নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অামি শাহজাহান অালী\nসবে মাত্র এমএসএস অর্থনীতিতে মাস্টার্স শেষ করলাম। ব্যাচেলার আছি। বর্তমানে ঢাকার একটি প্রাইেভট স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসাবে নিয়োজিত আছি। গল্প, কবিতা, সংবাদপত্র পড়তে ভালবাসি।

শাহজাহান আলী

খুব খারাপ মানুষ না

শাহজাহান আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

চার বন্ধুর কথা

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:০২

এক রাস্তায় চার জনের দেখা হলো। প্রথম জন রাজপুত্র। কথায় বার্তায় আচার আচরণে তার সেই রাজকীয় মানসিকতা স্পষ্ট। দ্বিতীয়জন ছিল সম্পদশালী ব্যবসায়ীর পুত্র। সে ছিল বেশ সচেতন এবং প্রখর মেধাবী। তৃতীয় জন ছিল লম্বা এবং দেখতে বেশ সুন্দর। যে কেউই তাকে দেখে আকৃষ্ট হতো। চতুর্থ জন ছিল কৃষকের ছেলে। সে ছিল বেশ শক্তিশালী এবং সুঠামদেহি। নিয়তি তাদেরকে নিয়ে এসেছে এক মোহনায়। চারজনই রাস্তায় এসে পরিচিত হলো একে অপরের সাথে। সে সময় দুর্ভিক্ষ চলছিল চারদিকে। গায়ের জামা ছাড়া আর কিছুই তাদের সাথে ছিল না। তারা হাঁটতে হাঁটতে কীভাবে আয় রোজগার করা যায় সে ব্যাপারে কথা বলছিল।
রাজপুত্রের মাথার চুল উড়ছিল বাতাসে। সে তার নয়া বন্ধুদের বললো: তকদিকের ওপর কারও কোনো হাত নেই।

ব্যবসায়ীর ছেলে বললো: জ্ঞান এবং প্রজ্ঞাই হলো সবচেয়ে বড় কথা। জ্ঞান বুদ্ধির স্থান সবকিছুর উপরে। দুঃসময়ে বা বিপদে আপদে চিন্তাশক্তি এবং বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়েই কেবল মুক্তির উপায় খুঁজে পাওয়া যেতে পারে।
সুদর্শন যুবক বললো: কিন্তু আমার মনে হয় সৌন্দর্য হলো মানুষের সহযোগী। সমস্যায় পড়লে ওই সৌন্দর্যকে কাজে লাগানো যেতে পারে।
কৃষকের ছেলে বললো: তোমাদের সবার কথা একদিকে আর চেষ্টা প্রচেষ্টা বা কর্মতৎপরতা একদিকে। মানুষের বিশেষ করে পুরুষের পরিচয়ই হলো কাজের মধ্যে। যে কাজ করবে, নিজের বাহুবলকে কাজে লাগিয়ে রুটি রুজির ব্যবস্থা করবে তার উন্নতি হবে।

এভাবে কথা বলতে বলতে চার বন্ধু রাস্তায় হাঁটছিল। যেতে যেতে দূরে একটা শহর দেখা গেল। শহর দেখে সবাই খুশি হয়ে গেল। মনে হলো যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পেল। কিছুক্ষণ পরেই তারা শহরে পৌঁছে গেল। পৌঁছেই তারা একটু থামলো এবং খানিকটা ক্লান্তি দূর করে নিলো। এরপর ভাবলো কী করে ক্ষুধা মেটানো যায়। কারও কাছেই টাকা-পয়সা ছিল না। পরনের পোশাক ছাড়া সম্পদ বলতে আর কিছুই ছিল না তাদের কাছে। রাজপুত্র কৃষকের ছেলেকে বললো: তোমার কথাটা এখন প্রমাণ করো তো! তুমি বলেছিলে সব কিছুই নির্ভর করে কর্মতৎপরতার ওপর। তুমি এখন শহরে যাও, বাহুশক্তিকে কাজে লাগিয়ে পয়সাপাতি সংগ্রহ করে আনো, অন্তত কাল পর্যন্ত যাতে চলে।

কৃষকের ছেলে বললো: ‘ঠিক আছে’। মেনে নিলো সে এবং সেদিনের জন্য হালাল রুজির সন্ধানে বেরিয়ে পড়লো। সে জানতো ওই শহরে এতো দ্রুত কাজ পাওয়া যাবে না। সেজন্য সে সিদ্ধান্ত নিলো শহরের বাইরে যাবে এবং কিছু জ্বালানি সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করবে। ওই জ্বালানি বিক্রির টাকা দিয়ে সবার জন্য খাবার দাবারের আয়োজন করবে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সে দ্রুত চলে গেল কাজে। দুই বোঝা লাকড়ি সংগ্রহ করলো এবং কাঁধে তুলে নিয়ে সোজা চলে গেল শহরের দিকে। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো বাজারে গিয়ে লাকড়িগুলো অতি দ্রুত বিক্রি করে ফেললো সে। লাকড়ি বিক্রি করে এক দেরহাম পেল এবং তা দিয়ে খাবারের আয়োজন করে বন্ধুদের উদ্দেশ্যে রওনা হলো।

