![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Student,Debater
শুক্রবার রাত ১১ টায় ধানমিন্ড ৩২ থেকে মোহাম্মদপুর টাউন হলের দিকে হেঁটে যাচ্ছি। সোবহানবাগ এলাকায় দেখি মানুষের জটলা। এগিয়ে গেলাম। আমেরিকার দর্শনিক টমাস মুলারের কথা মনে পড়লো, ‘আমি যতই মানুষ কে চিনেছি, ততই কুকুরকে বেশি ভালোবেসেছি।’
তাই মানুষের জটলা দেখে পিছনের পকেট থেকে মানিব্যাগটা সামনের পকেটে নিয়ে আসলাম। দেখলাম একটা ছেলেকে কেন্দ্র করে পথচারীদের ব্যাপক উত্তেজনা ও আনাগোনা। ছেলেটা বসে আছে একটা টুলে। কথা বলছে না। নিশ্চুপভাবে কাঁদো-কাঁদো নয়নে সবার দিকে তাকিয়ে আছে। কোন প্রশ্ন করলে উত্তর দেয় না। কৌতূহলী আগ্রহী জনতার কোন প্রশ্নের উত্তরই দিচ্ছে না সে। জানতে পেলাম এই ছেলেটাই কিছুক্ষণ আগে দুরন্ত-চলন্ত বাসের নিচে আত্নহত্যা করতে রাস্তার মাঝখানে শুয়ে পড়েছিল।
গাড়ির চালকের কষা ব্রেকের কারণে অক্ষতভাবে বেচেঁ গেছে ছেলেটি। তাকেই নিয়েই রাতে রাজধানীর পথে জনতার এই জটলা । অনেক কষ্টে ছেলেটাকে নানাভাবে বুঝিয়ে জানা গেল, রাজধানীর একটা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েরে শিক্ষার্থী সে, বাড়ি পাবনায়, ঢাকায় মেসে থাকে, প্রেম করে বিয়েও করেছে সে। বাবা-মার সাথেও সম্পর্ক ভালো নেই তার। স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করে তার এই আত্মঘাতী সিন্ধান্ত।
কতটা অস্থির ও জীবনবিমুখী হলে মানুষ এমন সিন্ধান্ত নিতে পারে জীবনে একবার উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম। তখন মনে হয়েছিল আত্মহত্যার প্রয়োজনীয়তা আছে। আত্নহত্যাও হতে পারে মানুষের জীবনের এক অনিবায অধ্যায়। কিন্তু বোধদোয় হলে মনে হয়েছিল, এর চেয়ে আর নিকৃষ্ট কাজ কি হতে পারে মানব জীবনে..?
এই আত্মহত্যার কথা শুনে হুট করে এক লোক কোথা থেকে ছুটে এসে অপ্রত্যাশিতভাবে ছেলেটার গালে একটা কষে থাপ্পর মেরে দিল। বললো, ‘ব্যাটা আত্নহত্যা করবি তোর বাসায় গিয়া কর, এইহানে আত্নহত্যা কইরা কি আমগো ফাঁসাইবি নাকি.?’
