নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিবর্ন স্বপ্নাবলী নিয়ে অর্ধ জীবন্ত এক অস্তিত্ব আমি। খুব সতর্ক পায়ে হেটে চলি এই ভূমন্ডলে ও স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে থাকি শূন্য পানে নিজের অস্তিত্বের ব্যাখ্যা খুঁজতে।

সাকিব শাহরিয়ার

আমি সাকিব শাহরিয়ার। যেহেতু পৃথিবীর বুকে নিজের অস্তিত্ব অনুভব করি সেহেতু আমি একজন মানুষ। তবে বিবেকের কাঠ গড়ায় দাড়ালে কতটা হতে পেরেছি তা বলতে পারি না। তবুও আমি একজন মানুষ বা মানুষ হওয়ার প্রত্যাশায় তপস্যা রত এক সত্তা বলে নিজেকে পরিচয় করিয়ে দিতেই বেশি সম্মান বোধ করি।

সাকিব শাহরিয়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

অস্তিত্বের অন্তরাল ১৪ (সমাপ্ত)

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:২৫

অনিমেষ চৌধুরী রুবাইয়াত ব্যাপারটা ভালো বুঝতে পারছিলো যে তাকে কেউ আর আগের মত নিচ্ছে না। তার মা তাকে আর আগের মত প্রেসার দেয় না। আর অরনী ইসলাম ঋতু তো তার জীবনে এক মৃত অধ্যায়। এখন তার জীবন একটা আনলিমিটেড কোম্পানি। এটার সবগুলো শেয়ার এখন কার হাতে তা সে নিজেও জানে না। প্রানময়ীর জীবন জালের কথাটা আজ বড্ড মনে পড়ছে অনিমেষের। সত্যি, সম্পর্কগুলো হচ্ছে জীবন জালের এক একটা গীট যা মানুষকে খুব শক্ত করে আটকে রাখে আবার এইগুলো খুলে গেলে মানুষের বেচে থাকা অর্থহীন হয়ে পড়ে। অনিমেষ খুবি অবাক হয়ে ভাবতে থাকে সে কি জীবিত না মৃত নাকি এটা জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ! অনিমেষ এর চিন্তা স্থির হয়ে যায় এটা ভেবে যে কিভাবে এখনো প্রানময়ীর সব কথা তার মনে আচ্ছে? ডাক্তারি রিপোর্ট অনুযায়ী তো সে ছিল এক হ্যালুসিনি পেসেন্ট আবার তার পড়ার টেবিলে প্রানময়ীর দেয়া প্রবালটাও আছে। কে রেখে গেছে কে জানে? হয়ত প্রানময়ীই রেখে গেছে। তার জীবনে প্রানময়ীর অধ্যায়টা সে সবার কাছে গোপন রাখতে চায়। কারন পৃথবীর মানুষ সত্যিই বুঝে কম লাফায় বেশি। যা ওরা বুঝে না তাদের সাইন্স অনুযায়ী তা মিথ্যে। যা ওরা দেখে না তাদের সাইন্স অনুযায়ী তা ইলুশান।

