![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্তমানে ফ্যাশন সচেতন মেয়েদের রুপসজ্জায় নতুন একটা ইন্সট্রুমেন্ট যোগ হয়েছে। *কারনে/অকারনে ডালপুড়ি সাইজের চশমা চোখে দেয়।* এটা নাকি এখনকার হালের ফ্যাশন!!! গোল ফ্রেমের বড় সাইজের চশমা পড়লেই টেইলর সুইফট টাইপ একটা ভাব আসে!!! কারন, সাদা চামড়ার মানুষদের অনুকরনের চেষ্টা আমাদের কাছে অনেকটা অলিখিত সংবিধানের ধারার মত। আর এই সুইফট ট্রেন্ড অনুকরন করতে গিয়ে বোকা মেয়েগুলো যে তাদের মুখের সবচেয়ে সুন্দর অংশটুকুর সৌন্দর্যই অনেকাংশে কমিয়ে ফেলে!!! বড় বড় ফ্রেমের নীচে ঢাকা পড়ে যায় অভিমানী মায়াস্ত্রটি!!! '"কারন, প্রেমের রাস্তাটা নাকি চোখ থেকে শুরু করে হৃদয় পর্যন্ত বিস্তৃত।'""
কথায় বলে, *ভালোবাসা শুরু হয়, 'প্রথমে চোখে, তারপর মনে।* এখন, ভালোবাসার এই গতিপথই যদি সুইফট্ বাঁধ আটকে দেয়, তবে সেই পথ ধরে রসিক ডাকপিয়ন মনের পোস্টঅফিসে পৌছবে কি করে??
এসব কথা মনে মনে প্রায় ভাবে অকাশ। ভাবে, আজই সে নীলাকে বলবে,**"অযথায় কেন চশমা পড় তুমি?" "তোমার চোখেত কোন সমস্যা নেই। তবে কেন এই আচ্ছাদন?? কেন এই বোকামি??" পাগলী তুমি কি জানো, "পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর এবং মায়াবী চোখের অধিকারিণী তুমি!!! আর কক্ষনো পড়বেনা তোমার এই পরোটা সাইজ চশমা!!!""-**
মাঝে মাঝেত মনে হয়, চশমাটা যদি ভেঙ্গে ছাতু করে দেয়া যেত!!! কিন্তু নীলাকে ও কিছুই বলতে পারেনা।
এ অবস্থা চলছে,, আজ প্রায় এক বছর ধরে। ওরা একই ভার্সিটিতে একই ডিপার্টমেন্টে পড়ে, সিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্ক। ইদানিং অবশ্য ওদের ফেসবুকে টুকটাক কথাবার্তা হয়।
আকাশ:- হ্যালো, কেমন আছ???
নীলা:- জ্বি ভাইয়া, ভালো আছি। আপনি???
আকাশ:- তারপর, তোমার লেখাপড়া কেমন চলছে..............
