নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভবঘুরে ছেলেটা

দৈনন্দিন জীবনে যা ঘটছে মাঝে দিনলিপি আকারে ঐগুলা নিয়েই লিখবো ভাবছি.। জানি আপনারা পড়বেন। কিন্তু পড়ার সময় মনে রাখবেন এটা আমার ডায়েরী। আমার চিন্তা ভাবনায় যা আসে নির্দ্বিধায় লিখবো। এটা নিয়ে কারো সাথে কোন ঝগড়া করার ইচ্ছা আমার নাই। ঘাঁড় ধরে পড়াচ্ছিনা।

ভবগুরে ছেলেটা

আমি হুদা একজন পাবলিক ভাই! আমারে নিয়া লিখার মত কিছু পাইলাম না।

ভবগুরে ছেলেটা › বিস্তারিত পোস্টঃ

অসমাপ্ত আত্মজীবনী ~ শেখ মুজিবুর রহমান// অনুচ্ছেদ ১০

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৩

এই সময় একটা আলোড়ন সৃষ্টি হল। হাশিম সাহেব শহীদ সাহেবের সাথে পরামর্শ করে একটা মুসলিম লীগের একটা Draft manifesto বের করলেন। মুসলীম লীগ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং এর একটি রাজনৈতিক দাবীও থাকবে, ভবিষ্যতে পাকিস্তান পেলে এর অর্থনৈতিক কাঠামো কি থাকবে তাও থাকতে হবে। জমিদারি প্রথা বিলোপসহ আরো অনেক কিছু এতে ছিল। ভীষন হৈ চৈ পড়ে গেলো। আমরা যুবক, ছাত্র ও প্রগতিবাদীরা এটা নিয়ে ভীষনভাবে প্রপ্পাগান্ডা শুরু করলাম। পাকিস্তান আমাদের আদায় করতে হবে এবং পাকিস্তান কায়েম হবার পরে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক কাঠামো কি হবে তার একটা সুস্পষ্ট রূপরেখা থাকা দরকার। হাশিম সাহেব আমাদের নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ক্লাস করতেন।........................ ...................................... ............................ ............................ .....................

এই সময়কার একজন ছাত্রনেতার নাম উল্লেখ না করলে অন্যায় হবে; কারণ তিনি কোন গ্রুপে ছিলেন না এবং অন্যায় সহ্য করতেন না। সত্যবাদী বলে সকলে তাঁকে শ্রদ্ধা করতেন। নেতাদের সকলে তাকে স্নেহ করতেন। তার নাম এখন সকলেই জানেন, জনাব আবু সাঈদ চৌধুরী বার এট ল’।.এখন ঢাকা হাইকোর্টের জজসাহেব। তিনি দুই গ্রুপের মধ্যে আপোষ করতে চেষ্টা করতেন। শহীদ সাহেবও চৌধুরী সাহেবের কথার যথেষ্ট দাম দিতেন।

…………………………… …………………………. ……………………………… …………………………

………………………………….. ………………………………. ……………………………..

এই সময় বাংলায় মুসলিম লীগ সরকারের পতন হয়। গভর্নর শাষন ক্ষমতা নিজের হাতে নেন। শহীদ সাহেব দেখলেন যুদ্ধের সময় অধিক লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা কালো বাজারে কাপড় বিক্রি করার জন্যে গুদামজাত করতে শুরু করেছে। একদিকে খাদ্য সমস্যা ভয়াবহ, শহীদ সাহেব রাতদিন পরিশ্রম করছেন, আরেকদিকে অসাধু ব্যবসায়ীরা জনগনের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে শুরু করেছে। শহীদ সাহেব কর্মচারীদের হুকুম দিলেন, মাড়োয়ারি ব্যবসায়ীদের আড্ডাখানা বড়বাজার ঘেরাও করতে। সমস্ত বড়বাজার ঘেরাও করা হল। হাজার হাজার গজ কাপড় ধরা পড়লো, এমনকি দালানগুলির নিচেও এক একটা গুদাম করে রেখেছিলো সেগুলোও বাদ গেলো না। এমন করে সমস্ত শহরে চাউল গুদামজাতকারীদের ধরবার জন্যে একইভাবে তল্লাসী শুরু করলেন। মাড়োয়ারিরাও কম পাত্র ছিল না। কয়েকলক্ষ টাকা তুলে লীগ মন্ত্রীসভাকে খতম করার জন্যে কয়েকজন MLA কিনে ফেললো। ফলে এক ভোটে লীগ মন্ত্রীত্বকে পরাজয় বরণ করতে হল। ....................................

............................. .................................... ............................ ...................

