![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পশ্চিমা দেশগুলোতে প্রেমিক-প্রেমিকাদের মধ্যে এ দিনে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, এমনকি পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও উপহার বিনিময় হয়। উপহার সামগ্রীর মধ্যে আছে পত্র বিনিময়, খাদ্যদ্রব্য, ফুল, বই, ছবি, ‘Be my valentine’ (আমার ভ্যালেন্টাইন হও), প্রেমের কবিতা, গান, শোক লেখা কার্ড প্রভৃতি। গ্রীটিং কার্ডে, উৎসব স্থলে অথবা অন্য স্থানে প্রেমদেব (Cupid)-এর ছবি বা মূর্তি স্থাপিত হয়। সেটা হ’ল একটি ডানাওয়ালা শিশু, তার হাতে ধনুক এবং সে প্রেমিকার হৃদয়ের প্রতি তীর নিশান লাগিয়ে আছে। এ দিন স্কুলের ছাত্ররা তাদের ক্লাসরুম সাজায় অনুষ্ঠান করে।
.
১৮শ’ শতাব্দী থেকেই শুরু হয়েছে ছাপানো কার্ড প্রেরণ। এ সব কার্ডে ভাল-মন্দ কথা, ভয়-ভীতি আর হতাশার কথাও থাকত। ১৮শ’ শতাব্দীর মধ্য ভাগ থেকে উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে যে সব কার্ড ভ্যালেন্টাইন ডে’তে বিনিময় হ’ত তাতে অপমানজনক কবিতাও থাকত।
.
সবচেয়ে যে জঘন্য কাজ এ দিনে করা হয়, তা হ’ল ১৪ ফেব্রুয়ারী মিলনাকাঙ্ক্ষী অসংখ্য যুগল সবচেয়ে বেশী সময় চুম্বনাবদ্ধ হয়ে থাকার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হওয়া। আবার কোথাও কোথাও চুম্বনাবদ্ধ হয়ে ৫ মিনিট অতিবাহিত করে ঐ দিনের অন্যান্য প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে।
.
ভালবাসায় মাতোয়ারা থাকে ভালবাসা দিবসে রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরগুলো। পার্ক, রেস্তোরাঁ, ভার্সিটির করিডোর, টিএসসি, ওয়াটার ফ্রন্ট, ঢাবির চারুকলার বকুলতলা, আশুলিয়া- সর্বত্র থাকে প্রেমিক-প্রেমিকাদের তুমুল ভিড়। ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে’ উপলক্ষে অনেক তরুণ দম্পতিও হাযির হয় প্রেমকুঞ্জগুলোতে।
.
ঢাকার প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁও হোটেলের আয়োজনে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ উদ্যাপন উপলক্ষে হোটেলের বলরুমে বসে তারুণ্যের মিলন মেলা। ‘ভালবাসা দিবস’-কে স্বাগত জানাতে হোটেল কর্তৃপক্ষ বলরুমকে সাজান বর্ণাঢ্য সাজে। নানা রঙের বেলুন আর অসংখ্য ফুলে স্বপ্নিল করা হয় বলরুমের অভ্যন্তর। জম্পেশ অনুষ্ঠানের সূচিতে থাকে লাইভ ব্যান্ড কনসার্ট, ডেলিশাস ডিনার এবং উদ্দাম নাচ। আগতদের সিংহভাগই অংশ নেয় সে নাচে। ঘড়ির কাটা যখন গিয়ে ঠেকে রাত দু’টার ঘরে তখন শেষ হয় প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁও হোটেলের ‘ভালবাসা দিবস’ বরণের অনুষ্ঠান।
রাজধানীর পাঁচতারা হোটেলগুলোতে এ দিবস উদ্যাপনের অনুকরণে দেশের মেট্রোপলিটন শহরগুলোর বড় বড় হোটেলগুলোও এ দিবস উদ্যাপন শুরু করেছে প্রায় একই ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।
ঢাবির টিএসসি এলাকায় প্রতি বছর এ দিবসে বিকেল বেলা অনুষ্ঠিত হয় ভালবাসা র্যালি। এতে বেশ কিছু খ্যাতিমান দম্পতির সাথে প্রচুর সংখ্যক তরুণ-তরুণী, প্রেমিক-প্রেমিকা যোগ দেয়। প্রেমের কবিতা আবৃত্তি, প্রথম প্রেম, দাম্পত্য এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়াদির স্মৃতি চারণে অংশ নেয় তারা।
আমাদের দেশের এক শ্রেণীর তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী এমনকি বুড়া-বুড়িরা পর্যন্ত নাচতে শুরু করে! তারা পাঁচতারা হোটেলে, পার্কে, উদ্যানে, লেকপাড়ে, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আসে ভালবাসা বিলাতে, অথচ তাদের নিজেদের ঘর-সংসারে ভালবাসা নেই! আমাদের বাংলাদেশী ভ্যালেন্টাইনরা যাদের অনুকরণে এ দিবস পালন করে, তাদের ভালবাসা জীবনজ্বালা আর জীবন জটিলতার নাম; মা-বাবা, ভাই-বোন হারাবার নাম; নৈতিকতার বন্ধন মুক্ত হওয়ার নাম। তাদের ভালবাসার পরিণতি ‘ধর ছাড়’ আর ‘ছাড় ধর’ নতুন নতুন সঙ্গী। তাদের এ ধরা-ছাড়ার বেলেলাপনা চলতে থাকে জীবনব্যাপী...
.
©somewhere in net ltd.