- আচ্ছা তুমি পৃথিবীর মানুষ কে ওরা ওরা করছো কেন? তুমি কি এদের বাইরের কেউ?
- অহ প্রানময়ী! তুমি এসেছো! পৃথিবীর ভিসাও পেয়ে গেছো মনে হচ্ছে।
- হুম
- কখন আসলে?
- এই তো কিছুক্ষণ হলো। চুপটি মেরে তোমার কথা শুনছিলাম ।
- আমি তো কিছু বলছিলাম না, ভাবছিলাম।
- তুমি বোধহয় ভুলে গেছো যে আমি তোমার ভাবনা শুনতে পাই।
- ও হ্যা ভুলে গিয়েছিলাম। পৃথিবী তে তোমাকে স্বাগতম। কি খাবে? আদা লেবুর চা? সাথে বিস্কিট ও আছে লাঠি বিস্কিট। বাজার থেকে সবচেয়ে শক্তটা কিনে এনেছি। কারন আমরা মানুষেরা সহজলভ্য কোনো কিছুকে কোনো মূল্য দেইনা। তাই আমার কাছে সহজ খাদ্য কোনো কিছুর কোনো মূল্য নেই সব অখাদ্য। কষ্ট সাধ্য খাদ্য হচ্ছে খাদ্য।।
- না, তোমার লাঠি বিস্কিট তুমিই খাও। আমি তোমাকে দেখতে এসেছি ।
- আচ্ছা দেখতে থাকো, আমি একটা চিঠি লিখব। আমাকে বিরক্ত করবে না।
- হুম জানি, তুমি এখন অরনী ইসলাম ঋতুকে চিঠি লিখবে তাই না?
- হুম। তোমার কোনো সমস্যা?
- না।
- আচ্ছা প্রানময়ী সূর্যের আলা টা একটু বেশি মনে হচ্ছে একটু কমিয়ে দাও না। আর আকাশে দুইটা চাদ নিয়ে আস একটা আমার আর একটা ঋতুর। এখন তো তার বিয়ে হয়ে গেছে তাই এক চাদের আলো দুজনের গায়ে মাখা ঠিক না। তাই না প্রানময়ী?
- তুমি তো এখন পৃথিবী তে আছো। আর পৃথিবীর কোনো ক্ষমতা পরমেশ্বর আমাকে দেয়নি।
- অহ হ্যা।
- তবে একটা কাজ করতে পার।
- কি?
- পৃথিবীর মানুষের কল্পনা শক্তি খুবই প্রখর। ওরা একাগ্রচিত্তে যা ভাবে সেই সত্ত্বাই তাদের মনে চরম হয়ে উঠে। তুমি চোখ বন্ধ কর তারপর বিশ্বাস করে ভাবো আকাশে চাদ দুটো । তারপর ভাবো ঋতু তোমার পাশে বসে আছে। দেখবে ঋতু সত্যি সত্যিই তোমার পাশে বসে আছে। আর দুই চাদের দুটো বিভক্ত অলোকরশ্মিতে ভিজে যাচ্ছে দুজনের গা। তবে চোখ খুলো না। তোমাদের সবচেয়ে বেশি ধোকাবাজ ইন্দ্রিয় এটি যদি ও একেই তোমারা সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস কর। তোমাদের সবচেয়ে আদিমতম পাপের উদ্দীপক ছিল এই ইন্দ্রিয়। জ্ঞানের পাশাপাশি এই ইন্দ্রিয় দিয়েই প্রবেশ করে লোভ, কাম, হিংসা, ক্রোধ আর অহংকার। চোখে দেখেই তোমরা বিশ্বাস করতে থাক সব নশ্বর সত্ত্বাকে। কিন্তু অবিনশ্বর সত্ত্বাগুলো কখনো তোমাদের চোখে পরে না।
- হুম! ঠিক বলেছো প্রানময়ী । চোখ বন্ধ করলে মনের মধ্যে স্রষ্টা নেমে আসে আর চোখ খুললে তিনি সৃষ্টিতে মিলিয়ে যান।
- বাহ। তুমিও দেখছি এখন এইসব বুঝো । এখন তোমার মাথা যন্ত্রণা করে না?
- না। আমি এখন প্রবাল পেয়েছি না?
- হুম! আচ্ছা প্রবাল পেয়ে কি শিখলে?
- শিখলাম পৃথিবীটা একটা মায়াজাল বা ইলুশন। যেখানে সবাই উটের মত মরীচিকা নামক সুখের পেছনে ছুটছে যেভাবে আমি প্রবাল বা অরনীর পিছনে ছুটেছিলাম। অরনীকে পাইনি তবে প্রবাল পেয়েছি যদিও দুটোই এখন আমার কাছে মূল্যহীন। কারন আমি পৃথিবীর নিগূঢ়তম সত্যিটা জেনে গিয়েছি।
- কি সেটা।
- পৃথিবীর সুখগুলো সব আলেয়া আর আশাগুলো সব মরীচিকা তাই পৃথিবীতে যে যত কম জানে সে তত সুখী অথচ মানুষ সুখী হতে চেয়ে বেশি জানতে চেয়ে নিজের সুখের গলায় মনের অজান্তে ছুরী চালায়। অরনীর হাসবেন্ড কি জানে যে বিয়ের আগে অরনী একজনকে তারই মত করে ভালোবাসতো। আজকে তার জন্য যে অস্থিরতা কিছুদিন আগে সে অস্থিরতা ছিল আর একজনের জন্য। হয়ত জানে না। জানেনা বলেই সে সুখী। পৃথিবীর কিছু জিনিস পরমেশ্বর নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। রেখে দিয়েছেন এজন্য যাতে মানুষ সুখী হয়। সেগুলোর মধ্যে মানুষের মন একটা।
