নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হযবরল একটি মানুষের উল্টাপাল্টা লেখার স্তুপ।

ক্লোন বিটস্

লেখালেখি করতে অনেক বোরিং লাগে। কিন্তু ২৪ ঘন্টায় দেখা দিবাস্বপ্ন গুলোর দলিল করতেই হয়।

ক্লোন বিটস্ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বড় গল্প: "নতুন স্বপ্ন" পার্ট ৩

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৩৮



এম্বুলেন্সে বসে আছি। সবাইকে কল দিতে দিতে মোবাইলের টাকা শেষ। বড়ই আপসোস হচ্ছে। সামনে এম্বুলেন্স বেডে নিশাতের বাবা মহোদয় চিৎপটাং হয়ে শুয়ে আছেন। আজ সকালে নিজের বাইকটা নিয়ে মনে হয় রাইডে বের হয়ে ছিলেন। বাইকটারই বা কি দোষ। আর কত সহ্য করতে পারে একটা যন্ত্র। শেষ পর্যন্ত বাইকের ইঞ্জিন অক্কা পেল। সামনের চাকাটা মনে হয় রাগে ক্ষোভে বাইক থেকে আলাদা হয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি। বাইকের উপরে বসা মনিব ততখনে টাইটানিকের ডুবন্ত যাত্রীর মতো মহাসড়কে সাঁতার কাটার জন্য ঝাঁপ দিয়েছেন। বেটার মাথার বুদ্ধি কি লোপ পেয়েছে নাকি। কথায় আছে বিপদেই মানুষের বুদ্ধির পরিমান বের হয়ে আসে। রাস্তায় শুয়ে তিনি যখন ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন তখন আমাদের আমজনতা তা রেকর্ড করতে ব্যস্ত। সোশ্যাল মিডিয়াতে ভিউ আর ১ লাইক= ১ প্রেয়ারের অভাব হবে না। নিজের দামি শার্ট টা খুলে রক্ত বের হওয়ার জায়গায় চাপা দিয়ে রাখলাম। উপায় না দেখে ছিঁড়ে টাইট করে বেঁধে দিলাম। আহত এই বিশালাকার ব্যক্তিকে কোনো যানবাহন রাইড দিতে রাজি হচ্ছিল না। আমিও তখন হিতাহিত জ্ঞানশূন্য। এম্বুলেন্স আসতেই স্বস্থির নিঃস্বাস ফেললাম। যাহ বাবা.. আর জন্মে কোনো ভিড়ের আশেপাশে দিয়েও যাবো না। এম্বুলেন্সের লোকজনের সাথে আমি সহ মোট ৪ জন মিলে উনাকে তুলতে সক্ষম হলাম। হাসপাতালে নিয়ে আসার 20 মিনিটের মধ্যে মোটামোটি সবাই হাজির। আন্টি আর ভাবি ততখনে কান্না জুড়িয়ে দিলেন। আমাকে কেউ একটা ধন্যবাদ পর্যন্ত দেয় নি। উল্টা বাবা এসে জেরা শুরু করে দিলেন। কিছুক্ষন পর নিশাতের আগমন ঘটলো। দৌড়ে এসে মাকে জড়িয়ে বাচ্চাদের মতো কেঁদে দিলো। একজন নার্স এসে জানিয়ে গেলো যে আহত ব্যক্তির রক্তের প্রয়োজন। ব্লাড ব্যাংকে ঐ টাইপের রক্ত নেই। অনেক রেয়ার ব্লাড। উনার ওজনের মতো উনার রক্তও সেই রেয়ার। পরিবারের সবাই এগিয়ে গেল রক্ত দিতে কিন্তু কারোই ম্যাচ হচ্ছে না। নিশাতের তখন প্রায় বেহুশ হওয়ার জোগাড়। নার্স আমাকে দেখিয়ে বললো ইনি কে? তখন সবার আমার কথা মনে পড়লো। নিশাত আমার দিকে ইয়া চোখ বড় করে তাকালো যেন কোনো ভ্যাম্পায়ারের রক্ত পিপাসা লেগেছে। প্রায় লাফ দিয়ে এসে আমাকে ধরে নিয়ে গেল।
