![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক দিন যাবত কান্নাকাটি করতেসিলাম যে কেও কোন বিয়েতে দাওয়াত দেয় না । একটু কোট-টাই পড়ে বিয়েবাড়িতে যাবো , কতগুলা মেয়ে পটাবো !! ভাবটাই এমন যে বিয়েবাড়িতে গেলেই মেয়েরা আমার পিছপিছ ঘুরবে !! আসলে চেহারা অত খারাপ না তো তাই ভাব একটু বেশি ই !!
তো শুরু করা যাক মূল ঘটনা । বিয়ে হল বন্ধুর(আসিফ) বোনের । শালা বদমাইশ সেটা জানাইছে বিয়ের দিন । ঐ দিন এমনি কি কাজে বের হইছিলাম সকাল এ , কাজ শেষে আর বাসায় যাওয়া হয় নাই । শীতকাল গায়ে ছিল হুডি । কত শখ ছিল যে বিয়ে বাড়িতে যাবো কোট-টাই পরে কিন্তু ঐ বদমাইশটার জন্য ঐ পরেই বিয়ে বাড়িতে যাওয়া লাগলো । আমার লেখা পড়ে যতই আমাকে লুল মনে হোক আমি কিন্তু নিতান্ত ভদ্র একটা ছেলে ।
তো যথারীতি যা ভাবসিলাম তাই হইল আমার ড্রেস-আপ দেইখ্যা মাইশা কইয়া বসল যে আমি কি জগিং করতে বের হইসি না বিয়ের দাওয়াত এ আসছি । পাঞ্জাবি পরি নাই কেন এইটা তার দুঃখ ! আমি বললাম ,এতই দুঃখ একটা নিয়ে আয় যা পাঞ্জাবি তাইলে ই তো হয় ! বাসায় যাইতে পারি নাই তাই এই অবস্থা , শার্ট প্যান্ট ঠিক ই আছে , খালি হুডি টা ই যত প্রব্লেম । কিন্তু আফরিনের কথায় মনে একটু শান্তি পাইলাম । যদিও সে আমারে ডাইরেক্ট বলে নাই কিন্তু মাইশার কানে কানে কইল যে আমারে নাকি হট লাগতেসে !!
আমি তো সিরাম খুশি । মনে মনে ভাবতেসি আজকে সামনে যেই মাইয়া ই পরবো সব ই আমার উপর ফিদা হই পিছ পিছ ঘুরবো !!:p
বিয়েবাড়িতে লোকজনে ভরপুর । কোন জায়গায় বসার জায়গা নাই । সবগুলা মিলে চলে গেলাম ছাদ এ । আমার বদমাইশ বন্ধু তো স্যুটেড-বুটেড !! সেও আসলো ছাদে ! সবডি মিল্লা আড্ডা দিলাম কতক্ষন , তারপর মাইয়াদের ইচ্ছা করলো তারা খ্যাতাপুরি আর ঝালমূড়ি খাইবো ! মাইয়াদের মন বুঝা আসলেই অসম্ভব । তো গেলাম সব গুলা , খ্যাতাপুরি আর ঝালমুড়ি খাইয়া পেট গেল ভইরে । চিন্তা করলাম রাতে আর মনের সুখে খাওয়া হইল না ! এরপর সবমিলে গেলাম কম্যুনিটি সেন্টার , যেখানে বিয়ে হবে আরকি । যাইয়া ই বর-বউ বসার স্টেজ একটু গড়াগড়ি দিলাম । তারপর শুরু হইল ফোটসেশন । সব গুলা বন্ধুর মধ্যে একমাত্র শিহাব পাঞ্জাবি পইরা আসছে । তারেই বর বানাইয়া বর এর সাথে ছবি তুল্লাম সব গুলা । এর পর যথারীতি আপুর আগমন । আপুর সাথে মাইয়াগুল্লা ছবি তুলার তোড়জোর দেখে মনে হইল তারা শুধু ছবি তোলার জন্যই আসছে । ছবি তোলা শেষ হয় না তাদের আর । আমি এই ফাকে বের হলাম চোখের বিনোদন নিতে !! কপালটাই খারাপ বিয়েতে কোন সুন্দরী মেয়ে ই নাই । আমার মন টাই খারাপ হয়ে গেল আর মনে মনে আসিফকে গালি দিতেসিলাম । আগে জানলে তো আইতাম ই না এই বিয়েতে । এখনও বর আসে নাই । মুখে রুমাল দেয়া দুলাভাইয়ের চেহারাটা দেখার দরকার । অনেকদিন কোন বিয়ে দেখি না , এখন কি বর রা মুখে রুমাল দেয় কিনা কে জানে ?
ফটোসেশন শেষ করিয়া বান্ধবীগণ আমাকে খুজতেসে বলিয়া খবর পাইলাম । তাহাদের দেখিয়া জিজ্ঞেশ করিলাম ,
- কিরে , এত্ত তাড়াতাড়ি তোদের ছবি তোলা শেষ ? মাত্র তো আধা ঘন্টা হইল !
