নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিবর্ন স্বপ্নাবলী নিয়ে অর্ধ জীবন্ত এক অস্তিত্ব আমি। খুব সতর্ক পায়ে হেটে চলি এই ভূমন্ডলে ও স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে থাকি শূন্য পানে নিজের অস্তিত্বের ব্যাখ্যা খুঁজতে।

সাকিব শাহরিয়ার

আমি সাকিব শাহরিয়ার। যেহেতু পৃথিবীর বুকে নিজের অস্তিত্ব অনুভব করি সেহেতু আমি একজন মানুষ। তবে বিবেকের কাঠ গড়ায় দাড়ালে কতটা হতে পেরেছি তা বলতে পারি না। তবুও আমি একজন মানুষ বা মানুষ হওয়ার প্রত্যাশায় তপস্যা রত এক সত্তা বলে নিজেকে পরিচয় করিয়ে দিতেই বেশি সম্মান বোধ করি।

সাকিব শাহরিয়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

অস্তিত্বের অন্তরালে: ৪

০২ রা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:০৭

- উফ চারদিকে এতো আলো কেন? আমি কোথায়?
- তুমি সাহারা মরুভূমিতে।
- আমার মরুভূমিতে কি কাজ? আমার তো কিছু প্রবাল লাগবে। তুমি দিবে আমাকে কিছু প্রবাল?
- হুম দিব।
- সত্যি দিবে বলো।
- হুম দিব। আগে মুখ ধুয়ে এসো। কতদিন গায়ে পানি দাও না বলো তো?
- গায়ে পানি দিলে কি হয়? আর মরুভূমিতে আমি পানি পাব কই?
- যাও এই তাবুর বাইরে পানি আছে, আমি রেখে এসেছি, তুমি মুখ ধুয়ে এসো।
- না আমি মুখ ধুব না।
- কেন?
- তুমি ধুতে বললে কেন? আচ্ছা তুমি কে? আমাকে এমন টিচারের মত হুকুম করছো কেন?
- তুমি প্রবাল নেবে না?
- হুম। আচ্ছা প্রবাল কি? এই কথাটা শুনলে আমার এমন লাগে কেন?
- আমি কি জানি?
- উফ চারদিকে এত আলো কেন? উফ
- আমার দিকে তাকাও তো সোনা বাবু।
- এই তুমি আমাকে সোনা বাবু বলছো কেন? আমি কি পুচকে নাকি?
- হুম
- আমি মুখ ধুব না।
- আচ্ছা ধুতে হবে না আমার দিকে তাকাও।
- তাহলে বলো আমাকে আর সোনা বাবু বলবে না।
- আচ্ছা বলব না।
- (এক দৃষ্টিতে অনেক ক্ষণ তাকিয়ে থাকে সে) আচ্ছা তোমার নাক ঘামে না কেন? নাক না ঘামলে মেয়েদের কোনো সৌন্দর্য্য আছে নাকি? তুমি ত দেখতে একদমই পচা।
- এবার যাবে না মুখ ধুতে?
- আমি মুখ ধুতে গেলে তোমার নাক ঘামবে?
- হ্যা।
- আচ্ছা তাইলে যাব।
- মুখ ধুয়ে আসে অনিমেষ। কই তোমার তো নাক ঘামলো না?
- লক্ষী ছেলে মত খেয়ে নাও নাক ঘামবে।
- সত্যি ঘামবে তো?
- হুম
- আচ্ছা কে রান্না করেছে? অনেক মজা তো।
- আমি।
- হুম, তুমি দেখতে সুন্দর না হলে ও খুব ভালো রান্না কর।
- আমি কত কিছু রান্না করতে পারি তুমি জান?
- না।
- আচ্ছা পরে রান্না করে খাওয়াব তখন দেখো।
- হুম দেখতে পচা মেয়েরা খুব ভালো রান্না করে।
- তোমার ভালো লাগছে?
- অনেক
- আচ্ছা আমি কি দেখতে খুব পচা?
- হুম
- কেন?
- এই যে তোমার নাক ঘামে না।
- নাক ঘামলে কি হয়?
- সত্যিই তো নাক ঘামলে কি হয়?
- আমি জানবো কি করে?
- কি জানি আমি ও জানি না।
- শত বছর ধরে তোমার অপেক্ষায় আছি আর তুমি বলতে পারলে আমি পচা?
- দেখতে পচা বলেই তো আমার অপেক্ষায় আছো নয়ত তো শিশু শ্রেণীতেই শুরু করতে ছেলে ধরা।
- তোমরা প্ৃথিবীর মানুষ গুলো অনেক স্বার্থপর।
- হুম আমরা মাটি দিয়ে তৈরি তো প্ৃথিবীর অভিকর্ষ শক্তির কারনে আমরা সব কিছু নিজের করে নিতে চাই।
- তাহলে আমাকে করে নিচ্ছো না কেন?
- সত্যিই তো কেনো করে নিচ্ছি না? হুম, কেন করে নেব? তোমার তো নাক ঘামে না।
- নাক ঘামলে কি হতো?
- জানি না। তার তো নাক ঘামতো।
- কার?
- কার? আমিও তো জানি না।
- মানে?
- মানে আমি জানি না। তার নাক ঘামে। সে গজ দাতে হাসে।
- কে? সে কে?
- আমি জানি না। আবছা ছায়ার মত তাকে দেখতে পাই আবার মিলিয়ে যায়।
- সে কি কিছু বলে তোমাকে?