এই পর্যন্ত ২ ব্যাগ রক্ত নিয়ে গেছে। পাইছে টা কি আমারে?! উনাকে বাঁচাইতে গিয়ে এখন আমার যায় যায় অবস্থা। কিছুক্ষন পর নার্স এসে হাতে একটা জুসের প্যাকেট ধরিয়ে দিয়ে গেল। আপাতত আর রক্তের দরকার নেই। ইনজুরড ব্যক্তি এখন বিপদের বাইরে। বেড ছেড়ে উঠতেই মাথা সেই চক্কর দিয়ে উঠলো। বাইরে এসে দেখলাম সবাই বসে আছে। ভাবি ভাইয়ার সাথে বসে আছে। আব্বু একটা কাগজে কি যেন দেখছে। আম্মু আন্টিকে সান্তনা দিয়ে যাচ্ছে। নিশাত একা একপাশে বসে আছে। আমি জুস টানতে টানতে গিয়ে ওর পাশেই বসলাম। মেয়েটার গালে চোখের পানি শুকিয়ে দাগ পড়ে গেছে। কিছুক্ষন পর যা হলো তাতে রক্ত দেয়াটা সার্থক মনে হলো। নিশাত হেলে আমার কাঁধে মাথা রাখলো। আমি জুসের প্যাকেটটা অমনি ধরে আছি একদম নড়াচড়া করছি না। মেয়েটার মে বি হুঁশ নেই তাই আমার কাঁধে মাথা রেখে শুয়ে আছে। কেমন জানি একটা রিলিফ ফীল হলো ভিতর থেকে।
আমি ড্রাইভ করছি আমার পাশের সিটে নিশাত বসে আছে। ভাইয়া আর ভাবি ২ জনে পিছনের সিটে। নিশাত জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। ভাবি মনে হয় অনেক বেশি ক্লান্ত তাই ঘুমিয়ে পড়েছে। বাবা আমাদেরকে বাসায় পাঠিয়ে দিলেন। উনারা আজ রাতটা ঐখানে থাকবেন প্রয়োজনে কল করবেন বলে জানিয়েছেন। বেয়াই কম বন্ধুর প্রতি বাবার টান দেখে মনটাই ভালো হয়ে গেল। রাতে সবাই না খেয়েই ঘুমিয়ে গেলো। অবশ্য আমার দ্ধারা তা সম্ভব হয়নি। সবাই ঘুমিয়ে পরার পর আমি উঠে এসে ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে সেই ভূরিভোজ করেছি। নিশাত আমার রুমটায় শুয়েছিল। সকালে উঠে দেখি বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমার রুমে ঢুকা টের পেয়ে পিছনে ফিরে তাকালো। "দুলাভাই…আপু কই?" আজ এতোদিন পর এই প্রথম কথা বললো। জানালাম যে তারা সকালে বের হয়ে গেছে হসপিটালের উদ্দেশ্যে। "কিচ্ছু হয় নি তো আবার?" তার মধ্যে চিন্তা দেখা দিলো। "আরে না না.. আঙ্কেল এখন অনেকটা ভালো আছেন। স্পীডি রিকভারি হচ্ছে উনার"। কথাটা শুনে মনে হয় অনেকখানি স্বস্তি পেলো। "আমিও যাবো"। এই যা শুরু হয়েছে আবার। "আচ্ছা.. ঠিক আছে। নাস্তাটা আগে সেরে ফেলো রাতেও কিছু খাও নি।" রাতের কথা মনে পড়তেই ওর দিকে তাকালাম। ও হয়তো বুঝতে পেরেছে ব্যাপারটা। অন্যদিকে তাকিয়ে "হুম" বলে জানান দিলো যে উনি ব্রেকফাস্ট করতে রাজি। ভালোই তো.. কাজ সব আমিই করছি, সবাই কি আমাকে তাদের পি.এ ভাবা শুরু করলো নাকি? আমি গিয়ে রিকোয়েস্ট করছি আবার নাস্তাও আমিই রেডি করবো আর মহারানী দাঁড়িয়ে হুম হাঁ করবেন।খুব ভালো। চা আর কফি ২ টাই বানালাম সাথে ঘরের কিছু ফ্রেঞ্চ বান ছিল আর ডিম। সব মিলিয়ে আদর্শ নাস্তা।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২৬

ক্লোন বিটস্ বলেছেন: পার্ট ৪ এখানে :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.