নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখি....

মো: হাসানূর রহমান রিজভী

একদিন তুমি এসেছিলে ভবে,কেঁদেছিলে তুমি হেসেছিলো সবে... এমন জীবন করিবে গঠন,মরনে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভূবন......

মো: হাসানূর রহমান রিজভী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইছামতি;বাংলাদেশের সবচে বড় ড্রেন!

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:১২



প্রাচীন শহর পাবনার বুক চিড়ে বয়ে চলেছে ঐতিহ্য বাহী ইছামতি নদী।পাবনা শহরের বুকে বয়ে চলা এ নদীটিই সম্ভবত বাংলাদেশের একমাত্র মানুষ্য খননকৃত নদী।

অসমর্থিত সুত্রে জানা যায়, জানা যায়, বাংলার নবাব ইসলাম খাঁ ১৬০৮-১৬১৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকালে সৈন্য পরিচালনার সুবিধার্থে পদ্মা ও যমুনা নদীর সংযোগ স্থাপনার্থে পাবনা মধ্য শহরে একটি খাল কাটেন, যার নাম দেন ইছামতি। এক সময়ের খরস্রোতা এই নদী দিয়ে চলতো নৌকা-ছোট জাহাজ। ঠিক তখন থেকেই এই ননদীর আশে পাশে জন বসতি গড়ে ওঠে।এমনও কথিত আছে যে, এই নদী দিয়েই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার নিজস্ব বোটে শাহজাদপুর আসা-যাওয়া করতেন। কিন্তু সেই স্রোতস্বিনী প্রবাহমান ইছামতি আজ মৃত প্রায় বলা ভূল হবে। সঠিক কথাটি হল অর্ধ মৃত।

শুধু মাত্র বর্ষা কালেই এখানে হাটু জল হয়।বাকি সময় টা মানব শরীরে রক্তবাহী জালিকার মত সূক্ষ্ম একটি পানির রেখা বয়ে চলে,যে রেখার উৎপত্তিস্হল আর কোথাও নয়,শহরের বাসিন্দাদের বাড়ির ব্যাবহৃত পানি অথবা স্যুয়ারেজ ট্যাংকএর ময়লা, আর্বজনা।



ঠিক কি কারনে ইছামতি নদীর প্রধান নদীর সাথে সংযোগস্হল (বাংলাবাজার,পাবনা) ময়লা আবর্জনা দিয়ে ভরাট করা হলো সেটা আমার মাথায় আসে না।
পাবনা শহরের হেন বর্জ্য নেই যা ইছামতিতে ফেলা হয় না।অথবা বর্জ্য নিস্কাশনে ইছামতিই যেন প্রথম পছন্দ।

অথচ নদী মাতৃক এই বাংলাদেশে শহরের বুকচিড়ে বয়ে চলা একটি নদী যেন আশির্বাদ।শুধুমাত্র সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা এবং রক্ষণাবেক্ষণ এর অভাবেই যেন আমরা ইছামতি কে হারিয়ে যেতে দিচ্ছি।

উইকিপিডিয়া থেকে যা পেলাম"বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পাবনা জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৪৪ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১২০ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক ইছামতি নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ০৮।

ইছামতি নদীটি পাবনা জেলার পাবনা সদর উপজেলার ভড়রা ইউনিয়নে প্রবহমান পদ্মা হতে উৎপত্তি লাভ করেছে। অতঃপর এই নদীর জলধারা একই জেলার বেড়া উপজেলা পৌরসভা এলাকা পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে হুরাসাগর নদীতে নিপতিত হয়েছে। আত্রাই নদী (পাবনা) হচ্ছে এর একমাত্র শাখানদী। মৌসুমি প্রকৃতির এই নদীতে সারাবছর পানিপ্রবাহ থাকে না। শুকনো মৌসুমে নদীটি পুরোপুরি শুকিয়ে যায়। সেসময় নদীর অঙ্গনজুড়ে পাম্প দিয়ে সেচের মাধ্যমে চাষাবাদ করা হয়। তবে বর্ষাকালে নদীটিতে স্বাভাবিকের চেয়ে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। নদীটির কোথাও ভাঙনপ্রবণতা পরিলক্ষিত হয় না।