আমি কিছু সংখ্যক ছাত্র নিয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলাম। খবর যখন রটে গেল লীগ মন্ত্রিত্ব নাই, তখন দেখি টুপি ও পাগড়ি পরা মাড়োয়ারিরা বাজি পোড়াতে শুরু করেছে এবং হৈ চৈ করতে আরম্ভ করেছে। সহ্য করতে না পেরে, আরও অনেক কর্মী ছিল, মাড়োয়ারিদের খুব মারপিট করলাম, ওরা ভাগতে শুরু করল। জনাব মোহাম্মদ আলী আমাকে বাইরে এসে ধরে ফেললেন এবং সকলকে বুঝানোর চেষ্টা করলেন। হিন্দু নেতারাও বাইরে এসে প্রতিবাদ করল।

..................... .......................................... ........................................... .....................................

......................................... ...............................



এর পূর্বে আমার ধারনা ছিলো না যে MLA রা এইভাবে টাকা নিতে পারে। এরাই দেশের ও জনগনের প্রতিনিধি ! আমার মনে আছে, আমাদের উপর ভার পড়লো কয়েকজন এমএলএ কে পাহারা দেবার, যাতে তারা দল ত্যাগ করে অন্য দলে যেতে না পারেন। আমি তাদের নাম বলতে চাই না, কারণ তাদের অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছেন। একজন এমএলএ কে মুসলিম লীগ অফিসে আটকানো হল। তিনি বারবার চেষ্টা করেন বাইরে যেতে, কিন্তু আমাদের জন্যে পারছেন না। কিছু সময় পরে বললেন,

"আমাকে বাইরে যেতে দিন। কোন ভয় নাই। বিরোধী দল টাকা দিতেছে, যদি কিছু টাকা নিয়ে আসতে পারি তাহলে আপনাদের ক্ষতি কি? ভোট আমি মুসলিম লীগের পক্ষেই দেবো।"

আশ্চর্য হয়ে চেয়ে রইলাম তার দিকে। বৃদ্ধ লোক, সুন্দর চেহারা, লিখাপড়া জানেন। কেমন করে বলতে পারলেন এই কথা আমাদের কাছে? টাকা নেবেন একদল থেকে অন্য দলের সভ্য হয়ে, আবার টাকা এনে ভোটও দেবেন না! কতোটা অধঃপতন হতে পারে আমাদের সমাজের! এই ভদ্রলোককে একবার রাস্তা থেকে ধরে আনতে হয়েছিল আমাদের।শুধু সুজোগ খুঁজছিলেন কেমন করে অন্য দলের কাছে যাবেন।



♣♣♣♣♣♣♣♣♣♣♣



পার্লামেন্ট মেম্বার কিনে নেয়ার রীতিটা শুরু হইসিলো সে তখনই... এখন তো বলাই বাহুল্য! এখন তো পয়সা দিয়ে নেতা কিনতে হয় না... বরং ব্যবসায়ীরা পয়সা খরচ করে তারপর বিক্রী হয়ে নেতা হন।

শেখ মুজিব খুব মারকুটে তরুণ ছিলেন, যারা বলেন তিনি মুক্তিযুদ্ধ চান নাই, ভয়ে পালাইসেন পাকিস্তান... তাদের জন্যে আমার মায়া হয়। এমন গর্ব করার মত ইতিহাস থেকে বঞ্চিত তারা।

শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মত দেশপ্রেমিক যদি এখন ১০০ জনকেও আমরা পেতাম, অনেক ভালো হত!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০১

বাতায়ন এ আমরা কজন বলেছেন: @শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মত দেশপ্রেমিক যদি এখন ১০০ জনকেও আমরা পেতাম, অনেক ভালো হত!

-- সে দিন কী আর আছে রে ভাই?

তখন দেশপ্রেম প্রকাশ করে গর্বিত হত, এখন লজ্জিত হ্য়।

তখন দেশপ্রেম থেকে রাজনীতিতে আসত, আর এখন
রাজনীতিতে এসে দেশপ্রেম শিখতে চায়।

তখন দেশপ্রেম ছিল আত্মার ভালবাসা, এখন ব্যবসা।

তখন দেশ মানে ছিল মা, যে সবার উপরে, এখন
দেশ মানে এ টি এম মেশিন, টাকার যোগানদাতা।

তখনকার নেতারা সামান্য অন্যায়ের প্রতিবাদে প্রয়োজনে জীবন দিতে প্রস্তুত থাকত, আর এখন অন্যায়ের সমর্থনে সব করতে পারে।

----- সবচেয়ে বড় কথা হলো, যে দেশ গুণী মানুষের সন্মান করতে জানে না, সে দেশে গুণী মানুষ জন্ম নেয় না বা নিলেও তারা নীরবে নিভৃতে তাদের কাজ করে যায়, কারো আশায় বসে থাকেনা।

----- দূ:খ করি শুধু এই কারনে যে, যদি সামান্য কটা বছরের জন্যও একটা যোগ্য নেতৃত্ব এ জাতি পেত, এ দেশটার চেহারাই পাল্টে যেত।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৭

ভবগুরে ছেলেটা বলেছেন: ঠিক বলসেন ভাই...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.