ব্যাস!! কথার ট্রেন আর এগোয় না।
আকাশ প্রায়ই ভাবে, নীলাকে ও সবকিছু বলে দেবে। 'কেন সে অযথায় ডিপার্টমেন্টে এসে পড়ে থাকে। শুধুমাত্র, কেমন আছ নীলা?? এতটুকু জিজ্ঞেস করার জন্য, না দেখার ভান করে বারবার ওর সামনে এসে পড়ে।'
নীলার কিছু আল্ট্রামডার্ণ ছেলেফ্রেন্ড আছে। ওদের সাথে ওর খুব ভাব। একসাথে ওরা আড্ডা দেয়, হাসি-তামাশা করে। আকাশেরও ইচ্ছা করে ওদের মত হতে। ""কাউবয় স্টাইলে ড্রেসআপ , হানি সিং স্টাইলে হেয়ার কাট, হাতে ডিজে স্টাইলে কিছু বালা।
প্রেমের প্রয়োজনে নাকি নিত্যান্ত হাবাগোবা ছেলেটাকেও হতে হয় ধুরন্ধর হিটলার!! আর চটপটে চালাক ছেলেটাকে হতে হয় বোকার গোডাউন!! অর্থাৎ, "যেমন ডিমান্ড তেমন সাপ্লাই।" কিন্তু এগুলোর কোনটাই করেনা আকাশ। "আকাশের মত ছেলেদের ভেতরের (মন) সাথে বাহিরের সম্পর্কটা সবসময় দা-কুমড়ো টাইপ। মন চাইলেই অনেককিছুই করতে পারেনা এরা।"
ছোটবেলা থেকেই কিছুটা চাপা আর লাজুক স্বভাবের হওয়ার কারনে, মেয়েদের সাথে কথা বলাত দুরে থাক, চোখের দিকে তাকাতেই লজ্জা করে। অথছ, কি আশ্চর্য! নীলার দিকে তাকালে ও আর চোখই ফেরাতে পারেনা!! ডিপার্টমেন্ট, টুকিটাকি, লাইব্রেরীর বারান্দা সবখানে ও শুধু নীলাকেই খোঁজে। রানার দোকানে সিঙ্গারা-পুড়ি খেতে খেতে ভাবে, " নীলা আজ কি রংয়ের ড্রেস পড়ে আসবে? ছাতা নিয়ে আসবেত, বাইরে যে আগুনগরম রোদ!! একা একা, নাকি রাজদুহিতার মত সখীপরিবৃতা হয়ে আসবে?? এরকম কত চিন্তা। ""পৃথিবীর সব প্রেমিকই, প্রেমিকার একেবারে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয়গুলো নিয়ে ভেবে ঘন্টার পর ঘন্টা পার করে দেয়ার এক বিরল প্রতিভা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।""
**************
সকাল ৮:৩০। আকাশের ক্লাশ যদিও ১২:০০ টায়। তারপরও সে ক্যাম্পাসে এসে আগে থেকেই নির্ধারিত জায়গায় বসে আছে। কারন, নীলার ক্লাশ ৯:৩০-এ। এই দায়িত্বটা সে গত একবছর যাবৎ অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে পালন করে আসছে। ও যখন গভীর আগ্রহে ধৈর্য্যসহকারে একেকটা সেকেন্ড এবং মিনিট পার করছে, ঠিক তখনি নীলাকে প্রশাসন ভবনরে পাশ দিয়ে লাইব্রেরীর পেছনদিকটায় প্রবেশ করতে দেখা গেলো। একই সময়ে, আকাশও ঠিক টেনে ধরে ছেড়ে দেওয়া স্প্রিংয়ের মত তড়াক করে লাফিয়ে সোজা হলো।
কিন্তু একি! রাজকুমারি আজ একা কেন?? পেয়াদা-লাঠিয়াল, প্রাণের সই ওরা সব কোথায়?? আরে, আজত ও চশমা পড়েনি!! ওমা, একি! মেয়েত দেখি আজ চুলে বেণীও করেছে!! যাক, একদিক দিয়ে অবশ্য ভালই হলো। "আজ যেহেতু ও একা, সেহেতু আজ সবকিছুই বলে দবো।" ভাবলো আকাশ,,,,,,,
কিন্তু হঠাৎ করেই ওর এত দুর্বল লাগছে কেন?? কোন সতর্কবার্তা না দিয়েই পা দুটো এভাবে কাঁপছে কেন?? উফ, সারাশরীরে এত অবসাদ কেন?? ও এত ঘামছে কেন?? হঠাৎ করেই আকাশের খুব পিপাসা পাচ্ছে। সাজানো কথাগুলো মাথার ভিতর সব তালগোল পাকিয়ে বিশৃঙ্খলভাবে চিৎকার-চেঁচামেচি করছে। আরে, মেয়েটাত দেখছি সরাসরি এদিকেই আসছ!! আকাশ একবার ভাবলো,'' অলিম্পিক স্টাইলে এখান থেকে দৌড়ে পালাবে কিনা?? কিন্তু, বহু কষ্টে সে নিজেকে সংবরণ করলো।
আকাশ ও নীলা দুজন এখন মুখোমুখি দাড়িয়ে। কারো মুখে কোন কথা নেই। নীলা অনেকটা কৈফিয়ত তলবের ভঙ্গিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আকাশ ভাবলো, 'এটাই সুযোগ, যা বলার এখুনি বলতে হবে।' বুকে মহাবীর আলেকজেন্ডারের মত সাহস সঞ্চার করে ও নীলাকে বলতে চাইলো যে......কিন্তু মনে হলো কল্পলোকের হাজারো দৈত্য ওর গলা টিপে ধরেছে। কয়েকবার ঢোকগিলে ও শুধু, "কেমন আছ নীলা?" এতটুকুই উচ্চারণ করতে পারলো।
"আচ্ছা আকাশ ভাই, আপনি প্রতিদিন এখানে বসে কি করেন?? আপনার সমস্যাটা কি??"
