নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমরা মানুষ, আমরা মানুষ, তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়

যাযাবর চিল

i agree to disagree...

যাযাবর চিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

রিপ্লাই টু হুমায়ুন আজাদ এর আমার অবিশ্বাস [পঞ্চম পর্ব]

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:১৩



ট্যাগঃ
I. কুরআন কি বাইবেল নকল করেছে? II. হুবাল। III. পুনরুজ্জীবন এবং উইলিয়াম জেমস হারশাল। IV. ইসলাম গ্রহনের কারন ভয়?
===================================================
এরপর তিনি খৃষ্টিয়ানিটি এবং জুডাইজম থেকে ইসলাম কি কি গ্রহণ করেছে তার বর্ণনা দিয়েছেন।
যেমনঃ [৯৭]
“ইসলামে পশু উৎসর্গকে জড়িত করা হয় হিব্রু নবি আব্রাহামের নিজের পুত্র ইসমায়েলকে উৎসর্গ করার উপাখ্যানের সাথে”।
খৃষ্টিয়ানিটি এবং জুডাইজমের সব নবির নাম, ঘটনা ইসলামে আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। মানে তিনি বলতে চেয়েছেন কুরআন ওল্ড টেস্টামেন্ট এবং নিউ টেস্টামেন্ট থেকে কপি করেছে। এখানে হুমায়ুন আজাদ তিনটি ঐতিহাসিক সত্যকে অবলীলায় এড়িয়ে গেছেন।
এক- মুহাম্মাদ সাঃ ছিলেন নিরক্ষর। তিনি লিখতে বা পড়তে পারতেন না।
দুই- তখন মক্কায় কোন ইহুদি বাস করতো না। মাত্র একজন খৃষ্টান দাস ছিল, তাও মক্কার বাইরে।তার নাম আদ্দাস। আদ্দাসের সাথে মুহাম্মাদ সাঃ এর দেখা হয় নবুওয়াতের ১২ম বছরে, মুহাম্মাদ সাঃ যখন তায়েফ থেকে ফিরছিলেন তখন। আদ্দাস সেখানেই ইসলাম গ্রহণ করেন।
তিন- বাইবেলের ওল্ড এবং নিউ টেস্টামেন্টর কোন আরবি অনুবাদ ছিল না তখন। বাইবেল প্রথম আরবিতে অনুবাদ করা হয় মুহাম্মাদ সাঃ এর মারা যাবার কয়েকশ বছর পরে।
তিনি কোথা থেকে গল্পগুলো পাবেন বা লিপিবদ্ধ করবেন। আর তখন মক্কার মানুষ বাইবেল সম্পর্কে কিছু জানতোও না। কেউ মুহাম্মাদ সাঃ কে মক্কায় এই অভিযোগ দেয়নি যে “তুমি বাইবেল থেকে বলছো”। আর একটা ব্যাপার কুরআন বাইবেলের বৈজ্ঞানিক ভুল বা গাণিতিক ভুল কপি করে নি! ড. আজাদের এই পয়েন্ট খুব একটা শক্তিশালী না। আসলে তিনি ইসলামকে বোঝেন নাই, এটা উনার সমস্যা। ইসলামি এর উত্তর দিয়ে দিয়েছে। ইসলাম নিজেই নিজেকে জুডাইজম এবং খৃষ্টিয়ানিটির পরের ধাপ হিসেবে বিবেচনা করে। ইসলাম বাইবেলের সব নবী রাসূলকে বিশ্বাস করা বাধ্যতামূলক। কেউ যদি সুলেমান আঃ বা জোসেফকে বিশ্বাস না করে, তাকে মুসলিম হিসেবেই বিবেচনা করা হয় না। একটা বিষয় উল্লেখ্য ইসলাম খৃষ্টিয়ানিটির সব নবীর নাম হুবহু বলেনি। ইসলামে যাকে ইয়াহিয়া আঃ বলা হয় খৃষ্টানরা তাকে বলে জন দ্যা ব্যাপটিস্ট।