- পৃথিবীর মানুষ সম্বন্ধে তোমার ধারনা কি?
- আমরা সবাই অন্ধের হাড়ি ভাঙ্গা খেলার খেলোয়াড়। যাদের চোখে পরমেশ্বর পরম যত্নে একটা রুমাল বেধে দিয়েছেন। কিন্তু আমরা সে রুমালটাকেই আমাদের চোখ বলে থাকি। কেউ কেউ চোখের রুমালটা খুলে আসল চোখটাকে বের করতে পারি যাকে আমরা অন্তরচক্ষু বলি আর অন্যরা রুমালটাকেই চোখ মনেকরে অন্ধকারে পড়ে থাকি জীবন ভর। আর আমদের সবারই লক্ষ্য সুখ লাভ যা সামনে রাখা হাড়ির মধ্যে লুকিয়ে আছে। আমরা চার প্রকারের মানুষ আছি পৃথিবীতে। প্রথম প্রকারের ওরা রুমাল চোখে নিয়েই হাড়ি হাতড়ে বেড়ায়। কিন্তু কখনো সুখ হাড়ির খুজ পায় না। দ্বিতীয় শ্রেণীর লোকেরা চোখে রুমাল নিয়েই সুখ হাড়িটা ভেঙ্গে ফেলে। তারাই প্রকৃত সুখী। তারা বুঝে কম তাই চোখের রুমাল খুলতে পারে না আর ভাগ্যবান তাই সুখ হাড়িটা খুজে পায়। তৃতীয় শ্রেণী র লোকেরা চোখের রুমালটা অল্প একটু হাটার পরেই খুলে ফেলে ফলে খেলা থেকে ডিসকোয়ালিফাইড হয়ে যায়। কিন্তু সুখ হাড়ি ও তার ভিতরে লুকিয়ে রাখা সুখটাকে সে খুব কাছ থেকে দেখতে পায়। দেখে প্রচন্ড হতাশ হয়ে বলে আমার চোখ বাধা থাকলেই ভালো ছিল। এত ছোট সুখের জন্য মানুষ এরকমভাবে পাগলা হয়ে যায়!! আর চতুর্থ শ্রেণীর লোকেরা কখনো খেলায় নামে না। তারা আগেই রুমাল খুলে সুখটাকে দেখে নেয়। আমি তৃতীয় শ্রেণীর মানুষ প্রাণময়ী আমার চোখের রুমাল খুলে গেছে। সুখহাড়ির ছোট্ট সুখটাকে এখন আমি স্পষ্ট দেখতে পাই।
আচ্ছা, মৃত্যু কি?
মৃত্যু হচ্ছে স্বত্বার আকার বিনাশ। নিরাকার স্বত্বা আকার পায় মানব জন্মে আবার সাকার স্বত্বা আকার হারায় মৃত্যুতে।
জীবন কি?
জীবন হচ্ছে স্বত্বাবর্তন- মানে স্বত্বার আবর্তন।
আর ইশ্বর?
ইশ্বর হচ্ছেন পরম স্বত্বা। সকল স্বত্বার উৎস । অফ আমি আর পারছি না প্রানময়ী। আমার মাথা যন্ত্রণা করছে।
আচ্ছা শান্ত হও। তুমি চিঠি লিখবে না?
হুম।
তো খাতা কলম কই?
মনে মনে লিখব।
আচ্ছা।
অরনী তোমার চোখের টিউমারটা ভালো হয়েছে? তোমার ছেড়া বোরখাটাতে কি আভিজাত্যের সুতো লেগেছে? তোমার ছেলেটা কি তোমাকে আমার মতোই বিরক্ত করে? এখন কি তুমি আমার উপস্থিতি অনুভব কর বর্ষার প্রথম বৃষ্টি যখন তোমায় স্পর্শ করে? এখনো কি তুমি হাতে মেহেদি পড়? কার জন্য পড় অরনী? আজ বুঝলাম ভালবাসার কোনো রঙ নেই। এটা গিরগিটির মত রং বদলায়। কখনো সেটা নীল; কখনো রক্তলাল আবার কখনো সাদাকালো; কখনো কখনো আবার বিবর্ণ। আমার ভালোবাসার রং এক সময় ইনীল ছিলো; বহুবছর শেওলা পড়ে সেটা বিবর্ণ হয়ে গেছে অরনী। তুমি ছিলে আমার রং মিস্ত্রি যে আস্তে আস্তে রঙিন করে তুলেছিল আমার ভিতর, আমার বাহির ও আমার স্বত্বাকে। প্রখর রোদে হাজার বছর পুড়তে পুড়তে পাথর যেমন করে প্রেমে পড়ে বৃষ্টির তেমনি আমি প্রেমে পড়েছিলাম তোমার। পাথরের মত তখন আমর বুকেও জন্ম নিয়েছিলো ভালোবাসার শৈবাল। প্রখর রোদে এখন তা পুড়ে খাক।

