![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মন রে, কৃষিকাজ জানো না; এমন মানবজমিন রইল পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা! রামপ্রসাদ সেন (rupakbsadhu@gmail.com)
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের একদম শুরু থেকেই প্রিয়াঙ্কা-নাসেরকে একসঙ্গে দেখা যেত। আমরা, মানে সহপাঠীরা মনে করতাম তাদের মধ্যে গভীর প্রেম চলছে। আমাদের মনে করাটা কিন্তু অমূলকও ছিল না। প্রেমিক-প্রেমিকা ছাড়া এমন মাখামাখি সম্পর্ক অন্য কারও মধ্যে থাকে না।
যদ্দুর বুঝতে পারি, ক্যাম্পাসে অবস্থান করা থেকে শুরু করে প্রিয়াঙ্কার বাজার করে দেওয়া, ও কখনও বাড়ি গেলে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এগিয়ে দেওয়া থেকে সব করত নাসের। আমরা ভাবতাম, ওদের হয়তো বিয়ে হবে একদিন।
কিন্তু আমাদের ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো। হঠাৎ একদিন পয়সাওয়ালা একজনকে বিয়ে করে নিল প্রিয়াঙ্কা। নাসের মানসিকভাবে পুরোপুরি ভেঙে পড়ল। পরবর্তীতে ওর মুখে কখনও হাসি দেখিনি। সবসময় বিষণ্ন থাকত। প্রিয়াঙ্কা ক্যাম্পাসে ফিরলে ওর সঙ্গে আর মিশতে দেখা যায়নি তাকে।
আমাদের পরের ব্যাচের সায়মার সঙ্গে ক্লাশের মেধাবী ছেলে জনির সম্পর্কের কথা আমরা তো বটেই, বিভাগের শিক্ষকেরাও জানতেন। জনি বিভাগের সবচেয়ে ভালো ফলধারী। তার আর সায়মার মিলন না হওয়ার প্রশ্নই আসে না। অথচ সেটাই হলো। আমি ঘটনাটা জানতাম না। সহপাঠী শিব্বির এ কথা জানিয়েছিল।
জনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েছে। ওর সঙ্গে সায়মার বিয়ে না হওয়ার কারণটা বোধগম্য হয়নি আমার। শিব্বিরকে জিগ্যেস করলে সে বলেছিল, তখনও জনির চাকরি হয়নি। খুব আফসোস লাগল জনির জন্য। বেচারা মেয়েটাকে পাওয়ার জন্য কত কী না করল! টাকা, সময় সব গেল। অথচ কী হলো!
এক ব্যাংকার না গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সায়মার। আর কয়েকটা দিন অপেক্ষা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের সঙ্গে বিয়ে হতে পারত তার, যে কি না আবার তার প্রেমিকও। মেয়েটার নির্বুদ্ধিতায় অবাক হয়েছিলাম।
সোনিয়ার প্রেম ছিল লোক প্রশাসনের কাওসারের সঙ্গে। আমাদের সামনেই কতবার অভিসারে গেল তারা। অথচ তাদের সম্পর্কও টিকল না। সোনিয়া আমার সঙ্গে ফেসবুকে যুক্ত ছিল। একদিন দেখি অন্য এক লোকের সঙ্গে তার ছবি। ওই লোক নাকি তার অক্সিজেন। অক্সিজেনের টিউব যে বদলানো হয়েছে, সেটা জানতাম না। শিব্বিরই তথ্যটা নিশ্চিত করেছিল।
মেয়েরা যে হিসেবনিকেশ করে বিয়ে করে; এই বিশ্বাসটা সহপাঠীদের জীবনের ঘটনাগুলো স্বচক্ষে পর্যবেক্ষণের পর বুঝতে পারি। একই বিবেচনা অভিভাবকদেরও। যদিও এটা দোষের কিছু না। কে না খেয়ে দুঃখ করে বাঁচতে চায়!
