নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গবেষক, পাঠক ও লেখক -- Reader, Thinker And Writer। কালজয়ী- কালের অর্থ নির্দিষ্ট সময় বা Time। কালজয়ী অর্থ কোন নির্দিষ্ট সময়ে মানুষের মেধা, শ্রম, বুদ্ধি, আধ্যাত্মিকতা ও লেখনীর বিজয়। বিজয় হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী চিন্তার বিজয়।

*কালজয়ী*

সভ্যতার উৎকর্ষ শুরু মানুষের মেধা, শ্রম, বুদ্ধি, আধ্যাত্মিকতা ও লেখনীর মাধ্যমে। ক্রম উন্নয়নের ধারায় শিক্ষা-ক্ষেত্রে কলমের কালীর রং কখনো কালো, কখনওবা সাদা। প্রাথমিক যুগে আবক্ষ শক্ত ভিত্তিতে (ব্লাকবোর্ডে) লিখতে ব্যবহৃত হত সাদা চক যা এখনো বিদ্যমান। বর্তমানে সাদা বোর্ডে কালো মার্কার কলম ও কালো বোর্ডে সাদা মার্কার কলম। কি-বোর্ডে সাদা-কালো অক্ষর বাটন নব প্রযুক্তির অবদান। Believes in the ultimate potential of Human Mind……

*কালজয়ী* › বিস্তারিত পোস্টঃ

তেইশ নম্বর তৈলচিত্র - সেক্যুলার বাঙ্গালী মন

১৮ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:৩৮

আলাউদ্দিন আল আজাদের ‘তেইশ নম্বর তৈলচিত্র’ উপন্যাসটা পড়লাম। উপন্যাসে একটা বিষয় খুব আলোচিত হয়েছে তা হচ্ছে নারী। নারীর প্রতি দুর্বার আকর্ষণের কেন্দ্র হল পুরুষ। পুরুষ নারীকে ঘরের চার দেয়ালের বাইরে আনতে চায়। এই সঙ্গলিপ্সু মানসিকতা চুক্তিবদ্ধ বৈবাহিক সম্পর্ককেও গ্রহন করতে নারাজ। পুরুষ নারীকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করে তার সাথে সম্পর্ক করতে চায়। সমাজ আবার এটা মেনে নিতে পারে না। সমাজ, ধর্ম চায় নারীর সাথে পুরুষের সম্পর্ক হবে বৈবাহিক সম্পর্কের পর থেকে। ফলে ব্যক্তির মনস্তাত্ত্বিক চেতনার সাথে সামাজিক চেতনার দ্বন্দ্ব প্রকাশ পায়।

বস্তুবাদী দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক। যেখানে শোষক আর শোষিতের দ্বন্দ্বই চিরন্তন। কিন্তু এ উপন্যাসে যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা হল চেতনার দ্বন্দ্ব যা প্রকাশ পেয়েছে ফ্রয়েডিয় মনঃসমীক্ষণ ও মনস্তাত্ত্বিক সংঘাতরূপে। উপন্যাসের নায়ক নায়িকাকে কাছে পেতে চায় বিয়ের আগেই। কিন্তু নায়িকা সামাজিক মূল্যবোধ দ্বারা পরিচালিত হওয়ায় নায়কের আশা পূরণ হয় না। ফলে নায়কের আনন্দ সময়ের প্রেক্ষিতে অবদমিত হয়। মনোবিজ্ঞানী ফ্রয়েড বলেছেন, সভ্যতা মানুষের স্বাভাবিকতাকে কৃত্তিম চাহিদায় রূপান্তরিত করেছে। ফলে সে সভ্যতার দাবি মানতে গিয়ে অসন্তুষ্ট হয়। তিনি মনে করেন, আদিম বন্যপ্রাণী শিকার নির্ভর সভ্যতাই ভাল। সেখানে নারী পুরুষের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোন বাধা নেই। উপন্যাসিক আজাদ এই দিকটা নায়ক জাহেদের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি তিনি সভ্যতার উৎকর্ষকে কটাক্ষও করেননি। ফলে তার দৃষ্টিভঙ্গী দ্বান্দ্বিকরূপে আমাদের সামনে ফুটে ওঠে। আজাদ চান সমাজে প্রতিষ্ঠিত রীতিনীতিকে ভেঙ্গে আগাতে।