- কি যেন বলতে চায়। আবার মিলিয়ে যায়।
- কি বলতে চায় একটু মনে করে দেখো তো।
- উফ জানি না আমার মাথা যন্ত্রনা করছে। তুমি বড্ড বেশি কথা বলো। এতো কথা বললে কেউ বিয়ে করবে না তোমাকে। এই মরুভূমিতেই পচে মরতে হবে।
- আমি তো কখনো কাউকে বিয়ে করব না।
- দেখতে পচা মেয়েরা এইসব বলেই। কেউ পছন্দ করবে না তো তাই আগে থেকেই বলে আমি কখনো বিয়েই করব না। তবে তার পরেই একটা কিন্তু উচচারন করে। তুমিও করবে।
- না। আমি করবো না।
- আগে বলে ফেলেছি তো তাই। হি হি হি।
- তোমাকে আজ খুব ঝরঝরে মনে হচ্ছে।
- হুম, খুব ভালো লাগছে।
- কেন?
- এই যে তুমি আছো, কতো কথা বলছো তাই।
- আমার কথা কি তোমার ভালো লাগে?
- হুম খুব। তবে তুমি বেশি কথা বলো তখন ভালো লাগে না।
- কেন?
- মাথা যন্ত্রনা করে।
- কেমন লাগে তখন?
- মাথা যেন কেমন ঝিম ঝিম করে। আচ্ছা তুমি এত সাদা কেন?
- সাদা মানে?
- সাদা মানে ফর্সা। পটকা মাছের মত।
- পটকা মাছ কেমন?
- আমি চিনি না। সবাই সাদা মেয়ে দেখলে তাই বলে।
- আর কি বলে?
- টিউব লাইট। বেয়াক্কেল ফর্সা মহিলাদের।
- আমি কিন্তু বেয়াক্কেল না।
- জানি। তুমি অনেক ভালো।
- তাই?
- হ্যা, তোমাকে আমার অনেক ভালো লাগে।
- তাইলে সা্রাদিন এতো বকাঝকা করো কেন?
- ভালো লাগে তাই।
- আচ্ছা করো। সমস্যা নাই। তুমি আমার কাছে আছো এটাই তো অনেক কিছু। কতোদিন পরমেশ্বরের কাছে কেদেছি তোমারকে পাব বলে।
- কেন তুমি আমার জন্য অপেক্ষা করছো?
- কারন আমি যে তোমার ভবিষ্যত ছিলাম তখন। তোমার রুহু স্রৃষ্টি করার সাথে সাথে আমাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। সেই থেকে অপেক্ষা করছি তোমার জন্য। তুমি আসলেই তো আমার মুক্তি। তখন আমি হব তোমার অতীত।
- ধুর আবার শুরু হয়েছে তোমার লেকচার। আমি এত কঠিন কথা বুঝিনা। মাথা যন্ত্রনা করে। তবে যা মনে হচ্ছে তুমি দেখতে পচা, নাক ঘামে না, তাই তোমাকে কেউ বিয়ে করে না। আর সেজন্যই তুমি মরুভূমিতে তাবু পেতে বসে আছো হাবলা কাউকে পেলে এই সব আল-বাল গল্প বলে ঝুলে পড়বে।
- হা হা হা হা। তোমার বুদ্ধির প্রসংশা করতে হয়। বালিশ মাথার উপরে দিয়ে ঘুমাও বুঝি?
- সিম্পল আই কিউ। এই সব বুঝতে বালিশ মাথার উপরে দিয়ে ঘুমাতে হয় না।
- তোমারদের মানুষদের এই এক সমস্যা।
- কি সমস্যা?
- বুঝ কম লাফাও বেশি। সব কিছু বাইরে থেকে দেখো, ভিতরের জিনিসটাকে দেখতে পাও না। চর্ম চক্ষু দিয়ে যা দেখো তাই সত্যি মনে কর। অথচ বুঝতে চাও না তোমাদের চোখের সীমাবদ্ধতাকে। যে বস্তু থেকে আলো এসে তোমাদের রেটিনায় প্রতিবিম্ব তৈরি করে তাই তোমরা দেখতে পাও আর তাই বিশ্বাস করো। কিন্তু অন্ধকারে যাদের বাস কিংবা যে সব সত্তা নিস্ৃত আলোক রশ্মি তোমাদের চোখকে পড়ার ক্ষমতা দেয়া হয়নি তাদের তোমরা অস্বীকার কর। আর যারা মানব চক্ষুর সীমাবদ্ধতা কে বুঝতে পেরে সেই সব সও্বার অস্তিত্ব অনুভব করতে পেরেছে, তারা জানে বেশি তাই লাফায় কম।
- লেকচারবাজী করে কোনো লাভ নাই। আমি তোমাকে বিয়ে করব না কারন তোমার নাক ঘামে না।
- হা হা হা হা, তুমি বুঝি তোমার বউ এর নাক ঘামা দেখার জন্য বিয়ে করবে?
- তা নয়ত কি? তার নাকের ডগায় বিন্দু বিন্দু ঘাম মুক্তার মত জমা হবে; আমি মুছে দেব আবার জমা হবে আমি আবার মুছে দেব আবার জমা হবে। আমার রুমাল ভিজে যাবে তার ঘামে। তবুও বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা থাকবে তার নাকে আমি আর মুছতে পারবো না।
- আচ্ছা এবার হাত ধুয়ে নাও। নয়ত এটো হাতে জমা হয়ে যাবে তুমি আর মুছতে পারবে না। আমাদের আবার হাটতে হবে। এখনো অনেক পথ বাকি।

