![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালূ -সুরা ফাতিহা আয়াত-১ ।
দেশে অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধের ব্যবহার ও অপব্যাহরে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। চিকিৎসকেরা বলেছেন, অপব্যবহারের কারণে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা থাকছে না। সাময়িকভাবে ব্যবাহারের ফলে রোগ সেরে গেলেও রোগীকে পরে পার্শ্বপতিক্রিয়ায় ভুগতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়। সঠিক মাত্রায় নির্দিষ্ট সময় ধরে ব্যবহার না করার কারণে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ঔষধের মাত্রা বাড়িয়েও রোগ সারছে না বরং স্বাস্থ্যগত জটিলতায় পড়ছে রোগীরা। আক্রান্ত হচ্ছে নতুন রোগে । এদিকে অ্যান্টিবায়োটিক শুধু ঔষধের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, প্রোটিনযুক্ত খাবারের মধ্যেও ঢুকে পড়ছে। গবাদিপশুর রোগ প্রতিরোধ ও দ্রুত বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিক প্রোটিন হিসেবে ঢুকছে মানুষের শরীরে। অথচ এ সম্পর্কে কার্যকর সচেতনতা গড়ে উঠছে না। দেশের মানুষের একটি সাধারণ প্রবণতা হচ্ছে রেজিষ্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ফার্মেসীতে গিয়ে দোকানির পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা। আন্তর্জাতি উদারময় গবেষনা সংস্থার এক গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধের অপব্যবহার উদ্বেগজনকহারে বাড়ছে। সংস্থাটির গবেষক ডাঃ মোহাম্মদ ইকবাল বলেছেন, পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গ্রামের ডাক্তার ও ফার্মেসীর বিক্রেতারা রোগীদের চাহিদামাফিক অবাধে অ্যান্টিবায়োটিক দিচ্ছে। এর শতকরা ৭৫ ভাগই সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। সাধারণত সর্দি,জ্বর বা ছোটখাটো অসুস্থতায়ও রোগীদের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের প্রবণতা দেখা যায়। নিজেদের পূর্বধারনা বা ফার্মেসী কর্মীদের পরামর্শেেই অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করেন অধিকাংশ রোগী। তাদের মতে ডাক্তার দেখালে ৫০০-৬০০ টাকা ফি গুনতে হয়। উপরন্ত অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন টেষ্ট ধরিয়ে দেওয়া হয়। তাতে কয়েক হাজার টাকা ব্যয় হয়। এ অতিরিক্ত ব্যয়কে বাহুল্য মনে করে অধিকাংশ রোগী। দেশে প্রচলিত চিকিৎসাব্যবস্থায় আস্থাহীনতার কারণেই রোগীরা সামান্য অসুখে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে চান না। বিশেষজ্ঞরা জনান ২০১৬ সালে ঔষধনীতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়নে একটি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হবে। এই নির্দেশিকা যতদ্রুত সম্ভব তৈরী করা দরকার । কারণ দেশে যে হারে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার হচ্ছে তাতে আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে এদেশের মানুষ অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে যাবে। তখন সাধারণ সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে। চিকিৎকেরা জানায় অ্যান্টিবায়োটিক একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সেবন করতে হয়। নির্দিষ্ট মাত্রার চেযে কম মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করলে রোগী সৃষ্টিকারী জীবাণু ঐ ঔষধের বিপরীতে ধ্বংস না হয়ে কৌশলী আচরণে বেঁচে থাকে। ফলে চিকিৎসা কোন কাজে আসে না। পরবর্তীতে ঐ জীবাণুকে ঔষধসহনশীল করে তোলে। নিম্নমানের বা ভেজাল ঔষধে পরিমানের তুলনায় কম মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক থাকায় জীবাণু প্রতিরোধী হয়ে উঠে অর্থাৎ অ্যান্টিবায়োটিক রেজিষ্ট্যান্স তৈরী করে। এ কারণে অতি সাধারণ রোগ নির্মূলে অনেক উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এজন্য কোন রেজিষ্ট্যার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোন ঔষধ বিক্রি বন্ধ করতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক-জাতীয় কোন ঔষধ চাইলেও যাতে কেঊ সহজে কিনতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা জানান বর্তমানে প্রোটিনযুক্ত খাবারের মধ্যে মাছ, মুরগী ও গরুর মাংস মানুষের খাদ্য তালিকায় বেশ জিনপ্রিয়। ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে বিভিন্ন রেস্তোরায় ফ্রাইড চিকেন, মাংস ও মাছ খেতে বেশী পছন্দ করে সবাই। এসব খাবারের প্রতি তরুণ সমাজের আগ্রহ সবচেয়ে বেশী। কিন্তু এসব পছন্দীয় খাবারের মধ্যে থাকা অ্যান্টিবায়োটিক মানুষকে কিডনী, হার্ট, লিভারের রোগ এমন কি ক্যান্সরের ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে । প্রাণিসম্পদের উপর দীর্ঘদিন গবেষনারত চট্রগ্রাম ভেটেরিনারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক এস এক এম আজিজুল ইসলাম বলেন, দুধ, ডিম, মাংস মানুষের নিত্যদিনের খাবার। এগুরো মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। এজন্য খামারিরা এগুলো উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন কৌশল নিচ্ছে । এর মধ্যে রয়েছে প্রাণীদের রোগবালাই দমন ও দ্রুত বৃদ্ধির জন্য ঔষধ ব্যবহার। তিনি বলেন প্রাণীর উপর অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ প্রয়োগ করা হলে তাদের শরীর থেকে এর প্রভাব বের হতে সময় লাগে তিন থেকে সাত দিন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ সময়টা মানা হয় না। সময় পূরণ হওয়ার আগেই প্রাণী বাজারে নিয়ে আসা হয়। যার কারণে প্রাণীর শরীরে এর প্রভাব থেকে যায় । আবার প্রাণীর দ্রুত বৃদ্ধির জন্যও খামারিরা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেন। যেমন গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি। রান্না করলে প্রাণিদেহের অ্যান্টিবায়োটিকের মাত্রা শতকরা ৮০ ভাগ হ্রাস পায়। বাসাবাড়িতে বিভিন্ন মসলা ও তৈল দিয়ে রান্নার প্রভাবে অ্যান্টিবায়োটিকের উপাদানগুলো নষ্ট হয় না বরং থেকে যায়। কারণ সেখানে কেবল তাপ প্রয়োগ করে মাংসগুলো সিদ্ধ করা হয়। এতে মাংসের ভিতরে পানি ও অন্যান্য উপকরণ ঢুকতে পারে না। এতে প্রাণীর শরীরে থাকা অ্যান্টিবায়োটিকের পরিমাণ ৮০ শতাংশ রয়ে যায় অর্থাৎ বাসায় রান্না করা খাবারের ঠিক উল্টো। এসব অ্যান্টিবায়োটিকযুক্ত খাবার মানব দেহে প্রবেশ করায় কিডনী, হার্ট ও ডায়াবেটিসের মতো রোগ বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, অ্যান্টিবায়োটিক সন্ত্রাস থেকে রোগীদের বাঁচাতে হরে এর পরিমিত ও বিজ্ঞানসম্মত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। যেমন অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারের প্রয়োজন পড়লে কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ দিন সেবন করতে হবে। কিন্তু যেহেতু আমাদের দেশে অ্যান্টিবায়োটিকের কোন নিয়ণ্ত্রন নেই তাই যথেচ্ছভাবে ব্যক্তিপর্যায়ে অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বেশী হয়। এ ছাড়া ব্রন্ককাইটিস, ঠান্ডা, ফ্ল, কাঁশি, কানের গলার ইনফেকশনসহ কিছু কিছু ইনফেকশন ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়। এসব ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকর কোন ভূমিকা নেই । তবুও বেশীর ভার রোগী হয় নিজেরাই অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করেন অথবা অনেক ডাক্তার না বুঝেই অ্যান্টিবায়োটিক দেন। তাই কোন অবস্থাতেই অপ্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা উচিত নয়। পাশাপাশি ঔষধের দোকানগুলো থেকেও প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করা উচিত নয়। স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্ব ঔষধের দোকানে ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া যেন অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি না হয়। উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ডাঃ রফিকুর ইসলাম লিন্টু বলেন, অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে সেটা এখন আর কোন কাজে আসছে না। মানুষের শরীর ড্রাগ রেজিষ্ট্যান্স হয়ে পড়েছে । এ জন্য প্রয়োজন ব্যক্তি ও জাতীয় পর্যায়ে অধিক সচেতনতা ।
” আসুন অ্যান্টিবায়োটিককে না বলি “।
সূত্র- বাংলাদেশ প্রতিদিন
২৪ ডিসেম্বর,২০১৭ খ্রিঃ ।
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৪
ইসলাম সানু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
২| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: সহমত।
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২১
ইসলাম সানু বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৯
নতুন বলেছেন: এটা যে কতবড় বিপদ এখনো দেশের জনগন বুঝতে পারছেনা। আর যখন বুঝতে পারবে তখন অনেক দেরী হয়ে যাবে।