অরনী চোখ বন্ধ কর। তোমার চোখ খোলা থাকলে আমার অস্তিত্ব তুমি অনুভব করতে পারবে না। আমাদের সবচেয়ে বেশি ধোকাবাজ অঙ্গ এটি যা ক্রমে ক্রমে আমাদের চিন্তা শক্তিকে নষ্ট করে দিচ্ছে। আমাদের চাওয়া পাওয়ার মধ্যে ধীরে ধীরে কাম আর লালসার প্রলেপ এটে দিচ্ছে। সামষ্ঠিকভাবে সমাজের অস্থিরতা বাড়ছে। গরীবেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে বিত্তবানদের বিত্ত বৈভব দেখে আর বিত্তবানরা মাণষিক ভাবে আরো বেশি বিত্তহীন হয়ে পড়ছে তার চেয়ে বেশি বিত্তবানদের বিত্ত বৈভব দেখে। ফলে সবাই পাগলা কুকুরের মত ছুটছে কিন্তু কোথায় ছুটছে জানা নেই। তাই আজ সামষ্ঠিক ভাবে সবার চোখ বন্ধ করা উচিত।

অরনী চোখ বন্ধ কর। চেয়ে দেখো আকাশে দু'টো চাদ উঠেছে । একটি তোমার আর একটি আমার। তোমার চাদের আলো নীল আর আমারটা রূপালি । দক্ষিণা বাতাসে তোমার চাদের আলো আছড়ে পড়ছে আমার গায়ে আর আমারটা তোমার। চোখ খুললে ভালোবাসা সসীম আর বন্ধ করলে তা অসীম । এই যে, চোখ খুললে তুমি লাবিব সাহেবের আর বন্ধ করলে আমার। পুরুপুরিভাবে আমার। এই দুনিয়ার একচ্ছত্র অধিপতি আমি।

