নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সপ্তাশ্চার্য না হলেও আশ্চর্যতো বটেই ফেইস বুকের পরিচয় এর তিন মাসের মাথায় মনিকাকে বিযে করে ঘরে ঢুকে ধ্রুব।
ঘর? ঘর কোথায়? তারতো ঘর নেই। ফাতেমা মঞ্চিল এর দাঁড়োয়ান করিম আলী তার দূর সম্পর্কের আত্মীয়, সেই করিম আলীর সাথেই দুই দিনের কথা বলে আজ নয় মাস হতে চললো, যায় যাচ্ছি করে করে তার সাথেই আছে। তবে কি সেখানেই বউ নিযে উঠলো ধ্রুব!
প্রথমবার যখন সে মনিকার কথা বলেছিল নামের সাথে লিউনস্কি যোগ করে ঠাট্টা করেছিলাম ধ্রুব এর সাথে, ঢাকা শহরে বাড়ী গাড়ির মালিক ব্যাবসায়ী পিতার কন্যার মগজ বিভ্রাট হয়নি যে, সিনেমার নায়িকার মতো ধ্রুব এর হাত ধরে ঘর ছাড়বে।
মনিকার সাথে অবশ্য সরাসরি সাক্ষাৎ পর্ব হয়ে উঠেনি, আজ কাল পরিচয় করিয়ে দেবে দেবে বলতে বলতেতো বিয়েই করে বসে আছে। বেচারা বন্ধু বান্ধব সবার হাত পা ধরে অনেক কষ্টে হাজার পঞ্চাশেক যা ধার পেল সেটা দিয়ে কক্সবাজার হানিমুন কর আসলো। আমাদেরও সবাইকে রেষ্ট্রুরেন্টে খাইয়ে দেবে বলে পাঁকা কথা দিয়েছে বেশ ক'বার যদিও খরচটা আমাদেরই বহন করতে হবে, অগ্রীম কিছু দিয়েছিল শাহজাহান তার কমিটম্যান্ট এর অর্ধেক, বাকীটা যেদিন দাওয়াত কনফার্ম হবে সেইদিন দেবে।
না সংসারটা টিকলনা, একমাসের মাথায় আবিস্কার হলো মণিকা মাদকাশক্ত এবং তার মাদক এর খরচটা ধ্রুবকেই বহন করতে হবে, নাহলে টাটা বাইবাই। বেচারা নুন আনতে পানতা ফুরায় তার উপর ইয়াবার পয়সা কোথায় পাবে!
দুই মাসের মাথায় মণিকা লাপাত্তা। অনেক খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেল সিলেটর কোন এক লন্ডন প্রবাসীর সাথে লিভ টুগেদার করছে, ধ্রুবর কান্নাকাটি নাওয়া খাওয়া বন্ধ হবার যোগাড়, আমরা অনেক বুঝিয় সুজিয়ে স্বাভাবিক না করতেই আবার দুঃসংবাদ।
বৃদ্ধ মা মারা গেছে, বাড়ী যেতে হবে, তার বিয়েতে টাকা পয়সা দিতে পারিনি তখন একটু আর্থিক সমস্যায় ছিলাম, এবার আর না করতে পারলামনা, অপিষ থেকে অগ্রীম সেলারী নিয়ে হাতে তুলে দিলাম পাঁচ হাজার।
তারপর আর যোগাযোগ নেই, মোবইল রিং পড়ে রিসিভ হয়না, বেচারার কোন বিপদ হলোনাতো! পরে আর রিংও গেলনা, ফোন বন্ধ। যেতে যেতে মাস গড়ালো, আর চারদিক থেকে খবর আসতে লাগলো, টাকা ধার নিয়েছে একসপ্তাহে দিয়ে দেবে, একবছরেও খবর নেই। রহমতের দোকানে বাকির টাকা, কাউকে বিদেশ পাঠাবে অগ্রীম টাকা নিয়েছিল, কাউকে ব্যাংকে চাকরী দেবে ইত্যাদি। সবাই খুঁজছে ধ্রুবকে।
এইসব অনেক আগের কথা, আজকে হঠাৎ মনে পড়লো। রাজধানীতে টিকে থাকার জন্য কত বৈচিত্র পন্হা করতে হয় গ্রাম ছেড়ে আসা আগুন্তুকদের, ধ্রুবর কথা চিন্তা করে কিছুটা হাসিও পেল আর কিছুটা মায়া। সৃষ্টিকর্তা সবাইকেতো আর স্বাবলম্বী করে পাঠায়নি, কেউ কেউ বৈচিত্র সব কান্ড করে টিকে থাকার জন্য।
©somewhere in net ltd.