নাসের, জনি, সোনিয়ার ঘটনা বিয়োগান্ত হলেও কয়েকটা সম্পর্ক পরিণতি পেয়েছে। অর্পার কথা বলা যায়। তার এলাকার হিমেল নামে একজনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। একসময় তাদের বিয়ে হয়। তারপর বরের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ায় চলে যায় সে।
অন্তরা আর নাঈম জুটিও সফল হয়েছিল। বলতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পুরোটা সময়ই চুটিয়ে প্রেম করে একসময় তাদের বিয়ে হয়। দু’জনে একসঙ্গে এখন বিদেশ ভ্রমণেও যায় মাঝেমধ্যে। সুখী দম্পতি বলতে যা বোঝায়, তারা এখন তাই।
নিশাত, সুমি, রুনাদেরও সম্পর্ক ভালোভাবেই পরিণতির দিকে গিয়েছে। তারাও এলাকার কাউকে না কাউকে ভালোবেসে বিয়ে করে সুখে আছে। সুমি, নিশাতের তো বাচ্চাও আছে।
পুষ্প আর মিশুর সম্পর্কটা নিয়েও কথা হতো মাঝেমাঝে। একদিন তারা বিয়েও করে ফেলে। ভালো আছে মনে হয়। মিশু চট্টগ্রামের একটা হোটেলে কর্মরত। পুষ্প কী করে জানা নেই।
মিন্টু আর সুইটির সম্পর্কের ব্যাপারটা বেশ মজার। এরা সাত বছর ক্যাম্পাসে প্রেম করেছে, অথচ আমরা জানতামই না ওদের সম্পর্কের কথা। কয়েকদিন আগেই জানতে পারি ওরা বিয়ে করে ভালো আছে। বাচ্চাও হয়েছে। এই জুটিটা একটু অদ্ভূত অবশ্য। আমরা সচরাচর সফল ছেলেদের কম সফল মেয়েদের বিয়ে করতে দেখি। অথচ এখানে বিপরীত হয়েছে। সুইটি পরবর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়। আর মিন্টু স্থায়ী কিছু করতে পারেনি। বিমান বন্দরে একটা চাকরি করে শুনেছি। ওর সঙ্গে গাজীপুরে একবার এক পরীক্ষার সময় দেখা হয়েছিল। কথা হয়নি যদিও। সব মেয়ে যে শুধু টাকা-পয়সা খুঁজে; এই তত্ত্বটা এই জুটির ক্ষেত্রে মনে হয় খাটে না।
০৩ রা জুন, ২০২৩ সকাল ১০:০২
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: এটা সত্যি যে জীবনে সুখে থাকা, ভালো থাকাই সব থেকে বড়। কে কীভাবে সুখী হয়, সেটা বোঝা মুশকিল। তবে এটা বোধহয় ভাবা স্বাভাবিক অচেনা, অজানা কারও সঙ্গে না, বরং ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে সুখী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অনেকে অবশ্য এ কথার ধার ধারে না। তারা প্রভাব-প্রতিপত্তিকে অগ্রাধিকার দেয়, রূপ-লাবণ্যকে অগ্রাধিকার দেয়। এতে কতটুকু সুখী হয়; কে জানে! সম্পর্ক করার পর একসময় যদি মনে হয় দু'জনের আর বনছে না, তাহলে ছাড়াছাড়ি নিয়ে কথা চলে না। কিন্তু আশা দিয়ে পরে অন্য কাউকে বিয়ে করা স্রেফ প্রতারণা।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা জুন, ২০২৩ সকাল ৯:২২
অপু তানভীর বলেছেন: প্রেম আর বিয়ে এক জিনিস নয় । ব্যাপার যত বয়স বাড়বে তত ভাল করে বুঝতে পারে মানুষ । এক সময়ে মনে হত যারা সুখের জন্য ভালোবাসার মানুষটার হাত ছেড়ে দেয় তারা খারাপ মানুষ কিন্তু একটা সময়ের পরে সেটা আর মনে হয় না । জীবনে সুখে থাকা ভাল থাকাই সব থেকে বড় মনে হয় ।