জানিতে পারিলাম যে আজকে তাড়াহুড়ার কারণে ঠিকমত সাজিতে পারে নাই আর তাহাদের তীব্র ক্ষুধার উদ্রেক করেছে । এত্ত কিছু খাওয়ার পর মানুষের যে কেমনে এত্ত তাড়াতাড়ি ক্ষুদা পায় তা আমার মাথায় ঢুকলো না । অথচ একটাও কিন্তু মোটা না , সব চিকনা সুপারি গাছ । এ ব্যাপারে একটা রিসার্চ করার চিন্তা করতেসিলাম এর মধ্যে মাথায় খাইলাম টোকা , শান্তিতে একটু ভাবতেও দিবে না এই নারীগণ । সব গুলা মিলে বসলাম একটা টেবিল ধকল করিয়া । কনের ভাইয়ের বন্ধু-বান্ধব মানেই এক্সট্রা খাতির
বসিতে বসিতে আমার চোখ পড়িল সামনের টেবিল এর দিকে । তব্দা খাইলাম !! পাওয়া গেছে এক সুন্দরি কন্যাকে !!
কিন্তু কিছুক্ষণ পর এক আংকেল তাহার পাশে বসে তার কোলর পিচ্চিকে উক্ত কন্যার কোলে বুঝলাম আমার কপাল্টাই খারাপ । অল্প বয়সী দেখিয়া ভুল করেসিলাম
পাশে তাকায়ে দেখলাম সব কয়টা আমার দিকে তাকায় হাসতেসে
আমার তখন মাটির নিচে ঢুকে যাইতা ইচ্ছা করতেসিল কিন্তু নিচে তো পাকা ফ্লোর
যাই হোক আমি খাওয়ায় মন দিলাম । মনে মনে নিজের কপালরে গালি দিতেসিলাম । মাথা তুলে তাকাইতে গিয়া দেখি কেও ভিতরে ঢুকতেসে !! দূর থেকে স্পষ্ট বুঝা গেল না কিন্তু যখন একটু কাছে আসল । তখন তো আমি টাস্কি খাইলাম !! কি সুন্দর চোখ, লম্বা নাক, মিষ্টি ঠোঁট, রেশমি চুল, কি সুন্দর ফিগার, মেয়েতো নয় যেন . . . থাক আর না বলি !!
তার চোখে দিকে তাকায় আমি মনে মনে আওরাইলাম
“ প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ "
কিন্তু এখন চৈত্রমাস না শীতকাল চলতেসে । যাই হোক আমি তার দিকে লুল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম । কিন্তু সে আমাকে দেখিলোও না পাশ দিয়া সে চলিয়া গেল স্টেজের দিকে ।
আমার খাওয়া তখনই শেষ !! আমি তাড়াতাড়ি হাত ধুইয়া আসিফকে খুজতে লাগিলাম । ঐ শালাই পারে আমার এখন কোন গতি করতে ।
বহু খুঁজিয়া আসিফকে পাওয়া গেল , সে ছবি তোলায় ব্যাস্ত । আমি তাহাকে টানিয়া লইয়া ঐ মেয়েকে দেখালাম ,
- মামা , ঐ মাইয়াটা কে রে ? চিনিস ?
- ঐ নীল শাড়ি পরা ঐ মেয়ে ?
- হ্যা , ঐ নীল পরীই ।
- নীল পরী মানে ? কাহিনী কি রে ?
- আরে আগে বল চিনিস কিনা তারপর বলতেসি ।
- না , এই প্রথম দেখলাম ।
- শালা , তোমার বোন এর বিয়েতে আসছে আর তুমি চেনো না ? যাও তাড়াতাড়ি খোজ লাগা ।
আসিফকে খোঁজ নিতে পাঠায়ে আমি দেখতে গেলাম ঐ তিনদিন না খাওয়া শয়তান গুলার খাওয়া শেষ হইছে কিনা দেখতে , ওদের সামনে যাওয়ার পর ই অতর্কিতে প্রশ্নবান !!
- কিরে খাওয়া ছাইড়ে উঠলি কেন ? কাওরে মনে ধরসে ? সুন্দরী নাকি ? নাম কি ? কথা বলসিস ?
আমি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললাম
- তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ কর । খাওয়ার সময় কথা বলতে নেই , জানোস না ?
খাওয়া শেষ হওয়ার পর আমি মাইশার কানে কানে বললাম
- দোস্ত একটা মেয়ে পছন্দ হইসে । চল তো তোর পছন্দ হয় কিনা দেখ ।
- সত্যি ? কোথায় ? তাড়াতাড়ি দেখা ।
- চল
মাইশাকে স্টেজের কাছে নিয়ে মেয়েটাকে দেখাইলাম । তারপর দুজনে যাইয়ে মেয়েটার পিছে বসলাম
- মেয়ে তো সুন্দর রে অনেক । তুই তো পাত্তা পাবি না
- কেন ? আমার চেহারা কি খারাপ ? আমার মত এক ই সাথে হ্যান্ডসাম , স্মার্ট , লম্বা আর স্লিম পোলা কয়টা আছে ?
