![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Student,Debater
[img|http:
রাত দশটার দিকে ল্যাপটপে দেশ বিদেশের বন্ধুদের সঙ্গে যখন সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা করছিলাম ঠিক তখন রুমমেট আমাকে ফোন করে জানালেন মেসের নিচে গানের আসর বসেছে। বিখ্যাত কিংবা প্রতিষ্ঠিত শিল্পীর গানের চেয়ে গ্রাম বাংলার আউল-বাউল ফকিরের গানের প্রতি আমার এক অন্যরকম টান আছে।সেই টানেই হোক আর গানের প্রতি ভালোবাসা প্লাবনেই হোক তড়িঘড়ি করে তিন তলা থেকে নিচে নেমে দেখি ২৫/৩০ জন মানুষ অত্যন্ত মশগুল হয়ে গান শুনছেন। ! সেই গান আমি কোন দিন শুনিনি । স্বভবত উপস্থিত রাত বিরাতের পথিক দর্শক-শ্রাতারাও তা শুনেন নি।
গান পিপাসু শ্রতারা তার গান শুনে বিস্মিত ও হতবাক হয়ে ২/৪ টাকা করে দান করতে তিলার্ধ কুন্ঠাবোধ করেননি।গানের এক ফাঁকে তার পরিচয় জানা গেল। তার বাড়ি রংপুর সদর থানার পদাগঞ্জ এলাকায়। লোকে তাকে ডাকে গায়েন লিয়াকত পাগলা বলে। পুরো নাম মো: লিয়াকত আলী।তিনি জন্মান্ধ হলেও দেশ ও পৃথিবীর হালচালের খবর গানের কথামালায় অনন্য, অনিন্দ্য সুন্দরভাবে তুলে ধরেন।সাংসারে বিবাহিত একছেলে আছে তার খোঁজ রাখে না। আপন জন ও কাছের মানুষ বলতে তার স্ত্রী ছাড়া কেউ নেই। তার গানের সরাজ্ঞম দুাতারা, একাতারা কিংবা গিটার নয়। শুধু একটি পাতিল ও তার ভেতরে কিছু সাইকেলের বল।সেটি দিয়ে পাক্কা পেশাদার শিল্পীর মত তিনি অনেক রং, ঢংয়ে স্বাভাবিক সাবলীলভাবে পাতিলটি বাজালেন আর একের পর এক গান করলেন।কিছু গান সমসাময়িক বিষয়ের উপর আর কিছু তরুণ প্রজন্ম নিয়ে বাদবাকি ধর্ম বাস্তবতা এবং আধ্যত্ম জীবনবোধের মৌলিক গান । তার সুরে গানগুলো এরকম- “চিঠি দেয় না পত্র দেয় না/ গোপন রাখে পরিচয়/ মাঝে মাঝে মোবাইল ফোনে মিষ্টি মিষ্টি কথা কয়ৃৃ.”। “হায়রে কলিকালে/ যুবক ছেলে দেখলে পরে/ মেয়েরা রাইতে ডিউটি করে…”। এছাড়াও “ একদিন মাটির ভেতরে হবে ঘর..”।“ এই দুনিয়াটা পুতুল খেলা….” শিরেনামে গান গেয়ে আবেগাপ্লুত করেছিল গানের কবি, সুরের কবি লিয়াকত পাগলা। ১৫/১৬ টি গান গেয়ে প্রায় দেড় ঘন্টা উৎসুক জনতাকে আবেগে ভাসিয়েছিল আর আনন্দে হাসিয়েছিল। মরণ কে স্বরণ করে দিয়েছিলগান আর কথামালায়। এই ধরনের গানের সাথেই তার নিত্যপথ চলা। মানুষ গান শুনে টাকা দিলে দু বেলা দু মুঠো খেতে পারে । তা না হলে উপোস থাকতে হয়।কিন্তু তার চেহারায় দু:খবোধের লেশ মাত্র নেই। সদাহাস্যজ্জ্বল ৬০ বছর বয়সী গানওয়ালা মানুষটি যেন চিরসুখীর এক জীবন্ত প্রতিক। সঙ্গে আছে লাল কাপড়ে মোড়া একটা লাঠি। লাঠিটি রহস্যে ভরা। লাঠিটি যখন কবিয়াল বাউল লিয়াকত পাগলা বিশেষভাবে স্পর্শ করে তখন লাঠির মাথায় লাটিমের মত একটা ইস্পাতের চাটকি পিন পিন করে ঘুরতে থাকে।
। অন্যদিকে লাঠির রহস্য ও রান্না করা পাতিলে ঢোল ও তবলার মিশ্র সুর উপস্থিত জনতাকে একটি ঘোরের মধ্যে ফেলে দেয়। প্রায় সবগুলো মানুষই পাগলার সেই লাঠি উল্টিয়ে পাল্টিয়ে হাতিয়ে দেখেন।কিন্তু কেউ সেই লাঠির রহস্য উন্মোচন করতে পারেন নি। শেষ পর্যন্ত লাঠি আর হাতের কারসাজি রহস্যই থেকে গেল..! দিনের আলোতে কিংবা রাতের আঁধারে গানই ধ্যাণ, গানই প্রাণ, গানই তার জীবন। যেন সহধর্মিনীর মতন। পথ থেকে পথে, বাজার থেকে বাজার থাকে, স্টেশন থেকে স্টেশনে, মানুষের হৃদয়ের বাঁকে বাঁকে ফেরীওয়ালার মত ফেরী করে গান করাই তা আমরণ শান্তি । সেই শান্তির খোঁজেই রংপুর স্টেশনের প্লাটফর্মে রাতে ঘুমানোর উদ্দেশ্যে লালবাগের এই নাগরিগ ব্যস্ততা ছেড়ে মাঘের তিব্র শীতে কুয়শার সাথে মিলিয়ে গেল অদূরে, সুরে সুরে, বহু দূরে……….।
লেখক: ব্লগার ও সাংবাদিক।
২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০৮
সজিব তৌহিদ বলেছেন: আপনার তার প্রতি আগ্রহ দেখে খুব ভালো লাগলো। সত্যিই কথা বলতে কি আপনি যদি তার গান শুনেন। নি:স্বন্দেহে মুগ্ধ হবেন। আমি আপনাকে অবশ্যই সাহায্য করব।
৩| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১৭
সজিব তৌহিদ বলেছেন: আমার নাম্বার ০১৭৩৭৪৭৬৯০৭
৪| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:২০
সময় সাধন বলেছেন: এমন গান অনেকদিন শুনিনা। আমাকে ডাকলেই পারতা.... মিস্ করছি
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৩৪
সজিব তৌহিদ বলেছেন: আসলে গানে এতো মশগুল ছিলাম। কারো কাথা মনেই ছিল না।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:০২
তির্থক আহসান রুবেল বলেছেন: আমি তার সন্ধান চাচ্ছি...... মানে তাকে দরকার..... আমাকে অনুগ্রহপূর্বক সাহায্য করতে পারেন????
আমার ই-মেইল: [email protected]
মেইলে আপনার নাম্বার দিলে আমি ফোন দেবো........
ধন্যবাদ.........