(চলবে)
আগের অংশ পড়ুন
অস্তিত্বের অন্তরালে: ১

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:১৫

সপ্নাতুর আহসান বলেছেন: সুন্দর।
এত ভাল লিখেন, শিরোনাম এমন কেন? শিরোনামটা ভাল লাগে নাই আমার।

০২ রা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:২৭

সাকিব শাহরিয়ার বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আপনার পরামোর্শটা মনে থাকবে। খুব ভাল শিরোনাম পাচ্ছি না তো ভাই। আমি আবার লেখালেখিতে একটু দু্র্বল তো তাই।

২| ০২ রা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৩৯

রাজীব হোসাইন সরকার বলেছেন: স্বাভাবিক একটা ডায়ালগ পড়লাম। :)

কথার পিঠে কথা বলার শক্তি সবার থাকে না। আপনার আছে। চালিয়ে যান। ভাই

শুভকামনা :)

০২ রা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪৪

সাকিব শাহরিয়ার বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। কথার কথার পিঠে কথা বলেই ত পার করচি এই হাবিজাবি জীবন। আর চালিয়ে যাচ্চি আমার হাবিজাবি চিন্তা।

৩| ০২ রা জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৪

মাক্স বলেছেন: চলুক!

০২ রা জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:১১

সাকিব শাহরিয়ার বলেছেন: চলার পথের সাথে থাকুন। ধন্যবাদ।

৪| ০২ রা জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৩১

সোহাগ সকাল বলেছেন: আপনি তো চমৎকার লেখেন! :-*

০৩ রা জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫৮

সাকিব শাহরিয়ার বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই সোহাগ সকাল ।

অপনাকে স্বাগতম আমার ব্লগে।

৫| ০৩ রা জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৫

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: ভাল লাগলো


পরের পর্বের অপেক্ষায়................. বেশি দেরি কইরেন না।

০৩ রা জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫১

সাকিব শাহরিয়ার বলেছেন: না ভাই বেশি দেরি হবে না। পরবর্তি পর্ব অস্তিত্বের অন্তরালে: ১-৩ নামে আসছে।

৬| ১৩ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:২৬

রাজু মাষ্টার বলেছেন: আই নিড লাইক বাটন হিয়ার X(

১৩ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৫

সাকিব শাহরিয়ার বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই রাজু মাষ্টার

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.