এরপর ড. আজাদ কালোপাথর নিয়ে একটা হাইপোথিসিস দিয়েছেন। তারমতে এটি উক্কা বা কোন গ্রহানু। এটা হতে পারে আবার নাও হতে পারে। তবে কোন প্রমান নেই। ইসলামি থিওলজি মতে আল্লাহ পাঠিয়েছেন এই পাথর। আদম আঃ এর সময় থেকেই এটা দুনিয়াতে আছে। আল্লাহ এটা কিভাবে পাঠিয়েছেন, ইসলামি থিওলজিতে এটা নিয়ে বেশি আলোচনা হয়নি। কারন ইসলামি থিওলজিতে তার গুরুত্ব নেই। উল্কার মত করে পাঠিয়েছেন? হতে পারে নাও হতে পারে।
এরপর তিনি বলেছেন হুবালের কথা। তিনি দাবি করেন হুবাল নাকি একটা লাল পাথর ছিলো।[৯৭]
“কালোপাথরটির পাশেই আছে আরেকটি লালবর্ণের পাথর, যার নাম হুবাল”।
আবার ভুল তথ্য। কোন রেফারেন্স নেই। আমর বিন লুসাই আল খুজায়ি সিরিয়ার আমাল কাইটের কাছ থেকে হুবাল নামক মূর্তিটি মক্কায় নিয়ে আসেন৫। এটি কোন পাথর ছিল না। মূর্তি ছিল।[ওল্ড টেস্টামেন্টেও আমাল কাইটদের বর্ণনা আছে]।
এরপর হুমায়ন আজাদ শাস্তি, নরক, কেয়ামত, এসব নিয়ে কথা বলেছেন। এবং চমৎকার একটা প্রশ্ন তুলেছেন, [১০]
“অন্ধকারাচ্ছন্ন, বলক দিতে থাকবে সমুদ্ররাশি, আর কবর থেকে বিচারের জন্য বেরিয়ে আসবে সমস্ত মানুষ। দাঁড়িপাল্লা দিয়ে মাপা হবে তাদের পাপপুন্য, এবং বিচার করবেন বিধাতা। কারো জন্য নির্ধারিত হবে চিরস্বর্গ, কারো জন্যে চিরনরক। বিচারের জন্যে নরনারীরা পুনরুজ্জীবিত হবে, অর্থাৎ তারা ফিরে পাবে তাদের পার্থিব শরীর। প্রশ্ন হচ্ছে কীভাবে পুনরুজ্জীবিত হবে মৃতরা? যারা পচে গেছে, বিনষ্ট হয়ে গেছে যাদের অস্থিমাংস আর অন্ততন্ত্র, যারা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, তারা কীভাবে ফিরে পাবে শরীর?”
প্রশ্নটা চমৎকার হলেও বেশ পুরানো। বেশি না প্রায় ১৪০০ বছর। মক্কার প্যাগানরাও এই একই প্রশ্ন করেছিলো। এবং আল্লাহ এর উত্তর দিয়েছেন,
“তারা বলে মরার পরে হাড়, মাংস পচে গলে যাবে। কিভাবে আল্লাহ হাড়গুলোকে আবার একত্রিত করবেন।(তাদের বলে দাও) আমি শুধু হাড় না তাদের আঙ্গুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত একত্রিত করতে সক্ষম”
[আল- কুরআনঃ ৭৫, ৩-৪]