তথ্যসূত্র, মানিক, মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি, ২০১৫)। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃ: ৯৩। 

আমার নিজের স্মৃতিচাণে দেখা যায়,নব্বই এর দশকে বর্ষাকালে মানুষ ডোবা জল হতো।সমবয়েসি ছেলে মেয়েরা দল বেধে সাঁতার কাটতাম,মাছ ধরতাম মাঝে মাঝে কলার ভেলা বানিয়ে নদীর বুকে ঘুড়ে বেড়াতাম।

এক সময় এই নদীর প্রস্হ ছিল প্রায় ৩০০ ফিট।বর্তমানে এই নদীর প্রস্হ এসে দাড়িয়েছে ৩০-৪০ ফিটে।যার অন্যতম কারন অবৈধ দখল।

এক সময়ের এই খরস্রোতা নদীর বুকে নব্বই দশকে হাতে গোনা কয়েকটি ব্রিজ ছিল।আর সেগুলোও ছিল অনেক উচু আর প্রশস্ত।সেই ব্রিজ গুলোর নিচ দিয়ে অনায়াসে প্রমান সাইজের বড় নৌকা চলাচল করতে পারত।

কিন্তু নব্বই দশকের শেষের দিকে কিছু ব্রিজ নির্মান করা হয়েছে যেখানে নদীর কথা চিন্তা করা হয় নাই।প্রমান সাইজের নৌকার বদলে এখন খেয়া নৌকা নিয়ে ব্রিজের নিচ দিয়ে যেতেও যাত্রীদের পাটাতনে শরীর লেপ্টে দিতে হবে।

তবে,গত বর্ষায় পাবনা সদর পাঁচ আসনের সংসদ সদস্য এই ইছামতির বুকে খেয়া নৌকার একটি র‍্যালি পাবনা শহরে ইতিবাচক আলোচনার জন্ম দেয়।



বর্তমানে পরিস্হিতি এমন দাড়িয়েছে, নদীটি মরে গেলেই যেন আমরা বাঁচি।

গত কয়েকবার নদী খনন এবং পাড় বাধাই এর জন্য প্রকল্প এলেও বিভিন্ন কারনে শুধু কচুরি পানা পরিষ্কারেই সেই প্রকল্প গুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে।

পাবনা শহরের ঐতিহ্য রক্ষায় এখন সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই।আমরা পাবনা শহরের এই আশির্বাদকে আমাদের চোখের সামনে আমাদের কারনে শেষ হয়ে যেতে দিতে পারি না।তাই পাবনার সর্বোপরি জনসাধারনকে এই ইছামতি নদী রক্ষায় এগিয়ে আসা সহ,সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষন করত আমার অনুরোধ রইল অতি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন করে সবাই ইছামতি নদী রক্ষায় এগিয়ে আসুন।

তথ্যসূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক,বিডিনিউজ২৪,পাবনার আঞ্চলিক সংবাদ পত্র,উইকিপিডিয়া,গুগল

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:৩৫

রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: Ei noditir jonno kmn zeno maya hocche.nodi rokkhay sobar sohozogita kamona korchi?

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:১৯

মো: হাসানূর রহমান রিজভী বলেছেন: রকুনুজ্জামান ভাই,আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:২৭

কালীদাস বলেছেন: কত ঐতিহ্যবাহী একটা নদী। আমরা নিজগুণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছি।
সচেতনতামূলক পোস্ট, কিন্তু প্রশাসনকে অবহিত করাও বিপদজনক। যেটুকু বাকি আছে সেটার দিকে প্রভাবশালীরা আকৃষ্ট হবে :(

৩| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:১৪

মো: হাসানূর রহমান রিজভী বলেছেন: আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ কালিদাস ভাই।প্রকৃতির উপর অত্যাচার করে পার পাওয়া যায় না।প্রকৃতির প্রতিশোধ গুলো বড়ই ভয়াবহ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.