আরে, এই মেয়েত দেখছি আমার মান-ইজ্জত সব কাদায় মাখামাখি করে দিলো! আমার দুই ইয়ারের জুনিয়র অথছ, আমাকেই ঝাড়ি দিয়ে জানতে চাই আমার সমস্যাটা কি!! আজ যদি তোমার জায়গায় অন্য কেউ হত, তবে থাপ্পড় দিয়ে তার আক্কেল দাঁত উঠায় দিতাম। মুখে অবশ্য এরকিছুই বলতে পারলোনা। শুধু মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল, "না, মানে এমনিই!!"
"এমনিই মানে, এমনি এমনি একটা সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ দিনের পর দিন একই সময় একই জায়গায় এভাবে ঝিমধরে বসে থাকতে পারে নাকি?? আজব! শুনেছি, আপনি নাকি ছুটির দিনগুলোতেও এখানে এসে বসে থাকেন। কি সমস্যা? আচ্ছা আপনার ধান্দাটা কি, বনেলত আমাকে!!"
""মানে?""
"আরে ধান্দা, ধান্দা বুঝেননা!! মতলবটা কি আপনার, হ্যা??"
"কই, কিছুনাত।"
"দেখেন আকাশ ভাই, একদম মিথ্যা বলবেননা। যারা মিথ্যা বলে, তাদেরকে আমি দুচোখে দেখতে পারিনা!!"
আকাশ কিছু না বুঝেই, নীলার মুখের দিকে তাকিয় আছে আর ভাবছে, '" কি ব্যাপার! মেয়েটা হঠাৎ করেই এত রেগে গেলো কেনো?'" "ফর্সা মুখটাত একেবারে পাকা ডালিমের মত লাল হয়ে গেছে, মনে হচ্ছে এখনি ফেটে যাবে। নাকের ডগায় আবার বিন্দু বিন্দু ঘামও জমেছে।" হঠাৎ করেই আকাশের মনে হলো, ও পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর মানুষটার সামনে দাড়িয়ে আছে......."
"এমন বোকার মত হ্যা করে দাড়িয়ে আছেন কেন? আজ যদি আপনি আমার প্রশ্নের জবাব না দেন, তবে আর কোনদিন আপনার সাথে আমি কথা বলবনা।"
আরে! আরে! বলে কি অভিমানী মেয়টা! ""একটা মেয়ে যখন আরেকটা ছেলেকে এধরনেন ভয় দেখায়, তখন ছেলেটার কাছে পৃথিবীর কোন কাজই আর অসাধ্য থাকেনা।""
আকাশ বলতে শুধু করল...
"তোমার জন্য।"
"আমার জন্য মানে?"
হ্যা, তোমার জন্য। তোমাকে দেখার জন্যই রোজ এখানে বসে থাকি।"
"কেন, আমাকে দেখার এত কি আছে? আমি কি বিশ্ব সুন্দরী ঐশ্বরিয়া, নাকি প্রিন্সেস ডায়না??"