আঙ্গুলের অগ্রভাগের মাহাত্বটা কি? এটা বুঝতে আমাদের এই আয়াত যখন নাজিল হয় তখন থেকে ১৩০০ বছর সামনে আগাতে হবে। উইলিয়াম জেমস হারশালের সাহায্য নিতে হবে। তিনি ছিলেন ভারতে একজন ইংলিশ আইসিএস অফিসার। ১৮৮০ সালে ইংল্যান্ডের নেচার পত্রিকা তার একটি আর্টিকেল ছাপে। আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে যে অপরাধী ধরা যেতে পারে এই আর্টিকেলে তিনিই প্রথম এই ধারনা দেন। এর কিছুদিন পরে ফ্রান্সেস গোল্ড আঙ্গুলের অগ্রভাগের ব্যাপারটি আবিস্কার করেন,। প্রতিটা মানুষের আঙ্গুলের ছাপ আলাদা। কখনোই দুইজনের আঙ্গুলের ছাপ মিলবে না। এজন্যই আল্লাহ ১৪০০ বছর আগে বলে দিয়েছেন, “তাদের বলে দাও আমি তাদের আঙ্গুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত এক করতে সক্ষম”
তিনি স্বভাবসুলভ ধর্মের বিরুদ্ধে বিষেদগার করেছেন মাঝে মাঝেই। এগুলোর ইতিমধ্যে দিয়ে ফেলেছি। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে মানবিক শাসন ছিল ধর্মীয় শাসন আর সবচেয়ে অত্যাচারী শাসকগন ছিল নাস্তিক। ইতিহাসে যত রক্তপাত হয়েছে বেশিরভাগের সাথে ধর্মের কোন যোগ নেই।
এরপর ড. আজাদ একটি অভিযোগ করেছে,
“সব ধর্মের নৈতিকতার ভিত্তি ভয়। বহু ধর্মে বিধাতা চরম ক্রুদ্ধ ও হিংস্র; ক্রুদ্ধ ও হিংস্র হয়ে থাকা ছাড়া তার আর কোন কাজ নেই; অবিশ্বাসীকে শাস্তি দেয়ার জন্য তিনি ব্যগ্র, এবং বিশ্বাসীকেও সব সময় রাখেন ভীতির মধ্যে”।
ইসলামে নৈতিকতার ভিত্তি ভয় না। ইসলামে নৈতিকতার ভিত্তি একজন ঈশ্বরে বিশ্বাস। তিনি যে ইসলাম জানেন না এই মন্তব্যই তার প্রমান। তার এই কথা অসার প্রমানের জন্য বর্তমানে ইসলামের সবচেয়ে বিখ্যাত দা’য়ীদের দেখলেই হয়। সবচেয়ে বিখ্যাত দা’য়ীদের তিনভাগের এক ভাগই কনভার্টেড মুসলিম। তারা প্রায় সবাই ছিল উচ্চ শিক্ষিত খৃষ্টান, কয়েকজন বৌদ্ধ [যেমন ইউসুফ ইসতেস, বিলাল ফিলিপস, হোসাইন ই, আব্দুর রহিম গ্রিন, ইউসুফ চেম্বারস প্রমুখ]। বর্তমানে ইউরোপে, অ্যামেরিকায় মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা আছে। ইউরোপ এবং অ্যামেরিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় ধর্ম ইসলাম। কেউই ভয় পেয়ে মুসলিম হচ্ছেন না; ইসলামের সৌন্দর্য দেখে মুসলিম হচ্ছেন।
রেফারেন্সঃ
৫। সিরাত ইবনে হাশিম
#চলবে
@
#হুমায়ুন_আজাদ
[লেখার কোন স্বত্ব নেই]

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:২১

গড়াই নদীর তীরে বলেছেন: মহানবীর প্রতিবেশী মদীনার ইহুদীরা কোনদিন এ অভিযোগ করেনি যে আপনি আমাদের ধর্মগ্রন্থ থেকে নকল করেছেন।

পোস্টে প্লাস।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৭

যাযাবর চিল বলেছেন: ভাল পয়েন্ট। [প্লাস]

২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:২৯

দূরের যাত্রী বলেছেন: ভাই নাস্তিকদের জবাব দিয়ে কি হবে? আমরা মুসলিমরাই মানুষকে ইসলাম থেকে ফিরিয়ে রাখার জন্য দায়ী।

"Islam is the best religion but Muslims are the worst nation"
যদিও উক্তিটির সাথে আমি নিজেও একমত নই। তবুও বলব মুসলিমরা সঠিকভাবে ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করতে ব্যর্থ।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৭

যাযাবর চিল বলেছেন: ভাই আমার লেখা দুই ধরণের মানুষের জন্য। মূলত এক- সাধারণ [ইসলাম সম্পর্কে বেশি একটা জানে না] মানুষ, তাদের জন্য। দুই- নাস্তিক।
যারা ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা করে। তারা এগুলো সবই জানে কম বেশি। হয়তো আমি সাজিয়ে লিখেছি। এই যা

৩| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪০

কাউয়ার জাত বলেছেন: হুমায়ুন আযাদ এবং আহমাদ শরীফ এদের কিছু লেখা এবং সাক্ষাৎকার পড়ে আমার ধারণা হয়েছে যে নাস্তিকরা নিজেদেরকে সবার চেয়ে বড় মনে করে।

হুমায়ুন আযাদের ভাবখানা ছিল, বাংলাদেশে প্রেসিডেন্ট হওয়ার উপযুক্ত একমাত্র ব্যক্তিটি ছিলেন উনি নিজে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ যাবতকালের সব ভিসিরাই ছিল অযোগ্য, হুমায়ুনা আযাদই ছিলেন ভিসি হওয়ার উপযুক্ত। কিন্তু উনাকে কেউ বানায় নি। ড. মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ, এনামুল হক ওনারা কেউ বাংলা জানতেন না, আযাদ সাহেবই একমাত্র বাংলা জানতেন ইত্যাদি ইত্যাদি।

অহংকার মানুষের সব ভালোকে বিনষ্ট করার জন্য যথেষ্ট।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৭

যাযাবর চিল বলেছেন: তার মেধা ছিল। অস্বীকার করবো না। ক্রিটিকাল চিন্তা করতে পারতেন। ভাল কবিতা, উপন্যাস লিখেছেন। ডঃ শহীদুল্লাহ এর পরে ভাষাবিজ্ঞানী হিসেবে তাকে রাখতে পারেন চাইলে। কিন্তু তার থিওলজিকাল জ্ঞান খুবই কাঁচা এবং হাস্যকর। নিজের প্রতি ক্রিটিকাল মাইন্ডের প্রতি অতিরিক্ত বিশ্বাসের ফল এটা।

৪| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৫

মোশাররফ হোসেন সৈকত বলেছেন: আজাইরা ক্যাচাল

৫| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৫

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:

বিশ্লেষণ গুলো যথেষ্ট জোড়ালো, ও যুক্তিসংগত। আপনি ভাল অ্যানালাইসিস করেছেন।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৭

যাযাবর চিল বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৬| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৫০

নেবুলাস বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।

৭| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১৮

মহসিন ৩১ বলেছেন: লেখাটিতে একটি সুগঠিত বাক্য বিন্যাসের কারণে বিষয়টি নিয়ে পুনরায় ভাবতে ইচ্ছা করবে , তবে আপনি যদি আরবদের ফোকলোর নিয়ে কোন তথ্য দিতেন তাহলে ভাল হত। ধর্মের কারণ প্রত্যক্ষন ভয় এটা প্রাচীন যুগের সত্য, বিদ্যুৎচমকের কথা ভাবলেই সেটা অনুধাবন হয় কিন্তু বর্তমানেও পরোক্ষ ভয় আছে অনেক যেমন পাপের ভয় ----- তাই নয় কি।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৮

যাযাবর চিল বলেছেন: ভাই ভয় নিয়ে প্রথম পর্বে লিখেছি। দেখতে পারেন
http://www.somewhereinblog.net/blog/samilz7/30168491

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৯

যাযাবর চিল বলেছেন: https://goo.gl/wYMoXK

৮| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:০৯

ধ্রুবক আলো বলেছেন: লেখটাা পড়ে খুব ভালো লাগলো,, যথযথো যুক্তি উপস্থাপন করেছেন আপনি, অনেক অভিনন্দন.,,

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:১০

যাযাবর চিল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

৯| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:১২

ধ্রুবক আলো বলেছেন: লেখাটা পড়ে খুব ভালো লাগলো,, যথাযথো এবং খুব সুন্দর যুক্তি উপস্থাপন করেছেন আপনি, অনেক অভিনন্দন.,,

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.