![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবাই স্বপ্ন দেখতে জানেনা। আবার যারা স্বপ্ন দেখেন তারাও সেই স্বপ্নে আটকে থাকতে পারেন না। কিন্তু এই একজন মানুষ সারা জীবন স্বপ্ন দেখেছেন, মানুষকে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন। আমার স্বপ্ন দেখার হাতেখড়িও তার কাছেই। তিনিই শিখিয়েছেন আমি আমার স্বপ্নের সমান বড়। যুগের পর যুগ এভাবেই নতুন নতুন প্রাণে স্বপ্নের বীজ বুনে গড়ে তুলুন স্বপ্নের আলোকিত পৃথিবী। আজ ২৫শে জুলাই আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার এর জন্মদিন। শুভ জন্মদিন জানাই আপনাকে স্যার।
স্যারকে আমি কাছে পাই ২০০০ সাল থেকে। এই ২০০০ সালের কোন এক বিকেলে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে আমার প্রথম পদচারনা। বই পড়তে ভাল লাগা থেকেই পা বাড়াই কেন্দ্রের দিকে। এভাবে একে একে কেটে গেছে অনেক গুলো বছর। আমি খুব অবাক হই যখন ভাবি যে, স্যারের সমসাময়িক অনেকে যখন অর্থ উপার্জনের জন্য দেশের দরিদ্র মানুষ গুলোকে নিয়ে সুধের ব্যবসায় চালু করেন, ঠিক সেই সময়ে তিনি বই নিয়ে ছুটে বেড়িয়েছেন, মানুষকে বই পড়তে উৎসাহ দিয়েছেন, দিনের পর দিন কষ্ট করে বিভিন্ন ভাবে অর্থের যোগার করেছেন শুধু মাত্র মানুষের হাতে বই পৌঁছে দেবার জন্য। এভাবে হয়তো টাকার পরে টাকা বাড়েনি, বেড়েছে মানুষের মধ্যে আলো, বেড়েছে মানুষের স্বপ্ন দেখার শক্তি। কারন তিনিই প্রতিষ্ঠা করেছেন মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়।
বই পড়া যে একটি আন্দোলন হতে পারে সে ধারনা হয়তো স্যার এর আগে কেও ভাবতেও পারেননি। অথবা শুধু মাত্র বই পড়ানোর জন্য একটি মানুষ দিনের পর দিন ছুটে চলতে পারেন এমন কথা হয়তো গল্পতেই মানাতো যদি স্যার এমন স্বপ্নকে তিল তিল করে বড় না করতেন। তিনি তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে শুধু বইয়ের পাতায় পাতায় আলো আর আলো। ভাবতে ভাল লাগে যে স্যারের এই আলোকিত মানুষ গড়ার বই পড়া আন্দোলনের একজন ক্ষুদ্র অংশীদার আমিও। তার দেওয়া আলোর মশাল নিয়ে আমিও ছুটেছি স্কুল থেকে স্কুলে। এখানে কোন আর্থিক প্রণোদনায় নয়, কোন প্রাপ্তির আশায় নয়, কেন্দ্রের সাথে সম্পর্কটাই প্রাণের, প্রেমের আর ভালোবাসার। প্রাণের টানেই এক এক করে কেন্দ্রের প্রতিটা বিভাগে ,প্রতিটা কর্মসূচীতে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। আজ এখানে দাড়িয়ে কোথায় যেন অনেক অনেক সুখ আর ভাল লাগা কাজ করে এই ভেবে যে, আজকের ৩৬ বছরের কেন্দ্র নামের আলোর বৃক্ষে ১১ বছর পানি দেবার সুযোগ পেয়েছি আমি। এখন হয়তো পকেটে সেই মাত্র ১০ টাকার সমস্যা নেই, হয়তো নেই সারাদিনের আড্ডায় মাত্র এক কাপ চা আর সিংগারা খাওয়া। কিন্তু নিতান্তই পেটের দায়ে এখন কেন্দ্রের বাতাস গায়ে লাগে খুবই কম। তারপরেও মন পরে থাকে কেন্দ্রের সেই মহুয়া গাছের বাতাসে, সুরঞ্জনা ছায়ায় আর প্রখর রোদে কেন্দ্রের ছাদে।
নিজেকে কেন্দ্রের একজন মাত্র স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে পরিচয় দিতেই পছন্দ করি। সেই কলেজ জীবনের প্রথমেই স্যার একটা মন্ত্র শিখিয়ে দিয়েছেন—“মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়”। তাই আজো জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রেই স্বপ্ন দেখতে পারি নিশ্চিন্তে। আমার মত লক্ষ লক্ষ ছেলে মেয়ে ঠিক এভাবেই স্বপ্ন দেখতে পারে নিশ্চিন্তে। তাই আজ স্যার এর জন্মদিনে প্রাণের আলো বলছে বেঁচে থাকুক কেন্দ্র, সুস্থ থাকুক স্যার আর বেড়ে চলুক আপনার স্বপ্ন বোনার কাজ।
©somewhere in net ltd.