![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন নতুন লেখক। বাংলাদেশ, দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে লেখার চেষ্টা করব।
আমাদের দেশে ধর্ষণের ঘটনা উদ্বেগজনক ভাবে বেড়েছে। এখন এসব ঘটনা সাধারণ ঘটনায় রূপ নিয়েছে। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ঘটছে ধর্ষণের দু-একটি ঘটনা। ধর্ষণের ভয়াবহতাও অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
এখন আর দু-একটি ধর্ষণের ঘটনা আলোচনায়ও আসে না। কেউ এর প্রতিকার নিয়েও ভাবার প্রয়োজন মনে করে না। তাই ধর্ষণ আর শুধু ধর্ষণে সীমাবদ্ধ নেই। ধর্ষণ এখন হত্যায়ও গড়াচ্ছে।
কোথাও কোথাও নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হচ্ছে। অনেক সময় পাশবিক নির্যাতন করে গুম করে ফেলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে তা আরও ভয়াবহতার রূপ ধারণ করেছে। এখন প্রেমে রাজি না হলেও হত্যার মত ঘটনা ঘটছে।
প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সর্বশেষ গত সোমবার বিকালে পরীক্ষা দিয়ে বের হলে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিসকে চাপাতি দিয়ে [link|কুপিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলম। এতে গুরুতর আহত হয়ে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন খাদিজা।
এর আগে গত ২৪ আগস্ট একই কারণে সুরাইয়া আক্তার রিশা নামের রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে হত্যা করে বখাটে ওবায়দুল। এ ঘটনার প্রতিবাদে ফেটে পড়ে রাজধানীসহ সারা দেশ। জনতার আন্দোলনে ওবায়দুলকে দ্রুত গ্রেফতার করতে বাধ্য হয় প্রশাসন।
এ ঘটনার ২০ দিনের মাথায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর একই কারণে মাদারীপুরে নিতু মণ্ডল নামের নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধারালো চাকু দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে মিলন মণ্ডল নামের এক বখাটে। তার আগে ২৭ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্কুলছাত্রী কণিকা রানী ঘোষকে কুপিয়ে হত্যা বখাটেরা।
তারও আগে ১৩ মার্চ শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় চাঁদনি আক্তার ও বগুড়ার নন্দীগ্রামে মরিয়ম খাতুন নামে দুই কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এরপর ২০ মার্চ কুমিল্লার সেনানিবাস এলাকায় সোহাগী জাহান তনু নামের এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়।
তনু হত্যার আগে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় শিরিন আক্তার ও বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় কবিতা আক্তার নামে দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়।
এসব ঘটনায় সারা দেশের মানুষের মাঝে ব্যাপক আতঙ্ক তৈরি হয়। এর প্রেক্ষিতে তনু হত্যার ঘটনার পর গণআন্দোলন শুরু হয়। সে সময়ের আন্দোলনে দেশের সকল ছাত্র-সংগঠন অংশ নেয়। আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সারা দেশ। দাবি ওঠে তনুসহ সকল ধর্ষণ ও হত্যার বিচারের।
কিন্তু গণআন্দোলনও দেখাতে পারেনি কোন সফলতার দুয়ার। বিচার হয়নি তনুসহ কোন হত্যার। বিচারের উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপও লক্ষ্য করা যায়নি। এতে এসব ঘটনার বিচার পাওয়ার আশাও হারায় সবাই।
যদিও এসব আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি তবুও সবার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে আশার আলো দেখেছিল অভিভাবক সমাজ ও নারীরা। কিন্ত গত সোমবার ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক খাদিজাকে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা সর্ব-মহলে আলোচনার ঝড় ওঠে। আলোচনায় আসে ঘাতক ছাত্রলীগ নেতা বদরুল। আর আশা হারায় নারী, অভিভাবক সমাজসহ সাধারণ মানুষ।
মানুষ এখন ভাবছে, একদিকে একের পর এক হত্যার ঘটনা ঘটলেও এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের কোন ব্যাবস্থা নেয়া হচ্ছে না। তার ওপর দিন-দুপুরে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রনেতা যদি এমন নিঃসংশ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটায়, তাহলে জাতি কার ওপর ভরসা করবে। কারা করবে এসব সমস্যার সমাধান? তাহলে কি প্রতিনিয়তই দেখতে হবে তনু, রিশা ও খাদিজাদের অকালে ঝরে পড়া?
©somewhere in net ltd.