""কোনটায় নও। কিন্তু আমার চোখে তুমি ওদের চাইতেও বেশিকিছু। এই জীবনে আমি অনেক সুন্দরী মেয়ে দেখেছি। কিন্তু তুমিই প্রথম মেয়ে, যার জন্য আমি অন্তর থেকে টান অনুভব করি। তুমিই একমাত্র মেয়ে, যার চিন্তায় আমি সারাক্ষণ অস্থির থাকি। তুমি কেমন আছ? কি করছ? ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া করছ কিনা? ঘুমালে কিনা? তোমার কোন অসুখ-বিসুখ করলোনাত!! লেখাপড়ার কি অবস্থা?? এমন হাজারো চিন্তায় আমি সবসময় উদ্বিগ্ন থাকি। আমার অস্থিত্বের পুরোটা জুড়ে আমি শুধু তোমাকেই অনুভব করি। তোমার কারনেই জমিয়ে রেখেছি আমার জীবনের একুশটা লাল পদ্ম। শুধু তোমাকে একটা কথা বলব বলেই, গত একক বছর ধরে অপেক্ষা করে আছি। Yes নীলা Yes. Now I can tell u that I love u. I love u more than I can say...Love u my love. love u so much......!!!""
এতটুকু বলেই আকাশ থামলো। কারো মুখে কোন কথা নেই। **এমন অবস্থায় কথা বলাটা পাপ, চেয়ে থাকার ব্যাকুলতায় ভাষা তার অস্তিত্ব হারায়।**
নীলার চোখে পানি টলমল করছে। একফোটা জল পাপড়ির বাঁধ টপকে পরিপরি করছে। আহ!! পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দরতম দৃশ্যের একটা। আকাশ মুগ্ধ বিস্ময়ে নীলার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে, ""এ কোন ধরনের মেয়েরে বাবা!! হাসলেও সুন্দর লাগে, রাগলেও সুন্দর লাহে, কাঁদলেও সুন্দর লাগে.. সুন্দরের ডিব্বা একটা....!!"""
এইমুহুর্তে আকাশের একটা গান খুব মনে পড়ছে--
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
"তুমি এমন কোন কথা বলোনা
চোখে টলমল জলটুকু ফেলনা।
আমি মরনেও কোন ভয় পাইনা
শুধু তোমাকে হারাতে চাইনা।"
*************************
"কি হলো, তুমি কি কিছু বলবা! নাকি শুধু অশ্রু বিসর্জনই দিয়ে যাবা??"
"কথা বলবানা তুমি!! এই কথাগুলো বলতে একবছর সময় নিলো, গাধা কোথাকার!!" নাহ! অভিমানি মেয়েটা আর সামলাকে পারলোনা নিজেকে। কেঁদেই ফেলল অবশেষে। আসলে নীলা সবকিছুই বুঝত এবং মনে মনে আকাশককে পছন্দও করত। একটা কথা মনে রাখবেন, **আপনি যতই সাবধানে ভালোবাসেন না কেনো, আপনার লুকোচুরি বোঝার ঐশ্বরিক ক্ষমতা দিয়েই প্রতিটা মেয়েকে সৃষ্টি করা হয়েছে।**
.
"আচ্ছা যাও, কোন কথা বলবনা। শুধু একটা প্রশ্ন করব।"
"কী??"
"আগামিকালত পহেলা বৈশাখ। কোন প্লানিং আছে?"
"হুম"
"কী"
"সারাদিন কাঁদব বলে ঠিক করেছি।"
"ভেরি গুড। কিন্তু কেন?"
'"এত প্রশ্ন কর কেন? কি জন্য কাঁদব, এটা তোমরা ছেলেরা কোনদিনই বুঝবেনা।""
"ভেরি গুড। কিন্ত একটা অনুরোধ....."
"কী"
"কাঁদবেই যখন, তখন আমার সামনে বসে কেঁদো।"
"কেনো?"
*সেটা তোমরা মেয়েরাও কোনদিন বুঝবেনা। *
"হয়ছে, হয়ছে। আর জ্ঞান দিতে হবেনা। আইনস্টাইনের দাদা আসছে একটা। চলো প্যারিস রোডে হাটি!!"
"কিন্তু তোমার ক্লাশ?"
""করবনা""'
২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:৩৭
বিজন রয় বলেছেন: নববর্ষ হবে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:৩৭
বিজন রয় বলেছেন: নবর্ষের শুভেচ্ছা।