তিনি বলেন, কিম্ভূতকিমাকার হওয়াটাই যুগের দাবি। বিকৃতিকে বিকৃতি দিয়েই মোকাবেলা করতে হবে। যেমন, বিষের ওষুধ বিষ। বিকৃতিকে যদি বিকৃতি দিয়ে মোকাবেলা করা হয় তখন অধিকতর বিকৃতির জন্ম হবে। পরস্পর দুটির সংঘর্ষ অস্তিত্বের বিনাশই ডেকে আনে। ধ্বংস করে তার মুল অস্তিত্বকে। ফলে সংকট আরো ঘনীভূত হয়। কিন্তু তিনি এটা ভাবতে চাননি। তিনি মনে করেন বিকৃতির পাল্টা বিকৃতি বিদ্রোহের সৃষ্টি করে। এই বিদ্রোহই সমাজকাঠামোকে পাল্টে দেবে। আজাদের দৃষ্টিতে বিপ্লব এটাই। কিন্তু যুক্তি, জ্ঞান, বিচার-বিশ্লেষণ মুক্ত আবেগই যে বিপ্লবের প্রধান বাঁধা


৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫
সেন্ট্রাল পার্ক, কোলকাতা

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: অসাধারন একটি উপন্যাস। আমি পড়েছি।
সুন্দর লিখেছেন।

১৮ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:২১

*কালজয়ী* বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ১৮ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:০১

সনেট কবি বলেছেন: ভালো লাগলো

১৮ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:২১

*কালজয়ী* বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ১৮ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:১১

নীহার দত্ত বলেছেন:


আমাদের এই উপমাদেশীয় সমাজেই কেবল এটা প্রকট আকারে দেখা যায়। একজন পুরুষ একজন নারীকে ভালোবেসে কাছে পেতে চাইলে সমাজ সেখানে বাধা হয়ে যায়। হ্যান ত্যান কত কিছু করে তারপর একটু কাছে পেতে হয়।
এতে করে আকর্ষন করিবার বোধ কমে যায়।
আর যদি কেউ বলে এসবে কেবল মোহ থাকে প্রেম বা ভালোবাসা থাকে না, তাহলে বলতে হবে মোহ খারাপ না। বেঁচে আছি কেন ? বেঁচে থাকার মোহে পড়েই তো বেঁচে আছি। বেঁচে থাকতে ভালোবাসি কিংবা জীবনের প্রেমে পড়ে বেঁচে আছি এমনটা নয়।
যেদিন বেঁচে থাকার মোহ কেটে যাবে সেদিন হয়ত আত্মহত্যা কিংবা স্বেচ্ছামৃত্যুর কথা ভাবতেই হবে।

৪| ২০ শে মে, ২০১৮ রাত ৯:৩৮

*কালজয়ী* বলেছেন: বর্তমান পৃথিবীতে ১৮ হাজার জীবের মধ্যে একমাত্র মানুষই জানে, মানুষ মরণশীল প্রাণী। কারন মানুষের উন্নত মস্তিষ্ক আছে। তবুও এই মানুষই মরতে চায়না। কারন সে জীবন ভালোবাসে। যে জীবন ভালোবাসে না, সে জীবনের অর্থ বুঝতে অক্ষম। যে আত্মহত্যা করে সে জীবন বুঝতে ব্যর্থ, জীবন ভালোবাসে না।

ভালোবাসার জগতে পুরুষ বা নারীই একমাত্র ভালোবাসার এমন ভাবাও গভীরতা বহন করে না। সমস্ত সৃষ্টিকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে মানবজীবন সার্থকতা লাভ করে।

আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.