বন্ধুরা তো অপেক্ষা করছিল কখোন আসবে সে। বন্ধুদের কাছে ফেরার পর শহরের ঢোকার দরোজায় সে লিখে রাখল: ‘একদিনের শ্রমের মূল্য এক দেরহাম’। ওই রাতে সবাই পেট পুরে খেয়ে ভালোভাবেই ঘুমিয়ে পড়েছিল। পরের দিন সকালে ঠিকঠাকমতো ঘুম ভাঙল সবার। আজ সুদর্শন যুবকের পালা। সুদর্শন যুবককে শহরে যেতে হবে এবং সবার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করে প্রমাণ করতে হবে মানুষের সৌন্দর্যটাই হলো আসল ব্যাপার। কৃষক বন্ধু তো তাকে বলেই ফেললো: তুমি যে বলো মানুষের রূপ, সৌন্দর্য- এগুলো অনেক সাহায্য করে। এখন তুমি কি তোমার সুদর্শন রূপের সাহায্য নিয়ে আমাদের জন্য আজ ঠিকঠাকমতো খাবারের ব্যবস্থা করতে পারবে?

সুদর্শন যুবক কোনো জবাব না দিয়ে শহরের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়লো। শহরে গিয়ে এ গলি ও গলি ঘুরঘুর করলো। কিন্তু ঘোরাঘুরি করে তো আর রুটি রুজি করা যায় না। এখন সে ভাবলো ‘তার কথাটা বলা ঠিক হয় নি’। ভীষণ অনুতপ্ত হয়ে পড়লো সে। কিন্তু এখন তো এসব ভেবে লাভ নেই। এখন কী করা যায়, টাকা কীভাবে সংগ্রহ করা যায় এসবই ভাবছিল সুদর্শন যুবক। ওদিকে বন্ধুরা তো সবাই অপেক্ষায় আছে খাবারের জন্য। এসব ভাবতে ভাবতে একটা গাছের নীচে বসে পড়লো সে। ক্লান্তিতে ঘুম এসে গেল তার।

কিছুক্ষণ পর এক ধনী মহিলা ওই গাছের নীচে দিয়ে যাচ্ছিল। সে অবাক হয়ে দেখলো সুদর্শন যুবক কী চমৎকারভাবে ঘুমোচ্ছে। মহিলা ধরেই নিয়েছিল ওই যুবক এই শহরে নতুন এসেছে। কেননা এর আগে তাকে আর কখনো দেখে নি সে। যুবকের জন্য তার অন্তর পুড়ে গেল। যুবকের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে মহিলা তার চাকরকে বললো: ‘একে বাসায় নিয়ে গেলে ভালো হয় না! হয়তো টাকা পয়সাও তার সাথে নেই, ক্ষুধার যন্ত্রণায় ঘুম এসে গেছে’। মহিলার কথা শুনে চাকর যুবকের কাছে গেল। তাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে বললো: ঘুমাচ্ছো কেন, ওঠো ওঠো! তোমার কপাল খুলে গেছে। আমার মনিব তোমাকে তাঁর বাসায় দাওয়াত করেছে। চলো! খাওয়া দাওয়া করবে এবং বিশ্রাম নেবে।

সুদর্শন যুবক বললো খানিক চিন্তা করলো। তার মনে হচ্ছিল সে স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু চাকর যখন আবারও ডাকলো তখন উঠে দাঁড়ালো এবং চাকরকে অনুসরণ করলো। চাকর আবারও বললো: তোমার কপাল খুলে গেছে হে! যুবক এ কথা শুনে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলো। ধনী মহিলার বাসায় গিয়ে যুবক ভালোভাবে খেলো, বিশ্রাম নিলো। দুপুরে ফেরার সময় ওই মহিলা তাকে ৫০ দেরহামও হাতে বুঝিয়ে দিল। ওই টাকা দিয়ে বন্ধুদের জন্য ভালোভাবে খাবারের আয়োজন করলো এবং শহরের দরোজায় লিখে রাখলো: সৌন্দর্যের এক দিনের মূল্য ৫০ দেরহাম। বন্ধুরা ঠিকঠাকমতো খাওয়া দাওয়া করলো এবং তার অনেক প্রশংসা করলো।
বাকি অংশ পরের দিন বলবো...

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:৩৩

এহসান সাবির বলেছেন: পরের পোস্টে জানব বাকি অংশ।

২| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩১

কলমের কালি শেষ বলেছেন: চমৎকার । চলুক ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.