- হইছে হইছে নিজের এত প্রশংসা করিস না । দেখ কি করতে পারিস
- আচ্ছা তোর থেকে একটা জিনিস ক্লারিফাই করি ।
- কি ?
- আমি শুনছি , বিয়ে বাড়িতে আসলে মেয়েদের কি যেন একটা হয়ে যায়। তারা চোখে সবকিছু রংঙিন দেখে।
- হুম, কথা মিথ্যা না , আমার বয়ফ্রেন্ড কে অনেক মিস করতেসি রে
- ধুর ! যা ফোন দিয়া কথা বল , আমি দেখি আসিফ কি বলে
আসিফকে ফোন দিলাম । সে এসে জানাল,
- মেয়ের নাম নীলা । আমার বোন এর বান্ধবীর ছোট বোনের বান্ধবী ।
- আপুকে বলে একটু ম্যানেজ করে দে না ?
- আরে এর মধ্যে কেমনে বলবো ? আগে বিয়ে টা শেষ হোক , কয়েকদিন যাক , তারপর বলবো নে ।
- ওকে । তাইলে এখন একটু পরিচয় করায় দে না প্লিজ !!
- আচ্ছা দেখতেসি কি করা যায়
কিছুক্ষণ পর আসিফ আমাদের সবগুলাকে স্টেজের কাছে নিয়ে গেল সবার সাথে পরিচয় করাতে । এর মাঝে আমার সাথে ঐ নীলপরীর ও পরিচয় হয়ে গেল ।
- ভাইয়া , কেমন আছেন ?
- ভাল , তুমি কেমন আছো ?
- ভাল আছি ভাইয়া ।
এবার মেয়েকে আমি বুঝাতে লাগলাম যে, ভাইয়া শব্দটা সবার মুখে মানায় না, তুমি এত্ত সুইট একটা মেয়ে। তুমি আমাকে ভাইয়া বললে কেমন দেখায় না ?
- না , আপনি আমার বয়সে বড় । আপনাকে আমার ভাইয়া ই ডাকা উচিত ।
- তা ঠিক আছে । কিন্তু আমরা তো ফ্রেন্ডও হতে পারি , তাই না ? ফ্রেন্ডকে তো আর কেও ভাইয়া ডাকে না
- আমি আপনার ফ্রেন্ড হবো কেন ভাইয়া ?
- আবার ভাইয়া !!
আমার একটা কবিতা মনে আসতেছিল তখন
“
মিষ্টি স্মরে, গলা ভরে
যখন 'ভাইইইইইয়া' বলে ডাকো,
করুণ চোখে চেয়ে থাকি
মন করে আকু পাকু।
এভাবে আর 'ভাইইইইয়া'বলে ডেকো না
আমায় কি একটু আপন ভাবতে পারো না??
”
এর মধ্যে বেয়াদব মোবাইলটা বেজে উঠলো । আমি শুনেও না শুনার ভান করলাম
- ভাইয়া , আপনার মনে হয় ফোন বাজছে ।
- কি ? না তো !!
আমি মোবাইল বের করে দেখলাম আব্বু ফোন দিসে , আমি এক্সকিউজ মি বলে চরম বিরক্তির সাথে ফোন ধরলাম । আব্বুর কি একটা জরুরী কাজ আছে , আমাকে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে বলল ।
আমার আর কি করা চরম হতাশা নিয়ে নীলপরী আই মিন নীলার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে , আসিফকে সব বলে বাসায় ফিরার জন্য স্থান ত্যাগ করলাম । পরে আসিফ আমাকে জানিয়েছিল যে ঐ মেয়ের বয়ফ্রেন্ড আছে ।
আমার এই ফাটা কপালে আর প্রেম জুটলো না ।
[ বেশ কয়েকদিন আগে বন্ধু রিভুর বোন এর বিয়েতে গিয়েসিলাম । কিছু কিছু ঘটনা মিল্লেও এই গল্পের অধিকাংশ ঘটনাই কাল্পনিক । বেশ মজা করেসিলাম আমরা সবাই অবশ্য । আর আমার বাংলা ভাষায় অনেক ভুল ত্রুটি আছে , আশা করি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন । আর গল্পটা কাল্পনিক , কেও কষ্ট পেলে মাফ করে দিবেন আর কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না
]
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৫১
সহন বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৮
উদাস কিশোর বলেছেন: বেশ মজা পেলুম ভ্রাতা
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪১
সহন বলেছেন: ধন্যবাদ ভ্রাতা ভবিষ্যতে আরো বিনোদন দেয়ার চেষ্টা করবো
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৪৮
অপ্রচলিত বলেছেন: ভালোই তো, হাস্যরসে ভরপুর। ১ম ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম।