![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সজল মোটামুটি স্ট্যাচু হয়ে গেলো । সজলের এ অবস্থা দেখে রাজন কিছু বুঝতে পারল না ।
“তুই এমন খাম্বা হয়ে গেলি কেন ? !! ?”
“বউ ফোন করেছে !!”
“বেকুব নাকি !! বউ ফোন করলে ভয় পাবার কি আছে ?? ফোন ধর । নিজের বউকে কেউ এতো ভয় পায় ? আজব ! আজব !”
“ভয় তো মানুষ নিজের বউকেই পায়, অন্যের বউকে না । আর আজব আজব করিস না ; আজকে আমার উপর গজব নাজিল হবে ।”
“মানে !! কি করেছিস তুই ? একটু নরমাল হয়ে আমাকে বল ।”
“ইরা আর আমার আজ রাত ৮টায় কোন একটা দাওয়াতে যাবার কথা ! ”
“তোর দাওয়াতে যাবার কথা অথচ তুই আমার সাথে ১ ঘণ্টা যাবত আড্ডা দিচ্ছিস !!”
“দোস্ত ভুলে গিয়েছিলাম ।”
“ব্যাপার না । এখন বাজে ৭টা ১৫ ; তুই এখান থেকেই দাওয়াতে চলে যা । আর ভাবিকে একটা ফোন দিয়ে দে, যে তুই সরাসরি যাচ্ছিস ।”
“প্রবলেম তো এখানেই !!”
“বুঝলাম না ।”
“আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছটায় অফিস থেকে বেড়িয়ে গিফট কিনে সাড়ে সাতটার মধ্যে বাসায় যাবার কথা । সেখান থেকে ইরাকে নিয়ে সোজা দাওয়াতে । কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন গিফটই কিনিনি ।”
“কৌই বাত নেহি ! চল গিফট কিনি ।”
“কি গিফট কিনবো ? ”
“কিসের দাওয়াত মানে কোন ধরনের অনুষ্ঠানে যাবি ? ”
“দোস্ত আমার মনে নাই !! ইরা আমাকে গতকাল বলেছিল, আমি ভুলে গেছি !! ”
“মানে ! কিসের অনুষ্ঠান, কার অনুষ্ঠান কিছু মনে নেই ?? ”
“না ।”
“দূরে গিয়া মর ! ”
“আমার কি দোষ ! ইরার জ্ঞাতি-গোষ্ঠীর কারো না কারোর অনুষ্ঠান প্রতি মাসে ২/৩ টা থাকেই । আজ এর বিয়ে, তো কাল ওর গায়ে হলুদ, পরশু বিবাহ বার্ষিকী । এছাড়া বার্থডে, কেউ পরীক্ষায় ভাল করলো তার সেলিব্রেশন, খাতনা...... ইত্যাদি ইত্যাদি । মানুষ এতো মনে রাখতে পারে !!
এই করতে করতে আমার পকেটের অবস্থা বেহাল ।”
“দোস্ত, আমারও একই অবস্থা ।”
“তোর অবস্থার কথা পরে ভাবিস । এখন আমাকে বাঁচা । ইরা আজ আমাকে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করবে ।”
“ওকে... ওকে...
আইডিয়া ! ভাবিকে একটা ফোন দিয়ে জেনে নে !! ”
সজলের এখন অধিক শোকে পাথর হবার দশা ।
“ইরার হাতে আজ আমার মৃত্যু অবধারিত । তার আগে আমি পৃথিবীর একটা উপকার করতে চাই ! ”
“কি উপকার ? ”
“তোকে খুন করে পৃথিবী থেকে একটা গাধা-মানব কমাতে চাই ।”
“কেন দোস্ত ! আমি কি করলাম ??”
“এই গাধা, আমি যদি ইরাকে ফোন করে কার দাওয়াত, কিসের দাওয়াত এসব জিজ্ঞেস করি তাহলে কি হবে জানিস ?”
“কি হবে ?”
“মরার জন্য কষ্ট করে আর আমাকে বাসায় যেতে হবে না ! আমার লোকেশন জেনে ওই আমাকে এখানে এসে খুন করে যাবে ।”
“তা ঠিক... তা ঠিক... এখন কি করবি ?”
“যা-ই করিনা কেন, তোর সাথে আর না । গাধার সাথে থাকলে বুদ্ধি লোপ পায় ।”
সজল হাঁটতে শুরু করলো । তাকে এখন দ্রুত চিন্তা করে ইরাকে ঠাণ্ডা করার বুদ্ধি খুজতে হবে ।
পেছন থেকে রাজন বলল- “দোস্ত, বেঁচে থাকলে সকালে ফোন দিস !!”