এহেম! জনাব, আপনি আবার ভুল করছেন।
কি প্রানময়ী, তুমি শুনছিলে আমার কথা?
হুম।
আচ্ছা, তোমার তো পৃথিবীতে আসার কথা ছিল না, তাই না?
হুম।
তাহলে আসলে কিভাবে?
আমি বলেছিলাম না তুমি চলে যাওয়ার পর থেকে আমার ভবিষ্যৎ কাল শুরু হবে যেটা এক অনিশ্চিত সময়। আমার অনিশ্চিত সময় পরমেশ্বর তোমার সাথে বেধে দিয়েছেন। আমি তোমার সাথে বাধা পড়ে গেছি অনিমেষ ।
যাক, তাইলে পাগলামোর একটা সঙ্গী পাওয়া গেল।
হুম।
আচ্ছা বললে নাতো আমি কোথায় ভুল করছি আবার।
বলার সময় দিলে কোথায়? একটার পর একটা প্রশ্ন তো করেই যাচ্ছো।
অহ! আচ্ছা বলো।
তুমি আবার পৃথিবীর ছোট্ট পাওয়া না পাওয়ার যন্ত্রণার ফাদে পা দিয়েছো অনিমেষ । অরনী তোমার মনে প্রচন্ড দুর্বলতা সৃষ্টি করেছে। তুমি আবার আমিত্বে বিশ্বাস শুরু করেছো। নিজের করতে চাইছো যা তোমার না তাকেও। তোমার মনের এই অবস্থাকে যদি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারো তবে আবার তুমি একই ফাদে পা দেবে। আমি সেটাকে বলি আমিত্বের ফাদ। মানে যা আমার না তা আমার করার জন্য পাগলা ঘোড়ার মত ছুটা তার পিছু পিছু। ভেবে দেখো অরনী তোমার ছিলো না তাই তুমি পাও নি আর প্রবাল গুলো তোমার ছিলো তাই তুমি তা পেয়েছো যদিও তুমি দু'টোর পিছনেই ছুটেছিলে পাগলের মত। তাই পৃথিবীতে কি পেলে আর কি পেলে না তা নিয়ে অস্থির না হয়ে প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ কর। তুমি পৃথিবীতে কি নিয়ে এসেছিলে? যা পেয়েছো এখানেই পেয়েছো আর যা হারিয়েছো তাও এখানেই হারিয়েছো। যেমন শূন্য হাতে একদিন পৃথিবীতে প্রবেশ করেছিলে তেমনি শূন্য হাতে একদিন পৃথিবী ছেড়ে যাবে। পৃথিবী নামক সরাইখানায় তোমরা সবাই মুসাফির।
ঠিক বলেছো প্রানময়ী। আচ্ছা তুমি কি অরনীকে নিয়ে জেলাস?
কেন?
নাহ। এমনি জিজ্ঞেস করলাম। আমি হলে তো খুবই জেলাস হতাম।
তোমরা তোমাদের বুঝনা তাই জেলাস হও।
বাহ! তুমি বুঝি আমাদের খুব ভালো বুঝ?
হুম।
তাইলে বলনা কি বুঝো ।
তোমাদের প্রত্যেকের মনই অসং্খ্য কেবিন বিশিষ্ট একটা অদৃশ্য লঞ্চ যা সময়ের স্রোতে হেলে দুলে চলছে মহাকালের গর্ভে। এখানে কারো কারো জায়গা হয় কেবিনে আবার কারো কারো ডেকে। এ লঞ্চের শয়ে শয়ে কেবিন খালি পড়ে থাকে যেখানে কেউ জায়গা পায়না আবার কেউ কেউ এককোণে পরম যত্নে একটা কেবিনে ঘুমিয়ে থাকে। তোমার স্বত্বা যখন যে কেবিনের দরজায় কড়া নাড়ে সে মানুষটার অস্তিত্ব তোমার মনে প্রবল হয়ে উঠে। তবে তোমরা মানুষেরা একটা ভুল কর বার বার।
কি সেটা?
তোমরা তোমাদের বহুকেবিন বিশিষ্ট মনটাকে কখনো বুঝতে পার না। তোমরা মনে কর এটা একটা এক কামড়ার ঘর আর সেটা ভেবে সবাই সেটার দখল নিতে উঠে পড়ে লাগ আর তার ফল সরূপ কেবিনের জায়গাটুকু হারাও। অরনী ইসলাম ঋতু তোমার জীবনে ছিলো, আছে, থাকবে। চোখ বন্ধ কর। তোমার মনের চোখ দিয়ে ভালো করে দেখ, ঐ যে সাদাকালো কেবিনটাতে অরনী ঘুমিয়ে আছে। তাই যে ঘুমিয়ে আছে তাকে ঘুমাতে দাও। অযথা তাকে ডেকে কেন নিজের অস্থিরতা বাড়াও?
হুম ঠিকি বলেছো, আচ্ছা, তুমি কোন কেবিনটাতে আছো প্রানময়ী?
এই যে মাঝখানের নীল কেবিনটাতে। তবে ঘুমিয়ে না, সদা জাগ্রত তোমার জন্য।
আমি তোমার নীল কেবিনটাতে আসতে পারি?
শত সহস্র বছর ধরে সেটা তোমার জন্যেই খুলা।
সময়ের স্রোতে হেলে দুলে মহাকালের গর্ভে ভেসে চলছে অনিমেষ চৌধুরী রুবাইয়াতের লঞ্চ। এখন তার স্বত্বা বাধা পড়েছে প্রানময়ীর নীল কেবিনে। শয়ে শয়ে কেবিন এখনো খালি পড়ে আছে। স্বত্বাবর্তনে হয়ত সেগুলো পূর্ন হয়ে উঠবে নয়ত কেউ জানবেই না অনিমেষের সে শূন্য কেবিন গুলোর খবর।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম।

অনেককে দেখেছি- প্রথম হলে চা চায়, কেন?

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৩৫

সাকিব শাহরিয়ার বলেছেন: প্রথম হলে চা চায়, কেন? - মানে বুঝলাম না। ধন্যবাদ ধৈর্য সহ পড়ার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.