আমরা উপস্থিত জনতা ওই লেকাটার থাপ্পর এবং কথার প্রতিবাদ করলাম। কিছুক্ষণেরই মধ্যেই ছেলেটার মেস মেট চলে আসলো।
ছেলেটার নাম জানা গেল ফারুক। ফরুক ও তার মেস মেটরা চলে গেল। আমিও আমার পথে হাঁটতে শুরু করলাম। আর ভাবলাম এটা নিয়ে একটা চমৎকার লেখা লিখবো। সেই লেখার চিন্তা নিয়ে গুটি-গুটি পায়ে বাসায় ফিরলাম।
ফারুক নিয়ে যতটা না চিন্তা তার চেয়ে বেশি চিন্তা আমি আমার লেখাটা কিভাবে লিখবো.? কিভাবে লেখার মধ্যে সুপার ক্লাইমেক্ম দিবো। কিভাবে লেখাটা শুরু করলে এবং শেষ করলে চমৎকার একটা লেখা হয়ে ওঠবে । সেই চিন্তায় আমি মশগুল হয়ে গেলাম। ফারুকের দু:সহ জীবনের কথা একটা বারও ভাবতে চেষ্টা করলাম না। তার দু:খবোধও আমাকে একবারও স্পর্শ করল না । যতটা না এই লেখাটা আমাকে জ্বালাতন করেছে, স্পর্শ করেছে।
তাইতো বলি সব সময় রাজনীতিবিদরা সবকিছুতে রাজনৈতিক গন্ধ খুঁজেন কি জন্য..? এ্যাডভোকেটরা কথায়-কথায় আইন আদালতের কথা বলেন কি জন্য? সব স্বার্থ। যে যে লাইনের মানুষ, সে সে লাইনের যৌক্তিক স্বার্থ খুঁজতে চেষ্টা করে। এটাই মনে হয় সাধারণ মানুষের চারিত্রিক ধর্ম। তাই মনে হয় এই জগতে প্রত্যেকেই আমরা একেক টা স্বার্থপর বলিষ্ঠ সৈনিক।
সজিব তৌহিদ
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:৫০
সজিব তৌহিদ বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগু ভাই, আপনাকে ধন্যবাদ একাটা বিশ্লেষণমূলক কমেন্ট দেয়ার জন্য।“ আপনি যাকে স্বার্থপরতা বলছেন-সেটা তা নাও হতে পারে। আপনি যদি প্রেমের দৃষ্টিতে দেখেন। যদি ক্ষুদ্রতা পরিহার করে ভাবেন- সকল স্বার্থের মাঝের নিঃস্বার্থটাও চোখে ভেসে উঠবে। “
এই কথায় গভীর চিন্তার খোড়াক আছে..। ভালো থাকবেন, ভালো লিখবেন..। আপনার স্টিকি পোস্ট এর জন্য বিশেষ শুভেচ্ছা থাকলো..
২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:১২
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভালো লাগল লেখা।
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:৫৫
সজিব তৌহিদ বলেছেন: ভালো লাগার জন্য ধন্যবাদ শঙ্কু ভাই..
৩| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:৫১
মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: এমন অনেক ফারুক আছেন, যারা কেবল আত্মহত্যা পাপ জানার কারনেই সেই পথে যান না। কেবল ধুকে ধুকে নিজের জীবনটাকে বিশময় করে রেখেছেন
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:০৫
সজিব তৌহিদ বলেছেন: ধুকে ধুকে নিজের জীবনটাকে বিশময় করে রেখেছেন । এটাই জীবন। এটাই জীবনের সুর, সংগ্রাম, স্বাধীনতা সব..।
বেঁচে থাকাটাই চরম স্বার্থকতা..। তেলাপোকার মত হলেও বেঁচে থাকতে হবে..। বাঁচাই জীবন.., জবিনই বাঁচা..
৪| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:১১
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
লেখাটা ভাল হয়েছে।
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:১৮
সজিব তৌহিদ বলেছেন: আপনার বলাটাও ভালো লেগেছে.. নাজিম ভাই..
৫| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:১৪
আমিনুর রহমান বলেছেন:
এই জগতে প্রত্যেকেই আমরা একেক টা স্বার্থপর বলিষ্ঠ সৈনিক।
সত্যিই আমরা তাই।
পোষ্টে +++
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৯
সজিব তৌহিদ বলেছেন: ধন্যবাদ আমিনুর ভাই...
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫০
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এই জগতে প্রত্যেকেই আমরা একেক টা স্বার্থপর বলিষ্ঠ সৈনিক।


স্বীকার করার বোধ ও সাহস সকলের হয় না।
ব্যক্তিক, সামাজিক, পারিবারিক, রাষ্ট্রীয় সকল কাজেই এমন স্বার্থপরতা খূজে পাওয়া যাবে নিত্যই। পার্ট-১
তবে বিষয়টা দৃষ্টিভঙ্গিরও বটে।
আপনি যাকে স্বার্থপরতা বলছেন-সেটা তা নাও হতে পারে। আপনি যদি প্রেমের দৃষ্টিতে দেখেন। যদি ক্ষুদ্রতা পরিহার করে ভাবেন- সকল স্বার্থের মাঝের নিঃস্বার্থটাও চোখে ভেসে উঠবে। পার্ট-২
তখনই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার মধুময়তা বোধে আসে