শালা মজা নিচ্ছে । যাই হোক, রাজনকে নিয়া এখন ভাবার টাইম নাই ।
সকালে খাবার টেবিলে ইরা বলেছিল- “জানো, আব্রুর বেবিটা যা কিউট হইছে ! ওয়াও !”
সজল দুয়ে দুয়ে চার মেলালো । সকালে আব্রুর বেবি নিয়ে কথা হয়েছে, তার মানে আব্রুর বেবির জন্ম দিনই হবে ।
কিন্তু আব্রুটা কে ??
এখন এটা নিয়ে না ভাবলেও চলবে । দ্রুত একটা গিফট কিনতে হবে । কি কেনা যায় ?
বেশি ভাবাভাবি না করে সজল একটা টয় কার কিনে ফেললো ১০০০ টাকা দিয়ে । বাচ্চারা এসব পেলে খুশি হয় । এই যা, পৌনে আঁটটা বেজে গেলো ।
ইরার ক্লান্তি লাগছে । প্রচণ্ড রেগে গেলে একটা পর্যায় সে এমন ক্লান্ত হয়ে পরে । সজল কি একটা কাজও ঠিক ভাবে করবে না ?? আজকের এই দাওয়াতের কথা তাকে কতবারই না বলা হয়েছে !! অথচ......
ডোর বেল বাজছে । সজল এসেছে । ইরা ঘড়ির দিকে তাকাল, ৮.৫০ বাজে । সজল ঘন ঘন বেল বাজাচ্ছে । ইরার কোন তাড়া নেই এমন ভাবে অনেক্ষন নিয়ে দরজা খুলল । তার মুখ নির্লিপ্ত, যেন কিছু হয়নি ।
সজল বুঝল পরিস্থিতি সুবিধার না ।
“বুঝলে, রাস্তায় যা জ্যাম ! একদম নাজেহাল অবস্থা ।”
“তোমার কাছে কি আমি ট্র্যাফিক নিউজ জানতে চাচ্ছি ?”
“না, দেরি করে ফেললাম ...... যদিও এখনো যাওয়া যেতে পারে......”
সজল আমতা আমতা করতে লাগলো । সে কিছুই বুঝতে পারছেনা । ইরা বাসার কাপড় পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে, রেডি হয়নি এখনো ; আবার মেজাজও দেখাচ্ছে না- ঘটনা কি ??
সজল কথা জমাবার চেষ্টা করলো......
“সোনা পাখি, গিফটটা কিন্তু তোমার হেবভি পছন্দ হবে !! দারুন একটা টয় কার কিনেছি !! ”
ইরা সরু চোখে বলল- “টয় কার কিনেছ ?”
“হুম ।”
“তুমি জানো কিসের দাওয়াতে আমাদের যাবার কথা ছিল ?? ”
“কেন বার্থডে !”
ইরা আর মেজাজ আর সামলাতে পারল না । চিৎকার করে বলল- “আমার বড় ভাইয়ের বার্থডেতে তাকে দেবার জন্য টয় কার কিনে এনেছ !! ?? !!” রীতিমত রাগে সে কাঁপছে ।
সজল কি বলবে বুঝতে পারল না । ইরা তাকে বলার সুযোগও দিলনা; বেড রুমে গিয়ে দড়াম করে দরজা আটকে দিল ।
সজল নির্লিপ্তভাবে সোফায় বসে পড়লো । এই তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দেবার মতো আইডিয়া তার মাথায় আসছে না । তার দরকারও নেই ।
কিছুক্ষন পর ইরা এমনিতেই দরজা খুলে বেরুবে ; তার চোখ থাকবে জলে ভরা ।
সেই জল দাওয়াতে না যেতে পারার বা রাগের না । সজলকে অনেকক্ষণ না দেখতে পেলে কষ্টে ইরার চোখে পানি এসে যায়, সজল তা জানে । ইরার চোখে তার জন্য জমা সেই ভালোবাসার জল দেখতে বড় ভাল লাগে ।
সজল অপেক্ষা করতে লাগলো, আনন্দ নিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো ।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৫০
মোঃ হাফিজুর রহমান সাগর বলেছেন: সত্যিই তাই ।
২| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫৬
মামুন রশিদ বলেছেন: অপেক্ষার অনুকাব্য ভালো লেগেছে ।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৫০
মোঃ হাফিজুর রহমান সাগর বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে ।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:১৪
অরুদ্ধ সকাল বলেছেন:
অপেক্ষা বড় কষ্টের!