নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন মুক্ত মনের লেখক। আমার যা ভালোলাগে আমি তাই লেখার চেষ্টা করি।

শেখ সাকিবুল ইসলাম

আসসালামু আলাইকুম, আমি সাকিব। আমি একজন ব্লগার ও ইউটিউবার। আশাকরি আমার লেখা আপনাদের ভাল লাগবে।

শেখ সাকিবুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ত্রানের বিনিময়ে প্রান

১৪ ই মে, ২০২০ রাত ৯:১৭

রাতুল গাজীপুরের রসুলপুর গ্রামের খুবি দরিদ্র পরিবারের একটি ছেলে। বয়স ১০ - ১২ বছর হবে । ছেলেটির বাবা নেই তার মা গারমেন্সে কাজ করে। রাতুলের মা সকাল ৯ টার সময় বাসা থেকে বাহির হয় বিকাল ৫টায় বাসায় আসে ওভারটাইম হলে ৭টা বাজে বাসায় আসতে। রাতুলরা যে বাসায় থাকে সে বাসাটা তার দাদার । প্রথমে দাদা আর পরে বাবা মারা যাবার পর এখন এ বাসায় রাতুল ও তার মা থাকে । মায়ের চাকুরি দিয়ে রাতুলদের বেস কষ্টে দিন যাচ্ছিল । কিন্তু হঠাত করে গারমেন্স বন্ধ হয়ে গেল । গারমেন্স থেকে বলেছে দেশে এক বিরাট মহামারি এসেছে তার নাম করনা । এটি ছোঁয়াচে এবং এর কোন প্রতিকার নেই । তাই সুস্থ থাকতে হলে বাসায় থাকতে হবে । ছুটি দেবার সময় কনো রকম টাকা দেওয়া হয়নাই । চলতি মাসের বেতনও দেয়নাই ।রাতুলের মা কিছু টাকা জমিয়ে রেখে ছিল সেটাই এখন ভরসা । প্রথম ১ সপ্তাহ ঠিক মত চলেছে । সমস্যা হল পরের সপ্তাহ থেকে । এখন মনে হচ্ছে যেকটা টাকা আচ্ছে তা দিয়ে পুর মাস চলবে না । এখন বাধ্য হয়ে রাতুলরা ২ বেলা খায় । করনার এই সময়ে বাসা থেকে বাহির হওয়া নিষেধ যার কারনে রাতুলের সারা দিন কাটে মাড়বেল গুলো দিয়ে, নিজেই নিজের সাথে খেলে । মাঝে মাঝে মায়ের সাথে রেডিও শুনে । দেশের নানান খবর । প্রতিদিন কত মানুষ আক্রান্ত হল , কত মানুষ মারা গেল , কত মানুষ সুস্থ হল এই সব খবর । মাঝে মাঝে রেডিওতে গল্প বলে, গান হয় । ভালই লাগে রাতুলের । কিন্তু আজকাল তার মন ভাল নেই । কেন জানি তার মা তাকে দুপুরে খাবার দেয়না । শুধু বলে দোয়া কর আবার সব ঠিক হয়ে যাবে । এর মাঝে খবর আসে সরকারি ত্রান নিতে স্থানিয় স্কুলের মাঠে যেতে হবে আগামিকাল সকাল ৮টায় । পরের দিন সকাল ৮টায় রাতুলের মা স্কুলের মাঠে গিয়ে উপস্থিত ত্রান নেবার জন্য । সেখানে গিয়ে সে দেখে ত্রানের জন্য লম্বা লাইন । সবাই গায়ে গায়ে লেগে দারিয়েছে । কিছুখন পরে কাউন্সিলর সাহেব আসলো । তার সাথে বেস কয়েক জন আসলো । কাউন্সিলর সাহেবের পিছনে বড়ো ব্যানার টাংগানো হয়েছে । এবার এক জনকে ডাকা হলো তার হাতে সবাই মিলে ত্রান তুলে দিচ্ছে এমন একটা ছবি তুলা হল । এখন গরিব লোকটি যখন ত্রান নিয়ে চলে যেতে চাইলো তখন কাউন্সিলরের সাথে আসা এক লোক বললো “ নেতা এই একটা বস্তা দিয়ে একজন একজন করে সবার ছবি তুলি , পরে ছবি তুলা শেষ হলে যার যার ত্রান তাকে তাকে দিয়ে দেবো । “ তো যেই কথা সেই কাজ । ওই একই বস্তা হাতে নিয়ে একজন একজন করে এসে ছবি তুলে আবার রেখে দিয়ে যায় । এভাবে সবার ছবি তুলা শেষ হলে কাউন্সিলর সাহেব চলে যায় আর বাকিরা সবার মাঝে ত্রান দিয়ে দেয় । রাতুলের মা ত্রান নিয়ে বাসায় চলে আসে । রাতুল অনেক খুশি মা বলেছে আজকে খিচুরি রান্না করবে। এভাবে কেটে গেল বেশ কিছু দিন । কিন্তু রাতুলের মায়ের কিছু দিন ধরে জর ও কাশি মাঝে মাঝে শ্বাস কষ্ট হয় । ওরা এটা নিয়ে বেশি ভাবেনা । তারা মনে করেছে এটা ঠিক হয়ে যাবে । কিন্তু যত দিন যাচ্ছে তত মায়ের শরির বেশি খারাপ হচ্ছে । একদিন তো কাশতে কাশতে মুখ দিয়ে রক্ত বাহির হয়ে গেছে । রাতুলের মা ডাক্তার দেখাতে ডাক্তার জরুরি ভিত্তিতে হাস্পাতালে ভর্তি হতে বললেন । কিন্তু এটি করনার লক্ষণ হয়াতে কোন হাস্পাতাল তাকে ভর্তি করছেনা । পরে সে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হলো । এখন তার অবস্থা খুব খারাপ । জ্বর ও কাশি বেরেছে তার সাথে শ্বাস কষ্টও বেরেছে । রাতুলের মায়ের চিন্তা তার কিছু হলে রাতুলকে কে দেখবে । এভাবে দুদিন যাবার পর একদিন সন্ধ্যায় রাতুলের মায়ের এমন শ্বাস কষ্ট হচ্ছিলো যে মনে হয় সে পানিতে ডুবে মারা যাবে । এক সময় শ্বাস কষ্ট সহ্য করতে না পেরে রাতুলের মা এমন জাগায় চলে গেল যেখান থেকে কেউ ফিরে আসেনা । আসলে রাতুলের মা করনাতে আক্রান্ত হয়েছিল । ত্রান নেবার সময় তার উচিত ছিল মাক্স ব্যবহার করা , সামাজিক দূরত্ব বজায়ে রাখা , হাত পরিষ্কার করা যার কোনটি সে পালন করেনি । এই মহামারিতে যারা প্রান হারালো তাদের পরিবারের কি হবে ? আজকে এই রাতুলের দায়িত্ব কে নিবে ? আসুন সচেতন হই । প্রয়োজন ছাড়া বাহিরে যাবেন না । বাহিরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করবেন । সামাজিক দূরত্ব বজায়ে রাখবেন । নিয়োমিত হাত ধুবেন । Stay home , Stay safe.
এই গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.