই আলোকিত আঁধারে!”
খুব একা আমরা সবাই,
সত্যিই তো তাই! লেখা আছে রাস্তার পাথরে।
তবু জানি তুমি আছো অলংঘনীয় আশ্বাসে,
আমার প্রতিটি নিঃশ্বাস ও প্রশ্বাসে মিশে।
বিড়ালের ঘুম দেখে ঈর্ষা হয় কিছু নিশাচর মানুষের,
আমাদের ঘুম তারা কেড়ে নিলো কোন কালে!

খুঁজছি কাউকে পাগলের মতো ভুতুড়ে বাইরে,
প্রেতগুলি ফিরে আসে যদি, শহরটা যাদুর জলধি!
ভাংগা দরোজার কপাটের আড়ালে,
লুকিয়ে থাকো কি তুমি?
কেউ নেই, শুধু ঘুমের স্রোত এনেছে জোয়ার,
এখানে হয়না শেষ দুঃখের ভাঁড়ার; অপার নগর!
তাও তোমাকেই খুঁজি;
দুঃখ আমার আজন্ম নিয়তি; সাথেই বসবাস!
বাতাসেরা অণুগুলো ধরে রাখে ঘ্রাণ,
তোমার নিঃশ্বাসে মিশে এখনো সজীব বিবর্ণ ঘাস,
চলটা উঠানো ফুটপাতের কোণায়!
সেই উষ্ণতা মেখে তুলতুলে বিড়ালেরা ঘুমায়।

অনেক ছায়ার এই শহরে, কতো ছায়া করে গিজগিজ,
চত্বরে পড়ে আছে স্তূপের মতো কত ছায়া বেওয়ারিশ!
তবু এখনো ভরেই থাকে শুকনো পাতার শোবিজ।
শীত্ এসে গেলো নাকি!
মাদী বিড়ালটা গ্রাহ্য করেনা, গর্ভে তার অনাগত সন্তান,
হেলে দুলে রাস্তাটা পাড় হতে গিয়ে ধুম করে থামে।
নিজের ছায়ায় দেখে সন্তানের মুখ,
এও তো অলীক সুখ কর্পূরের মতো উবে যাবে,
শীতের বাতাসে!

ছায়াদের মেলায় তোমার ছায়াও নাকি হাঁটে!
দুরে আছ কয়েক হাজার মাইল অথবা কয়েকশত,
তোমার ছায়ারা তবু মিশে আছে এখানের মজ্জায়।
মানুষ তো চলে যেতে পারে,
ছায়ারা আলাদা অনেক; বলো কেন সে যাবে সরে?
শত শত মানুষের ভীড়ে,
তোমার ছায়াটা আজো বাঁচে,
অনেক ছায়ার ভীড়ে হাঁটে, মাঝে মাঝে হাসে,
বাঁকানো ঠোঁটের কোণ সেলফির মতো!
কেউতা জানেনা জানো! শুধু জানি আমি!

অনেক কথার এই শহরে সব কথা অর্থহীন!
তোমার কথারা আজো বেঁচে থাকে,
কম্পাংকের ধার ধারেনা!
তোমার পায়ের ছাপ নিয়ে বসে এই জমিন,
শহরটা হয়ে আছে চুপ; বিড়ালেরা করে মিনমিন।
ক্ষ্যাপাটে জনতার পাগলাটে রক মিউজিকেও,
এই বৃদ্ধ শহর আর কাঁপে না,
কানে তার সওয়া হয়ে গিয়েছে এই সবেও।

শুধু আমি একা হাঁটি কাটা চাঁদ নিয়ে হাতে,
জনতার ঘোলা চোখ এড়িয়ে গিয়েছি কতোবার,
এই সত্য জেনে,
অদৃশ্য তুমি আছো আজো মায়াময় এই জীবনে।
আমার পাশেই আজো হাঁটো হাতে হাত রেখে,
কেউ তা দেখেনা জানো! কেউতো জানেনা কিছু!
শুধু জানি আমি আর রাস্তার তন্দ্রালু বিড়াল,
এইখানে তুমি আছো! কেউই নেবেনা পিছু!

কেউতো জানেনা কেন লজ্জাবতীর পাতা,
লজ্জায় মরে যায় ছুলে।
শিশিরের জল কেন কাঁদে নতুন কোন ভোর এলে,
অইখানে তুমি আছো; শুধু জানি আমি!
আর জানে রাস্তার বিড়াল,
ঘুমিয়ে পড়েছে প্রহরীরা, সারমেয় জাগবেনা আর।
চলো হাঁটি না হয় দুজন এই পরিত্যক্ত শহরে,
চলো বাঁচি একটা দিন অচন্দ্রস্পর্শী আলোর ভিতরে!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:২১

রাজীব নুর বলেছেন: অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর।

২| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১৭

নার্গিস জামান বলেছেন: ভীষণ সুন্দর :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.